কাশির সাথে রক্ত পড়া
রক্ত কাশ বা কাশির সহিত মুখ দিয়ে রক্ত পড়া। সাধারণত যক্ষ্মা রম্নগীর মুখ দিয়ে রক্ত উঠে থাকে, এজন্য কারো মুখ দিয়ে রক্ত উঠলেই লোকে যক্ষ্মা সন্দেহ করে অত্যন্তô ভীত ও চিন্তিôত হয়ে পড়ে। কিন্তু যক্ষ্মা ব্যতীত অন্যান্য বহুবিধ কারণে কাশির সহিত রক্ত উঠতে পারে। এরূপ কারণগুলোর মধ্যে উলেস্নখযোগ্য হলোঃ
ব্রংকিএকটেসিস, ফুসফুসের ফোঁড়া, ফুসফুসের ক্যান্সার, নিউমোনিয়া। ফুসফুস ছাড়াও কিছু হৃদরোগ আছে যেমন, মাইট্রাল ভাল্ব সরম্ন হয়ে গেলেও কাশির সাথে রক্তপাত হতে পারে। বড়্গে কোন প্রকার আঘাত লাগা, কোন উত্তেজক গ্যাস বা অতিউত্তপ্ত বায়ুর মধ্যে শ্বাস গ্রহণ করা এ কয়েকটি প্রধান কারণ ছাড়াও আরও অনেক কারণে এ সমস্যা দেখা দিতে পারে। তবে বাংলাদেশের মত তৃতীয় বিশ্বের দেশসমূহের জন্য যশ্মাকে প্রধানতম কারণ হিসেবে বিবেচিত করা হয়। এ রোগে বায়ুনালীসমূহ হতে যে রক্তপাত হয় তা প্রথমে কালচে লালবর্ণ থাকে, পরে উহা পরিবর্তীত হয়ে হালকা বর্ণ ধারন করে। আক্রান্তô ফুসফুসীয় বায়ুনালীগুলো অল্প বিস্তôর জমাটবাধা রক্তে পূর্ণ থাকে এবং সে জন্য ঐ স্থানের শৈল্মিক ঝিলিস্ন বিবর্ণ হয়ে যায়। অনেক ড়্গেত্রেই রোগী বুঝতে পারে না যে, রক্তপাত সম্ভাবনা দেখা দিচ্ছে, কোন কোন ড়্গেত্রে বুকের মধ্যে এক প্রকার আকুঞ্চন বোধ এবং তৎপর উত্তাপ ও সুড়সুড়ি বোধ দেখতে পাওয়া যায়। উপদাহের জন্য কাশি জন্মে, কাশতে কাশতে আবার রক্তের উৎড়্গেপ হয়। রক্তের পরিমাণ সম্বন্ধে নির্দিষ্টভাবে কিছু বলা যায় না।
কখনো হয়ত মাত্র কয়েক ফোঁটা রক্ত নির্গত হয় আবার কোন সময় হয়ত নাক-মুখ দিয়ে অনেকখানি রক্তপাত হয়। রক্তস্নানের ফলে রোগী অত্যন্তô উৎকণ্ঠিত হয়ে উঠে, তার মূর্ছা যাওয়াও বিচিত্র নহে। একটা কথা মনে রাখা কর্তব্য, বায়ুনালীতে এ প্রকার রক্তপাত অধিকাংশ ড়্গেত্রেই পুনঃ পুনঃ হয়, সে জন্য যড়্গা সন্দেহ দেখা দেয়। কিন্তু সবসময় মনে রাখতে হবে যে এ রোগ যড়্গা নহে অথবা যক্ষ্মার মত বিপদজনক নয়। কারণ যক্ষ্মা হলে অবশ্যই জ্বর থাকবে। যা সন্ধ্যা থেকে বাড়তে থাকবে।
রাতের বেলায় শরীরে ঘাম দিবে, তবে সময় সময় সাধারণভাবে দৈহিক উত্তাপ কিছুটা বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হতে পারে। বড়্গ পরীড়্গায় বিশেষ কোন লড়্গণ পাওয়া যায় না। একজন বয়স্ক ব্যক্তির যদি বেশ কিছুদিন কাশি থাকে, বুকে তীব্র ব্যথা থাকে, স্বর বসে যায় এবং কফের সাথে ছিঁড়ে ছিঁড়ে রক্ত যায় তবে জরম্নরী ভিত্তিতে একজন বড়্গব্যাধি বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে। কারণ এগুলো হলো ক্যান্সারের উপসর্গ। রক্ত কাশ রোগ কদাচিৎ সাংঘাতিক হয়ে থাকে, কিন্তু কোন কোন ড়্গেত্রে উহা হয়ত যড়্গা রোগের পূর্বভাষ হতে পারে। এজন্য রোগ কিছুকাল স্থায়ী হলে বুকের এরে পরীড়্গা দ্বারা সঠিক অবস্থাটি বুঝতে চেষ্টা করতে হবে। রোগীকে বিছিনায় শায়িত রাখতে হবে এবং তার মাথায় কয়েকটি বালিশ দিয়ে উঁচু করে দিতে হবে। সব ধরনের উত্তেজনা এমন কি রোগীর কথা বলাও বিশেষ ড়্গতিকর। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব রোগী প্রাথমিক কষ্ট কাটিয়ে উঠলে ব্রংকোসকোপী পরীড়্গার দ্বারা সঠিক রোগ নির্ণয়ের চেষ্টা করতে হবে। কখনো এ পরীড়্গা দ্বারা রক্তপাত বন্ধের চেষ্টা করা যেতে পারে।
যক্ষ্মা চিকিৎসায় চিকিৎসক ও রোগীর কর্তব্য
ডা. এ বি এম আবদুল্নাহ
ডাক্তারকে মনে করতে হবে শুধু রোগের চিকিৎসাই যথেষ্ট নয়, রোগীর চিকিৎসাও অত্যন্তô জরুরি।
ষ রোগ সম্পর্কে রোগীকে ভালো করে ধারণা দেয়া এবং নিয়মিত ওষুধ পূর্ণমাত্রায় খাওয়ার বর্ণনা ভালোভাবে দিন। রোগীকে বুঝাতে হবে রোগের ভালো-মন্দ নির্ভর করবে ওষুধ যথাযথভাবে ব্যবহারের মাধ্যমে। ষ অনেক সময় প্রেসক্রিপশন ঠিকমতো লেখা হয় না প্রেসক্রিপশনে ওষুধের মাত্রা, কত দিন ব্যবহার করতে হবে, কিভাবে ব্যবহার করতে হবে, খাবার আগে না পরে ইত্যাদি বিষয়ে চিকিৎসককে যথেষ্ট যত্নবান হতে হবেন। ষ যেহেতু টিবি রোগে অনেক ওষুধ একসাথে দিতে হয় সেজন্য অসম্পূর্ণ প্রেসক্রিপশন যেন না হয় সে ব্যাপারে লড়্গ্য রাখুন। ষ ওষুধ চলাকালে রোগীর উন্নতি না হলে যদি চিকিৎসক আর ওষুধ যোগ করতে চান তখন মনে রাখতে হবে কমপড়্গে যেন ২ বা ৩ টা ওষুধ যোগ করা হয়। ষ রোগী নিজে থেকে ওষুধ বাদ দিলে চলবে না। ষ রোগীকে নিয়মিত ফলোআপ করতে হবে। ষ রোগী ঠিকমতো ওষুধ খায় কি না দেখা উচিত। সম্ভব হলে ওষুধগুলোও দেখা যেতে পারে।
রোগীর কর্তব্যঃ ষ ওষুধ শুরম্নর কিছু দিনের মধ্যেই অনেক রোগী ভালো বোধ করেন এবং মনে হবেই না বরং আরো মারাত্মক আকারে যেমন; মাল্ট্রি ড্রাগ রেজিসেন্ট টিবি হতে পারে। এর ফলে রোগী নিজেরও ড়্গতি করবেন এবং সমাজে মারাত্মক আকারে যক্ষ্মা রোগ ছড়াতে সাহায্য করবেন। ষ ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হলে অবশ্যই তা ডাক্তারকে জানাতে হবে। ষ অনেকে টাকা-পয়সার অভাবে ওষুধ কিনতে পারেন না, তাতে অনিয়ম হয়। প্রয়োজনে নিকটবর্তী যক্ষ্মা নিরাময় কেন্দ্রে যোগাযোগ করা যেতে পারে। ষ রোগীকে বুঝতে হবে যেহেতু দীর্ঘ দিন ধরে অনেক ওষুধ খেতে হয়, তাই ধৈর্যসহকারে নিয়মিত ওষুধ সেবন অত্যন্তô জরম্নরি এবং রোগীকেও নিয়মিত ডাক্তারের কাছে গিয়ে ফলোআপ করাতে হবে।
যক্ষ্মা নিরাময়যোগ্য ব্যাধি। অযথা ভয় পাওয়ার কিছু নেই। রোগীকে পরিবার-পরিজন থেকে আলাদা করার দরকার নেই। স্পেশাল কোনো খাওয়া-দাওয়ার দরকার নেই। নিয়মিত, পরিমিত এবং পূর্ণমাত্রায় ও পূর্ণমেয়াদে ওষুধ সেবন করলে অবশ্যই যক্ষ্মা সম্পূর্ণ ভালো হয়ে যায়।
লেখকঃ মেডিসিন বিশেষজ্ঞ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা
যক্ষ্মাতে রড়্গা আছে
ঘটনাটি এরকম। দড়্গিণ আফ্রিকায় বিশেষ ভয়ানক ধরনের যক্ষ্মার বিস্তôার যখন ঘটলো তখন বোঝা গেলো পৃথিবীর অন্যতম ভয়ংকর এই রোগকে নিয়ন্ত্রণে রাখার বিশ্বজুড়ে যে প্রোগ্রাম চলছিলো, তা ভেঙ্গে খান খান হয়ে গেলো। এই প্রোগ্রামের মধ্যে ছিলো যক্ষ্মারোগ সনাক্ত করা, রোগীরা এন্টিবায়োটিক ঠিকমত গ্রহণ করছে তা নিশ্চিত করা, এসব ওষুধে তাদের রেজিস্ট্যান্স হচ্ছে কিনা তা পরীড়্গা করা এবং রোগের বিস্তôার হলে তা মনিটর করা। কিন্তু আন্তôর্জাতিক যক্ষ্মা বিশেষজ্ঞরা বললেন এই ব্যবস্থা বেশ কয়েকটি কারণে সমস্যায় পড়েছেঃ এন্টিবায়োটিকের অপব্যবহার; অন্যান্য অপচিকিৎসা, যেমন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে উচ্চ ঝুঁকি রোগীদেরকে আলাদা রাখতে ব্যর্থ হওয়া; এবং পরীড়্গা-নিরীড়্গার জন্য ল্যাবরেটরীতে এবং ওষুধ সরবরাহে অর্থ খরচে সরকারের গাফিলতি। এসব কারণে ড্রাগ-রেজিস্ট্যান্ট যক্ষ্মার জীবাণু বেড়ে চললোঃ যে ভয়ংকর ব্যাপারটি পৃথিবী এখন বুঝতে শিখছেকৈত ভয়ানক এই বিপদ! এই রোগের পেছনে অণুজীব ‘মাইকোব্যাকটেরিয়াম টিউবারকুলোসিম’ আবিষ্কৃত হয়েছিলো ১২৫ বছর আগে মার্চ মাসে। বর্তমানে এই জীবাণু প্রতিবছর ৮জ্ঝ৮ মিলিয়ন লোককে সংক্রমিক করছে; ঘটছে ১জ্ঝ৬ মিলিয়ন লোকের প্রাণহানি। রোগীর কফ কাশের সময় সূক্ষ্ম বিন্দুকণার মাধ্যমে ছড়ায় এ জীবাণু।
অথচ যতড়্গণ পর্যন্তô এর জীবাণু এন্টিবায়োটিকের দাপটের কাছে হার মানে ততড়্গণ পর্যন্তô যক্ষ্মা সম্পূর্ণ নিরাময়যোগ্য। তবে এইডস রোগীর যদি যক্ষ্মা হয় তখন তা হয়ে উঠে ভয়ংকর। আর যখন যক্ষ্মার জীবাণু চরম ড্রাগ রেজিস্ট্যান্ট হয়ে উঠে, তখন মৃত্যুর হার উঠে তুঙ্গে। এরকম ড্রাগ রেজিস্ট্যান্ট যক্ষ্মার জীবাণুর সংখ্যা ও প্রকোপ বেশি দড়্গিণ আফ্রিকায়। তেমন একটা ঘটনার কথা উলেস্নখ করা হয়েছে দড়্গিণ আফ্রিকার কাওয়াজুলু নাটাল প্রদেশের একটি গ্রামে ৈঢউজঞই নামে প্রচণ্ড ড্রাগ রেজিস্ট্যান্ট টিজ্ঝবির প্রকোপে মারা গেলো ৫৩ জন রোগীর ৫২জনই। আবার এদের সবারই ছিলো এইচআইভি (এইডস) সংক্রমণ। ২০০৫ সালে এই প্রাদুর্ভাব সনাক্ত করা হলেও ২০০৬ সালে আগস্ট মাসে আন্তôর্জাতিক এইডস সম্মেলনে প্রথম এর কথা জানলো পৃথিবীর লোক।
ড্রাগ রেজিস্ট্যান্ট এ ধরনের যক্ষ্মার জীবাণুকে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা একটি ভয়ংকর জনস্বাস্থ্য হুমকি হিসেবে চিহ্নিত করেছে। আফ্রিকার মত দরিদ্র দেশে লড়্গ লড়্গ এইচআইভি সংক্রমিত লোকের মধ্যে যক্ষ্মার বিধ্বংসী প্রভাব লড়্গ্য করে এ মন্তôব্য সে সংস্থাটি করেছে।
আবার ক্যান্সার আক্রান্তô রোগী এবং অন্যান্য রোগে যেসব লোকের দেহ প্রতিরোধ ব্যবস্থা দুর্বল এদের যক্ষ্মা হলেও রোগটি হয়ে উঠে ভয়াবহ।
ঢউজ-ঞই নামে যক্ষ্মারোগ এর একটি ব্যাখ্যা প্রয়োজন। এ ধরনের যক্ষ্মারোগ দুটো গুরম্নত্বপূর্ণ যক্ষ্মারোধী ওষুধ (আইসোনিয়াজিড ও রিফামপিসিন) এবং সে সঙ্গে আরো দুটো ওষুধ ফ্লুরোকুইনোলোন গ্রম্নপের একটি ওষুধ এবং ক্যাপ্রিওমাইসিন, ক্যানামাইসিন ও এমিকেসিন এরকম ওষুধের রেজিস্ট্যান্ট হলে ঢউজ-ঞই যক্ষ্মা বলা হয়ে থাকে। রেজিস্ট্যান্ট টিবির এই ধরনটি সবচেয়ে ভয়ানক।
এরচেয়ে এক ধাপ নিচে হলো গউজ-ঞই। এর নাম মাল্টি ড্রাগ রেজিস্ট্যান্ট টিবি। ১৯৯০ সালের গোড়ার দিকে নিউইয়র্ক সিটিতে পর্যন্তô এর প্রাদুর্ভাব ঘটেছিলো।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দড়্গিণ আফ্রিকার যক্ষ্মার প্রাদুর্ভাব স্মরণাতীতকালের সবচেয়ে ভয়াবহ যক্ষ্মারোগ। অথচ এ সম্বন্ধে সচেতনতা সৃষ্টি হয়েছে এক বছর পর। দড়্গিণ আফ্রিকার মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিলের ডাঃ করিম ওয়ের বলেন এক বছর আগে পর্যন্তô এ বিষয়ে বেশি অবহিত না হওয়ার কারণ হলো এ নিয়ে ততদিন ধারাবাহিকভাবে তেমন সমীড়্গা হয়নি।
তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোর পরিসংখ্যান পর্যালোচনা করে প্রতিবছর দড়্গিণ আফ্রিকায় ৬০০০ এমডিআরটিভি নতুন ধরা পড়ছে বলে জানা গেলো। চিকিৎসায় সফলতা আসে নাই ১০% ড়্গেত্রে। প্রতিবছর ঢউজ-ঞই হচ্ছে ৬০০ জন লোকের। দেখা যায়, ঢউজ-ঞই ও এইচআইভি দুটোই আছে এমন লোকের মধ্যে মৃত্যুহার ৮৫%। সবচেয়ে বিপদের কথা হলোঃ দড়্গিণ আফ্রিকার নয়টি প্রদেশের ৪০টি হাসপাতালে ভয়ানক ঢউজ-ঞই র জীবাণুর অস্তিôত্ব রয়েছে। সাবসাহারান আফ্রিকার বাকি অংশও রয়েছে ঝুঁকির মধ্যে কারণ সেসব দেশে বায়ুবাহিত সংক্রমণের নিয়ন্ত্রণ নেই বললেই চলে।
তবে এর প্রাদুর্ভাব কেবল আফ্রিকাতেই সীমাবদ্ধ তা নয়। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার একজন যক্ষ্মা বিশেষজ্ঞ ডাঃ পল নান একটি সম্মেলনে বলেছেন, অন্তôত ২৮টি দেশে এ ধরনের যক্ষ্মা রয়েছে। মালটি্ ড্রাগ রেজিস্ট্যান্ট ধরনের যক্ষ্মা বিষয়ে উপাত্ত সংগ্রহ করে বলা যায় যে, ঙঊৗ-কঈ রোগের দুই তৃতীয়াংশ রয়েছে চীন, ভারত ও রাশিয়ায়।
এ রোগের বিস্তôারের কারণ ও ধরন সর্বত্র একইঃ এন্টিবায়োটিকের অপব্যবহার। ডাঃ নান বলেন, যখন যক্ষ্মার বিরম্নদ্ধে প্রথম সারির ওষুধগুলো সফল হলো না তখন ডাক্তাররা কম প্রচলিত দ্বিতীয় সারির ওষুধ ব্যবহার করেন, এগুলো কার্যকর হবে বলে অনুমান করেন তারা, কারণ জীবাণুগুলো এদের প্রতি রেজিস্ট্যান্ট হবার তেমন সুযোগ পায়নি। ডাঃ নান আরও বলেন, ভয় হচ্ছে অন্যান্য দেশেও নীরবে যক্ষ্মা ছড়াচ্ছে।
আগে পরীড়্গকরা বলেছিলেন ড্রাগ রেজিস্ট্যান্ট যক্ষ্মার জীবাণু ছাড়ায় অল্প। কিন্তু হার্ভার্ডের বিজ্ঞানীরা বলছেন এ ধারণটি সঠিক নয়। ঙঊৗ-কঈ প্রচলিত যক্ষ্মারোগের মতই খুব ছোঁয়াচে, ছড়ায়ও বেশি। এটিই উদ্বেগের কারণ। ডাঃ ওয়ের বলেন, উন্নয়নশীল বিশ্বে বেশিরভাগ জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থায় বায়ুবাহিত সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারটি নেই বললেই চলে।
দড়্গিণ আফ্রিকার গবেষকরা ১৬৯৪ জন আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধুদের পরীড়্গা করলেন যারা ৩৮৬ জন ঙঊৗ-কঈ রোগীদের সংস্পর্শে এসেছিলেন। এদের মধ্যে মাত্র ১২টি মাল্টি ড্রাগ রেজিস্ট্যান্ট যক্ষ্মা পাওয়া গেলো, কারো মধ্যেই ঙঊৗ-কঈ পাওয়া গেলো না। এতে বোঝা গেলো জনগণের মধ্যে রোগের যথেষ্ট বিস্তôার ঘটেনি। তবে পরে জানা গেলো ঘটনা অন্যরকম। এমনকি ওষুধে সংবেদনশীল এমন যক্ষ্মা সংক্রমণও রোগ ঘটাবার আগে বছরের পর বছর নীরবে দেহে বাসা বেঁধে থাকতে পারে।
চিকিৎসা বিষয়ক জার্নাল ও বৈজ্ঞানিক অধিবেশনসমূহে দড়্গিণ আফ্রিকার ডাক্তাররা এবং অন্যরাও ঢউজ-ঞই রোগীদের অন্তôরীণ রাখার পড়্গে জোরেশোরে বলছেন। তবে বলপূর্বক অন্তôরীণ রাখার বিষয়টি কার্যে পরিণত করা বেশ জটিল।
যেহেতু ঙঊৗ-কঈ যক্ষ্মা দুশ্চিকিস্য ধরা হয় সেজন্য সেসব রোগীদেরকে আমৃত্যু অন্তôরীণ রাখার কথা বলা হচ্ছে। সংক্রমিত রোগীরা সহজেই রোগ ছড়াতে পারে অন্যদের। এছাড়া যারা এসব রোগীকে পরিচর্যা করেন তাদের জন্য এ রোগ পেশাগত ঝুঁকিও বিপর্যয়ের কারণ হতে পারে। দড়্গিণ আফ্রিকার টুগেলাফেরিতে এ রোগের প্রাদুর্ভাব যখন ঘটে তখন ৫৩ জনের মধ্যে যে রোগ হয়েছিলো এর মধ্যে ৬ জন ছিলো স্বাস্থ্যকর্মী।
ডাঃ ওয়ের এসব প্রশ্ন তুলেছেন। কি কি সুবিধা ব্যবহার করা যাবে? ঢউজ-ঞই রোগীদের পরিচর্যার দায়িত্ব নেবেন স্বেচ্ছাপ্রণোদিতভাবে কারা? এসব স্বাস্থ্যকর্মীকে সুরড়্গার ব্যবস্থা কি হবে?
দড়্গিণ আফ্রিকার কোনও কোনও হাসপাতালে প্রযুক্তি প্রকৌশল এবং সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি চর্চা করা হচ্ছে, যেমন যক্ষ্মার জীবাণু ধ্বংস করার জন্য অতিবেগুনী আলো ব্যবহার।
ডাঃ ওয়ের বলেন, ঘন ঘিঞ্জি ক্লিনিকে, এরে বিভাগে, অপেড়্গমাণ লোকজনের লাইনে এবং অন্যত্র যক্ষ্মা ও এইচআইভি রোগীদের মধ্যে অন্যাবশ্যক সংস্পর্শ প্রতিরোধ করার জন্য স্বাস্থ্য পরিচর্যা সুবিধাকে নতুন করে সাজাতে হবে। ড্রাগ রেজিস্ট্যান্ট যক্ষ্মারোগ নির্ণয়ের জন্য দুটো নতুন দ্রম্নত পরীড়্গার কার্যকারিতা পরীড়্গা করা হচ্ছে ৪০ হাজার রোগীর উপর মাঠ পর্যায়ে। এই পরীড়্গা করার পর চিকিৎসার ফলাফলে ইতিবাচক পরিবর্তন আসে কিনা তাও দেখা হবে। জেনেভায় অবস্থিত ‘ইনোভেটিভ নিউ ডায়াগনোস্টিকস্’ জন্য ফাউন্ডেশনের পরিচালনা আরও ৬০ হাজার রোগীর পরীড়্গা সম্পন্ন করা হবে।
পরীড়্গামূলক আরও ২০টি ওষুধের কার্যকারিতা ও পরীড়্গা করা হচ্ছে। এখন দেখার অপেড়্গা, কি হয়!