টিনএজারদের ব্রণ সমস্যা
ডা. ওয়ানাইজাচেম্বারঃ যুবক মেডিক্যাল সার্ভিসেস , বাড়িঃ ১৬, রোডঃ ২৮ (পুরাতন), ১৫ (নতুন), ধানমন্ডি আবাসিক এলাকা, ঢাকা (শনি, রবি ও বৃহস্পতিবার)। মোবাইলঃ ০১৯১১৫৬৬৮৪২ ব্রণ টিনএজারদের সচরাচর সমস্যা। ব্রণ বা একনে শতকরা ৮০ ভাগ টিনএজারদের সমস্যা। ত্বকের সৌন্দর্যহানির জন্য ব্রণ দায়ী। ছেলেদের ব্রণ তীব্রতার দিক থেকে বেশি হলেও মেয়েদের ক্ষেত্রে সামাজিক কারণে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এটি এক প্রকার বিড়ম্বনা। ত্বকের ভেতর অবস্থিত সেবাসিয়াস গ্রন্থি থেকে সেবাম নামক এক প্রকার তৈলাক্ত পদার্থ বের হয় এবং লোমকূপের গোড়া দিয়ে ত্বকে এসে যায়। সেবাম উৎপাদন বেড়ে গিয়ে এবং এর নির্গমনের পথ বন্ধ হলে ব্রণ সৃষ্টি হয়ে থাকে। প্রোপাইনো ব্যাকটেরিয়াম একনে হচ্ছে ব্রণের জীবাণুর নাম। এন্ড্রোজেন হরমোনের কারণে ব্রণ বেশি হয়। এন্ড্রোজেনের প্রভাবে সেবাম নিঃসরণ বেড়ে যায়। টিনএজারদের শরীরে এই হরমোনের কার্যকারিতা বেশি হয়। যাদের ত্বক তৈলাক্ত ও মাথায় খুশকি আছে তাদের ব্রণ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। যারা ধুলোবালু ও রোদে বেশি বের হয় তাদেরও ব্রণ হতে পারে। কিছু কিছু ওষুধ ও জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়িও ব্রণের তীব্রতা বাড়ায়। ব্রণ দেখতে বিভিন্ন রকম হতে পারে। গুটিগুটি, দানাদার, লালচে গোটা, পুঁজসহ দানা, বড় চাকা ইত্যাদি হতে পারে। ব্রণের সঠিক চিকিৎসা না হলে বাজে ধরনের কালো দাগ পড়তে পারে। এ ছাড়া মুখে ছোট ছোট ক্ষত বা গর্ত সৃষ্টি হতে পারে। সৌন্দর্যহানি ও মানসিক নানা ভোগান্তির শিকার হয় ব্রণের রোগীরা। ব্রণের হাত থেকে রেহাই পেতে চিকিৎসা করা প্রয়োজন। ব্রণের চিকিৎসা দীর্ঘস্থায়ী। তাই রোগীর ধৈর্যধারণ প্রয়োজন। আধুনিক চিকিৎসার মাধ্যমে ব্রণের চিকিৎসা নিলে ব্রণ ভালো হবে। তবে এর পরে আর কখনো ব্রণ উঠবে এমন বলা যায় না। মুখ পরিষ্কার রাখা বা ত্বক সঠিক নিয়মে পরিষ্কার করা ব্রণের রোগীদের ক্ষেত্রে খুব প্রয়োজন। সঠিক সাবান দিয়ে দিনে তিনবার মুখ ধুতে হবে। আবার ব্রণের কালো দাগের রয়েছে আলাদা চিকিৎসা। তাই ব্রণের চিকিৎসার পাশাপাশি আগের ব্রণের কালো দাগ নির্মূলের জন্যও চিকিৎসা করানো প্রয়োজন। ব্রণ হলে হাত দিয়ে খুঁটবেন না এবং প্রয়োজনে চিকিৎসা করান। মনে রাখবেন, মুখ মনের আয়না।
ব্রণের সমস্যা ও প্রতিকার ডা. ওয়ানাইজা ত্বকের তেলগ্রন্থিতে প্রোপাইনো ব্যাকটেরিয়াম অ্যাকনে নামক জীবাণুর সংক্রমণে ব্রণ হয়। ব্রণ সাধারণত মুখে, কাঁধে, গলায় ও পিঠে হয়। ব্রণ ছোট, বড়, কালচে এবং পুঁজওয়ালা হতে পারে। ব্রণ হওয়ার প্রধান কারণ হচ্ছে শরীরে হরমোনের তারতম্য হওয়া। সাধারণত কিশোর এবং তরম্নণ বয়সে ব্রণ বেশি হয়। ৮০ শতাংশ কিশোর বা তরম্নণ ব্রণ সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকে। পুরম্নষ হরমোন অর্থাৎ এনড্রোজেন ত্বকের তৈলগ্রন্থিকে অতি সক্রিয় করে তোলে। এতে করে ত্বকের ছিদ্রগুলো বন্ধ হয়ে যায়। এরপর ব্যাকটেরিয়া সংক্রমিত হয় ও ব্রণ সৃষ্টি হয়। প্রতি স্কোয়ার সেন্টিমিটার মুখের ত্বকে ৪০০-৯০০ সেবাম বা তৈলগ্রন্থি থাকে অথচ অন্য জায়গায় ত্বকে ১০০ গ্রন্থি থাকে। ব্রণ হওয়ার আগেই প্রতিরোধ করা প্রয়োজন। কারণ ব্রণের কারণে মুখের ত্বকে দাগ এবং ড়্গত সৃষ্টি হতে পারে। এতে স্বাভাবিক সৌন্দর্য ব্যাহত হয়। তৈলাক্ত ত্বকে ব্রণ বেশি হয়। তাই যাদের ত্বক তৈলাক্ত তাদের সাবধান থাকা প্রয়োজন। ব্রণ প্রতিরোধে প্রতিদিন ত্বকের যত্ন প্রতিদিন ক্লিনজার দিয়ে মুখ পরিষ্কার করবেন। হাল্কা ধরনের ক্লিনজার দিয়ে দিনে তিনবার মুখ ধোবেন। মুখ ধোয়ার সময় হাল্কা গরম পানি ব্যবহার করবেন এবং রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে অবশ্যই মুখ ধোবেন। ত্বক খুব বেশি শুষ্ক করে এমন সাবান বা ক্লিনজার ব্যবহার করার প্রয়াজন নেই। ত্বকে সপ্তাহে এক দিন স্টিম ট্রিটমেন্ট করবেন। অর্থাৎ ৫ মিনিট গরম পানির ভাপ নেবেন। এতে করে ত্বকের উপরিভাগের মরা কোষ সরে যায় এবং তেলগ্রন্থির মুখগুলো খায় ও জমা তেল পরিষ্কার হয়ে যায়। তবে ব্রণ হয়ে যাওয়ার পর বাষ্প বা ভাপ না নেয়াই ভালো। ব্রণ খুঁটবেন না বা বারবার হাত দেবেন না। এতে করে সংক্রমণ বাড়তে পারে এবং ড়্গত সৃষ্টি হয়। যথাসম্ভব কম প্রসাধনী ব্যবহার করবেন। সুষম খাবার খাবেন। প্রতিদিন ২ বাটি সবজি খাবেন। তিনবার ফল খাবেন এবং ২ গ্নাস ফ্যাট ফ্রি দুধ বা দই খাবেন। নিয়মিত শরীরচর্চা করবেন। এতে করে হরমোনের তারতম্যজনিত সমস্যা কমে যায় এবং ত্বক সুন্দর হয়। ব্রণের চিকিৎসা বেনজাইল পারঅক্সাইড জেল প্রায় তিরিশ বছর ধরে বেনজাইল পারঅক্সাইড ব্রণের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হচ্ছে। প্রতি রাতে ২.৫ শতাংশ বেনজাইল পারঅক্সাইড জেল ব্যবহার করতে হয়। এভাবে এক মাস পর্যন্তô ব্যবহার করা যায়। যদি ত্বক শুষ্ক না হয়ে ওঠে তবে ৫ শতাংশ বেনজাইল পারঅক্সাইড ব্যবহার করা যায়। অ্যান্টিবায়োটিক জেল সিনডামাইসিন এবং ইরাথ্রমাইসিন জেল যথেষ্ট উপকারী। দিনে বেনজাইল পারঅক্সাইড জেল ও রাতে অ্যান্টিবায়োটিক জেল ব্যবহার করা যেতে পারে। পুঁজযুক্ত ব্রণের ড়্গেত্রে অ্যান্টিবায়োটিক ক্রিম খুব উপকারী। এজিলেইক এসিড আন্তôর্জাতিকভাবে গত ১৫ বছর ধরে এজিলেইস এসিড ব্যবহার হলেও আমাদের দেশে এর ব্যবহার নতুন। এজিলেইক এসিডও অ্যান্টিবায়োটিক। দিনে দু’বার ব্যবহার করতে হয়। ট্রিটিনইন ট্রিটিনইন ক্রিম ব্রণের চিকিৎসায় খুব ভালো। তবে অবশ্যই ত্বক বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুযায়ী ট্রিটিনইন ব্যবহার করবেন। অ্যান্টিবায়োটিক ২ থেকে ৩ মাস চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী অ্যান্টিবায়েটিক খেতে হতে পারে ব্রণ চিকিৎসার জন্য। টেট্রাসাইক্লিন বা ইরথ্রমাইসিন এ ড়্গেত্রে খেতে দেয়া হয়। আইসোট্রিটিনইন ভিটামিন এ থেকে প্রাপ্ত উপাদান আইসোট্রিটিনইন, অসাধারণভাবে কার্যকরী আইসেট্রিটিনইন। হরমোন পিল হরমোনের তারতম্যের জন্য ব্রণ হয় বলে হরমোন পিল দিয়েও ব্রণের চিকিৎসা করা হয়। পলিসিসটিক ওভারিয়ান ডিসঅর্ডারের জন্য ব্রণ হলে হরমোন পিল কিংবা পরিবার-পরিকল্পনার জন্য যে পিল ব্যবহার হয় তা দেয়া হয়। তবে রক্তে হরমোনের পরিবর্তন বা তারতম্য দেখে পিল খেতে দেয়া হয়। ব্রণের নানারকম কার্যকর চিকিৎসা আছে, কিন্তু ব্রণের চিকিৎসা দীর্ঘমেয়াদি। ধৈর্য ধরে ব্রণের চিকিৎসা নিতে হবে। আর ব্রণ অবহেলা না করাই ভালো। কেননা ব্রণের কারণে ত্বকে ড়্গত ও দাগ সৃষ্টি হতে পারে। ব্রণের চিকিৎসা নিজের ইচ্ছামতো কখনোই করবেন না। বিজ্ঞাপনে প্রচারিত কোনো পণ্য ব্যবহার করবেন না। অবশ্যই ত্বক বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুযায়ী ব্রণের চিকিৎসা নেবেন। ব্রণ সম্পর্কে কিছু ভ্রান্তô ধারণা ব্রণ আপনাআপনি ভালো হয়ে যাবে, চিকিৎসার প্রয়োজন নেই। প্রচুর তৈলাক্ত খাবার খাওয়ার কারণে ব্রণ হয়। চকলেট ও পনির খেলে ব্রণ হয়। ত্বক শুষ্ক করে এমন সাবান দিয়ে দিনে কয়েকবার মুখ পরিষ্কার করলে ব্রণ হয় না। চেম্বারঃ যুবক মেডিক্যাল সার্ভিসেস , বাড়িঃ ১৬, রোডঃ পুরাতন ২৮, ধানমন্ডি আবাসিক এলাকা, ঢাকা। ফোনঃ ৯১১৮৯০৭, ০১৯১১৫৬৬৮৪২ ব্রণ সমস্যা কারণ ও করণীয় ব্রণ সাধারণতঃ টিনএজ বা প্রাপ্ত বয়স্কদের সাধারণ ত্বকের সমস্যা যা তরম্নণীদের মধ্যে বেশী দেখা যায়। এ সমস্যা মুখে, ঘাড়ে, কাঁধে, বুকে ও পিঠে হতে পারে। ত্বকের নীচে অবস্থিত তৈলগ্রন্থির নিঃসরণ বেড়ে গেলে তার চার পাশে অবস্থিত ব্যাকটেরিয়া বা অন্য কোনো কারণে তৈলাক্ত নালী বন্ধ হয়ে গেলে নালীর মধ্যে নিঃসৃত পদার্থ জমা হয়ে ব্রণ তৈরী করে যা সাধারণতঃ বস্নাক ও হোয়াইট হেড হিসাবে থাকে না মাঝে মধ্যে লাল আভাযুক্ত ফুসকুড়ি অনেকটা অংশ জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে এবং অনেক সময় পুঁজও জমে এবং ব্যথাও হয়। মুখ মন্ডলের ত্বকে এ জাতীয় ব্রণ সবচেয়ে বেশী সমস্যার সৃষ্টি করে। কারণ সমূহঃ - বয়ঃস্বন্ধিকালে সে হরমোনের আধিক্য -মানসিক দুঃশ্চিন্তôা - মাসিক শুরম্নর এক সপ্তাহ পূর্বে বা পরে গর্ভাবস্থায় হরমোনের মাত্রার পরিবর্তন - জন্ম নিয়ন্ত্রণ বড়ি বা পিল -যে সব পিলে প্রজেষ্টরম মাত্রা বেশী থাকে - থেটরয়েড রেমোন, খিঁঁচুনি, মানসিক রোগের ঔষধ এবং টিবির ঔষুধ যেমন আইসনয়েড - হাতের উপর মুখ রেখে ঘুমানো - তৈলাক্ত ত্বকের যত্ন না নিয়ে এ ধরনের ত্বকে ব্রণ হওয়ার প্রবণতা খুব বেশী হয়। তবে নিয়মিত যত্ন নিলে ব্রণ হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে সেড়্গেত্রে ডিপ ক্লিনজিংয়ের ভূমিকা খুবই গুরম্নত্বপূর্ণ। - চকলেট বা চর্বি জাতীয় খাদ্য বা অন্য কোন খাদ্যে ব্রণ হয় না ত্বক চুলকানো বা খোঁটাখুঁটি করলে ব্রণে ইনফেকশন হয়ে দাগের সৃষ্টি হয়। তাছাড়া তৈলাক্ত ক্রিম, লোশন বা মেকআপ ব্যবহার না করা উচিত। আত্মসচেতনতার মাধ্যমে এ রোগ প্রতিরোধ বা চিকিৎসা অধিকাংশ ড়্গেত্রে সম্ভব। প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। ০ ডাঃ মোহাম্মদ শওকত হায়দার চর্ম ও যৌন, এলার্জী রোগ বিশেষজ্ঞ কুইন্স হাসপাতাল, যশোর
মুখের ব্রণ নিয়ে ভাবছেন?
তকের যত্ন নিয়ে মহিলাদের দুঃশ্চিন্তôার অন্তô নেই। সবাই চান লাবণ্যময় মসৃণ তক। বিশেষ করে মুখের ত্বকের ব্যাপারে। নো কম্প্রমাইজ। অনেকে মুখের ব্রণ নিয়েও থাকেন উদ্বিগ্ন। এখন বাংলাদেশেই ব্রণের আধুনিক চিকিৎসা হচ্ছে। সাধারণতঃ তিন ধরনের ব্রণ রয়েছে। মাইল্ড, মডারেট ও সিভিয়ার অর্থøাৎ মৃদু, মাধ্যম মাত্রার ও তীব্র ধরনের ব্রণ হতে পারে। ব্রণের চিকিৎসার বিভিন্ন পদ্ধতি রয়েছে। মৃদু ধরণের ব্রণের ড়্গেত্রে শুধুমাত্র মুখে ওষুধ ব্যবহার করলেই চলে। মধ্যম ধরনের ব্রণের ড়্গেত্রে মুখে ওষুধ ব্যবহার এবং উপযুক্ত এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করলেই চলে। তবে তীব্র ধরনের ব্রণের (ঘড়ফঁষড়পুংঃরপ ধপহব) ড়্গেত্রে সনাতনী চিকিৎসা যেমনঃ টপিক্যাল ক্রীম, মুখে এন্টিবায়োটিকসহ অন্যান্য ওষুধ ব্যবহার করা যায়। তবে অপ্রচলিত ওষুধের মধ্যে রয়েছে আইসোটেরিটিনয়েন এবং অন্যান্য ওষুধ।
তবে মুখের ব্রণ কখনও নিজের ইচ্ছামত চিকিৎসা করা ঠিক নয়। সঠিক প্রটোকল অনুযায়ী চিকিৎসা না দিলে ব্রণ বা একনি আপর হতে পারে। আমাদের দেশে বেশীরভাগ ড়্গেত্রে এক মাসের চিকিৎসায় একনি ভালো হলে ওষুধ বন্ধ করে দেয়া হয়। অনেক ড়্গেত্রে একনির ধরন অনুযায়ী ওষুধের মাত্রা নির্ধারণ করা হয় না। তাই একনি বা ব্রণ সম্পূর্ণ নিরাময় করতে হলে অবশ্যই উপযুক্ত-মাত্রার ওষুধ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবহার করতে হবে।
ব্রণঃ এক বিব্রতকর সমস্যা
ডা. ওয়ানাইজা
বয়ঃসন্ধির সময় হরমনের ক্ষরণ মাত্রার ভারসাম্যের অভাবে ত্বকের তেলগ্রন্থি ও সেবাম ক্ষরণ বেড়ে যায়। এতে রোমকুপগুলো বন্ধ হয়ে যায় ও ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ হয়। এভাবে জীবাণুর বিষক্রিয়ায় ত্বকে ব্রণের সৃষ্টি হয়। ব্রণের জীবাণুর নাম প্রোপাইনো ‘ব্যাকটেরিয়াম অ্যাকনে’।
কখন ও কোথায় ব্রণ হয়
বয়ঃসন্ধির সময় প্রথম ব্র্রণ দেখা যায়। ছেলেদের ক্ষেত্রে ১৬-১৯ বছর বয়সের মাঝে এবং মেয়েদের ১৪-১৬ বছর বয়সে ব্রণ হওয়ার প্রবণতা দেখা যায়। ৮০ শতাংশের ক্ষেত্রে ২০ বছর বয়সের মাঝামাঝি সময় থেকে ব্রণ হওয়ার হার কমে যেতে থাকে। তবে অনেকের ৩০-৪০ বছর বয়স পর্যন্ত ব্রণ হওয়ার প্রবণতা থেকেই যায়। ব্রণ সাধারণত মুখেই দেখা যায়, তবে পিঠে, ঘড়ে ও বুকেও হতে পারে।
কী কারণে ব্রণ বেড়ে যায়
গরমকালে ব্রণ হওয়ার প্রবণতা অনেক বেড়ে যায়। বেশি ঘামলে সেবেশাস ও তৈলগ্রন্থির নালি বন্ধ হয়ে ব্রণ হতে পারে। এ ছাড়া নানারকম কসমেটিকের কারণে ব্রণ হতে পারে। তেলতেলে চুল ও মাথার খুশকি থেকে ব্রণ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। মানসিক চাপ ও পর্যাপ্ত ঘুম না হলেও ব্রণ হওয়ার প্রবণতা বেড়ে যায়। তা ছাড়া পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং মহিলাদের মাসিক ঋতুস্রাবের সাথেও ব্রণের সম্পর্ক রয়েছে।
ব্রণ হলে কী করবেন
ষ দিনে তিন-চারবার হালকা সাবান বা ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ধুবেন।
ষ ব্রণে হাত লাগাবেন না।
ষ তেল ছাড়া অর্থাৎ ওয়াটার বেসড মেকআপ ব্যবহার করবেন।
ষ মাথা খুশকিমুক্ত রাখার চেষ্টা করুন।
ষ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকুন এবং নিজের আলাদা তোয়ালে রাখুন।
ষ রাতে ঠিকমতো ঘুমানোর চেষ্টা করবেন।
ষ মানসিক চাপ পরিহার করুন।
ষ প্রচুর পরিমাণে ফল, সবজি খান ও প্রচুর পানি পান করুন।
ব্রণ হলে কী করবেন না
ষ রৌদ্রে যাবেন না, রৌদ্র এড়িয়ে চলুন।
ষ তেলযুক্ত ক্রিম বা ফাউন্ডেশন ব্যবহার করবেন না।
ষ ব্রণে হাত লাগাবেন না। ব্রণ খুঁটবেন না।
ষ চুলে এমনভাবে তেল দেবন না যাতে মুখটাও তেলতেলে হয়ে যায়।
ষ অতিরিক্ত তেল, ঘি, মাশলা খাবেন না।
কেন ব্রণের চিকিৎসা করাবেন
ব্রণ হলে ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া উচিত। কারণ চিকিৎসা না করালে অনেক সময় ব্রণ ত্বকের মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে। ত্বকে গভীর প্রদাহ সৃষ্টি হতে পারে। আর ব্রণ হলে চেহারা খারাপ দেখানোর কারণে হীনম্মন্যতা ও অন্যান্য সমস্যা হতে পারে। শুরুতেই তাই এর সঠিক চিকিৎসা দরকার।
ব্্রণের চিকিৎসা
ব্রণের চিকিৎসার জন্য বিশেষত বা জার্মাটোলজিস্টের শরণাপন্ন হলে ভালো হয়। ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া ব্রণে অন্যের কথা শুনে বা নিজের পছন্দসই কোনো ওষুধ লাগাবেন না। কতটা বেশি ব্রণ হয়েছে তার ওপর নির্ভর করে খাবার ও লাগানোর জন্য এন্টিবায়োটিক ওষুধ দেয়া হয়। তবে ব্রণের চিকিৎসা সময় সাপেক্ষ। তাই ধৈর্য ধরতে হবে আপনাকে। হঠাৎ চিকিৎসাপদ্ধতি বা ডাক্তার বদলাবেন না।
ব্রণ ও খাওয়া দাওয়া
মানুষের খাদ্যাভাস ব্রণকে প্রভাবিত করে কি না সে বিষয়ে এখনো গবেষণা চলছে। দেখা গেছে ব্রণ হওয়ার উপাদানগুলোর মাঝে খাওয়া-দাওয়া এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। প্রথমত, শরীরে ট্রক্সিক উপাদান যাতে বেরিয়ে যায় এজন্য প্রচুর পানি পান করতে হবে। নিয়মিত খাদ্য তালিকায় আঁশযুক্ত খাবার রেখে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে হবে। হজম যাতে ঠিকমতো হয় সেজন্য অতি মসলাযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন; তেল, চর্বি এড়াতে হবে। পালংশাক ও লেটুসপাতা ব্রণ বাড়িয়ে দেয় বলে জানা গেছে। ক্লোরাইড ও ব্রোমাইডযুক্ত ওষুধ, সামুদ্রিক মাছ, মাখন, পনির এগুলো ব্রণ বাড়িয়ে তোলে। চা-কফিও দুই কাপের বেশি দিনে পান করা যাবে না। প্রচুর ফল ও সবজি খেতে হবে। ভিটামিন ‘এ’ ও ‘সি’ সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া জরুরি। গাজর, কুমড়া, পেঁপে, পুঁইশাক ও যেকোনো রঙিন ফল ও সবজিতে ভিটামিন ‘এ’ রয়েছে আর ‘সি’ রয়েছে কাঁচা ফল ও যেকোনো টক ফলে।
তবে এমন ধারণা ঠিক নয় যে, এ ধরনের খাদ্যাভাস করলে ব্রণ একেবারেই হবে না। বলা যেতে পারে, ব্রণ হওয়ার আশঙ্কা হ্রাস পাবে। তবে যাদের ব্রণ হচ্ছে তাদের বলছি নিরাশ হওয়ার কিছু নেই। সঠিক চিকিৎসার কিছু নিয়ম মেনে চলা আর খাদ্যাভাসের মাধ্যমে ব্রণ থেকে রেহাই পাওয়া সম্ভব।
চেম্বারঃ যুবক মেডিকেল সার্ভিসেস লিমিটেড, বাড়ি-১৬, রোড-১৫ (নতুন), ২৮ (পুরাতন), ধানমন্ডি আবাসকি এলাকা, ঢাকা। মোবাইলঃ ০১১৯৯০৪১৬১৬, ০১৯১১৫৬৬৮৪২