Tuesday, June 10, 2008

Dental (দাতের রোগ)

দাঁত তুললে চোখের ড়্গতি
ডাঃ আসফিকা হোসেন জুঁই

আমরা দন্তô চিকিৎসকরা প্রায়ই একটি প্রশ্নের সম্মুখীন হই যে, দাঁত তুললে চোখের ড়্গতি হবে কিনা। এটি একেবারেই অমূলক এবং ভ্রান্তô একটি ধারণা। দাঁত প্রদাহ হলে ব্যথাটি অতি দ্রম্নত ছড়িয়ে পড়ে চোখে। পালপাইটিস (চঁষঢ়রঃরং) নামক দাঁতের এই রোগটিই মূলত ভীতির কারণ হয়ে দাঁড়ায় রোগীদের নিকট। কেননা ব্যথাটি তখন অতি দ্রম্নত ছড়িয়ে পড়ে যে পাশের দাঁতে ব্যথা সে পাশে চোখের দিকে। আর এতেই অধিকাংশ ভুক্তভোগী রোগীগণ মনে করেন দাঁতের সাথে চোখের সম্পর্ক আছে। এছাড়াও উপরের দাঁতের শিকড়গুলো (জড়ড়ঃং) চোখের কাছাকাছি অবস্থানতৈাই এটিও রোগীদের দুর্ভাবনার অন্যতম একটি কারণ।

এই ধারণাগুলো সম্পূর্ণ ভুল। কেননা দাঁত এবং চোখ দুটি আলাদা আলাদা স্নায়ুতন্ত্রের সাথে জড়িত। এদের স্নায়ুপ্রবাহ এবং রক্তপ্রবাহ দুটিই স্বতন্ত্র।

চোখের স্নায়ুপ্রবাহ হচ্ছে অপথালমিক ডিভিশন অব ট্রাইজেমিনাল নার্ভ এবং নিচের দিকে হচ্ছে ম্যাঙ্লিারি ডিভিশন অব ট্রাইজেমিনাল নার্ভ। রক্ত প্রবাহিত হয় অপথালমিক এবং ল্যাক্রিমাল আর্টারি দ্বারা। অন্যদিকে উপরের পাটির দাঁতে স্নায়ুপ্রবাহ দেয়া হলো, অ্যান্টিরিয়র পোস্টিরিয়র, মিডল সুপিরিয়র নার্ভ। নিচের পাটিতে দেয় ইনফিরিয়র অ্যালভিওলার নার্ভ ব্রাঞ্চ অব ম্যান্ডিবুলার নার্ভ।

সুতরাং দেখা যাচ্ছে যে, দাঁত এবং চোখ দুটি ভিন্ন ভিন্ন গঠনে সজ্জিতযৈার একটির সাথে অপরটির কোন সম্পর্ক নেই।


পেরিকরোনাইটিস দাঁতের সমস্যা


ক’দিন যাবৎ লাবনী কলেজে যাচ্ছে না। তার বান্ধবীরা বাসায় ফোন করে জানতে পারল তার দাঁত ব্যাথা হচ্ছে এবং মুখ ফুলে গিয়ে খাওয়া-দাওয়া প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। মুখ খুলতে পারছে না।

আমাদের দেশে সাধারণতঃ ১৮-২৫ বছরের যুবক-যুবতীরা এ জাতীয় সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকেন। আক্কেল দাঁতের এই সমস্যাকে পেরিকরোনাইটিস বলা হয়। সাধারণতঃ দাঁত গজানোর সময় বা আংশিক গজানো অবস্থায় দাঁতের উপরস্থ বা পার্শ্বস্থ টিস্যুর সংক্রমিত অংশ পেরিকরোনাইটস নামে পরিচিত।

এ রোগের লড়্গণঃ

১· আপনার বয়স যদি হয় ১৮-৩০ বছর।

২· কয়েকদিন যাবৎ নিচের চোয়ালের সর্বশেষ প্রান্তেô চাপা চাপা ব্যথা অনুভব করছেন।

৩· খাবার সময় বা দাঁত ব্রাশ করার সময় ঐ স্থানে ব্যথা অনুভব হচ্ছে।

৪· মুখে দুর্গন্ধ হচ্ছে।

৫· ধীরে ধীরে মুখ ফুলে যাচ্ছে এবং সামান্য চাপ লাগলে পুঁজ বেরম্নচ্ছে।

৬· হা করতে কষ্ট হচ্ছে, কোন কিছু চিবিয়ে খেতে পারছেন না। শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে, দুর্বল অনুভব করছেন।

চিকিৎসাঃ এড়্গেত্রে ঐ দাঁতের এক্স-রে করতে হবে। এতে যদি দেখা যায় দাঁতের গতি ভাল তাহলে দাঁতের উপরস্থ অপারকুলাম টিস্যুগুলো ছোট একটি অপারেশনের মাধ্যমে অপসারণ করলে দাঁতটি স্বাভাবিক গতিতে গজাতে পারবে। পেরিকরোনাইটস দাঁতের বৃদ্ধির সময় হলে তাই এর জটিলতা এড়াতে সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্তô নেয়া একে অবহেলা করবেন না। তবে অব্যশই অভিজ্ঞ ডেন্টাল সার্জনের সহায়তায় চিকিৎসা করাই উত্তম। বছরে অন্তôতঃ দু’বার আপনার ডেন্টাল সার্জনের পরামর্শ নিন।

০ ডাঃ নাহিদ ফারজানা

সিনিয়র লেকচালার, সিটি ডেন্টাল কলেজ এন্ড হস্‌পিটাল, চীফ কনসালটেন্ট, নাহিদ ডেন্টাল কেয়ার ২১৬/বি, এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।


ভাঙাদাঁত কতটুকু ক্ষতিকর

ডা. নাহিদ ফারজানা
লেখকঃ সিনিয়র লেকচারার, সিটি ডেন্টাল কলেজ অ্যান্ড হসপিটাল, চিফ কনসালটেন্ট, নাহিদ ডেন্টাল কেয়ার, ২১৬/বি, এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫। মোবাইলঃ ০১৭১২-২৮৫৩৭২।

গত দু’বছর আগে মুড়ি খেতে গিয়ে পঞ্চাশোর্ধ রহমান সাহেবের ওপরের চোয়ালের পেছনের দিকে দুটো দাঁত ভেঙে যায়। কিন্তু তিনি তাতে ভ্রুক্ষেপ করলেন না। সমস্যা হলেও এমনিভাবেই দুটো বছর কাটিয়ে দিলেন। ধীরে ধীরে ব্যথা শুরু হলো। আর ব্যথা হলেই গইইঝ ডাক্তারের কাছ থেকে পাওয়া ব্যথার ওষুধ খেয়েই তিনি আরো বছরখানেক কাটিয়ে দিলেন। এবার হঠাৎ করেই এমন ব্যথা শুরু হলো যে, কোনো ব্যথার ওষুধই কাজে লাগছে না। প্রচণ্ড ব্যথায় রাতে তিনি ঘুমাতে পারলেন না। দিনে ঠিকমতো অফিস করতে পারলেন না। মুখটা এক পাশে ফুলে ঢোল হয়ে গেছে। এমতাবস্থায় অফিসে তার এক সহকারী সুচিকিৎসার জন্য এক ডেন্টাল সার্জনের কাছে নিয়ে গেলেন এবং তখন রহমান সাহেবের দাঁতের অবস্থা এতটাই খারাপ হয়ে গিয়েছিল যে শেষের দাঁত দুটো ফেলে দিতে হলো। ফলে তিনি ওই পাশ থেকে খাওয়া-দাওয়া ঠিকমতো করতে পারছেন না। সারাক্ষণ তার এত বড় ভুলের খেসারত নিয়ে তিনি কষ্ট পাচ্ছেন। কথা হলো শিক্ষিত মানুষ যদি জেনেশুনে এভাবে ভুল করে, তাহলে দেশের আপামর জনসাধারণ কী করবে? ভাঙা দাঁত দীর্ঘ দিন ব্যথাহীন অবস্থায় থাকতে পারে। যেমন- ষ দীর্ঘদিন দাঁতে ক্যারিজ বা গর্ত থাকলে যা প্রথম দিকে শির শির অনুভূতি, ঠান্ডা-গরম যেকোন খাবার মুখে নিলে ব্যথা হতে পারে। একসময় দাঁতের অভ্যন্তরস্থ দন্তমজ্জা তার স্বাভাবিক অনুভূতি হারিয়ে ফেলে। এ অবস্থায় দাঁতের আরো কিছুটা অংশ ভেঙে গেলেও কোনো ব্যথা অনুভব হয় না। ষ একটি দাঁতের অধিকাংশ অংশ ক্ষয়প্রাপ্ত হওয়ার কারণে রুট ক্যানেল চিকিৎসা করার পর ওই দাঁতে ক্যাপ বা ক্রাউন না করা হলে এক সময় সম্পূর্ণ দাঁত ভেঙে যেতে পারে এবং দাঁত ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি থাকে। এতেও অনেক সময় ব্যথার কোনো অনুভূতি হয় না। ষ হাতুড়ে ডাক্তারের কাছে দাঁত তোলার পর দাঁতের ভাঙা অংশ হাড়ের মাঝেই বিদ্যমান থাকে এবং দেখা যায় সেখানেও কোনো ব্যথা থাকছে না। কিন্তু পরে অবশ্যই সেই রোগীর ব্যথা হবে এবং ইনফেকশন ছড়িয়ে পড়বে।
ভাঙা দাঁত মুখে যেসব সমস্যা সৃষ্টি করতে পারেঃ ভাঙা দাঁতের ভেতরে অবস্থিত দন্তমজ্জায় পচন ধরার ফলে ধীরে ধীরে সংক্রমণ বৃদ্ধি পেতে থাকে। যার ফলে পাশের দাঁতেও সমস্যা হতে পারে। ষ ইনফেকশন বৃদ্ধি পেয়ে মুখের হাড়ে অসটিওমাইলাইটিস জাতীয় জটিল রোগ সৃষ্টি হতে পারে। ষ ভাঙা দাঁতের গর্তে বা ফাঁকা স্থানে ঢুকে থাকা খাদ্যকণা মুখে দুর্গন্ধ সৃষ্টি করে।
ষ ভাঙা দাঁতের ধারালো অংশের ঘর্ষণে জিহ্বার বা গালের নরম অংশে ঘা হতে পারে। এই ঘা কিছুদিন পর ভালো হয়, আবার আঘাতের ফলে সেই ঘা জেগে ওঠে। এভাবে কিছুদিন পর পর এ অবস্থার পুনরাবৃত্তি হতে থাকলে তা ক্যান্সারে রূপ নিতে পারে। দাঁত ভেঙে গেলেই যে তুলে ফেলতে হবে এমনটি নয়। কারণ দন্ত চিকিৎসা এখন খুবই উন্নত ও আধুনিক হয়েছে। এক-একটি ভাঙা দাঁতকে রাখার জন্য রুট ক্যানেল করে পোরসেলিন বা মেটালিক ক্যাপ করে সংরক্ষণ করা সম্ভব। তাই দুশ্চিন্তার কিছু নেই। সময়মতো সুচিকিৎসাই নিশ্চিত করতে পারে আপনার সুন্দর হাসি। তবে একটি কথা, অবশ্যই অভিজ্ঞ ডেন্টাল সার্জনের সাহায্যেই কাজ করানো উচিত তা না হলে ভালোর চেয়ে ক্ষতিই বেশি হবে।


সুন্দর দাঁতের জন্যে স্বাস্থ্যসম্মত খাবার

মনকাড়া হাসির জন্য চাই সাদা, ঝকমকে সুন্দর দাঁত। কেবল মাত্র নিয়মিত সঠিক নিয়মে দাঁত ব্রাশ, ফ্লসিং ইত্যাদিই এর জন্য যথেষ্ট নয় ৈএড়্গেত্রে প্রতিদিন স্বাস্থ্যসম্মত খাবার গ্রহণও জরম্নরি। আমেরিকান ডেন্টাল হাইজিনিস্টস্‌ এসোসিয়েশনের এক তথ্যগত সূত্রে জানা যায় দাঁতের স্বাভাবিক সৌন্দর্য এবং স্বাস্থ্য ধরে রাখতে হলে কিছু সুনির্বাচিত খাবার গ্রহণ খুবই গুরম্নত্বপূর্ণ।

এগুলো হচ্ছেঃ

একঃ নিয়মিত ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন ‘ডি’ সমৃদ্ধ দুধ বা দুগ্ধজাত খাবার গ্রহণ করা। দাঁত এবং অস্থিকে শক্ত ও মজবুত করে গড়ে তুলতে ক্যালসিয়াম অপরিহার্য অন্যদিকে ক্যালসিয়াম পরিশোষণে ভিটামিন ‘ডি’ দরকার। প্রয়োজনে কমচর্বিযুক্ত বা লোফ্যাট দুগ্ধজাত খাবার এবং স্কিম্‌ড বা ননীমুক্ত দুধ গ্রহণ করা যেতে পারে।

দুইঃ বি-ভিটামিনযুক্ত খাবার যেমন শস্যদানা, রম্নটি, ইত্যাদি আমাদের দাঁতসহ দেহের সার্বিক স্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজন। এসব খাবার লৌহ সমৃদ্ধ থাকায় রক্তের পুষ্টিতেও সাহায্য করে।

তিনঃ ভিটামিন ‘সি’ সমৃদ্ধ রকমারী ফল, শাক-সবজি বিশেষত লেবু জাতীয় ফল এবং ঘন সবুজ শাক-সবজি দাঁত ও মাড়ির স্বাস্থ্য সুরড়্গায় খুবই দরকারী।

চারঃ মাছ, চর্বিবিহীন মুরগীর মাংস, চর্বিহীন কচি রেডমিট ইত্যাদি প্রোটিন এবং আয়রণের যোগান দেয় যা দাঁতসহ দেহের প্রতিটি অঙ্গের বৃদ্ধি ও পুষ্টির জন্য জরম্নরি। বাদাম এবং সীমজাতীয় সব্‌জি (ঘঁঃং ধহফ নবধহং ম্যাগনেশিয়াম এবং জিঙ্ক সমৃদ্ধ থাকায় দাঁত এবং অস্থিকে মজবুত করে।

পাঁচঃ চিনিযুক্ত খাবার, মিষ্টি, চকোলেট, লজেঞ্জ বা ক্যান্ডিস, চুইংগাম, চিনিযুক্ত জুস, সফ্‌ট ড্রিংক ইত্যাদি খাবার খেয়ে অবশ্যিই দাঁতকে পরিষ্কার রাখা প্রয়োজন। চিনি বা শর্করা দাঁতে জমে ডেন্টাল পস্নাক তৈরি করে এবং এসিড উৎপন্ন হয় যা দাঁতের এনামেলকে ড়্গয় করে দেয়। দাঁতকে সুস্থ রাখতে চিনিমুক্ত তাজা জুস, ফল, বাদাম ইত্যাদি খেতে অভ্যস্তô হোন।

ম কায়েদ-উয-জামান, সহকারী অধ্যাপক, জীববিজ্ঞান বিভাগ

শহীদ জিয়াউর রহমান কলেজ, জামালপুর।


দাঁতের মাড়িতে রক্তড়্গরণ

“ডাক্তার সাহেব দু’মাস যাবৎ দাঁত মাজতে পারছি না মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়ে, সকালে ঘুম থেকে উঠে কুলি করতে গেলে মুখ ভর্তি রক্ত আসে; কি করব আমার উপযুক্ত চিকিৎসা দেন।”

আমাদের দেশে অনেক রোগীর মুখেই এ ধরনের সমস্যার কথা শোনা যায়। এটা আর কিছুই নয়, এটা হ’ল দাঁতের মাড়ির রক্তড়্গরণ।

মাড়িতে রক্তড়্গরণের কারণসমূহঃ

১জ্ঝ আঘাতের ফলে মাড়ি থেকে রক্তড়্গরণ হতে পারে যেমন- > ভুল পদ্ধতিতে দাঁত ব্রাশ করলে। > টুথ পিক দিয়ে দাঁত পরিস্কার করার সময়। > দাঁতের মাঝে শক্ত খাবার ঢুকে জমে থাকলে। > শক্ত খাবার চিবানোর সময় যেমন- আপেল, আখ ইত্যাদি এ জাতীয় খাবার খাওয়ার সময়।

২জ্ঝ মাড়িতে দীর্ঘদিন যাবৎ ঘা হলে রক্তড়্গরণ হতে পারে। ৩জ্ঝ দাঁত ও মাড়ির মধ্যেকার যোজককলা সংক্রমিত হলে। ৪জ্ঝ মাড়িতে আলসার হলে। ৫জ্ঝ দেহে রক্তড়্গরণ বন্ধ না হওয়া জাতীয় সমস্যা থাকলে। ৬জ্ঝ ভিটামিন ‘সি’ এর অভাবে মাড়িতে রক্তড়্গরণ হতে পারে। ৭জ্ঝ রক্তকণিকার সমস্যা থাকলে-যেমনঃ -ইডিওপেথিক থ্রোম্বোসাই টোপেনিক পারপুরা। ৮জ্ঝ ভিটামিন ‘কে’-এর অভাব থাকলে। ৯জ্ঝ দেহে স্বাভাবিকভাবে রক্ত জমাট বাঁধার সমস্যা থাকলে, যেমনঃ হেমোফিলিয়া, ক্রিসমাস ডিজিজ, লিউকেমিয়া। ১০জ্ঝ গর্ভাবস্থা।

প্রতিকারঃ রোগীকে সরাসরি দেহে রোগীর সমস্যা বুঝাতে হবে। রক্তে হেমোগেস্নাবিন কত ভাগ আছে, ইজ্ঝএসজ্ঝআর, রক্ত কণিকাগুলোর মোট সংখ্যা, ইত্যাদি।

এ’ছাড়াও রক্তজমাট বাঁধা সম্বদ্ধে জানতে বিজ্ঝটি, সিজ্ঝটি, চজ্ঝঞ সম্বন্ধে জানতে হবে।

চিকিৎসাঃ

> রক্ত পরীড়্গার রিপোর্ট দেখতে হবে।

> রোগীর দাঁতে পাথর/ক্যালকুলাস বেশী থাকলে তা’ ভালভাবে স্কেলিং ও পলিশিং করতে হবে।

> যদি গুরম্নতর কোন সমস্যা ধরা পড়ে যেমন

> লিউকেমিয়া বা অন্য কোন সিস্টেমিক সমস্যা থাকে তবে সেই সমস্যার চিকিৎসা করাতে হবে।

০ ডাঃ নাহিদ ফারজানা

সিনিয়র লেকচারার, সিটি ডেন্টাল কলেজ এন্ড হস্‌পিটাল

চীফ কনসালটেন্ট, নাহিদ ডেন্টাল কেয়ার

২১৬/বি, এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।


দাঁত ব্যথাঃ ফিলিং না রুট ক্যানেল
‘ডাক্তার সাহের দাঁতে প্রচণ্ড ব্যথা, নাওয়া-খাওয়া আজ ৩ দিন যাবৎ বন্ধ হয়ে গেছে, একটু ফিলিং করে দেনতো।’

আমাদের দেশে বেশিরভাগ রোগীর মুখেই এই কথাটি শোন যায়। তবে এ কথাটির মধ্যে যে ভুলটি রয়েছে, তা হলো দাঁতের সঠিক চিকিৎসা সম্বন্ধে রোগীর ভুল ধারণা। আর এই ধারণাটি হল দাঁতটিতে ফিলিং করা হবে নাকি রম্নট ক্যানেল করা হবে।

দাঁতে তিনটি স্তôর থাকে। প্রথম স্তôর এনামেল, দ্বিতীয় স্তôর ডেন্টিন এবং সর্বশেষ এবং মাঝের স্তôরের নাম পাল্প বা দন্তôমজ্জা। যখন দাঁতে ক্যারিজ বা দন্তôড়্গয় হতে শুরম্ন করে তখন প্রথমে তা এনামেল দিয়ে শুরম্ন করে যথাক্রমে নিচের দিকে বিস্তôার লাভ করে। এই দন্তôড়্গয় যখন ডেন্টিন পর্যন্তô পৌঁছায় তখন দাঁতে ফিলিং দিয়ে দাঁতটি সংরড়্গণ করা সম্ভব হয়। এড়্গেত্রেও কথা আছে যদি দেখা যায় দাঁতটি বেশি ঝবহংধঃরাব -এর প্রায় দন্তôমজ্জার কাছাকাছি তখন দাঁতে ফিলিং এর নিচে ঝঁননধংব হিসাবে এরকম সধঃবৎরধষ দেয়া হয় যাতে ঠান্ডা, গরম এবং অন্যান্য খাবারের অনুভূতি বেশি না হয় এবং ঝবপড়হফধৎু উবহঃরহব ঋড়ৎস করে দন্তôমজ্জা রড়্গা করে।

তারপর চবৎসধহধহঃ ঋরষষরহম দিয়ে দেয়া হয়। কিন্তু যদি দেখা যায় দাঁতের সংক্রমণ ডেন্টিনকে ছাড়িয়ে চঁষঢ় বা দন্তôমজ্জাকে ছুঁয়ে গেছে সেড়্গেত্রে আর ঋরষষরহম করা চলবে না। যদি কেউ ভুল করে কোন ফিলিং দেয়, তবে সেখানে ব্যথা আরো বেশি হবে দাঁতের মধ্যকার পচন বস্তুগুলো বাইরে বের হতে না পেরে দাঁতের গোড়া দিয়ে জমা হবে এবং তা ফুলে যেতে পারে এবং ঝরহপঁং দিয়ে তার পুঁজ বের হয়ে আসবে। যা হোক এ ড়্গেত্রে তখন চধঃরবহঃ-এর সংশিস্নষ্ট দাঁতে জড়ড়ঃ ঈধহধষ করতে হবে। জড়ড়ঃ ঈধহধষ হচ্ছে ঐ দাঁতের উপযুক্ত ঞৎবধঃসবহঃ এড়্গেত্রে জড়ড়ঃ ঈধহধ -এর আগে ঐ দাঁতের একটা এরে করে দাঁতের অবস্থা সম্বন্ধে ভালভাবে বুঝে নিতে হবে।

প্রিয় পাঠকবৃন্দ এবারে বুঝলেন তো রম্নট ক্যানেল এবং ফিলিং-এর পার্থক্য। রোগী তো আর জানেন না তার দাঁতের উপযুক্ত চিকিৎসা কোনটি তাই এটা আমরা যারা ডেন্টাল সার্জন আছি, তারাই বুঝব রোগীর দাঁতের কাজ কি হবে। তবে বর্তমানে অনেক কোয়াক আছে যারা নিজেকে ডাক্তার বলে দাবি করে, তাদের কাছে না গিয়ে একজন ডেন্টাল সার্জনের পরামর্শ নিয়ে আপনার দাঁতের সুচিকিৎসা করান। সময় থাকতে দাঁতকে বাঁচান-দাঁতকে মর্যাদা দিন।

ডাঃ নাহিদ ফারজানা,

সিনিয়র লেকচারাল, সিটি ডেন্টাল কলেজ এন্ড হস্‌পিটাল, চেম্বারঃ নাহিদ ডেন্টাল কেয়ার, ২১৬/বি, এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫। মোবাইলঃ ০১৫৬৩২৩৪০৩।

সুস্থ দাঁতের জন্য

এটা অনেকের বিশ্বাসই হয় না যে, হার্টের সুস্থতা, দাঁতের সুস্থতার উপর নির্ভর করে। দীর্ঘস্থায়ী পেরিওডন্টাল ডিজিজের কারণে হার্ট এ্যাটাক এবং স্ট্রোক হতে পারে। মাড়ির দীর্ঘস্থায়ী ইনফেকশনের ফলে এই পেরিওডন্টাল ডিজিজ হয়। তবে মাড়ির অপেড়্গাকৃত কম মারাত্মক রোগ-জিনজিভাইটিস প্রায় সবারই হয়। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে পেরিওডন্টাল ডিজিজ নিয়ে। এড়্গেত্রে দাঁতের এবং মাড়িতে যে পস্নাক জমে, তাতে প্রচুর ব্যাকটেরিয়া থাকে। এসব ব্যাকটেরিয়া ক্রমাগত বিভিন্ন ঢঙ্নি ছাড়তে থাকে। ফলে অনাক্রম্য প্রক্রিয়া সজাগ হয় ও প্রচুর পরিমাণে শ্বেত রক্তকনিকা প্রেরণ করে। দাঁতের মাড়িতে এসে এরা কিছু পদার্থ নিঃসরণ করে। ফলে এই দুই জাতের পদার্থের সংমিশ্রণে দাঁতের দৃঢ়তাদানকারী কলা ড়্গয়প্রাপ্ত হয়। ফলে দাঁত পড়ে যায়। সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা যায় যে, পেরিওডন্টাল ব্যাকটেরিয়া যেসব ঢঙ্নি ছাড়ে, সেগুলো শিরা ও ধমনীতন্ত্রের উপরও বিরূপ প্রভাব ফেলে। জার্নাল ‘স্ট্রোক’ এ প্রকাশিত আমেরিকার একটি ইপিডেমিলজিক্যাল সমীড়্গা থেকে দেখা যায় যে, বেশী বেশী দাঁত পড়ে যাওয়া হার্ট এটাক ও স্ট্রোক-এর সাথে জড়িত। ‘সাকুêলেশনে’ প্রকাশিত অপর একটি সমীড়্গায় বলা হয় যে, দাঁতের পেরিওডন্টাল ব্যাকটেরিয়া বেশী থাকে। তাদের ক্যারোটিড ধমনীর লাইনিং অনেক মোটা হয়ে যায়-যেটা হার্ট এটাক ও স্ট্রোক-এর অন্যতম কারণ। অপর একটি সমীড়্গায় দেখা যায় যে, এসব লোকদের খারাপ এলভিএল বেশী থাকে। তবে আশার কথা এই যে, যারা পেরিওডন্টাল ডিজিজের চিকিৎসা করিয়ে নেন, তাদের প্রদাহজনিত প্রোটিন-সিআরপি, ইন্টারলিউকিস-৬ কম থাকে। ধমনীর কাজ ত্বরান্বিত হয় এবং কোলেস্টেরল এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আসে। শুধু দাঁতের যত্ন নয়, দাঁত সুরড়্গার জন্য প্রয়োজন পুষ্টিকর খাবার।

ডায়াবেটিস থেকে মাড়ির রোগ


ডায়াবেটিস রোগটির সাথে মাড়ির রোগের সম্পর্ক এখন প্রতিষ্ঠিত সত্য। ইতিমধ্যে বৈজ্ঞানিক গবেষণায় বেশ উলেস্নখযোগ্য মিল খুঁজে পাওয়া গেছে। একজন ডায়াবেটিস রোগীর মুখের ভেতরে নানান ধরনের রোগ হতে পারে, যেমন- ডেন্টাল ক্যারিজ, মাড়ির রোগ, মুখের বিভিন্ন ধরনের সাদা ঘা, দাঁতের ড়্গয়, কোষ প্রদাহ, আঁকাবাঁকা দাঁত ইত্যাদি। এই সমস্তô রোগ দাঁতের বা মুখের অসুস্থতার কারণেই শুধু নয়, দেহের অন্য কোন রোগ, অপুষ্টি বা বিপাকজনিত কারণেও হতে পারে। তাই অনেক সময় দেহের অন্যান্য রোগের লড়্গণ মুখের ভেতরে লড়্গ্য করা যায়। মুখের রোগগুলোর মধ্যে ডেন্টাল ক্যারিজ ও মাড়ির প্রদাহই পৃথিবীর সব দেশে বেশি।

ডায়াবেটিস রোগীদের মাড়ির প্রদাহ বেশি হওয়ার কারণ হলো-

(৬) দেহে ইনসুলিন ঘাটতি হলে আমিষেরও ঘাটতি হয়, ফলে কোষকলার স্বাভাবিক বৃদ্ধি, সংস্কার ও উৎপাদন ব্যাহত হয়। তাই মুখের কোন স্থানে ঘা হলে ও প্রদাহ থাকলে শুকাতে বিঘ্ন ঘটে।

(৭) দেহে রোগ প্রতিরোধ শক্তি কমে আসে, ফলে দাঁতের গোড়ায় পস্নাক জমা থাকলে সহজেই মাড়ির প্রদাহ শুরম্ন হয়। ডায়াবেটিস রোগীদের দন্তôড়্গয় বা ডেন্টাল ক্যারিজ রোগ হতে পারে। তার কারণ হিসেবে বিজ্ঞানীরা উলেস্নখ করেছেন-

(ক) মুখের লালার সাথে গস্নুকোজ মুখে এক ধরনের অণুবীড়্গণিক জীবাণুর সাথে মিশে অম্স্ন বা এ্যাসিড তৈরি করে। এই অম্স্ন দাঁতের শক্ত আবরণ এনামেলকে ড়্গয় করতে থাকে এবং ধীরে ধীরে দাঁতের ভেতরে গর্তের সৃষ্টি করে।

(খ) মুখের লালার স্বাভাবিক গতি ব্যাহত হয় এবং পরিমাণ কমে যায়, ফলে মুখের অতিরিক্ত শুকনো পরিবেশে আহারের কণাগুলো ধুয়ে মুছে যেতে পারে না। এই খাদ্য কণাগুলো দীর্ঘদিন দাঁতের গায়ে বা ফাঁকে জমে থেকে দাঁতের ড়্গয়রোধের পরিবেশ সৃষ্টি করে।

ডেন্টাল পস্নাক কি?


মুখে খাদ্যকণা জমে থেকে যে আবরণ সৃষ্টি হয় এর নাম ডেন্টাল পস্নাক। এই ডেন্টাল পস্নাক লড়্গ লড়্গ অণুবীড়্গণিক জীবাণুর সমষ্টি। মুখের দুই প্রধান রোগ ডেন্টাল ক্যারিজ ও মাড়ির প্রদাহে ডেন্টাল পস্নাকই দায়ী। ডায়াবেটিস রোগীদের যে কারণে ডেন্টাল পস্নাক বৃদ্ধি পেতে পারে সেগুলো হচ্ছে-

(৭) ডায়াবেটিস রোগ দেখা দেয়ার পূর্বেই যাদের মাড়ির প্রদাহ বা দন্তôাবরক প্রদাহ থাকে তাদের প্রদাহ নিঃসৃত রস বৃদ্ধি পায়, ফলে ডেন্টাল পস্নাকও বাড়তে থাকে।

(৮) বৃহৎ ড়্গুদ্র লালা গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত রস বৃদ্ধি পায় এবং তা খাদ্যকণার সঙ্গে মিশে পস্নাক তৈরি করে।

(৯) দাঁত দিয়ে খাদ্যদ্রব্য চিবানোর কর্মড়্গমতা যাদের কমে যায় (ডায়াবেটিস রোগীর মাড়ির সংক্রমণ) তাদের মুখেও পস্নাকের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। ডায়াবেটিস রোগীদের খাদ্য নিয়ন্ত্রিত হয়। বেশির ভাগ ড়্গেত্রে মাড়ির ও দাঁতের ধারণ শক্তি ও প্রতিরোধ শক্তি কমে যায়, ফলে খাওয়ার সময় বাধা অনুভূত হয়, তাই চিবিয়ে খাবার প্রবণতাও হ্রাস পায়। এসবের জন্য ডায়াবেটিস রোগীদের পস্নাক বৃদ্ধিও তাড়াতাড়ি হয়।

ডায়াবেটিক সমিতির প্রতিষ্ঠাতা জাতীয় অধ্যাপক ডাঃ মোঃ ইব্রাহিম ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে সব সময়ই তিনটি উ-এর কথা বলতেন যথা- উ-উরবঃ, উ-উৎঁম, উ-উরংপরঢ়ষরহব অর্থাৎ প্রতিটি রোগীই যদি নিয়মিত ব্যায়াম, ওষুধ ও রক্ত পরীড়্গা এই তিনটি নীতিকে নিষ্ঠার সাথে পালন করেন তবে তারা অবশ্যই স্বাভাবিকের কাছাকাছি ও সুন্দর জীবনযাপন করতে পারবেন। তেমনি ডায়াবেটিস রোগীদের মুখের রোগ প্রতিরোধ তিনটি উ মেনে চলা প্রয়োজন।

ডেন্টাল ক্যারিজ প্রতিরোধঃ

৫জ্ঝ নিয়মিত দুইবেলা সকালে ও রাতে (আহারের পর) ফ্লুরাইড মিশ্রিত টুথপেষ্ট দিযে দাঁত পরিষ্কার করা প্রয়োজন।

৬জ্ঝ ফ্লুরাইড ট্যাবলেট, ফ্লুরাইড জেল অথবা ফ্লুরাইড মিশ্রিত পানি গ্রহণ করা (অবশ্যই নির্দিষ্ট পরিমাণে)। পানিতে সাধারণত ফ্লুরাইডেশন করা হয় ১ মিলিয়ন এর মধ্যে ১ ভাগ ফ্লুরাইড যুক্ত করে। কারণ নির্দিষ্ট পরিমাণের বেশি ফ্লুরাইড গ্রহণ দেহের জন্য মারাত্মক ড়্গতিকারক।

শৃঙ্খলা

ডায়াবেটিস রোগীদের যেমন নিয়মিত ব্যায়াম, পরিমিত আহার, রক্ত ও প্রস্রাব পরীড়্গা করতে হয় তেমনি মুখের রোগ প্রতিরোধেও কতগুলো নিয়ম মেনে চলতে হয়।

দাঁত ও মাড়ির রোগ প্রতিরোধঃ শৃংখলা

৭জ্ঝ দুইবেলা সকালে ও রাতে (আহারের পর, দাঁত পরিষ্কার-এর সময় আঙুল -এর সাহায্যে অন্তôত ২/৩ মিনিটকাল মাড়ি মালিশ করা, যাতে মাড়ির ফাঁকে ফাঁকে জমে থাকা খাদ্যকণাগুলো চাপে বেরিয়ে আসে ও রক্ত সঞ্চালন বেগ স্বাভাবিক থাকে।

৮জ্ঝ রোগ প্রতিরোধ আহারের মধ্যবর্তী সময়ে শর্করা বা চিনি জাতীয় খাদ্য পরিহার করা প্রয়োজন (খেলেও সাথে সাথে দাঁত ও মুখ পরিষ্কার করে ফেলা)।

৯জ্ঝ নিয়মিত একজন দন্তôরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে (বছরে দুইবার ৬ মাস অন্তôর) দাঁত, মাড়ি ও মুখ গহ্বরের অবস্থা পরীড়্গা করানো প্রয়োজন। এর ফলে প্রাথমিক অবস্থায় রোগের লড়্গণ ধরা পড়তে পারে এবং অল্প ও সহজ চিকিৎসায় ভালো হয়ে যাবার সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু মাড়ির প্রদাহ বা দন্তôড়্গয় রোগ অতিমাত্রায় বাড়তে থাকলে চিকিৎসা জটিল হয় এবং ব্যয় দ্বিগুণ হয়। পরবর্তীতে দাঁত হারানোর সম্ভাবনাও বেশি থাকে।

যদি ডায়াবেটিস রোগীরা এই ত্রিরত্নের (তিনটি ডি) সাথে পরিচিত হয়ে যান এবং নিয়মিতভাবে ডায়াবেটিস রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখেন তবে দাঁত ও মাড়ি সবসময় সুস্থ থাকবে।

ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য দাঁত বা মুখের যত্নের কয়েকটি সতর্কীকরণ ইঙ্গিতঃ

১জ্ঝ সর্বপ্রথমেই ডায়াবেটিস রোগটিকে নিয়ন্ত্রণে রাখবার চেষ্টা করা প্রয়োজন। রক্তের শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখাই হচ্ছে দাঁত ও মাড়ির রোগ প্রতিরোধের অত্যন্তô প্রয়োজনীয় পদড়্গেপ। মাড়ির অতিরিক্ত প্রদাহ অনেক সময় ডায়াবেটিসকে নিয়ন্ত্রিত রাখতে অনেক অসুবিধার সৃষ্টি করে। যদি কোনভাবে কখনো দাঁত ও মাড়ির প্রদাহ শুরম্ন হয় তবে ঐ ঘা শুকাতে সার্জন এর কাছ থেকে আপনার মুখের যত্নের জন্যে কি কি করা প্রয়োজন তাও জেনে নেয়া প্রয়োজন।

২জ্ঝ প্রতি ছয় মাস অন্তôর একজন ডেন্টাল সার্জনকে দিয়ে পরীড়্গা করা প্রয়োজন। ডেন্টাল সার্জনকে অবশ্যই আপনার ডায়াবেটিস রোগের কথা বলে রাখবেন। যাতে আপনার দাঁত ও মাড়ি সুস্থ থাকে সেইজন্য ডেন্টাল সার্জন-এর কাছ থেকে আপনার মুখের যত্নের জন্য কি কি করা প্রয়োজন তাও জেনে নেয়া প্রয়োজন।

৩জ্ঝ প্রতিদিন দুইবেলা সকালে ও রাতে দাঁত ব্রাশ এবং মাড়ির জন্য প্রয়োজন একটি নরম টুথপেষ্ট। ব্রাশটিকে উপরের পাটির দাঁত থেকে নিচের পাটির দাঁত ব্রাশ আবার নিচের পাটি থেকে উপরের পাটির দিকে ব্রাশ, এভাবেই ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দাঁত ও মাড়ি পরিষ্কার করা বিজ্ঞানসম্মত।

৪জ্ঝ সম্প্রতি গবেষণায় দেখা যায় যে, টুথপেষ্ট-এর বদলে ডেন্টাল ফ্লস (সুতা) দিয়ে দাঁতের ভিতরের ময়লা পরিষ্কার করা অনেক উপকারী। অতএব দুই দাঁতের ফাঁক থেকে খাদ্যকণা বের করে দেবার জন্য ডেন্টাল ফ্লস বা এক ধরনের সুতা ব্যবহার করা ভালো।

৫জ্ঝ তবে একটি কথা বলে রাখা ভালো যে কখনো যদি আপনার মাড়ি থেকে দাঁত ব্রাশ-এর সময় বা খাবার খাওযার সময় রক্ত বের হয় তবে তা মাড়িতে প্রদাহের পূর্ব লড়্গণ কিনা বুঝবার জন্য অবশ্যই একজন ডেন্টাল সার্জন-এর পরামর্শ গ্রহণ ও স্কেলিং করা প্রয়োজন। মনে রাখবেন প্রতিকারের চাইতে প্রতিরোধই শ্রেয়, সস্তôা ও নিরাপদ।


ডায়াবেটিসে দাঁত ও মাড়ির সমস্যা
ডাজ্ঝ এস এম জাকারিয়া
ওরাল অ্যান্ড ডেন্টাল সার্জন
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে না রাখলে গোটা শরীরের সমূহ ক্ষতি সাধিত হয়। শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস পায় এবং এতে শরীরের অন্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের যেমন ক্ষতি হয়, তেমনি দাঁত ও মুখগহ্বরেরও সমূহ ক্ষতি হয়।
ডায়াবেটিসের কারণে রক্তবাহগুলো চিকন ও সরু হতে থাকে। ফলে দেহে রক্তের স্বাভাবিক গতি ব্যাহত হয় এবং অক্সিজেন ও অন্যান্য উপকরণ দেহের সব অংশে ঠিকমতো পৌঁছায় না। এ অবস্থায় মাড়ি ও দাঁতে স্বাভাবিক রক্তের পরিমাণ ও গতি ব্যাহত হয়। এ সময় মাড়িতে কোনো আঘাত লাগলে প্রদাহ দেখা দেয়। তা ছাড়া মাড়িতে আগের কোনো রোগ থাকলে এর সংক্রমণ আরও বাড়ে।
দেহে ইনসুলিন ঘাটতির ফলে আমিষেরও ঘাটতি হয় বলে কোষ-কলার স্বাভাবিক বৃদ্ধি, সংস্কার ও উৎপাদন ব্যাহত হয়। তাই কোনো স্থানে ঘা হলে তা শুকাতে দেরি হয়।
ডায়াবেটিস রোগীদের দন্তক্ষয় বা ডেন্টাল ক্যারিজ দ্রুত হয়; কারণ মুখের লালার সঙ্গে গ্লুকোজ এক ধরনের আণুবীক্ষণিক জীবাণুর সঙ্গে মিলে এসিড তৈরি করে, যা দাঁতের শক্ত আবরণ এনামেলকে ক্ষয় করে এবং ধীরে ধীরে দাঁতে গর্ত তৈরি করে। মুখের লালার স্বাভাবিক গতি ব্যাহত হয় এবং পরিমাণ কমে যায় বলে মুখে অতিরিক্ত শুকনো পরিবেশে আহারের কণাগুলো ধুয়েমুছে যেতে পারে না। এই খাদ্যকণাগুলো দীর্ঘদিন দাঁতের গায়ে ও মাড়ির ফাঁকে জমে ডেন্টাল প্লাক তৈরি করে। পরে এ থেকে মাড়ির প্রদাহ ও মাড়িতে পুঁজ হয়, মুখে অতিরিক্ত দুর্গন্ধ ছড়ায় এবং দাঁত নড়তে থাকে।
তাই ডায়াবেটিক রোগীদের উচিত ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখার পাশাপাশি একজন ডেন্টাল সার্জনের তত্ত্বাবধানে থাকা।


সুস্থ দাঁতের জন্য

দাঁত ও মাড়ি থেকে জীবাণুরাশি (জীবানু-প্রলেপ) দূরীভূত রাখাই দাঁত ও মাড়ির সুস্থতার প্রধান চাবিকাঠি। এজন্য নিয়মিত ও সঠিক পদ্ধতিতে দাঁত ও মাড়ি পরিষ্কার রাখতে হবে। সুষ্ঠু ও সম্পূর্ণভাবে দাঁত পরিষ্কারের জন্য ব্রাশ, খিলাল, ফোসিং, কুলি করা ও মাড়ি মর্দন করা প্রয়োজন। তাছাড়া প্রতি ছয় মাস অন্তôর একবার এবং মুখে ব্যথা, ঘা, বা রক্তড়্গরণ হলেই দন্তô চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। প্রয়োজন হলে চিকিৎসক স্কেলিং করতে উপদেশ দেবেন। দাঁতে পাথর জমলে বা মাড়িতে পকেট হলে অবশ্যই স্কেলিং দরকার। স্কেলিং করলে দাঁত নড়ে যায় বা মাড়ি ফাঁকা হয়ে যায় বলে অনেকে অভিযোগ করনে। এটা স্কেলিংয়ের জন্য হয় না। বরং দাঁতের গায়ে জমে থাকা পাথরই ইহার জন্য দায়ী। পাথর দাঁতের গায়ে জমে জমে মাড়িকে দাঁতের পাশ থেকে সরিয়ে দেয়। ইহার ফলে দাঁত ফাঁকা ফাঁকা (হয়ে যায় এবং দাঁতের ভিত নষ্ট হয়। স্কেলিংয়ের পর ঐ সব ত্রম্নটি সরাসরি প্রতীয়মান হয় মাত্র। একই কারণে স্কেলিংয়ের পর দাঁত শির শির করতে পারে। তবে অচিরেই এসব অসুবিধা দূর হয়ে দাঁত মজবুত ও দীর্ঘস্থায়ী হবে।