Saturday, June 14, 2008

Health Tips (স্বাস্থ্য কণা)

মোবাইল ফোন ব্যবহারে ঘুমের ব্যাঘাত হতে পারে

অধ্যাপক ডা. এম আলমগীর চৌধুরী

সম্প্রতি সমীক্ষায় দেখা যায়, ঘুমানোর আগে মোবাইল ফোন ব্যবহার রাতের ঘুম নষ্ট করে দিতে পারে। মোবাইল কোম্পানিগুলোর অর্থে পরিচালিত পরীক্ষায় প্রাপ্ত তথ্য এই যে, হেন্ডসেটের রেডিয়েশনের জন্য তন্দ্রাহীনতা, মাথাব্যথা এবং সন্দেহ বা সংশয় দেখা দিতে পারে। এর ফলে আমাদের গভীর ও স্বাভাবিক ঘুম কমে যেতে পারে এবং শারীরিক প্রফুল্নতার ড়্গমতাও কমিয়ে দিতে পারে। এই সমীক্ষাটি পরিচালিত হয় সুইডেন’স ক্যারোলিন্সকা ইনস্টিটিউট এবং যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েন স্টেট ইউনিভার্সিটিতে।
মোবাইল প্রস্তুতকারক ফোরামের ফান্টে বিজ্ঞানীরা ১৮-৪৫ বছর বয়সের মধ্যে ৩৫ জন পুরম্নষ এবং ৩৬ জন মহিলার ওপর গবেষণা করেছেন। কিছু লোকের রেডিয়েশনে যে পরিমাণ ড়্গতি হয়েছে মোবাইল ফোন ব্যবহারেও একই ড়্গতি হয়েছে। অন্যদের একই অবস্থায় রাখা হয়েছিল কিন্তু শুধু ‘শ্যাম’ এক্সপোজার দেয়া হয়েছে।
যাদের রেডিয়েশনে বেশি সময় রাখা হয়েছিল তাদের গভীর ঘুমে বেশি সময় লেগেছিল এবং অল্প সময়ের জন্য গভীরভাবে ঘুমিয়েছিল।
বিজ্ঞানীদের পরিসমাপ্তি, ‘ল্যাবরেটরিতে ৮৮৪ মেগাহার্টসে সিগন্যাল ঘুমের জন্য গুরম্নত্বপূর্ণ এবং দৈনন্দিন কাজকর্মও ব্যাহত হয়।
গবেষক অধ্যাপক বেনট আরনেট বলেছেন, পরীড়্গায় প্রতীয়মান হয়, মোবাইল ফোন ব্যবহারে ব্রেইনের বিশেষ পরিবর্তন হয়, যা সংবেদনশীলতাকে বাড়িয়ে দেয়। অন্য একটি সমীড়্গায় দেখা যায়, রেডিয়েশন ‘মেলাটোনিন’ যা দেহের অভ্যন্তôরীণ রাসায়নিক প্রতিক্রিয়ার প্রবাহকে ধরে রাখে, তার উৎপাদনে ব্যাঘাত ঘটায়।
বৈদ্যুতিক সংবেদনশীলতাঃ এই সমীড়্গায় প্রায় অর্ধেক লোক তাদের ‘বিদ্যুৎ সংবেদনশীল’ বলে মনে করেন এবং তাদের মাথাব্যথা এবং স্নায়বিক কাজ বাধাগ্রস্তô হয়। কিন্তু তারা বুঝতে পারেন না মোবাইল ফোনের রেডিয়েশনের জন্য এটা হয় কি না।
স্বাস্থ্যের ওপর ইলেকট্রো-মেগনেটিকের প্রভাব বা প্রতিক্রিয়ার গবেষক এলাসডেয়ার ফিলিপস যিনি পাওয়ারওয়াচের পরিচালক মনে করেন যে মোবাইল ফোনের রেডিয়েশন প্রতিক্রিয়ার সুস্পষ্ট ধারণা আছে, তাই আমাদের আরো সতর্কতার সাথে কাজ করতে হবে। গবেষণায় জানানো হয়, যদি বিকেলে বা রাতে ফোনে কথা বলতে হয়, তা মোবাইল ফোনের পরিবর্তে ল্যান্ডফোন ব্যবহার করা ভালো এবং বিছানার পাশে মোবাইল ফোন না রাখাই উত্তম কাজ। যদিও মাইক দোলান, মোবাইল অপারেটর অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাহী পরিচালক ওই ধারণার সাথে দ্বিমত পোষণ করেন। তিনি বলেন, এটা বিজ্ঞানের মহাসমুদ্রে এক বিন্দু পানিমাত্র। এক কাপ কফি পান করলে যা ড়্গতি হয়, তা এর চেয়েও কম। গত বছর সেপ্টেম্বরে যুক্তরাজ্য মোবাইল টেলিকমিউনিকেশন এবং হেলথ রিসার্চ প্রোগ্রামের উদ্যোগে ছয় বছরব্যাপী এক সমীড়্গায় উপসংহারে বলা হয়, মোবাইল ফোন ব্যবহারে ব্রেইনের স্বল্পকালীন সমস্যা হয় না। কিন্তু গবেষকরা দীর্ঘমেয়াদি ড়্গতির সম্ভাবনা উড়িয়ে দেননি, এমনকি ক্যান্সারও হতে পারে। যুক্তরাজ্যে মোবাইল ফোনের সার্ভিসগুলো ৮৭২ থেকে ৯৬০ মেগাহার্টস, ১৭১০ থেকে ১৮৭৫ মেগাহার্টস এবং ১৯২০ থেকে ২১৭০ মেগাহার্টসের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা হয়।
(সূত্রঃ অ্যামেরিকান একাডেমি অব অটোল্যারিংগোলজি, হেড অ্যান্ড নেক সার্জারি)
লেখকঃ অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান, ইএনটি, মেডিক্যাল কলেজ ফর উইমেন অ্যান্ড হসপিটাল, উত্তরা, ঢাকা। চেম্বারঃ কমফোর্ট টাওয়ার (তৃতীয় তলা), ১৬৭/বি, গ্রিন রোড, ঢাকা। মোবাইলঃ ০১৮১৯২২২১৮২


এ সময়ের সাধারণ স্বাস্থ্য সচেতনতা
ডাজ্ঝ মুহাম্মদ কামরুজ্জামান খান
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, আরএমও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, কোম্পানিগঞ্জ, সিলেট।

শীতের সময় সর্দি-জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্ট বা হাঁপানি অ্যালার্জিক রাইনাইটিস বা নাকের প্রদাহ, কনজাংটিভাটিস বা চোখ ওঠা, ডায়রিয়া, আমাশয়, নিউমোনিয়া, খুশকি, খোস-পাঁচড়া প্রভৃতি রোগ হয়ে থাকে।
সর্দি-জ্বর বা কমন কোল্ড সাধারণ একটি রোগ। সম্ভবত এমন লোক খুঁজে পাওয়া যাবে না, যার বছরে অন্তত দু-একবার সর্দি-জ্বর হয়নি।
সর্দি-জ্বর দেহের ঊর্ধ্ব শ্বাসনালির ভাইরাসজনিত এক ধরনের সংক্রমণ। ঋতু পরিবর্তনের সময় এ রোগ বেশি দেখা যায়। কম রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন লোকদের এ রোগের ঝুঁকি বেশি। হাঁচি-কাশির মাধ্যমে এ রোগ একজনের শরীর থেকে অন্যজনের শরীরে ছড়ায়।
লক্ষণ দেখেই এ রোগ নির্ণয় করা যায়। সাধারণত কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষার দরকার হয় না। সর্দি-জ্বর হলে প্রথমে নাকে ও গলায় অস্বস্তি লাগে, হাঁচি হয়, নাক দিয়ে অনবরত পানি ঝরতে থাকে। নাক বন্ধও থাকতে পারে। মাথাব্যথা, মাথা ভারী বোধ হওয়া, শরীরে ব্যথা, হালকা জ্বর, গলাব্যথা প্রভৃতি উপসর্গ দেখা যায়।
কখনো কখনো চোখ লাল হতে পারে এবং চোখ দিয়ে পানি ঝরতে পারে। সর্দি-জ্বরের সময় বিশ্রামে থাকতে পারলে ভালো। সাধারণ খাবারের পাশাপাশি প্রচুর পানি, লেবুর রস, আনারস, পেয়ারা বা আমলকী জাতীয় খাবার খাওয়া যেতে পারে।
ঠান্ডা জাতীয় খাবার (আইসক্রিম, ঠান্ডা পানি, কোমল পানীয় খাওয়া যাবে না। গরম চা বা কফি খাওয়া যেতে পারে। এ ধরনের সমস্যায় সাধারণত অ্যান্টিবায়োটিকের প্রয়োজন হয় না। জ্বর ও ব্যথানাশক প্যারাসিটামল অ্যান্টিহিস্টামিন জাতীয় ওষুধ কয়েক দিন খেলেই ভালো হয়ে যায়। তবে সংক্রমণের লক্ষণ থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী উপযুক্ত অ্যান্টিবায়োটিক সঠিক মাত্রায় পাঁচ থেকে সাত দিন খেতে হবে। শিশুদের টনসিল বা ফুসফুসের সংক্রমণ হওয়ার ঝুঁকি থাকে, তাই চিকিৎসকের পরামর্শমতো ওষুধ খাওয়ানো উচিত।
সর্দি-জ্বরে আক্রান্ত হলে অন্যদের সঙ্গে, বিশেষ করে শিশুদের সঙ্গে মেলামেশায় সতর্কতা অবলম্বন করুন। হাঁচি দেওয়ার সময় বা নাকের পানি মুছতে রুমাল বা টিস্যু পেপার ব্যবহার করুন।
রোগীর ব্যবহৃত রুমাল বা গামছা অন্যদের ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে। যেখানে সেখানে কফ, থুথু বা নাকের শ্লে্না ফেলা যাবে না। স্বাস্থ্যকর, খোলামেলা, শুষ্ক পরিবেশে বসবাস করতে হবে এবং বিরূপ পরিবেশে যথাযথ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
এ সময় অ্যালার্জিক রাইনাইটিস, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট ও হাঁপানি থেকে দূরে থাকতে হলে ঠান্ডা ও ধুলাবালি যতটুকু সম্ভব এড়িয়ে চলতে হবে। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শমতো ওষুধ সেবন করতে হবে।
শীতের শুরুতে ডায়রিয়া কিংবা আমাশয়ের প্রকোপ বেশি দেখা যায়। সাধারণত শিশুরা এ রোগে বেশি আক্রান্ত হয়। দূষিত পানি বা খাবারের সঙ্গে এ রোগের জীবাণু আমাদের শরীরে প্রবেশ করে। তাই বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে। বাসি-পচা খাবার, রাস্তার ধারের খোলা খাবার খাওয়া ঠিক নয়।
মলত্যাগের পর ও খাওয়ার আগে সাবান দিয়ে ভালো করে হাত ধুয়ে নিন। যেখানে-সেখানে মলত্যাগ না করে স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানা ব্যবহার করতে হবে। ময়লা আবর্জনা নির্ধারিত স্থানে ফেলার ব্যবস্থা করতে হবে। মাছির বিস্তার রোধ করার জন্য বাড়ির আশপাশ পরিষ্কার রাখুন।

শীতকালে বাতাসের আর্দ্রতা কম থাকে। শুষ্ক বাতাস ত্বক থেকে শুষে নেয় পানি। ফলে ত্বক হয়ে পড়ে দুর্বল। ত্বকের ঘর্মগ্রন্থি ও তেলগ্রন্থি ঠিকমতো ঘাম বা তৈলাক্ত পদার্থ তৈরি করতে পারে না। এতে ত্বক আস্তে আস্তে আরও শুষ্ক, ফাটল ধরে ও দুর্বল হয়। একসময় ত্বক ফেটে যায়।

বিশেষ করে ঠোঁট, হাত ও পায়ের তক। এতে দেখা দেয় চুলকানি, একজিমা, স্কেবিস, চর্মরোগ প্রভৃতি। আর এসব কারণেই শীতকালে ত্বকের প্রয়োজন বিশেষ যত্ন। শীতকালে সুন্দর ত্বকের জন্য কিছু টিপস দেওয়া হলো-
জ্ঝ প্রয়োজন অনুসারে গরম কাপড় ব্যবহার করুন। শরীরের উ্নুক্ত অংশগুলোকে (হাত, পা, কান) ঢেকে রাখুন।
জ্ঝ প্রতিদিন হালকা গরম পানিতে গোসল করুন। গোসলে সাবান ব্যবহার করুন।
জ্ঝ ত্বকে ময়েশ্চারাইজার অথবা গ্লিসারিনের সঙ্গে সমপরিমাণ পানি মিশিয়ে মাখুন।
জ্ঝ ত্বকে ভালো কোনো তেলও ব্যবহার করতে পারেন। তবে তা গোসলের পরে।
জ্ঝ মুখে ভালো কোল্ড ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন।
জ্ঝ ভ্যাসলিন, লিপ জেল ইত্যাদি সঙ্গে রাখুন। ঠোঁট শুকিয়ে গেলে মাখুন। ঠোঁটের শুষ্ক আবরণ টেনে তুলবেন না। জিভ দিয়ে বারবার ঠোঁট লেহন করবেন না।
জ্ঝ বেশিক্ষণ রোদ পোহাবেন না। রোদে বের হতে হলে আপনার জন্য উপযুক্ত সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন।
জ্ঝ বয়সানুযায়ী সুষম খাবারের তালিকা তৈরি করুন। প্রচুর পরিমাণে শাকসবজি ও ফলমূল খান। অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত খাবার খাবেন না।
জ্ঝ ছোঁয়াচে চর্মরোগে আক্রান্তদের সংস্পর্শ যতটুকু সম্ভব এড়িয়ে চলুন।
জ্ঝ একজিমা, স্কেবিস, ইকথায়োসিস, হাম, চিকেন পক্স প্রভৃতি রোগে আক্রান্ত হলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শমতো চিকিৎসা নিন।

শীতে সুস্থ থাকুন
শীতের সময় আমরা সাধারণ সর্দি-কাশি ও জ্বরে আক্রান্ত হতেই পারি। তবে কোনো কোনো ক্ষেত্রে এ সমস্যাগুলো বেশ বিপজ্জনক হয়ে দাঁড়ায়। এর জন্য জীবনযাপনের পদ্ধতি, সামাজিক-প্রাকৃতিক পরিবেশ ও ভাইরাসের সংক্রমণ বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। একটু সচেতন হলে শীতে ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়া যায় সহজেই। শীতকালীন ঠান্ডা লাগা এবং আরও কিছু রোগ-বালাই নিয়ে এ প্রতিবেদন
ডাজ্ঝ গৌতম দাশগুপ্ত
মেডিকেল অফিসার, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন

ঠান্ডা লাগা
ঠান্ডা লাগা এমন একটি অসুখ, যা সব বয়সের লোককেই আক্রান্ত করে। ঠান্ডার ভাইরাস সাধারণত নাক ও মুখ দিয়ে শরীরে প্রবেশ করে। তখন শরীরের রোগ-প্রতিরোধক্ষমতা এই ভাইরাসকে প্রতিরোধ করার চেষ্টা করে।
প্রতিরোধ করতে না পারলে ভাইরাস শরীরে ছড়াতে থাকে। কোল্ড ভাইরাস শরীরে প্রবেশ করার তিন-চার দিনের মধ্যে এর উপসর্গগুলো দেখা দেয়। এ সময়ের মধ্যেই একজনের কাছ থেকে অন্যের শরীরে ছড়াতে থাকে। সাধারণত শীতকালেই কোল্ড ভাইরাসে বেশি আক্রান্ত হতে দেখা যায়। কারণ এ সময় ঘরের আবহাওয়া তুলনামূলকভাবে উষ্ণ থাকে। আর এই উষ্ণ আবহাওয়ায় কোল্ড ভাইরাস বেশি ছড়ায়।
এ ছাড়া শীতের সময় আমরা একে অপরের সংস্পর্শে বেশি থাকি, যার ফলে জীবাণু খুব তাড়াতাড়ি ছড়ানোর সুযোগ পায়। তবে কোল্ড ভাইরাসের আক্রমণ থেকে সাত দিনেই সেরে ওঠা যায়। কোনো কোনো সময় ওষুধ নিতে হয়।
উপসর্গ
জ্ঝ মাথায় ও বুকে চাপ, নাক সিরসির করা
জ্ঝ শ্বাসকষ্ট
জ্ঝ মুখে ক্ষত
জ্ঝ সর্দি
জ্ঝ শুষ্ক কাশি
জ্ঝ চোখ জ্বালাপোড়া করা ও পানি আসা
জ্ঝ মাথা ব্যথা করা
জ্ঝ বিষাদ অনুভব করা।

সাধারণত ঠান্ডা লাগার জন্য ভাইরাল আপার রেসপিরেটরি ইনফেকশনই দায়ী। এর ফলে মুখে ক্ষত, সর্দি, কান ও নাক বন্ধ হয়ে আসে; গলা ও টনসিলে ব্যথা করে, শরীর ম্যাজ-ম্যাজ করে এবং জ্বর হয়ে থাকে। ভাইরাস আক্রমণ করার এক থেকে তিন দিনের মধ্যে এসব উপসর্গ দেখা দিতে পারে। অন্যরাও আক্রান্ত হয়ে থাকে। ঠান্ডা লাগা প্রতিরোধ করা বেশ কঠিন।
সাধারণত চার থেকে ১৪ দিন ঠান্ডা ভুগিয়ে থাকে। এতে আক্রান্ত হওয়ার জন্য বিভিন্ন ধরনের ভাইরাস দায়ী।

পর্যাপ্ত না ঘুমালে, খাবার না খেলে, যারা ঠান্ডা লাগায় আক্রান্ত হয়েছে তাদের সঙ্গে মেলামেশা করলে এতে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

এ রোগে আক্রান্ত হলে একটু বেশি বিশ্রাম ও ঘুমের প্রয়োজন। রাতে কমপক্ষে আট থেকে ১০ ঘণ্টা ঘুমানো দরকার। এতে শরীরে শক্তি জোগাবে ঠান্ডার ভাইরাসকে প্রতিরোধ করার জন্য। বেশি পরিমাণে তরল খাবার ও পানীয় গ্রহণ করুন। প্রতি ঘণ্টায় অন্তত এক গ্লাস পানি পান করতে হবে। কফি ও অ্যালকোহল না খেলে ভালো হয়। কারণ এগুলো শরীরে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। মুরগির স্যুপ ও ফলের রস এ সময় খুবই কার্যকরী।

ঠান্ডা লাগায় আক্রান্ত হলে-
জ্ঝ একেবারেই ধূমপান করবেন না (ধূমপায়ী হলে)।
জ্ঝ গরমপানিতে গোসল করুন।
জ্ঝ গরমপানির সঙ্গে মিশিয়ে কয়েক ঘণ্টা পরপর গরগরা করতে পারেন।
জ্ঝ যদি শরীরের তাপমাত্রা ১০১ ডিগ্রির বেশি হয়, বেশি দিন ধরে সমস্যা থাকে, যদি খুব বেশি মাত্রায় অসুস্থ বোধ করেন, যদি কানে ব্যথা অনুভব করেন, মুখের ব্যথা বা ক্ষত যদি তিন দিনের বেশি হয়, তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন।

প্রতিরোধ
যাঁদের ঠান্ডা লেগেছে তাঁদের কাছ থেকে দূরে থাকুন। কারণ কোল্ড ভাইরাস নিঃশ্বাসের সঙ্গে, এমনকি হাতের মাধ্যমেও ছড়ায়।
জ্ঝ পর্যাপ্ত খাওয়া-দাওয়া করলে ও ঘুমালে শরীরে রোগ-প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ে।
জ্ঝ আপনার ঘরের তাপমাত্রা বেশি শুষ্ক করবেন না, বেশি আর্দ্রও করবেন না। এতে রোগ-প্রতিরোধে সক্ষম হওয়া যায় সহজেই।

শীতের ভাইরাস
শীতের সময় সাধারণ সর্দি-কাশি ও জ্বর হতেই পারে। তবে কোনো কোনো ক্ষেত্রে এ সমস্যাগুলো বেশ বিপজ্জনক হয়ে দাঁড়ায়। এর জন্য জীবনযাপন পদ্ধতি, সামাজিক-প্রাকৃতিক পরিবেশ ও ভাইরাসের আক্রমণ বিশেষভাবে দায়ী। ভাইরাস বছরের নির্দিষ্ট কিছু সময়েই বেশির ভাগ ক্ষেত্রে সংক্রমিত করে। গ্রী্ন, শরৎ ও বসন্তকালের শুরুর দিকে সাধারণ সর্দি, কাশি ও জ্বর সৃষ্টিকারী ভাইরাস হচ্ছে রাইনো ভাইরাস। কোল্ড ভাইরাসের ওপর গবেষণাকারী ইউনিভার্সিটি অব ভার্জিনিয়ার জ্যাক পল্টন বলেন, শীতের সাধারণ সর্দি-কাশি ও জ্বর সৃষ্টিকারী ভাইরাসগুলোর মধ্যে এডেনো ভাইরাস, প্যারাইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস, করোনা ভাইরাস, ইনফ্লুয়েঞ্জা-এ, ইনফ্লুয়েঞ্জা-বির আক্রমণ তীব্রভাবে দেখা যায়।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে শীতকালে যেসব ইনফ্লুয়েঞ্জার মহামারি হচ্ছে, সেগুলো হলো নতুন প্রজাতির ইনফ্লুয়েঞ্জা-এ ভাইরাস (এ-বেইজিং)। বেয়লর কলেজ অব মেডিসিনের ইনফ্লুয়েঞ্জা রিচার্স সেন্টারের এপিডেমিওলজিস্ট ডব্লিউ পল প্লেগন বলেন, বয়স্কদের ক্ষেত্রে যেসব মারাত্মক জটিলতা হয় সেগুলোতে তরুণেরাও ভুগতে পারে।
উপসর্গগুলো হলো-ক্রমাগত গলাব্যথা হওয়া, শুকনো কাশি ও জ্বর। আটালান্টার সেন্টার ফর ডিজি কন্ট্রোলের এপিডেমিওলজিস্ট লুইসা চ্যাপম্যান বলেন, ইনফ্লুয়েঞ্জা-‘ই’র সবচেয়ে খারাপ মহামারিতে প্রায় ২০ বছর আগে যুক্তরাষ্ট্রে আনুমানিক ৫০ হাজার লোকের মৃত্যু হয়েছিল।
প্রথম মহামারি সাঙ্গাই শহরে হয়েছিল বলে একে সাঙ্গাই ফ্লুও বলা হয়। এর উপসর্গ হলো প্রচণ্ড সর্দি-কাশি ও মাঝেমধ্যে জ্বর থাকা।
কোল্ড ভাইরাস বা শীতের ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার সবচেয়ে সহজ পথ হলো কাশি ও হাঁচি। তা ছাড়া নোংরা পরিবেশে বসবাসকারীদের কোল্ড ভাইরাসে দীর্ঘ সময় ধরে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি খুব বেশি।
চিকিৎসার ব্যাপারে বিশেষভাবে বলতে হয়, প্রতিনিয়ত ফ্লু ভাইরাসগুলো পরিবর্তিত হচ্ছে। তাই নতুন ভাইরাসকে আঘাত করার জন্য বর্তমানে এ-বেইজিংয়ের নিষ্ত্র্নিয় ভাইরাস দিয়ে প্রতিরোধের প্রচেষ্টা চলছে।
এ রকম প্রতিরোধের মাধ্যমে শতকরা ৭৫ ভাগ ফ্লুকে প্রতিরোধ করা যায় বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন। ইনজেকশন নেওয়ার পর প্রায় ১৫-২০ দিন সময় লাগে শরীরে এ ধরনের প্রতিরোধব্যবস্থা তৈরি হতে।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, সম্পূর্ণ বিশ্রামের মাধ্যমে ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠতে পারে।
তবে প্রাপ্তবয়স্করা নির্দিষ্ট কিছু উপসর্গ কমানোর জন্য কিছু ওষুধ ব্যবহার করতে পারেন, যেমন-নাক বন্ধ হয়ে এলে ডিকনজেসটেন্ট। যদি সহ্যের বাইরে চলে যায় সে ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে আরও কিছু ওষুধ নেওয়া যেতে পারে।
সামান্য জ্বর অনেক সময় শরীরের উচ্চমাত্রার ভাইরাসগুলোকে ধ্বংস করতে সহায়তা করে। তাই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা সাধারণত শিশুদের ক্ষেত্রে শরীরের তাপমাত্রা ১০২ ডিগ্রি ফারেনহাইট আর প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে ১০১ ডিগ্রি ফারেনহাইটের ওপরে না উঠলে জ্বর কমানোর ওষুধ খেতে পরামর্শ দেন না।
শরীরের সব ধরনের ব্যথা কমানোর জন্য বিকল্প হিসেবে আইবিউপ্রোফেন ব্যবহার করা যেতে পারে।
এর মাধ্যমে শরীরের প্রতিরোধব্যবস্থা তেমন আক্রান্ত হয় না। তবে বেশ কার্যকরভাবেই শীত, ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা করা সম্ভব।
এই শীতেও সচেতন থাকুন, সুস্থ থাকুন।

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করা কেন জরুরি

হাইপারটেনশন অর্থাৎ রক্তচাপ হচ্ছে নীরব ঘাতক। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা গেছে, রোগীর তেমন কোনো উপসর্গ দেখা যাচ্ছে না। আর ৩০ শতাংশ রোগীর উপসর্গ থাকলেও তারা তা উপলব্ধি করতে পারেন না। দীর্ঘদিন ধরে যারা উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন কিন্তু কোনো ওষুধ সেবন করছেন না তাদের জানা উচিত, উচ্চ রক্তচাপ শরীরের ভেতরের সব অঙ্গগুলোকে ধীরে ধীরে ধ্বংস করে ফেলে এবং একটা সময় জীবননাশকারী রোগের দিকে ঠেলে দেয়। যেমন­ হৃৎপিণ্ডের রোগ এবং স্ট্রোক। সুতরাং আপনার ব্লাড প্রেসার কত পর্যন্ত আপনার জন্য স্বাভাবিক এবং কী ওষুধের দ্বারা আপনি ব্লাড প্রেসার স্বাভাবিক রাখবেন তার জন্য অবশ্যই আপনি ডাক্তারের শরণাপন্ন হবেন।

জন্মনিরোধক পিল এবং ক্যান্সার
জন্মনিয়ন্ত্রণের জন্য জন্মনিরোধক পিলের ব্যবহার খুব জনপ্রিয় হলেও অনেকেই আতঙ্কে ভোগেন। এই আতঙ্ক মুটিয়ে যাওয়ার। কারো আবার ধারণা­ দীর্ঘদিন ওরাল পিল গ্রহণ করলে জরায়ু, ডিম্বাশয় কিংবা ব্রেস্ট ক্যান্সারও হতে পারে। এসব ধারণা কিন্তু একেবারে ভিত্তিহীন। অ্যামেরিকান কলেজ অব গাইনোকলজিস্ট অ্যান্ড অবসট্রেটিশিয়ানদের এক অ্যানুয়াল মিটিংয়ে বলা হয়েছে, যারা দীর্ঘ ১০ বছর ধরে ওরাল পিল গ্রহণ করেছেন তাদের ডিম্বাশয়ের ঝুঁকি ৮০ শতাংশ কম।
ষ ডা. সুমাইয়া নাসরীন লোপা
মোবাইলঃ ০১৯২০৩৩৮৩৭২

কোলেস্টেরল কমাতে ব্যায়াম
কোলেস্টেরল বা রক্তে চর্বি নিয়ে ভাবেন না এমন লোক সম্ভবত কমই পাওয়া যায়। তবে বেশীরভাগ ড়্গেত্রে কোলেস্টেরল সম্পর্কে আমাদের ধারণা খুবই কম। কোলেস্টেরল বলতে টোটাল কোলেস্টেরল, এইচডিএল (হাই ডেনসিটি লাইপোপ্রোটিন) বা ভালো কোলেস্টেরল এলডিএর (লো ডেনসিটি লাইপোপ্রোটিন) বা মন্দ কোলেস্টেরল এবং টিজি (ট্রাইগিস্নসারাইড) বুঝায়। সাধারণতঃ কম চর্বিযুক্ত খাবার খাওয়া, মিষ্টি ও দুগ্ধজাত খাবার পরিহার অথবা কম খাওয়া, নিয়মিত ব্যয়াম করলে সার্বিকভাবে রক্তের কোলেস্টেরল কমানো যায়। ভালো কোলেস্টেরল এইচডিএল হার্টের রক্তনালীতে চর্বি জমতে বাধা দেয় এবং হৃদরোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। অন্যদিকে এলডিএল বা মন্দ কোলেস্টেরল হার্টের রক্তনালীতে জমে হার্টে বস্নক সৃষ্টি করে। ফলশ্রম্নতিতে হার্ট এ্যাটাক হবার ঝুঁকি বাড়ে। বেশীরভাগ ড়্গেত্রে দেখা যায় ভালো কোলেস্টেরল রক্তে নির্ধারিত মাত্রার চেয়ে কম থাকে। এই অতি প্রয়োজনীয় কোলেস্টেরল বাড়ানোর তেমন কোন ওষুধ নেই। তবে নিয়মিত ব্যায়াম করলে রক্তের ভালো কোলেস্টেরল যেমন বাড়ে তেমনি মন্দ বা ড়্গতিকর কোলেষ্টেরল পরিমাপ হ্রাস পায়। তাই রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা স্বাভাবিক রাখতে প্রতিদিন অন্তôতঃ ৩০ মিনিট ব্যায়াম করা উচিত।

এপেন্ডিসাইটিস সম্পর্কে জেনে নিন
তানিয়া সুলতানা লাভলী
জেডজ্ঝ এইচ সিকদার মেডিক্যাল
কলেজ ও হাসপাতাল

এপেনডিসাইটিস হল ৈপেটের নিচে ডানদিকে বৃহদান্ত্রের সঙ্গে লাগানো আঙ্গুলের আকারের থলি, যাকে এপেনডিক্‌স বলে তাতে প্রদাহ বা ইনফ্লামেশন। প্রদাহিত এপেনডিক্‌স কখনো কখনো ফেটে গিয়ে পেরিটোনাইটিস হয়ে যায়।

লড়্গণঃ প্রধান লড়্গণ হল পেটে একটানা ব্যথা, যেটা ক্রমশ বাড়তে থাকে।

ব্যথাটা সাধারণতঃ নাভির চারদিকে থেকে শুরম্ন হয়, কিছুড়্গণের মধ্যেই নাভির নিচে ও ডানদিকে সরে যায়। খিদে কমে যেতে পারে, কাশি, কোষ্ঠকাঠিণ্য বা অল্প জ্বর হতে পারে।

এপেনডিসাইটিস-এর জন্য পরীড়্গাঃ

রোগীকে কাশতে বলে দেখতে হবে পেটে তীব্র ব্যথা হয় কিনা। অথবা ধীরে ধীরে কুঁচকির একটু ওপরে জোরে চাপ দিন যতড়্গণ না একটু ব্যথা লাগে। তারপর চট করে হাতটা সরিয়ে নিন। তলপেটের বামদিকে সমানভাবে চাপদিলে পেটের মধ্যে নাড়িভুঁড়ি বাঁদিক থেকে সরে ডান দিকে যায়। যদি এর ফলে ডানদিকের তলপেটে একটা প্রচন্ড তীব্র ব্যথা অনুভূত হয় তাহলে সম্ভবতঃ এপেনডিসাইটিস হয়েছে বলে বুঝতে হবে।

যদি বামদিকে কুঁচকির ওপর চাপ দিলে ডানদিকে ব্যথা না হয়, তবে ডানদিকে কুঁচকির উপর একই পরীড়্গা করবেন।

চিকিৎসাঃ এপেনডিসাইটিস হলে দেরী না করে সাথে সাথে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। কারণ অপারেশই এই রোগে চিকিৎসা।

সব টুথপেস্ট ভাল না

দাঁতের পরিচর্যায় একটি ভাল টুথপেস্ট অপরিহার্য। টুথপেস্টের পাশাপাশি মানসম্পন্ন টুথব্রাশের প্রয়োজনীয়তাও অনস্বীকার্য। কিন্তু অনেক টুথপেস্টের মাঝে কোন্‌ টুথপেস্ট ব্যবহার করা ভাল তা নিয়ে সর্বসাধারণের মনে প্রশ্নের কোন শেষ নেই। টুথপেস্ট প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো এমন সব প্রচার করে যা অবলোকন করলে মনে হয় সবই ভাল। অবস্থা এমন যে কোন্‌টা ছেড়ে কোন্‌টা ব্যবহার করি। আবার কোন কোন টুথপেস্ট প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান প্রচার করে তাদের টুথপেস্ট বিশেষ সংস্থা কতৃêক অনুমোদনকৃত। কিন্তু অনুমোদন কিভাবে হল, অনুমোদনের প্রক্রিয়া বা অনুমোদনের মাঝে কোন স্বার্থ সংশিস্নষ্ট গোপনীয় কিছু লুকায়িত আছে কিনা তা নিয়ে প্রশ্নের অবকাশ থেকে যায়। সবচেয়ে বড় সত্য কথা হল পৃথিবীর কোন স্থানে এমন কোন টুথপেস্ট নেই যার মধ্যে দাঁত ও মুখের জন্য উপকারী সব উপাদান বিদ্যমান। ইচ্ছা থাকলেও এ ধরনের টুথপেস্ট প্রস্তুত করা সব সময় সম্ভব নয়।

টুথপেস্টে বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক উপাদান বিদ্যমান থাকে। টুথপেস্টের মন্দ রাসায়নিক উপাদানের একটি হল সোডিয়াম লরিল সালফেট বা এসএলএস। সোডিয়াম লরিল সালফেট দেখতে সাদা বা ক্রীম রং-এর হয়ে থাকে। সোডিয়াম লরিল সালফেট বা এসএলএস একটি ডিটারজেন্ট যা টুথপেস্ট, সেভিংক্রীম, শ্যাম্পু, হেয়ার কন্ডিশনার, বডিওয়াশ ইত্যাদি প্রসাধন সামগ্রীতে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এসএলএস-এর কারণেই টুথপেস্ট দিয়ে ব্রাশ করার সময় ফেনা উৎপন্ন হয়ে থাকে। এসএলএস-কে টুথপেস্টের ফোমিং এজেন্টও বলা হয়। তবে টুথপেস্টের বেশি ফেনা দেখে আনন্দিত হওয়ার কিছু নেই। কারণ এসএলএস ত্বকে এলার্জিক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। অনেকের ড়্গেত্রে মুখের কোমল ওরাল মিউকোসাতে আলসার সৃষ্টি হয়ে থাকে। টুথপেস্টে ব্যবহৃত হয়ে থাকে এব্রেসিভ এজেন্ট বা উপাদান যা দাঁতকে পরিষ্কার করে। কিন্তু টুথপেস্টে বিদ্যমান এ ধরনের উপাদান সবার জন্য ভাল ফলের পরিবর্তে বিপদ ডেকে নিয়ে আসতে পারে।

আমাদের দেশে বাজারজাত অধিকাংশ টুথপেস্টেই এসএলএস বিদ্যমান। এ কারণেই অনেকের মুখে কোন রোগ না থাকার পরও মুখে আলসার বা ঘা দেখা দেয়। নাম উলেস্নখ না করেই বলছি এমনও টুথপেস্ট রয়েছে যা সবাই ব্যবহার করে কিন্তু তাতে প্রচুর পরিমাণে এসএলএস বিদ্যমান। তাই টুথপেস্ট ব্যবহারের পূর্বে টুথপেস্টের মন্দ রসায়ন সম্পর্কে সচেতন হতে হবে। তা না হলে মুখে আলসার হলে মুখস্তô রিবোফ্লাভিন ট্যাবলেট খেতে খেতে জীবন অতিবাহিত হবে। তবে একটি কথা মনে রাখতে হবে মুখে আলসার হলেই তা টুথপেস্টের কারণেই হয়েছে এমনটি ভাবার কোন কারণ নেই। আপনার দাঁত ও ওরাল মিউকোসের ধরন দেখেই নির্ধারণ করতে হবে কোন টুথপেস্ট আপনার জন্য ভাল। একজন অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
- ডাঃ মোঃ ফারম্নক হোসেন, ওরাল এন্ড ডেন্টাল সার্জন

ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
সুভাষ সিংহ রায়
ফার্মাসিস্ট

আমাদের সমাজে এমন অনেক লোক আছে, যারা ওষুধের কাজের চেয়ে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে বেশি চিন্তিত। সম্ভবত এমন ধারণার বশবর্তêী হয়ে অনেকে হোমিওপ্যাথি, আয়ুর্বেদ, হেকিমি, কবিরাজি ওষুধের প্রতি আস্থাশীল হয়ে ওঠে। অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসার মতো এসব চিকিৎসা পদ্ধতিও চিকিৎসাবিজ্ঞানেরই একেকটি শাখা।
যেখানে বলা হয়ে থাকে ‘এসব ওষুধের কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই’। সেখানে ধরে নিতে হবে সেসব ওষুধের কোনো ক্রিয়া নেই। ওষুধের ক্রিয়া থাকলে অবশ্যই তার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকবে। ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া মূলত নির্ভর করে ওষুধের ব্যবহারের ওপর। যেমন প্যারাসিটামল; জ্বর, মাথাব্যথা ইত্যাদি উপসর্গে এর চেয়ে বহুল ব্যবহৃত ওষুধ সারা বিশ্বে নেই।
জ্বর, মাথা ব্যথা এই জাতীয় উপসর্গে যত ওষুধ ব্যবহৃত হয়, এর মধ্যে প্যারাসিটামল সবচেয়ে নিরাপদ। কেননা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কম। তার পরও কিছু ক্ষেত্রে মারাত্মক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে। লিভারের ক্রনিক রোগ কিংবা কিডনি ফেইলিওর রোগীদের ক্ষেত্রে প্যারাসিটামল ব্যবহার খুবই নিয়ন্ত্রিত হতে হবে। ব্যথা কমানোর আরও ওষুধ আছে।
যেমন, আইবুপ্রফেন, ডাইক্লোফেনাক সোডিয়াম ইত্যাদি। এ ওষুধগুলো দিনের পর দিন খেলে মারাত্মক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। তা ছাড়া লিভারের রোগ ও কিডনি ফেইলিওর রোগীদের জন্য এই ওষুধ খুবই স্পর্শকাতর। তাই যথেষ্ট সাবধানে এই ওষুধগুলো ব্যবহার করা উচিত। তা ছাড়া ব্যথা কমানোর ওষুধ খেলে অনেকের পেটে ব্যথা কিংবা কালো পায়খানা হতে পারে। এই লক্ষণগুলো ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বা সাইড এফেক্ট। আরেকটি বহুল ব্যবহৃত ওষুধ হচ্ছে অ্যান্টাসিড। একটু বদ হজম কিংবা গলাজ্বলা, পেটজ্বলা হলেই অনেকে অ্যান্টাসিড খাওয়া শুরু করে। উপশমও হয়তো হয়, কিন্তু এভাবে বেশি দিন খাওয়া কি ঠিক?
ওষুধবিজ্ঞান বলে, দিনের পর দিন অ্যান্টাসিড খেলে পাকস্থলীর পিএইচ পরিবর্তন হয়ে যায়, যা শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকর। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া অহরহ রেনিটিডিন, ওমিপ্রাজল, এসওমিপ্রাজাল, লান্সোপ্রাজোল, পেন্টোপ্রাজোল ইত্যাদির ব্যবহার ক্রমাগত বাড়ছে। বিগত তিন-চার বছরের ওষুধ বিক্রির পরিসংখ্যান দেখলে বোঝা যায়, এ জাতীয় ওষুধ বিক্রির পরিমাণ দিন দিন বাড়ছে। বাংলাদেশে এখনো সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয় রেনিটিডিন।
রেনিটিডিন সর্তকভাবে ব্যবহৃত না হলে পাকস্থলীর অপূরণীয় ক্ষতি হতে পারে। পাকস্থলীর পিএইচ পরিবর্তন হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। নির্দ্বিধায় বলা যায়, বাংলাদেশে বহু লোকই ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার শিকার।

গ্যারান্টি দিয়ে কোনো রোগেরই চিকিৎসা করা যায় না

ডা. সজল আশফাক

চিকিৎসা বিজ্ঞানের ব্যাপক উন্নতির পরও এ কথা সত্য যে গ্যারান্টি দিয়ে কোনো রোগেরই চিকিৎসা করা যায় না। অথচ আমাদের দেশে অনেকেই গ্যারান্টি দিয়ে ক্যান্সার সারানোর কথা বলে থাকে। শৌচাগার, স্টেশনের আনাচে-কানাচে, লাইট পোস্ট ও গাছের গায়ে গ্যারান্টি দিয়ে ক্যান্সার সারানোর প্রতিশ্রুতি সংবলিত মিনি সাইনবোর্ড অনেকেরই চোখে পড়ার কথা। এ ছাড়া রাস্তাঘাটে এসবের ওপর প্রচুর লিফলেটও বিলি করা হয়। সেই সব লিফলেটে ক্যান্সার সারানোর স্বঘোষিত বৈদ্যরাজের আকর্ণ বিস্তৃত হাসিমাখা ছবিও শোভা পেতে থাকে। আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে এসব অপচিকিৎসার ব্যবসা চলছে সর্বত্র। অনেক নামীদামি পত্রিকায় এসব গ্যারান্টি চিকিৎসার উদ্ভট বিজ্ঞাপনও ছাপা হচ্ছে। অথচ এসব গ্যারান্টি চিকিৎসার দাবিদাররা ক্যান্সারের ‘ক’ও জানে না। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, কোনো বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক কতৃêক শনাক্তকৃত প্রেসক্রিপশন এবং বায়োপসি রিপোর্ট থেকে এসব গ্যারান্টি চিকিৎসার দাবিদার প্রতারকরা ক্যান্সার নির্ণয় করে থাকে। কারণ সত্যিকার অর্থে ক্যান্সার নির্ণয়ের কোনো রকম যোগ্যতাই তাদের নেই। এসব প্রতারক যদি ক্যান্সার নির্ণয় করতে পারে তাহলে অক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন যে কেউই ক্যান্সার নির্ণয় করতে পারবে। আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের মাধ্যমে শনাক্তকৃত ক্যান্সারের চিকিৎসায় এসব প্রতারক হোমিও-কবিরাজি-ইউনানির বকচ্ছপ ককটেল চিকিৎসা রোগীর ওপর চালায়, যার ফলস্বরূপ রোগী ক্রমশ মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যেতে থাকে। অথচ আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানে ক্যান্সারের অনেক ভালো চিকিৎসা পদ্ধতি এসেছে। প্রায় এক-তৃতীয়াংশ ক্যান্সার সূচনাতে নির্ণয় করতে পারলে তা নিরাময় করা যায়। স্তন ক্যান্সার, স্তনে টিউমার ও অন্যান্য ক্যান্সার সারানোর নামে এসব বকচ্ছপ প্রতারক সাধারণ মানুষকে মর্মান্তিক পরিণতির দিকে ঠেলে দিচ্ছে। ক্যান্সার সম্পর্কে সামান্যতম জ্ঞান না থাকার কারণে এসব বৈদ্যরাজ অনেক সময় ভিন্ন ধরনের ক্যান্সারকে ‘ক্যান্সার নয়’ বলে ঘোষণা দিয়ে থাকে। সম্প্রতি এক কিশোরের লিম্ফগ্ল্যান্ডের ক্যান্সার হয়। চিকিৎসা বিজ্ঞানে যার নাম ‘নন হজকিন লিম্ফোমা’। ঠিক হলো কিশোরকে কেমোথেরাপি দেয়া হবে। অর্থাৎ ইনজেকশনের মাধ্যমে এন্টিক্যান্সার ওষুধ প্রয়োগ করে চিকিৎসা করা হবে। এ সময় সেই কিশোরের এক শুভাকাঙ্ক্ষী খবর নিয়ে এলেন, এক বৈদ্যরাজ ভেষজ চিকিৎসায় অনেকের ক্যান্সার সারিয়েছেন। এ অবস্থায় সেই কিশোরকে বৈদ্যরাজের কাছে নেয়া হলে সে বায়োপসি রিপোর্ট দেখে বলল, ওর তো ক্যান্সার হয়নি। ক্যান্সার হলে নাকি রিপোর্টে কারসিনোমা বা ম্যালিগন্যান্সি লেখা থাকে।
অথচ কিশোরটির হয়েছে লিম্ফোমা। এটি লিম্ফগ্ল্যান্ডের ক্যান্সার। এ কথা তো বৈদ্যরাজের জানার কথা নয়। তবে বৈদ্যরাজ বলল বায়োপসি করেই ডাক্তাররা ওর ক্ষতি করেছে। সেই কিশোরের শিক্ষিত অভিভাবকরা বৈদ্যরাজের অজ্ঞতার ফাঁদে পা দিলেন এবং ছয় মাসের মাথায় সেই কিশোরের মৃত্যু ঘটল। কিন্তু এ জন্য সেই বৈদ্য কারো কাছেই ধিকৃত হয়নি। কোর্টকাছারিও হয়নি এবং বৈদ্যরাজ বারবার বলছিল বায়োপসি করানোর জন্যই কিশোরটিকে বাঁচানো গেল না।
এ ঘটনাটি বলার একই উদ্দেশ্য, চার দিকে এখন নকল ডাক্তারের ছড়াছড়ি। কাজেই চিকিৎসা করানোর ব্যাপারে সতর্ক হতে হবে। অন্যের মুখে ঝাল না খেয়ে নিজের বুদ্ধিতে কাজ করুন। আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞান এখন এমন এক জায়গায় পৌঁছেছে যেখানে আর্থিক সঙ্গতি থাকলে প্রায় সব রোগ শনাক্ত করা যায়। যে পদ্ধতিতেই চিকিৎসা করান না কেন, রোগটা কী তা অবশ্যই জানতে হবে। আর যে চিকিৎসক আপনার চিকিৎসা করছেন তিনি সত্যিকার অর্থে চিকিৎসা বিজ্ঞানের জ্ঞানে শিক্ষিত হয়ে থাকলে কখনো গ্যারান্টি দিয়ে চিকিৎসা করবেন না। তিনি সম্ভাব্য নিরাময় ও ঝুঁকির কথা বলবেন, মিথ্যা গ্যারান্টি ও আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের প্রতি বিষোদগার করবেন না। মূর্খের মতো বলবেন না বায়োপসিতে ক্যান্সার বাড়ে। প্রকৃতপক্ষে বায়োপসি করলে নিশ্চিতভাবে ক্যান্সার রোগ ধরা পড়ে। আর গ্যারান্টি দিয়ে কখনো ক্যান্সারের চিকিৎসা করা যায় না। তবে আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের উপদেশ গ্রহণ করে অনেকেই বিনা গ্যারান্টিতে ক্যান্সার থেকে সেরে উঠেছেন।

লেখকঃ নাক-কান-গলা বিশেষজ্ঞ, চেম্বারঃ ইনসাফ ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড কনসালটেশন সেন্টার, ১২৯ নিউ ইস্কাটন, ঢাকা। মোবাইলঃ ০১৭১৬৩০৬৬৩১

চকোলেট কতটুকু স্বাস্থ্যসম্মত

ডা. সুমাইয়া নাসরিন

চকোলেট আমেরিকার কোকোয়া নামক একটি গাছের বীজ থেকে আবিষ্কৃত হয়। প্রথম দিকে এর স্বাদ ও পুষ্টিগুণ সম্পর্কে অনেক কিছুই অজানা ছিল। বর্তমানে বিজ্ঞানের অগ্রগতির ফলে প্রকাশিত হচ্ছে চকোলেট সম্পর্কে বিচিত্র তথ্য। চকোলেট হচ্ছে চর্বিজাতীয় খাদ্য উপাদানে ভরপুর একটি খাবার, যার অর্ধেক হচ্ছে কোলেস্টেরল যা সম্পৃক্ত চর্বি হিসেবে চিহ্নিত এবং বাকি অংশে রয়েছে স্বাস্থ্যসম্মত অসম্পৃক্ত চর্বি যা ওলিক অ্যাসিড নামে পরিচিত। ক্যালিফোর্নিয়া ইউনিভার্সিটির এক গবেষক বলেন, চকোলেটে রয়েছে প্রচুর এন্টি-অক্সডেন্ট ফেনোলিকস যা হার্টের জন্য উপকারী। গবেষকরাও বলেন, চকোলেট এবং রেড ওয়াইন উভয়ের মধ্যেই যে ফেনোলিকস আছে তা হার্টের জন্য ক্ষতিকর এলডিএলের মাত্রাকে বাড়াতে দেয় না। তবে বিজ্ঞানীরা একটা ব্যাপারে কিছুটা দ্বিধান্বিত, তা হচ্ছে চকোলেটের ফেনোলিকস আর রেড ওয়াইনের ফেনোলিকসে যে সামান্য তফাত রয়েছে তা কিভাবে রক্তে শোষিত হচ্ছে এবং এটা কি আদৌ কোলেস্টেরলের মাত্রাকে কমিয়ে হৃদরোগের ঝুঁকি কমাচ্ছে কি না? এ ছাড়া চকোলেট যে রক্তের কোলেস্টেরল কমায় এবং হৃদরোগের ঝুঁকি হ্রাস করে সে সম্পর্কে যথেষ্ট প্রমাণ এখনো সংগ্রহে নেই, তবে চকোলেটে আছে উচ্চমাত্রার চর্বি। অপর এক প্রকাশনায় মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা বলেন, চকোলেট যখন মুখে নিয়ে চোষা হয় তখন তার স্বাদ ও গন্ধে জিহ্বার স্বাদগ্রন্থি উত্তেজিত হয়, যার ফলে মস্তিষ্ক থেকে এনডরফিন নামে এক ধরনের রাসায়নিক পদার্থ নিঃসৃত হয় যা আমাদের প্রফুল্ল রাখতে সাহায্য করে। এ ছাড়া চকোলেটের থিওব্রোমিন ও ফিনাইল ইথাইলামিন মস্তিষ্ককে চাঙ্গা করে উদ্দীপনা জোগায়। তাই দেখা যাচ্ছে যে, খাবার হিসেবে চকলেটকে ততটা খারাপ বলা যায় না। অন্তত শিশু ও তরুণ-তরুণীদের ক্ষেত্রে তো নয়ই।
নিØে ১০ গ্রাম ভালো চকোলেটের পুষ্টিগুণ দেয়া হলোঃ
প্রোটিন বা আমিষ = ১.৯ গ্রাম
ফ্যাট বা চর্বি = ২.২ গ্রাম
কার্বোহাইড্রেট বা শর্করা = ১.১ গ্রাম
ক্যালোরি = ৩১ কিলোক্যালরি এবং প্রচুর পরিমাণে লৌহ-খনিজ পদার্থ রয়েছে যা রোগ প্রতিরোধে সহায়ক।

সুন্দর মুখের রহস্য

ডা. ওয়ানাইজা
চেম্বারঃ যুবক মেডিকেল সার্ভিসেস , বাড়িঃ ১৬, রোডঃ পুরাতন ২৮, ধানমন্ডি আবাসিক এলাকা, ঢাকা। ফোনঃ ০১৯১১৫৬৬৮৪২। (শনি, রবি, বৃহস্পতি) ।

মহিলা কিংবা পুরুষ সবাই চান তাদের মুখের ত্বক সুন্দর থাকুক। দাগহীন হোক মুখের ত্বক বা চেহারা। চেহারা যত সুন্দরই হোক না কেন দাগের কারণে স্বাভাবিক সৌন্দর্যের হানি হয়। মুখের যেসব দাগ নিয়ে আমরা সাধারণত দুশ্চিন্তায় থাকি সেগুলো হচ্ছে মেছতা, শ্বেতী, ছুলি, ফ্রিকেল, ব্রণের দাগ, চোখের নিচের কালো দাগ ইত্যাদি।
মেছতা মহিলাদের গালেই বেশি দেখা যায়। তবে কিছু ক্ষেত্রে পুরুষরাও এ সমস্যায় ভোগেন। নানা ধরনের মেছতা আছে। যেমন­ মেছতা জেনেটিকা, মেছতা ইডিওপ্যাথিকা, মেছতা একটিনিকা, মেছতা কসমেটিকা, মেছতা মনোপজাল, মেছতা আয়াট্রজেনিকা, মেছতা গ্রাভিডেরাম, মেছতা হেপাটিকা ইত্যাদি। অনেকের ধারণা, মেছতার কোনো চিকিৎসা নেই, কিন্তু বর্তমানে চিকিৎসায় মেছতা ভালো হওয়া সম্ভব।
মেছতা যে কারণেই হোক না কেন এর চিকিৎসা করানো প্রয়োজন। প্রথমে হালকা কালো ছোপ থেকে পরে মেছতা সারা মুখে ছড়িয়ে পড়ে। ওষুধ ব্যবহারের পর নানা রকম বিধিনিষেধ মেনে চলতে হয়। আর বর্তমানে মাইক্রোডার্মাবেসানের সাহায্যেও মেছতার চিকিৎসা করা সম্ভব। কেমিক্যাল পিলিং পদ্ধতিও মেছতা চিকিৎসায় সহায়ক। সুতরাং মুখের ত্বকে কালো ছোপ দেখা দিলে অবশ্যই তা বাড়তে না দিয়ে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হবেন। শ্বেতীরোগকে সবাই ভয় পান। তবে সাদা মানেই কিন্তু শ্বেতী রোগ নয়। অনেক অসুখেই ত্বকে সাদা ছোপ পড়তে পারে। ত্বক কোষের মেলানোসাইট ধ্বংস হয়ে গেলে ত্বক সাদা হয়ে যায়। বর্তমানে শ্বেতী রোগের আধুনিক চিকিৎসা রয়েছে। ওষুধ প্রয়োগের ফলে শ্বেতীর বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ সম্ভব। আর একই জায়গায় সীমাবদ্ধ অংশে মিনি পানচগ্রাফটিং করে ত্বক স্বাভাবিক করা যায়।
সুস্থ ত্বক থেকে ত্বক শ্বেতীর স্থানে প্রতিস্থাপন করা হয়। শ্বেতী হলে অনেকে হোমিওপ্যাথিক বা কবিরাজি চিকিৎসা করতেই বেশি পছন্দ করেন। তবে আধুনিক চিকিৎসা নেয়া প্রয়োজন। আরেকটা কথা­ সাদা হয়ে যাওয়া ত্বকে সূর্যরশ্মি পড়তে দেবেন না। বর্তমানে চটঋঅ থেরাপির মাধ্যমেও শ্বেতীর চিকিৎসা করা হচ্ছে। শরীরে কোনো স্থানে ফাঙ্গাস বা অন্য কারণেও সাদা দাগ হতে পারে। তবে এমন হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন। আরেকটি ব্যাপার হচ্ছে শরীরে অন্য রোগ বা সমস্যা থাকার কারণেও শ্বেতী হতে পারে।
ছুলি ত্বকে একধরনের ইনফেকশন। ছুলির নানা ঘরোয়া চিকিৎসা রয়েছে। তবে ছুলি নিরাময়ে কিছু নিয়ম মেনে চলা ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা প্রয়োজন।
মুখের আঁচিল বা কালো তিল অনেক সময় দেখতে ভালো দেখায় না। এসব ক্ষেত্রে কেমিক্যাল পিলিং করা হয় কিংবা ক্রায়োসার্জারিও করা সম্ভব। তবে দেখতে খারাপ না দেখা গেলে ছোটখাটো তিল নিয়ে ভাবনার কারণ নেই। কিন্তু যদি তিল আকৃতিতে বড় হতে থাকে বা রঙ পাল্টায় অথবা চুলকায় তবে অতিসত্বর চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
ত্বকের সবচেয়ে বড় শত্রু ঢ়ৎষলমবভয় বা সূর্যরশ্মি। সুতরাং রোদ এড়িয়ে চলুন। প্রয়োজনে ছাতা অথবা হ্যাট ব্যবহার করুন। চটকদার বিজ্ঞাপন দেখে মুখে কিছু মাখবেন না বা ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকবেন। সব শেষে বলছি, প্রতিদিন অন্তত একটি ফল খাবেন।


ঠাণ্ডা প্রতিরোধে আদা চা
প্রাচীনকাল থেকেই ঠাণ্ডা লাগা প্রতিরোধে আদার চা ব্যবহৃত হয়ে আসছে। আধা ইঞ্চি পরিমাণ আদা নিয়ে সেটি পরিষ্কার করে নিন। এবার এটি ছেঁচে পেস্টের মতো করে নিন। একটি মগে রাখা গরম পানিতে এই পেস্ট ছেড়ে মিশিয়ে নিন। এবার ছেঁকে পরিষ্কার দ্রবণ পৃথক করুন এবং মিষ্টি মিশিয়ে পান করুন। আশা করা যায় ২০ মিনিটের মধ্যেই ঠাণ্ডা সারতে শুরু করবে। এভাবে সকাল-বিকেল পান করুন।


হাত ও পায়ের তালুর ঘাম প্রতিরোধে চা
অনেকেরই হাত ও পায়ের তালু ঘামতে দেখা যায়। হাতের তালু ঘামাটা খুবই বিব্রতকর এবং পায়ের তালু ঘামা থেকে দুর্গন্ধ সৃষ্টি হতে পারে। অ্যাথলেটদের জন্য এটা খুবই ঝুঁকিকর। তাই একজন চর্ম রোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ হচ্ছেঃ পাঁচটি টি-ব্যাগ এক লিটার পানিতে ঢেলে সেদ্ধ করুন। দ্রবণটি ঠাণ্ডা হলে হাত ও পায়ের তালু ২০ থেকে ৩০ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন। অবশ্যই এটা রাতে ব্যবহার করবেন।
চায়ে রয়েছে ট্যানিক অ্যাসিড। বাণিজ্যিকভাবে প্রস্তুতকৃত ঘর্মনাশকগুলো যেমন আইভি ড্রাই, জিলাক্টল এবং জিলাক্টিনেও একই অ্যাসিড রয়েছে।

কমাতে হবে কোলেস্টেরল
অতিরিক্ত কোলেস্টেরল শরীরে নানামুখী প্রভাব ফেলতে পারে। অত্যধিক কোলেস্টেরল হৃদরোগের ঝুঁকির কারণ। আমেরিকান কলেজ অব ফিজিশিয়ানের মতে, এটি ডায়াবেটিসেরও (টাইপ-টু) কারণ। গবেষকদের মতে, ৮০ শতাংশ ডায়াবেটিস রোগীই হৃদরোগে ভোগেন এবং এদের মধ্যে ৬৫ শতাংশ এতে মারা যান। গবেষকরা তাই ৫৫ বছরের বেশি বয়স্ক টাইপ-টু ডায়াবেটিস রোগীদের কোলেস্টেরল কমানোর ওষুধ সেবনের পরামর্শ দিয়েছেন। যদিও তার রক্তে উচ্চমাত্রার কোলেস্টেরল না থাকে। অপেক্ষাকৃত কম বয়স্কদের (ডায়াবেটিস রোগীদের) জন্যও এই পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

কম বিশ্রামে ৬ সমস্যা
ডাঃ মিজানুর রহমান কলেস্নাল
চেম্বারঃ কমপ্যাথ লিমিটেড, ১৩৬, এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা।
কমপ্যাথ লিমিটেড, ১৩৬ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা।

কর্মক্লান্তô দিনের শেষে মানুষের প্রয়োজন হয় একটু বিশ্রামের। বিশ্রাম নিলেই শরীরের কোষগুলো পুনরায় সজীব হয়ে ওঠে ৈপ্রস্তুত হয় আরেকটি কর্মমুখর দিনের জন্য। চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে অন্তôত পাঁচ থেকে সাত ঘণ্টা ঘুমানোর মাধ্যমে একজন পূর্ণবয়স্ক নারী বা পুরম্নষ নিতে পারেন সেই বিশ্রামটুকু। ঘুম না এলেও বিছানায় অলসভাবে শুয়ে থেকে শরীরটা শিথিল করে নেয়া যায় বিশ্রামে। বিশ্রামের অভাবে শারীরিক ও মানসিকভাবে দেখা দিতে পারে নানা সমস্যা। আমাদের সামাজিক কারণে অনেকে প্রয়োজনীয় বিশ্রামটুকু নিতে পারে না। সে ড়্গেত্রে বিশ্রামহীনতায় উদ্‌ভূত পরিস্থিতি কীভাবে মোকাবেলা করবেন?

একজ্ঝ মাথাব্যথা

বিশ্রামহীনতায় মাথাব্যথার উদ্রেক হতে পারে। মাথার এক পাশে কিংবা পেছনটায় কিংবা মাথাজুড়ে ব্যথা হতে পারে। এই ব্যথা ঘাড়ে কিংবা কাঁধে ছড়িয়ে যেতে পারে। এ অবস্থায় আপনার ঘরটি পুরোপরি অন্ধকার করে দিন। কিছুড়্গণ শুয়ে থাকুন বিছানায়। তারপর হালকা নাস্তôা করে ব্যথানাশক ওষুধ যেমন ৈপ্যারাসিটামল খেয়ে নিন। মাথাব্যথার কারণে বমির উদ্রেক হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে বমি বিরোধী কোন ওষুধ সেবন করম্নন। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ঘুমাতে যাবেন।

দুইজ্ঝ অনিদ্রা

বিশ্রামহীনতা থেকে দেখা দিতে পারে অনিদ্রা। অনিদ্রায় যারা ভোগেন তারা বুঝতে পারেন অনিদ্রা কী দুঃসহ যন্ত্রণা! সন্ধ্যার পর চা, কফি কিংবা অ্যালকোহল পান থেকে বিরত থাকতে হবে। ধূমপান অবশ্যই বর্জনীয়। রাত দশটার দিকেই বিছানায় যাওয়ার চেষ্টা করবেন। প্রতিদিন ঘুমানোর সময়টা একটি নির্দিষ্ট ছকে ফেলবেন। ঘুম না এলেও বিছানায় শুয়ে থাকুন। ড়্গধার্ত অবস্থায় ঘুমাতে যাবেন না। হালকা কিছু নাস্তôা খেয়ে তারপর ঘুমাতে যান।

তিনজ্ঝ কোষ্ঠকাঠিন্য

বিশ্রামহীনতায় আপনার কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দিতে পারে। কোষ্ঠকাঠিন্যে প্রচুর পরিমাণ পানি খেতে হবে আপনাকে। খাবারের তালিকায় যোগ করতে হবে প্রচুর শাক-সবজি। রাতে শোয়ার আগে হালকা গরম দুধ খেতে পারেন। কোষ্ঠকাঠিন্যের জন্য নির্দিষ্ট কোন ওষুধ খাওয়া ঠিক হবে না।

চারজ্ঝ অনিয়মিত মাসিক

মেয়েদের ড়্গেত্রে বিশ্রামহীনতার জন্য মাসিকে সমস্যা দেখা দেয়। নির্দিষ্ট সময় অন্তôর মাসিক না হয়ে সেটা অনিয়মিত হতে থাকে। কখনো কখনো মাসিক যন্ত্রণাদায়ক হয়। এ থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে কিছুড়্গণের জন্য পা তুলে শুয়ে থাকতে হবে। চেষ্টা করতে হবে যথেষ্ট পরিমাণে ঘুমানোর। কাজের ফাঁকেও একটু বিশ্রামের সময় খুঁজে নিতে হবে।

পাঁচজ্ঝ অল্পতেই রেগে যাওয়া

বিশ্রামহীনতার ফলে স্নায়ুর ওপর খুব চাপ পড়ে, এতে করে সামান্য কারণে রেগে যাওয়া অসম্ভব কিছু নয়। এ সময় একটা জিনিসেরই প্রয়োজন আপনার। তা হলো ৈবিশ্রাম এবং বিশ্রাম। কাজের বেশি চাপ থাকলে অফিস থেকে কিছুদিনের জন্য ছুটি নিন। একঘেঁয়েমি কাটিয়ে ওঠার জন্য বেড়িয়ে আসুন কোথাও। মজার কোন ছবি দেখুন। বন্ধুদের নিয়ে মেতে উঠুন আড্ডায়।

ছয়জ্ঝ যৌন মিলনে আশঙ্কা

বিশ্রামের অভাবে যৌন মিলনে এক ধরনের আশঙ্কা দেখা দেয়। নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস কমে যায়। সাথীকে ঠিকমতো তৃপ্তি দিতে পারব কি না ৈএ ধরনের চিন্তôার উদ্রেক হয়। অনেক সময় অতিরিক্ত ক্লান্তিôর ফলে যৌন মিলনে অনীহা দেখা দেয়। এ সময় আপনার যথেষ্ট বিশ্রামের প্রয়োজন। নিজের প্রতি আস্থা রাখতে হবে। প্রয়োজনে যৌনসঙ্গীর সাথে আলাপ করবেন। কেউ কেউ এরকম অবস্থায় অ্যালকোহল পান করতে চান। কিন্তু অ্যালকোহল পরে জটিলতার জন্ম দেয়। যৌন মিলনের আগে এককাপ কফি পান করতে পারেন। এতে আপনার ক্লান্তিôভাব কেটে যাবে।

দীর্ঘ জীবনের চার উপায়

কেনা বেশিদিন বাঁচতে চায়। স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাপন এবং পরিমিত আহার দীর্ঘজীবন লাভের জন্য সহায়ক। এমনই তথ্য দিয়েছেন বৃটিশ একদল গবেষক। গবেষণায় দেখা গেছে, যারা নিয়মিত ব্যায়াম করেন , ধূমপান পরিত্যাগ করেন, প্রতিদিন শাক-সবজি ও তাজা ফলমূল খান এবং সর্বোপরি যারা মদ্যপান পরিহার অথবা স্বল্প পরিমাণ ড্রিংক করেন তারা গড়ে অন্তôত ১৪ বছর দীর্ঘ জীবন লাভ করেন। গবেষক এটাও দেখেছে সবচেয়ে বেশী লাভবান হয়েছেন অধূমপায়ী অথবা যারা ধূমপান ছেড়ে দিয়েছেন। ধূমপান পরিত্যাগকারীদের পর্যায়ক্রমে শতকরা ৮০ ভাগ স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়। তাই সুস্থ জীবনযাপনের জন্য অবশ্যই প্রতিদিন ২০ থেকে ৩০ মিনিট ব্যায়াম করা উচিত। এছাড়া প্রচুর পরিমাণ সবুজ শাক-সবজি, ফলমূল আহার এবং ধূমপান অবশ্যই পরিহার করা উচিত। ধূমপানের ফলে শরীরের রক্তনালি সরম্ন হয়ে যাওয়া, ফুসফুসের ক্যান্সারের ঝুঁকি বৃদ্ধি, হার্ট ডিজিজ, হার্টের রক্তনালিতে বস্নক সৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া বেশীরভাগ ড়্গেত্রে অ্যাক্টিভ ধূমপায়ীদের যৌন সমস্যা হতে পারে। তাই ধূমপান একেবারেই পরিত্যাগ করা উচিত এবং চর্বিযুক্ত খবাার কম খাওয়া উচিত।


ভিটামিন ‘ডি’:
ভিটামিন ‘ডি’ সেবনে মৃত্যুর হার কমে; এমনকি সাধারণ এক কোর্স ভিটামিন ‘ডি’ আমাদের দীর্ঘায়ু হতে সহায়তা দিতে পারে। আর্কাইভ অব ইন্টারনাল মেডিসিন নামের চিকিৎসাবিষয়ক সাময়িকীতে সম্প্রতি প্রকাশিত গবেষণাপত্রে এ খবর বেরিয়েছে। বিজ্ঞানীরা ইতিমধ্যে দেখিয়েছেন, ভিটামিন ‘ডি’র অভাবে অতিরিক্ত পাঁচ লাখ ক্যান্সার রোগীর সৃষ্টি হতে পারে। অন্যান্য গবেষণায় দেহে নি্নমাত্রায় ভিটামিন ‘ডি’র সঙ্গে হৃদরোগ ও ডায়াবেটিসের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। অবশ্য ভিটামিন ‘ডি’ সাপ্লিমেন্ট নিতে গিয়ে বেহিসাবি হলে চলবে না। মাত্রাতিরিক্ত ভিটামিন ‘ডি’ গ্রহণের বিপদ সম্পর্কেও অবহিত থাকতে হবে।
সাম্প্রতিক এক গবেষণার প্রকাশিত ফলাফল থেকে দেখা যাচ্ছে, গর্ভবতীদের গর্ভাবস্থার প্রথম দিকে এই ভিটামিনের অভাব ঘটলে প্রি-এক্লাম্পসিয়া নামের মারাত্মক রোগের ঝুঁকি পাঁচ গুণ বেড়ে যায়। এ ধরনের রোগীদের রক্তচাপ বেড়ে যায় এবং হাত-পা ফুলে যায়। নির্দিষ্ট সময়ের আগে প্রসব এবং মা ও শিশুমৃত্যুর এটা এক প্রধান কারণ।



হাঁপানি রোগীদের জন্য সতর্কীকরণ যন্ত্র:
হাঁপানি রোগীদের জন্য নতুন এক সতর্কীকরণ যন্ত্র বেরিয়েছে। এটা এত ছোট যে কল্পনা করাই কঠিন। মানুষের চুলের চেয়ে এক লাখ গুণ ছোট এই সেন্সরটি এক থেকে তিন সপ্তাহ আগে থেকে হাঁপানির আক্রমণের আভাস দিতে পারবে। ক্ষুদ্র এ সেন্সর প্রশ্বাসের সঙ্গে নির্গত বাতাসে নাইট্রিক অক্সাইড গ্যাস পরিমাপ করে রোগ আক্রমণের সংকেত দেবে।

অপারেশন ও খাওয়াদাওয়া

অধ্যাপিকা ডা. আইনুন নাহার

অপারেশনের পর অনেক রোগীই টক জাতীয় ফল খেতে চান না, কারণ তারা মনে করেন টক জাতীয় ফল খেলে ক্ষতস্থান পাকবে অর্থাৎ ইনফেকশন হবে। এ ধারণাটি পুরোপুরি ভুল এবং এর উল্টোটাই সত্য। অপারেশনের পর টক জাতীয় ফল খেলে ক্ষতস্থান আরো দ্রুত শুকায় টক ফলে উপস্থিত ভিটামিন সি-এর ইতিবাচক প্রভাবে। অপারেশনের পর শুধু টক জাতীয় ফল নয় আরো অনেক খাবার নিয়েই কুসংস্কার ও ভ্রান্ত ধারণা প্রচলিত আছে। যেমন অনেকেই মনে করেন অপারেশনের রোগীকে দুধ খাওয়ানো যাবে না। দুধ ডিম খাওয়ালে অপারেশনের জায়গায় পুঁজ হবে। এই কথাটির পেছনে রোগীদের বক্তব্য ঠিক এমন যেন দুধ-ডিম থেকেই পুঁজ তৈরি হয়। সম্ভবত দুধ, ডিমের মিশ্রণ দেখতে অনেকটা পুঁজের মতো বলেই হয়তো এ ধারণার অবতারণা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে দুধ-ডিম কখনো যদি পুঁজ হতো তাহলে দুধ, ডিমকে পুষ্টি বিজ্ঞানীরা উৎকৃষ্ট প্রোটিন বা পুষ্টিকর খাবার বলে উল্লেখ করতেন না। আর দুধ-ডিম খেলে যদি পুঁজ হতো তাহলে তা সব সময়েই হতো, শুধু অপারেশনের পর কেন হবে? শরীরের ক্ষতস্থানে কিংবা কোনো স্থানে পুঁজ হয় ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রমণের কারণে। আমাদের চার পাশে রয়েছে নানা ধরনের রোগজীবাণু। এসব রোগজীবাণু সব সময়েই শরীরকে আক্রমণের চেষ্টা করে যাচ্ছে। শরীরের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এসব ব্যাকটেরিয়াকে শরীরে ব্যাপকভাবে বাসা বাঁধতে দেয় না। যখনই কোনো কারণে শরীরের প্রতিরক্ষা বধ্যবস্থা ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধের ব্যর্থ হয় তখনই শরীরে বাসা বাঁধে এবং ইনফেকশন করে পুঁজ তৈরি করে। পুঁজ মানেই হচ্ছে শরীরের নষ্ট কোষ এবং জীবাণু। ক্ষতস্থান মানেই কাটা উন্মুক্ত স্থান। এই ধরনের স্থানে সহজেই বাসা বাঁধতে পারে­ যা সাধারণ সুস্থ সুরক্ষিত ত্বকের ওপর সহজে সম্ভব হয় না। তাই অপারেশনের পর ক্ষতস্থানে জীবাণু সংক্রামণের ঝুঁকি বেশি থাকে। অনেক সময় অপারেশনকালে অসাবধানতার কারণে ইনফেকশন হতে পারে। কাজেই ইনফেকশন বা ক্ষতস্থানে পুঁজ হওয়ার কারণ হচ্ছে জীবাণু। এ জীবাণু রোগীর ভেতর বিভিন্নভাবে আসতে পারে। সাধারণত অপরিচ্ছন্ন কাপড়-চোপড়, রোগীর বিছানায় দর্শনার্থীর উপস্থিতি, অপরিচ্ছন্ন-নোংরা স্থানে রোগীর অবস্থান ইত্যাদিই রোগীর ক্ষতস্থানে পুঁজ হওয়ার জন্য মূলত দায়ী। এ ক্ষেত্রে ডিম, দুধের কোনো ভূমিকাই নেই। বরং অপারেশনের পর দুধ-ডিম একটু বেশি করেই খেতে হবে।


শরীর সুস্থ রাখতে ব্যায়াম
ডা. নুশরাত ফারজানা

সুস্থ দেহ কার না কাঙ্ক্ষিত। আরো স্পষ্ট করে বলতে গেলে কে না চায় যৌবনকে ধরে রাখতে? কিন্তু এই অসম্ভবকে সম্ভব করা যায় কী? তবে নিরোগ ও সুস্থ থাকার উপায় বের করা হয়েছে অনেক। এ ব্যাপারে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে নিয়ত সুস্থ থাকার। সর্বশেষ আবিষ্কৃত কয়েকটি টিপস এখানে দেয়া হলো। দেহ সুস্থ থাকার স্বার্থে প্রথমেই আসে ব্যায়াম প্রসঙ্গে। এ জন্য হাল্কা ব্যায়াম অপরিহার্য। এ যুগে অনেকেই এ বিষয়ে সচেতন হয়েছেন এবং এর প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছেন। বিশেষ করে যারা স্থূলাকায় তারাই বেশি করে উপলব্ধি করছেন। আর যারা ্লিম ফিগারের অধিকারী তারা একেবারে উদাসীন। কিন্তু এই ঈর্ষণীয় ফিগারকে দীর্ঘস্থায়ী করতে হলে ‘অ্যারোবিকস’ জাতীয় ব্যায়াম ছাড়া অন্য কোনো বিকল্প নেই। তাই সবার সুস্থভাবে বেঁচে থাকার তাগিদে ‘অ্যারোবিকস’ অভ্যাস শুরু করুন। অ্যারোবিকসের মধ্যে হাঁটাই হলো সবার জন্য সবচেয়ে সহজ ব্যায়াম। প্রায় সবাই নিশ্চিন্তে হাঁটতে পারেন। সেটা পুরুষই হোক বা ষাটোর্ধ্ব নারী, গর্ভবতী নারী, সাধারণত যেকোনো বয়সের নারী, ডায়বেটিস অথবা আরথ্রাইটিস অথবা হার্ট অ্যাটাক কিংবা বাইপাস সার্জারির পর ভালো হয়েছেন, তারাও হাঁটতে পারেন। এক সমীক্ষায় দেখা যায়, ইংল্যান্ড ও ওয়েলসের ৭০ শতাংশ পুরুষ ও ৮০ জন নারী, যারা বয়সভিত্তিক কর্মক্ষমতার নিচে অবস্থান করছেন, তাদের করোনারি হৃদরোগের মৃত্যুর হার বেশি। আরেকটি সমীক্ষায় দেখা যায়, মাঝারি মাত্রায় এক মাইল হাঁটলে ৫০ শতাংশ পুরুষ মহিলা বয়সভিত্তিক কর্মক্ষমতা কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে ফিরে আসে এবং হৃদরোগ মৃত্যুর হার হ্রাস পায়। তাই প্রতিদিন নিয়মিত হাঁটুন। হাঁটুন দ্রুতলয়ে যাতে হার্ট কিছুক্ষণের জন্য দ্রুত স্পন্দিত হয় এবং নিঃশ্বাস কিছু সময়ের জন্য ঘন ঘন বয়। তবে খেয়াল রাখতে হবে বুক যেন ধড়ফড় না করে এবং নিঃশ্বাস যেন বন্ধ হয়ে না আসে। কখন হাঁটবেনঃ ভোরবেলায়ই হাঁটার উপযুক্ত সময়, কারণ সকাল বেলা পরিবেশ থাকে দূষণমুক্ত। তাই শ্বাসের মাধ্যমে পাই বিশুদ্ধ অক্সিজেন। যাদের সকালে সময় নেই তারা সন্ধ্যা বেলা হাঁটতে পারেন।কোথায় হাঁটবেনঃ সমতল জায়গায় হাঁটতে পারলে ভালো হয়। উঁচু নিচু রাস্তা বা মাঠে না হেঁটে সমতল রাস্তায় চলতে চেষ্টা করুন। কিভাবে হাঁটবেনঃ দ্রুতলয়ে হাঁটতে হবে। যাতে হার্ট একটু স্পন্দিত হয় এবং শরীর থেকে ঘাম ঝরে। হাঁটবেন একটু ছন্দে। অকারণে থামবেন না একনাগাড়ে হাঁটুন। কতটুকু হাঁটবেনঃ সাধারণত ঘণ্টায় তিন কিলোমিটার হাঁটা যায়। আর দ্রুত হাঁটলে পাঁচ কিলোমিটার হাঁটা যায়। আর দ্রুত হাঁটলে পাঁচ কিলোমিটার হাঁটা যায়। প্রতিদিন ৪৫ মিনিট থেকে ৬০ মিনিট হাঁটা প্রয়োজন। যারা প্রথম হাঁটা শুরু করবেন তারা ১৫ মিনিট করে একদিন অন্তর একদিন হাঁটবেন। আস্তে আস্তে হাঁটার সময় বাড়িয়ে ৬০ মিনিটে নিয়ে যাবেন। কিছু দূর হাঁটার পর যদি ক্লান্ত হয়ে যান তাহলে জোর করে হাঁটার প্রয়োজন নেই।
হাঁটার ভঙ্গিঃ হাঁটার ভঙ্গি সঠিক না হলে খুব তাড়াতাড়ি পরিশ্রান্ত হয়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকে। হাঁটার আগে সোজা হয়ে দাঁড়ান। কান, হাত, নিতম্ব, হাঁটু ও গোড়ালির গাঁট এক লাইনে রাখুন। মাথা সোজা, চিবুক ভেতরের দিকে ফিরিয়ে সামান্য উঁচু করে দাঁড়ান। তার পর হাঁটা শুরু করেন। সামনের দিকে ঝুঁকে হাঁটা ঠিক নয়। হাঁটার পোশাকঃ যেকোনো সুতি কাপড়ের ঢিলেঢালা পোশাক বেছে নিন। সেটা হতে পারে কোন টি-শার্ট, প্যান্ট অথবা ঢিলেঢালা কোনো সালোয়ার-কামিজ। কেমন জুতা পরবেনঃ ফিতা লাগানো কাপড়ের জুতা ব্যবহার করুন। কিনে নিন ভালো আরামদায়ক হিলবিহীন কাপড়ের জুতা। তখনই জুতা কেনার উপযুক্ত সময়। গায়ের যে আঙুলটি সবচেয়ে লম্বা সেটা থেকে হাফ ইঞ্চি জুতা কেনা বাঞ্ছনীয়। দাঁড়িয়ে পায়ের মাপ দেবেন। ক্ষয়ে যাওয়া জুতা পরে কখনো হাঁটা উচিত নয়। হাঁটার সুফলঃ নিয়মিত হাঁটায় বিষণ্নতা ও উদ্বিগ্নতা হ্রাস পায়। মস্তিষ্কের উৎকর্ষ সাধন হয় এবং মানসিক ক্ষমতা বাড়ে। নিদ্রাহীনতা দূর হয়। ওজন নিয়ন্ত্রণ হয়। ক্ষতিকর কলেস্টেরলের মাত্রা কমে গিয়ে এইচডিএলের মাত্রা বাড়ে। রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ থাকে।
কাজেই প্রতিদিন সবাই হাঁটার অভ্যাস করুন। হাঁটার সময়টুকু প্রতিদিনের রুটিনের তালিকার সাথে জুড়ে দিন। এ কথা সত্যি যে, সুস্থ দেহই সুস্থ মনের পূর্ব শর্ত। আর মন ভালো থাকলে সব ভালো। তাই আসুন ভালো থাকার প্র্যাকটিস করি।

অ্যালার্জি
অ্যালার্জি সৃষ্ট রোগব্যাধি ক্রমশই বেড়ে যাচ্ছে। কেন এমনটা হচ্ছে সে বিষয়ে বিজ্ঞানীরা কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য দিতে পারছেন না। কিছু কিছু বিশেষজ্ঞের মতে, অ্যালার্জি এক ধরনের ফ্যাশনেবল রোগ। যারা এতে ভোগে তারা সাধারণত একটু বেশি সংবেদনশীল টাইপের।
এ ছাড়া আধুনিক জীবনযাপনও এর একটা কারণ হতে পারে। অধিকাংশ রোগীর ক্ষেত্রে অ্যালার্জির প্রভাব সাধারণত মৃদু টাইপের। এতে তাদের দৈনন্দিন কাজে অসুবিধা হয় না। কিন্তু কিছু রোগী আছে যারা এতে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে, অনেক সময় হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়, এমনকি অতিসংবেদী অভিঘাত থেকে মৃত্যুবরণও করতে পারে।


অপারেশন পরবর্তী বমি প্রতিরোধে ‘আদা’ কার্যকরী

যাদের শরীরে অস্ত্রোপচার বা অপারেশন করা হয় তাদের অপারেশন পরবর্তী ব্যথা কমানোর জন্য পেথিডিন দেওয়া হয়। কিন্তু এই পেথিডিনের পার্শ্বক্রিয়া হিসেবে অধিকাংশ রোগীর বমি হয়। তছাড়াও অপারেশনের সময় যে চেতনা নাশক ওষুধ দেওয়া হয়, তার প্রভাবেও রোগীদের বমি হতে পারে। তখন বমিরোধের ওষুধ দেওয়া হয়ে থাকে। সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে, ১ গ্রাম আদা অপারেশন পরবর্তী বমি এবং মাথা ঘোরার প্রতিরোধে অনেক বেশি কার্যকরী। আদা সব জায়গাতে পাওয়া যায়। তুলনামূলকভাবে এর দামও সস্তôা। তাই আমেরিকার ‘জার্নাল অফ অবস্টেট্রিকস অ্যান্ড গাইনী’ আদা’কে বিকল্প ওষুধ হিসেবে ভাবছে। বিশেষ করে গরীব দেশগুলোর জন্যে, যেখানে রোগীদের আর্থি সামর্থø সীমিত।

০ ডাজ্ঝ এসএম নওরেশ

কমেডি ছবি হৃৎপিণ্ডের জন্য উপকারী

কমেডি ছবি কে না ভালোবাসে। সারা পৃথিবীতে সব জায়গাতেই ছেলে বুড়ো সবার কাছেই হাসির ছবির জয় জয়কার। এজন্যই চার্লি চ্যাপলিন, মিজ্ঝবিন, থ্রী স্টুজেস আজ সারাবিশ্বেই সমানভাবে জনপ্রিয়। হাসির ছবি কিন্তু হৃৎপিণ্ডের জন্যেও খুবই উপকারী। সম্প্রতি একটি গবেষণায় এমনই তথ্য পাওয়া গিয়েছে। এটি প্রকাশ করেছে হৃৎপিন্ডের উপর প্রকাশিত বিশ্ববিখ্যাত মেডিকেল জার্নাল ‘হার্ট’ (ঐঊঅজঞ)। তারা জরিপ চালিয়ে দেখেছেন, হাসির ছবি হৃৎপিণ্ডের মধ্যে রক্ত সরবরাহকে বাড়িয়ে হৃৎপিণ্ডের কার্যড়্গমতাকে বাড়িয়ে দেয়। তাদের গবেষণায় তারা কিছু ব্যক্তিকে হাসির ছবি দেখিয়েছেন আর কিছু ব্যক্তিকে বিয়োগান্তôক দুঃখের ছবি বা ট্র্যাজেডি দেখিয়েছেন। আধ ঘণ্টা পর দেখা গেছে, যারা কমেডি ছবি দেখেছেন তাদের হৃৎপিণ্ডে রক্ত সরবরাহের মাত্রা অনেক বেড়ে গেছে, যা শারীরিক ব্যয়াম করলে যতোটুক রক্ত সরবরাহ হৃৎপিণ্ডে বাড়ে তার সমপরিমাণ। আর যারা ট্র্যাজেডি দেখেছেন, তাদের হৃৎপিণ্ডে রক্ত সরবরাহের মাত্রা কমে গেছে।

কর্মজীবী মহিলাদের অপরিপক্ক সন্তôান জন্ম দেওয়ার ঝুঁকি বেশি

সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নর্থ ক্যারোলিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণা জরিপে দেখা গেছে, যেসব গর্ভবতী মহিলারা রাতের শিফটে কাজ করেন তাদের অধিকাংশই অপরিপক্ক সন্তôান জন্ম দেন। সাধারণত সন্তôান গর্ভধারণের ৩৭ থেকে ৪২ সপ্তাহের মধ্যে স্বাভাবিকভাবে সন্তôান ভূমিষ্ঠ হয়। ৩৭ সপ্তাহের পূর্বে যে সন্তôান জন্মে তাদেরকেই মেডিক্যালের ভাষায় ইমেচ্যুর বেবী বা অপরিপক্ক বাচ্চা বলা হয়। গবেষণায় দেখা গেছে, কর্মজীবী সন্তôানসম্ভবা মহিলাগণ রাতে কাজ করলে তার শরীরের স্বাভাবিক দেহঘড়ি বা দেহ ছন্দ বিনষ্ট হয় যা জরায়ুর স্বাভাবিক কার্যক্রমকে ব্যাহত করে। ফলে বাচ্চা জরায়ুতে ৩৭ সপ্তাহ মেয়াদকাল পর্যন্তô থাকতে পারে না।


পৌরুষের ক্ষেত্রে জিংকের ভূমিকা?
পুরুষের জন্য জিংকের গুরুত্ব অপরিসীম। গোটা পুরুষ প্রজননতন্ত্রের জন্য জিংকের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। শরীরের যেকোনো গ্রন্থির চেয়ে পুরুষের শুক্রাণু এবং শুক্ররসে খুব বেশি জিংক থাকে। জিংক ঘাটতির ফলে প্রোস্টেট গ্রন্থিতে সমস্যা, যৌনাঙ্গের বিকাশে বাধা, পুরুষত্বহীনতা এবং সন্তান জন্মদানে অক্ষমতা প্রভৃতি মারাত্মক রোগ হতে পারে। সম্প্রতি ইরানি ও মিসরীয় যুবাদের ওপর পরীক্ষা চালিয়ে দেখা গেছে, যাদের খাদ্যে জিংকের পরিমাণ কম তাদের প্রজননতন্ত্রের বিকাশ ও সার্বিক বৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হয়েছে। এদের খাদ্যে যখন জিংক সরবরাহ শুরু হলো, সমস্যাটি তখন আপনাআপনি মিটে যেতে শুরু করল এবং ছেলেদের স্বাভাবিক বিকাশ হতে থাকল। এই গবেষণা থেকে যে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যটি আবিষ্কার হয়েছে তা হলো জিংক ছাড়া পুরুষের ‘পুরুষ হরমোন’ তৈরি হতে পারে না।
ষ ডা. নুশরাত ফারজানা সুইটি
ই-মেইলঃ নড়ঢ়াপপয়ী২৩@ীথভসস.ধসশ

বার্বেরিন কোলেস্টেরল কমায়

বার্বেরিন একটি চীনা ওষুধ। এটি বার্বেরি নামক উদ্ভিদ থেকে সংগ্রহ করা হয়। এটি ডায়রিয়া প্রতিরোধে ব্যবহার হয়। ‘ন্যাচার মেডিসিন’ অনুসারে এটি কোলেস্টেরল কমানোর জন্যও কাজ করে থাকে। ৯১ জন উচ্চমাত্রার কোলেস্টেরল রোগীকে নিয়ে গবেষণায় দেখা যায়, বার্বেরিন মোট কোলেস্টেরলের ২৯ ভাগ, এলডিএল, কোলেস্টেরলের ২৫ ভাগ এবং ট্রাইগ্লিসেরাইডের ৩৫ ভাগ কমায়। বার্বেরিন যকৃতের কোলেস্টেরল তৈরির প্রক্রিয়াকে রহিত করে এবং কোষের ভেতর কোলেস্টেরল প্রবেশ করাতে সাহায্য করে, ফলে রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে।

ভিটামিনের কার্যকারিতার জন্য

ভিটামিন শরীরের বিভিন্ন ক্রিয়া-বিক্রিয়ার গতিকে প্রভাবিত করে। ভিটামিনের কাজ তাই খুবই জরুরি। তাই ভিটামিন এমন সময় গ্রহণ করা উচিত যখন তা কাজ করার উপযুক্ত পরিবেশ পায়। কেননা কাজ করার ভালো পরিবেশ ও উপযুক্ত সময়ের অভাবে ভিটামিন তার গ্রহণযোগ্যতা হারায়। উপযুক্ত শর্তগুলো হচ্ছে­ (১) ভিটামিন গ্রহণের সাথে সামান্য চর্বিও খাবেন। কেননা চর্বিতে দ্রবণীয় ভিটামিনগুলো এডিইকে-এর শোষণের জন্য চর্বি অত্যাবশ্যক। (২) যদি আপনি দৈনিক একটি ভিটামিন ট্যাবলেট গ্রহণ করেন তবে তা সকালের নাস্তার সাথে গ্রহণ করুন। কিন্তু যদি দৈনিক দু’টি হয় তবে সকালে নাস্তার পর একটি এবং রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে অন্যটি গ্রহণ করুন। (৩) যদি আপনি অতিরিক্ত ভিটামিন সি গ্রহণ করতে চান, প্রতিবার গ্রহণের মাঝে কিছু সময় বিরতি রাখবেন। (৪) ভিটামিনটি কার্যকর কি না সেটা দেখতে চাইলে এটাকে ভিনেগারের দ্রবণে ছেড়ে দিন এবং নাড়তে থাকুন। যদি ৩০ মিনিটের মধ্যে গলে যায় তবে মনে করবেন এটি ভালো।


ওষুধের যথাযথ সংরক্ষণ
সুভাষ সিংহ রায়
এক ভদ্রমহিলা চিকিৎসকের পরামর্শমতো কয়েক দিন ধরে একটি করে সুগার কোটেট (চিনির প্রলেপ দেওয়া) আয়রন ট্যাবলেট খাচ্ছেন।
তাঁর পাঁচ বছরের শিশুসন্তান তা লক্ষ করে। শিশুটির ধারণা, তার মা প্রতিদিন ক্যান্ডি বা চকোলেট-জাতীয় কিছু খেয়ে থাকে।
একদিন তিনি অসাবধানতাবশত শোয়ার ঘরের টেবিলের ওপর ওষুধের প্লাস্টিকের বোতলটি রেখে বাড়ির বাইরে গেলেন। এ সুযোগে শিশুটি দু-তিনটি ট্যাবলেট একসঙ্গে মুখে নিয়ে চকোলেটের মতো করে খাওয়ার চেষ্টা করে। অবধারিতভাবে শিশুটির গলায় ট্যাবলেটগুলো আটকে যায় এবং সে ছটফট করতে থাকে।
এ সময় ভদ্রমহিলা ঘরে ঢুকে দেখেন, শিশুটি ছটফট করছে।
ভাগ্য সহায়, তিনি সময়মতো এসে পৌঁছেছিলেন। তাড়াতাড়ি চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়ায় সেযাত্রা রক্ষা পাওয়া গেল। এ জন্যই প্রত্যেক ওষুধের মোড়কের গায়ে লেখা থাকে ‘ওষুধটি শিশুর নাগালের বাইরে রাখুন’।
ওষুধ যতই গুণগত মানসম্পন্ন হোক না কেন, ঠিকমতো সংরক্ষণ করতে না পারলে সব আয়োজন ব্যর্থ হয়ে যাবে। ‘সংরক্ষণ’ কথাটা যেভাবে সহজে বলা যায়, ব্যাপারটা তত সহজ নয় মোটেই।
নিরাপদ ও কার্যকর ওষুধ নিশ্চিত করা যায় সঠিকভাবে ওষুধ সংরক্ষণের মধ্য দিয়ে। কারখানায় গুণগত মানসম্পন্ন ওষুধ তৈরির মধ্য দিয়ে সংরক্ষণের ধাপ শুরু হতে থাকে।
তৈরি ওষুধ কারখানায় ঠিকমতো সংরক্ষণ করে রাখা হয় এবং প্রয়োজনমতো তা কোম্পানির বিপণন চ্যানেলে পাঠানো হয়। এরপর চাহিদামতো ওষুধ পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে পৌঁছায়। সে পর্যন্ত ওষুধ সংরক্ষণের প্রত্যক্ষ দায়িত্ব কোম্পানিগুলোর।
এ কথা সব সময় মনে রাখতে হবে, মোড়কের গায়ে যে মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ লেখা থাকে, সেটা একান্তভাবে নির্ভর করে ওষুধটি সঠিকভাবে সংরক্ষণের মধ্য দিয়ে। অর্থাৎ নির্দেশনামতো সঠিকভাবে সংরক্ষণ করা না গেলে ওষুধের মেয়াদ নির্ধারিত সময়ের অনেক আগেই শেষ হয়ে যাবে।
ওষুধ যদি শীতাতপ-নিয়ন্ত্রিত কক্ষে সংরক্ষণ করা যায় তাহলে খুবই ভালো হয়। কোনোক্রমেই রান্নাঘরের আশপাশে কিংবা স্যাঁতসেঁতে ঘরে সংরক্ষণের জন্য ওষুধ রাখা ঠিক হবে না। কোনো ওষুধই ২৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রার বেশি, এমন স্থানে রাখা যাবে না।
ওষুধ সংরক্ষণের ‘ঠান্ডা স্থান’ বলতে বোঝানো হয়, যেখানে তাপমাত্রা দুই থেকে চার ডিগ্রির মধ্যে থাকে।
আর ‘স্বাভাবিক তাপমাত্রার শুষ্ক স্থান’ বলতে বোঝানো হয়, যেখানকার তাপমাত্রা আট থেকে ২৫ ডিগ্রির মধ্যে থাকে।
কোনো কোনো ওষুধ সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মিতে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়; এ জন্যই ওষুধটি সরাসরি সূর্যের আলো লাগে এমন জায়গা থেকে দূরে রাখতে হয়।
যে কারণে কোম্পানিগুলো অনেক ওষুধ পাথুরে রঙের কাচের বোতলে বাজারজাত করে থাকে।
মনে রাখবেন, যদি নির্দেশনা থাকে তাহলেই শুধু ওষুধ ফ্রিজে রাখা যাবে। নির্দেশনা ছাড়া ওষুধ ফ্রিজে রাখার দরকার নেই।


রক্তচাপ মাপার সহজ নিয়ম
ডাজ্ঝ এস কে অপু
হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ
ময়মনসিংহ চিকিৎসা মহাবিদ্যালয়
কেস স্টাডি
কালাম সাহেব (কাল্পনিক নাম) হন্তদন্ত হয়ে চিকিৎসকের রুমে ঢুকে পড়লেন। বললেন, ‘স্যার, প্রেসার বেড়ে গেছে। এখনই স্ট্রোক করবে। বাঁচব না স্যার। কাইন্ডলি দেখুন।’ চিকিৎসক তাঁকে শান্ত করলেন। কয়েক মিনিট বিশ্রামে রাখলেন। তারপর রক্তচাপ মেপে জিজ্ঞেস করলেন, ‘ভয় কিসের! আপনার রক্তচাপ স্বাভাবিক। ওপরে ১৩০, নিচে ৮৫। কালাম সাহেব আশ্বস্ত হলেন। তবে কি ওরা ভুল মেপেছে! এক জায়গায় বলল ১৫০/৯৫। আরেক জায়গায় ১৬০/৯০।
চিকিৎসক তাঁকে শান্ত রেখে বললেন, যেখানে-সেখানে রক্তচাপ মাপা উচিত নয়। তা ছাড়া রক্তচাপ স্বাভাবিক থাকলে যখন-তখন, যেখানে-সেখানে মাপবেন না। ভুল মাপা আরও উচিত নয়। এ চিন্তা থেকেও রক্তচাপ বেড়ে যেতে পারে।
প্রয়োজনে রক্তচাপ মাপুন নিজে নিজে, বাড়িতেই। কিন্তু সঠিক বা সাধারণ নিয়মে। প্রতিদিন মাপার প্রয়োজন নেই। শান্ত হয়ে বসুন। কমপক্ষে পাঁচ মিনিট বিশ্রাম নিন। কফি বা ধূমপানের অভ্যাস থাকলে রক্তচাপ মাপার আধঘণ্টা আগে ধূমপান থেকে বিরত থাকতে হবে। সোজা হয়ে বসতে হবে মেঝেতে পা সোজা করে রেখে। পিঠ ও হাত টেবিলের ওপর রাখতে হবে-হাত যেন হৃৎপিন্ডের সমতলে থাকে।
যদি দুই হাতে দুই রকম রক্তচাপ থাকে, তবে যে হাতে বেশি রক্তচাপ, তা মাপতে হবে। মাপার আগে সঠিক সাইজ কাফ ব্যবহার করা উচিত।
রক্তচাপ-মাপক যন্ত্রটিও হতে হবে উপযুক্ত ও আধুনিক। একবার নয়। দু-তিন মিনিট ব্যবধানে কমপক্ষে দুবার মাপুন। তারপর গড় রক্তচাপ লিখে রাখুন। রক্তচাপ মাপতে গিয়ে প্রয়োজনে অন্যের সাহায্য নিন। জটিল পদ্ধতিতে নয়, সহজ নিয়মে নিজের বাড়িতেই রক্তচাপ মাপুন। যেখানে-সেখানে, ওষুধের দোকানে যাকে-তাকে দিয়ে যখন-তখন রক্তচাপ মাপা ঠিক নয়। এ বদভ্যাস থেকেও রক্তচাপ বেড়ে যাবে চিন্তায় ও অস্থিরতায়।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে চান? শুধু ওষুধ খেলেই চলবে না। কিছু বদভ্যাস ত্যাগ করুন। ভালো অভ্যাসে সচেষ্ট হোন। যেমন-ধূমপানের অভ্যাস থাকলে তা বন্ধ করুন একেবারে। সরাসরি রক্তচাপ না কমালেও হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি অনেক কমে যাবে। ফলে ওই রক্তচাপ কমানোর যে চিকিৎসা দেওয়া হয়, এতে ভালো ফল পাওয়া যায়।
শরীরের ওজন ঠিক রাখুন। অর্থাৎ ওজন বেড়ে গেলে ওই রক্তচাপ হওয়ার ঝুঁকি কয়েক গুণ বেড়ে যায়। তাই সামান্য ওজন কমালেও তা উচ্চ রক্তচাপ প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে।
নিয়মিত ব্যায়ামে যেমন শরীরের ওজন ঠিক থাকে, তেমনি উচ্চ রক্তচাপ হওয়ার ঝুঁকিও কমে যায়। প্রতিদিনই ঘরে হালকা কাজ করুন। ঝুঁকি কমবে। আর পাতে আলাদা লবণ খাবেন না। পাতে আলাদা লবণ খাওয়া বন্ধ করে দিলে উচ্চ রক্তচাপও কমে যায়। রক্তচাপ বৃদ্ধির প্রবণতা কমে যায়।
আজকাল মানুষ যেমন শারীরিক চাপে থাকে, তেমনি থাকে মানসিক চাপেও। দুটোই রক্তচাপ বাড়ায়। আস্তে আস্তে উচ্চ রক্তচাপ হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়। তাই শারীরিক ও মানসিক চাপ কমান।
বেশি করে শাকসবজি, ফল ও মাছ খান। এসব স্বাস্থ্যকর খাবার রক্তচাপ যেমন নিয়ন্ত্রণে রাখবে, তেমনি হৃদরোগের ঝুঁকিও কমাবে। তাই অভ্যাসের পরিবর্তন করুন। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখুন এবং মাঝেমধ্যে সাধারণ নিয়মে রক্তচাপ মাপুন।


সুন্দর হাসির জন্য ফলিকএসিড

ফলিক এসিড আপনার হাসির উজ্জ্বলতা বাড়াতে পারে। বেশ কিছু গবেষণা থেকে জানা গেছে, এটা দাঁতের প্রদাহ, রক্তপাত ও দাঁতে পস্নাক গঠনে বাধা দেয় যদি সম্পূরক বা মাউথওয়াশ হিসাবে ফলিক এসিড নেয়া হয়। বিশেষজ্ঞের মতে, মুখের কোষগুলো দ্রম্নত বিভাজিত হয়। আর যেসব কোষ দ্রম্নত বিভাজিত হয় তাদের যথাযথ পুনর্গঠনের জন্য ফলিক এসিড দরকার হয়। যদি দাঁতের মাড়ি ফুলে যায় তবে একটা ফলিক এসিড ক্যাপসুলের গুঁড়া ২০০ মিলি লিটার হালকা গরম পানিতে ফেলে নেড়ে নিয়ে পানি দুই মিনিট মুখের ভেতর ধরে রাখুন। তারপর ফেলে দিন। এভাবে পানি শেষ হয়ে যাওয়া পর্যন্তô করতে থাকুন।
পেশি তৈরিতে কলা

কলা রম্নটি আর ভাত এগুলো পেশি বাড়ায়। পর্যাপ্ত কার্বোহাইড্রেট না পেলে ব্যায়ামের শেষ পর্যায়ে শরীর ব্যায়ামের ধকল সামলাতে অড়্গম হয়। কারণ ব্যায়ামের এই শেষ পর্যায়ে পেশি গঠনের কাজ হয়। এই সময় পেশি ভেঙে পুনর্গঠিত হয়। ব্যাপক ভারোত্তোলনের সময় শরীর প্রচুর কার্বোহাইড্রেট ব্যবহার করে। তাই প্রতিদিন প্রতি পাউন্ড বডি ওয়েইটের জন্য অন্তôত তিন থেকে পাঁচ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট প্রয়োজন। যা পাওয়া যাবে ভাত, মুগডাল, আলু ও সর্বোপরি কলা থেকে।

ম্যানিক ডিপ্রেশন রোধে মাছের তেল

মাছের ওমেগা তিন ফ্যাটি এসিডসমৃদ্ধ তেল মস্তিôষ্ক কোষসমূহের মধ্যে অতি তৎপর সঙ্কেত বহনকে লঘু করে এবং মুডের উত্থানকে শান্তô করে। ৩০ জনের ওপর চার মাস গবেষণা করে দেখা গেছে, যারা নিয়মিত ওষুধ নেয়ার পাশাপাশি মাছের তেল সম্পূরক হিসেবে নিয়েছে তারা অন্য যারা নেয়নি তাদের চেয়ে দ্রম্নত আরোগ্য লাভ করেছে। তবে ব্যাপারটি সম্পর্কে আরো বেশি নিশ্চিত হওয়ার জন্য গবেষকদের আরো বড় ধরনের পরীড়্গা চালানো দরকার এবং মাত্রা কতটুকু হবে তা নির্ধারণ করা প্রয়োজন।

আলসার নিরাময়ে কপি

সম্প্রতি স্ট্যানফোর্ড ইউনির্ভাসিটি স্কুল অব মেডিসিনের একদল গবেষক মূল্যবান সবজির ওপর গবেষণা পরিচালনার সিদ্ধান্তô নেন। একটা ছোট গবেষণায় ১৩ জন আলসারের রোগীকে প্রতিদিন ১ লিটার করে কাঁচা কপির রস পান করতে দেয়া হয়। ফলাফলে দেখা গেছে, অন্য লোকদের তুলনায় এসব লোকের আলসার ছয় গুণ দ্রম্নত নিরাময় হয়েছে।

আলসার বা পেটের পীড়া নিরাময়ে কপির প্রভাব সম্পর্কে গবেষকদের ধারণা, কপিতে মূলত যে গস্নুটামাইন ও অ্যামাইনো এসিড রয়েছে, তা পাকস্থলিতে রক্তপ্রবাহ বাড়ায় এবং এর প্রতিরড়্গা দেয়াল মজবুত করে। ০ ডাঃ নাদিয়া নূর

বার্ধক্য প্রতিরোধে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট

অধ্যাপক ডা. এস টি হক

বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে দেখেছেন, কিছু কিছু নিয়ম মেনে চললে বার্ধক্যকে অনেক দিন ধরে রাখা যাবে এবং রোগব্যাধিও দূরে থাকবে। তবে এ জন্য আপনার খাদ্য তালিকায় থাকতে হবে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট। বিভিন্ন দুরারোগ্য ব্যাধি যেমন­ ক্যান্সার, হার্ট অ্যাটাক, থ্রম্বসিস ইত্যাদির হাত থেকে মুক্তি পেতেও আমাদের শরীরের জন্য অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টের প্রচুর দামি খাবার খেতে হবে, মোটেও তা নয়। আমাদের দৈনন্দিন খাদ্য তালিকাতেই লুকিয়ে আছে অ্যান্টি অক্সিড্যান্ট। বিটা ক্যারোটিন, আলফা ক্যারোটিন, লাইকোপিন, ক্রিপটোঅ্যানথিন, পলিফিনলিক এসিড, ট্যানিন, ভিটামিন-এ, ভিটামিন-সি, ভিটামিন-ই, কপার, জিঙ্ক, সেলেনিয়াম, আয়রন ইত্যাদি অ্যান্টি অক্সিড্যান্ট হিসেবে কাজ করে।
পুষ্টি বিশেষজ্ঞদের মতে, পালংশাক, পুঁইশাক, লাউশাক, কুমড়াশাক, ধনেপাতা, পুদিনা পাতা, সজনেশাক, নটেশাক ইত্যাদিতে বিটাক্যারোটিন নামে এক ধরনের অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট আছে। ঢেঁড়স, সয়াবিন ও মটরশুঁটিতে আছে বিটা ক্যারোটিন ও আলফা ক্যারোটিন। বাঁধাকপি ও গাজরে আছে প্রচুর পরিমাণে আলফা ক্যারোটিন। টমেটো, তরমুজ ও লাল নটেশাকে আছে লাইকোপিন নামক উঁচুমানের অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট, যা ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। পাকা কুমড়া, পাকা পেঁপে, কমলালেবু, পাকা আম ইত্যাদিতে আছে ক্রিপটোঅ্যানথিন এবং বিভিন্ন রঙিন শাকসবজি ও ফলমূলে রয়েছে ক্যারোটিনয়েড শ্রেণীর প্রায় ৩০০ ধরনের অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট।
টমেটোতে থাকা লাইকোপিন একটি অত্যন্ত উঁচুমানের অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট। অনেকেই মনে করেন, কাঁচা টমেটো (রান্না ছাড়া) বেশি কার্যকর। কিন্তু দেখা গেছে, টমেটোর অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট রান্না করলেই বরং অনেক বেশি পরিমাণে শরীরে শোষিত হয়। গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, শুধু টমেটোতেই নয়, যেকোনো সবজিতে থাকা ক্যারোটিনয়েড ফ্যাটে দ্রবণীয় হওয়ায় রান্না করে খেলে ভালো ফল পাওয়া যায়। কারণ, রান্না করা সবজিতে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টের বায়ো-অ্যাভেলিবিলিটি কাঁচা সবজির চেয়ে অনেক বেশি। টমেটো কাঁচা অবস্থায় খেলে যে পরিমাণ লাইকোপিন পাওয়া যায়, তার চেয়ে প্রায় পাঁচগুণ বেশি লাইকোপিন শরীরে শোষিত হয় টমেটোর চাটনি অথবা কেচাপ খেলে। তবে সালাদে টমেটো খেতে হলে সাথে বিট-গাজর সেদ্ধ করে নিলে ভালো হয়।
টাটকা সবুজ শাকসবজিতে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট ছাড়াও আছে ভিটামিন ‘এ’ ও ‘সি’, কালো জামে লিউটেন, আনারস, টমেটো, বাতাবীলেবুসহ সব রকমের লেবু, আপেল, কলা, পেয়ারা, বেদানা ইত্যাদিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-সি রয়েছে। ভিটামিন-সি সরাসরি অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট না হলেও এটি শরীরের ফ্রি-র‌্যাডিক্যালের মাত্রা কমিয়ে দেয় এবং শরীরের কোষপ্রাচীরে আলফা টোকোফেরল বা ভিটামিন-ই নিঃসরণে সাহায্য করে। ভিটামিন-ই আবার শরীরের ফ্রি-র‌্যাডিক্যালের মাত্রা কমাতেও বিরাট ভূমিকা রাখে। নানারকম শস্য যেমন চাল, গম, সয়াবিন, ডাল, কিশমিশ, খেজুর, বাদাম ইত্যাদিতে আছে কপার এবং দুধ, সামুদ্রিক মাছ ও গোশতে আছে সেলেনিয়াম। বিভিন্ন ধরনের রান্নায় বিভিন্ন মসলা খাওয়া অনেকের মতে শরীরের জন্য ক্ষতিকর। কিন্তু হলুদের মধ্যে কারকামিন নামক এক ধরনের অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট আছে যা ক্যান্সার প্রতিরোধে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে। মরিচে রয়েছে ক্যাপসাইনো নামের আরেকটি উপকারী অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট। এ ছাড়াও লবঙ্গে আছে ইউগেনল। কাজেই কোনো মসলাই খারাপ নয়। তবে অবশ্যই তা অতিরিক্ত ব্যবহার না করে মাত্রা রেখে ব্যবহার করা উচিত।
পুষ্টিবিদদের মতে, আমাদের প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় ১০ থেকে ৫০ মিলিগ্রাম ভিটামিন-এ ও ক্যারোটিনয়েড, ১০০ থেকে ৩০০ মিলিগ্রাম সেলেনিয়াম, ৪০০ থেকে ৬০০ আইইউ ভিটামিন-ই, ৫০০ থেকে ১ হাজার আইইউ ভিটামিন-সি এবং প্রতিদিন ৬০০ গ্রাম সবজি-ফল ও বাদাম খেতে পারলে ভালো হয়। আবারো বলতে হয়, যদি সুস্থ-নিরোগ জীবন চান এবং বার্ধক্য বিলম্বিতসহ দীর্ঘজীবী হওয়ার বাসনা থাকে তবে আপনার খাবারে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট থাকা অবশ্যই দরকার।

স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সামুদ্রিক মাছ

ডা. মোঃ সাদেকুর রহমান

বেশি করে সামুদ্রিক মাছ খেয়ে আপনি স্ট্রোকমুক্ত হতে পারেন। সপ্তাহে পাঁচবার মাছ খেলে স্ট্রোক ঝুঁকি অর্ধেক কমে যায়। বেশি করে সামুদ্রিক মাছ যেমন পাঙ্গাস, স্যামন, টুনা ইত্যাদি খাওয়া উচিত। ১৪ বছর ধরে গবেষণায় দেখা গেছে যে বেশি মাছ খেয়ে স্ট্রোক কমেছে, বিশেষত রক্তনালিতে রক্ত জমাট বাঁধার কারণে সৃষ্ট স্ট্রোক বেশ কমেছে। সমীক্ষা বলছে যারা রক্ত পাতলা রাখার ওষুধ অ্যাসপিরিন পর্যন্ত খাননি তারাও বেশি মাছ খেয়ে দিব্যি ভালো আছেন। ওই সমীক্ষায় বলা হয়েছে, মাসে একবার মাছ খেয়ে স্ট্রোক ঝুঁকি কমেছে ৭ শতাংশ, সপ্তাহে একবার খেয়ে কমেছে ২২ শতাংশ, সপ্তাহে তিন-চারবার খেয়ে ২৭ শতাংশ এবং সপ্তাহে পাঁচ বা তার বেশি খেলে ৫২ শতাংশ স্ট্রোক ঝুঁকি কমেছে। চিকিৎসকরা তাই বেশি করে স্বাস্থ্যকর খাবার বিশেষত মাছ ও শাক-সবজি খেতে বলেন।
মাছ অ্যাজমা নিরাময় করেঃ ম্যাকায়েল বা স্যামন জাতীয় মাছের ব্যাপক উপকারিতার উল্লেখযোগ্য একটি হলো অ্যাজমা প্রতিরোধ করা। ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক বলেন, তৈলাক্ত মাছগুলো অ্যাজমা ছাড়াও হৃদরোগ, আর্থ্রাইটিস, সোরিয়াসিস ও স্মৃতিলোপ প্রতিরোধ করে। তারা ৭৫০ জন লোকের ওপর গবেষণা চালিয়ে দেখেন যাদের খাদ্য তালিকায় সামুদ্রিক মাছ আছে তারা অ্যাজমাজনিত কারণে বুক ধরে আসা, শ্বাসকষ্ট, বুকে ঝুনঝুন শব্দ হওয়া জাতীয় সমস্যায় খুব কম ভোগেন। একজন ক্লিনিক্যাল এপিডেমিওলজিস্ট তো খাদ্য তালিকায় জাতীয়ভাবেই এসব মাছ অন্তর্ভুক্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন। এসব মাছ পরিমাণে বেশি খেলে শরীরে ডায়ক্সিন নামক পদার্থ তৈরি হয় যা মানুষের শরীরের জন্য ক্ষতিকর।
হার্ট অ্যাটাকে মাছ খানঃ এসব মাছ হার্ট অ্যাটাকও প্রতিরোধ করে। এসব মাছে ওমেগা ৩ বা এন ৩ নামক পদার্থ যা হৃৎপিণ্ডের মধ্যে ক্ষতিকর অনিয়মিত ছন্দকে প্রতিরোধ করে এবং হার্ট অ্যাটাক ঠেকায়।

স্বাস্থ্য রড়্গায় মধু

ডা. বিমল কুমার আগরওয়ালা

দীর্ঘ জীবন ও যৌবন লাভে মধুর অবদানের কথা না বললেই নয়। সত্যি, মানবজাতির জন্য মধু যেন প্রকৃতির এক অনন্য উপহার। শরীরকে রোগমুক্ত, শক্তিশালী ও দীর্ঘজীবী রাখতে এটি এমনি এক পুষ্টি উপাদান যা খেলে সহজেই হজম হয়। তাহলে চলুন, মধুর জাদুকরী শক্তি নিয়ে কিছু জেনে নেয়া যাকঃ
মধুর উপকারিতা
মধু দৈহিক শক্তি বাড়ায় যেহেতু এতে রয়েছে গ্নুকোজ ও ফ্রুকটোজ নামক দু’ধরনের শর্করা। সুক্রোজ ও মালটোজ নামক শর্করাও থাকে অল্প পরিমাণে। শিশু ও বয়স্কদের জন্য তাই মধু খুবই উপকারী।
অজীর্ণতা ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে বিদায় ক্ষুধা বৃদ্ধি পায়।
রোগ প্রতিরোধ ড়্গমতা বৃদ্ধি করে। ফলে সর্দি, কাশি, গলা ব্যথা, হাঁপানি, হৃদ সুরড়্গা ও বিভিন্ন
চর্মরোগে মধু কার্যকর।
ব্যাকটেরিয়া জীবাণু নষ্ট করে ডায়রিয়া সারায়।
ড়্গত সারাতে সহায়ক।
মধু প্রয়োগের নিয়মঃ রম্নচি অনুযায়ী দুধ, চা, পানি, লেবুর রস, রম্নটি কিংবা মুড়ির সাথে মিশিয়ে দৈনিক দুই-তিন চামচ মধু খাওয়া যায়। ডায়রিয়ায় তৈরিকৃত স্যালাইনে গুড় বা চিনির পরিবর্তে আধা লিটার পানিতে চার-পাঁচ চামচ মধু খাওয়া উত্তম।
কোনো ড়্গতে লাগাতে প্রথমে ড়্গতস্থানটি ফুটানো ঠাণ্ডা পানি অথবা নরমাল স্যালাইন দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে আলতো করে সেখানে দৈনিক দুই-তিন বার পাস্তুরিত মধু লাগিয়ে ব্যান্ডেজ দিয়ে বেঁধে দিলে কার্যকর ফল পাওয়া যায়। উলে্নখ্য, মধু লাগালে ড়্গতস্থানে জীবাণুর বৃদ্ধি প্রতিহত হয় এবং নতুন জীবাণুর সংক্রমণ প্রতিরোধ হয়। ফলে ড়্গতস্থানটি সংক্রমণের হাত থেকে রড়্গা পায়।
মধু খাবার সতর্কতাঃ ডায়াবেটিস রোগ থাকলে মধু খাওয়া যাবে না। এক বছরের কম বয়সী শিশুকে কাঁচা মধু খাওয়ানো ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ মধুতে বটুলিনিয়াম টক্সিন থাকলে যা ক্লোসট্রিডিয়াম বটুলিনিয়াম নামক জীবাণু দিয়ে তৈরি হয় তখন ফুড পয়েজিং হয়ে গুরম্নতর সমস্যা দেখা দিতে পারে। এই জীবাণু সাধারণত মাটি এবং গৃহপালিত প্রাণীর অন্ত্রে পাওয়া যায়।

ব্যথানাশক ওষুধে ব্যথা বাড়ায়!

বিভিন্ন ধরনের ব্যথানাশক ওষুধের ব্যবহার হরহামেশাই হচ্ছে। মাথাব্যথা হলে বা অন্য কোনো কারণে ব্যথা পেলেই আমরা ব্যথানাশক ওষুধ খেয়ে থাকি। এতে ব্যথা সাময়িকভাবে কমে যায়। কিন্তু ব্যথা যখন মাথার তখন কি অবস্থা? মাথাব্যথা হলে অ্যাসপিরিন বা প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ অনেকেই খেয়ে থাকেন। কিন্তু গোল বেধেছে অ্যাসপিরিন নিয়ে। মাথাব্যথার রোগে অব্যর্থ এ ওষুধটি নিয়ে সম্প্রতি সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়ার একদল মেডিক্যাল গবেষক বলেছেন যে, ক্রনিক বা দীর্ঘস্থায়ী মাথাব্যথায় একনাগাড়ে অ্যাসপিরিন দিয়ে চিকিৎসা করালে ওই অ্যাসপিরিনের কারণেই আবার মাথাব্যথা শুরম্ন হতে পারে। ওই গবেষকবৃন্দ দেখিয়েছেন যে, প্রায় তিন-চতুর্থাংশ রোগী মাথাব্যথার ওষুধ খাওয়া বাদ দেয়ায় তাদের অসুস্থতার লড়্গণ কমেছে। তাই ব্যথানাশক ওষুধ খাবেন চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ও স্বল্প সময়ের জন্য। ০

অঙ্ক কষে জেনে নিন আপনার হৃদরোগের ঝুঁকি!

হৃদরোগ রোগ হিসাবে যেমন বেশ ঝুঁকিপূর্ণ তেমনি বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার (ডবিস্নউএইচও) মতে এ রোগ অন্যতম ঘাতকব্যাধি হিসাবে স্বীকৃত। বাংলাদেশসহ অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশে হৃদরোগ তৃতীয় ঘাতক রোগ হিসাবে রোগ তালিকায় অবস্থান নিয়েছে, কিন্তু এ রোগ সম্বন্ধে আমরা কতোটুকুই বা জানি অথবা আমরা কতোটুকু পরিমাণ হৃদরোগের ঝুঁকিতে আছি তা জানা কষ্টকর বৈকি। নানা ধরনের পরীড়্গা-নিরীড়্গার ঝামেলা তো রয়েছেই। অতিসম্প্রতি ‘হাইপারটেনশনম্ব পত্রিকায় প্রকাশিত এক গবেষণালব্ধ ফলাফলে চমৎকার তথ্য বেরিয়ে এসেছে। আর তা হলো অঙ্ক কষে হৃদরোগের ঝুঁকি জানার পদ্ধতি। খুবই সোজা এ পদ্ধতিটি। প্রথমে আপনি আপনার রক্তচাপের ওপরের মাত্রা (যা সিস্টোলিক রক্তচাপ নামে পরিচিত) জেনে নিন। তারপর এই সিস্টোলিক রক্তচাপের সঙ্গে নিচের মাত্রা (যা ডায়াস্টোলিক রক্তচাপ নামে পরিচিত) বিয়োগ দিন। যদি দুইটির বিয়োগফল ৬০-এর বেশি হয়, তবে তা লড়্গণীয়। আপনি আপনার চিকিৎসককে দেখান। প্রায় বিশ বছর যাবৎ ও বিশ হাজার ফরাসি নাগরিকের ওপর পরীড়্গা করে দেখা গেছে যে, যাদের সিস্টোলিক (ওপরের রক্তচাপ মাত্রা) রক্তচাপ বেশি, যা কিনা রক্তনালী সংকুচিত হওয়ার কারণে হয়, তাদের ড়্গেত্রে নিচের রক্তচাপ (ডায়াস্টোলিক) কমে যায়। ফলে দুই চাপের মাঝের ব্যবধান বেড়ে যায়।

ইনহেলার ব্যবহারের সঠিক নিয়ম
সুভাষ সিংহ রায়
ফার্মাসিস্ট
ওষুধ আমাদের শরীরে প্রবেশ করানো হয় মোটামুটি চারভাবে। ১জ্ঝ সেবন করার মাধ্যমে, যেমন-ট্যাবলেট, ক্যাপসুল, সিরাপ, ড্রাইসিরাপ ইত্যাদি; ২জ্ঝ সুচ দিয়েশরীরে প্রবেশ করিয়ে, যেমন-ইনজেকশন, স্যালাইন ইত্যাদি; ৩জ্ঝ পায়ু ও যোনিপথের মাধ্যমে, যেমন-সাপোজিটরি; ৪জ্ঝ ফুসফুসে সরাসরি প্রয়োগ করে, যেমন ইনহেলার ইত্যাদি। যেভাবেই ওষুধ দেওয়া হোক না কেন, সবু ওষুধের আক্রান্ত স্থানে পৌঁছাতে হলে রক্তে ওষুধটি যেতে হবে। ফুসফুসে কার্যকারিতার প্রয়োজনে কিছু ওষুধ সরাসরি ফুসফুসে প্রবেশ করানো হয়ে থাকে। ইনহেলারের মাধ্যমে ওষুধ সরাসরি ফুসফুসে প্রবেশ করানো যায়।
এ প্রক্রিয়ায় ওষুধ এক ধরনের গ্যাসের সঙ্গে মিশ্রিত থাকে। ইনহেলার মুখের মধ্যে চেপে ধরে শ্বাস গ্রহণের সময় চাপ দিলে গ্যাসের চাপে ওষুধ বেরিয়ে আসে এবং বাতাসের সঙ্গে মিশে ফুসফুসে প্রবেশ করে। হাঁপানি রোগীদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে প্রয়োজনীয় অবস্থায় ইনহেলার ব্যবহারের পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকেরা। ইনহেলার ব্যবহারে শ্বাস-প্রশ্বাসে প্রতিবন্ধক সংকুচিত মাংসপেশি প্রসারিত হয়ে যায়। একটি বিষয় বিশেষভাবে মনে রাখা দরকার, হাঁপানি ছাড়া ফুসফুসের অন্য কোনো রোগে ইনহেলার ব্যবহার করা হয় না। অর্থাৎ অন্য কোনো ক্ষেত্রে ফুসফুসের অন্যান্য রোগের ওষুধ সাধারণত সরাসরি দেওয়া হয় না।
ইনহেলার প্রস্তুতিতে বেশ উন্নত প্রযুক্তি প্রয়োজন। কয়েক বছর আগেও ইনহেলার ছিল পুরোটাই আমদানিনির্ভর। সে সময় বহুজাতিক কোম্পানিগুলোই সাধারণত দেশে ইনহেলারের চাহিদা মেটাত। এখন বাংলাদেশে ভালো মানের ইনহেলার তৈরি হচ্ছে। ২০০৭ সালে আমাদের দেশে প্রায় ৬০ কোটি টাকার ইনহেলার বিক্রি হয়েছে। প্রতিবছর শতকরা ২০ থেকে ২৫ ভাগ বিক্রি বাড়ছে। সব ওষুধ কোম্পানি ইনহেলার বানাতে পারে না। কেননা বিশেষ উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার রয়েছে এখানে। ইনহেলার টেস্ট করার জন্যও দরকার পরীক্ষা-নিরীক্ষা। এটা যেকোনো পরীক্ষাগারেই করা সম্ভব নয়।
বাংলাদেশে দু-একটা দেশীয় কোম্পানি আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ইনহেলার তৈরি করছে। এমনকি একটি ওষুধ কোম্পানির কারখানায় একটি বহুজাতিক কোম্পানির ইনহেলার তৈরি করা হচ্ছে। এটাকে বলা হয়ে থাকে টোল ম্যানুফ্যাকচারিং। সঠিকভাবে ইনহেলার ব্যবহার করতে হলে কিছু নিয়ম পালন করা দরকার।
ইনহেলার অ্যারোসলটি ভালোভাবে ঝাঁকিয়ে নিন। এরপর ঢাকনাটি খুলে ফেলুন।
তারপর ইনহেলারটি মুখের কাছে নিয়ে আসুন এবং যতদূর সম্ভব শ্বাস বের করে ফেলুন।
ইনহেলারটি মুখের মধ্যে ঠোঁটের সাহায্যে ভালোভাবে আটকে ধরুন। এরপর আস্তে আস্তে গভীরভাবে শ্বাস নিয়ে ইনহেলারটি নিচের দিকে চাপ দিন।
১০ থেকে ১২ সেকেন্ড শ্বাস বন্ধ রাখার পর ধীরে ধীরে শ্বাস বের করে দিন।
পরবর্তী ডোজ নেওয়ার জন্য পাঁচ থেকে সাত মিনিট অপেক্ষা করুন।

ঠোঁটের পরিচর্যা

ডা. ওয়ানাইজা

ঠোঁট হবে আকর্ষণীয় এটাই সবার কাম্য। কিছু ঠোঁট শুষ্ক হয়ে যাওয়া, চামড়া ওঠা, ফাটা ভাব ও কালচে হওয়া খুবই নিয়মিত সমস্যা।
ঠোঁট মিউকাস মেমব্রেন দ্বারা আবৃত। ঠোঁটের ত্বক খুবই নরম ও সেনসেটিভ। ঠোঁটে কোনো তেল গ্রন্থি থাকে না। তাই বাইরের আবহাওয়া থেকে নিজেকে রড়্গা করা ঠোঁটের জন্য বেশ কঠিন। ঠাণ্ডা গরম, সূর্যরশ্মি, দূষণ সবই ঠোঁটের জন্য ড়্গতিকর। এ ছাড়া ঠোঁট কামড়ানো বা জিভ দিয়ে ঠোঁট বারবার ভিজানোও ড়্গতিকর।
অপ্রয়োজনীয় প্রসাধন
অপ্রয়োজনীয় প্রসাধন ঠোঁটকে শুষ্ক করে তোলে। সাময়িক সৌন্দর্যের জন্য অপ্রয়োজনীয় প্রসাধন ব্যবহার করবেন না।
টুথপেস্ট
টুথপেস্ট আমাদের ঠোঁটের সংস্পর্শে আসে দু’বেলা। তাই যথাযথ টুথপেস্ট ব্যবহার না করলে ঠোঁটের ড়্গতি হতে পারে।
লিপস্টিক
লিপস্টিকের কারণে ঠোঁটে আলার্জি ও ঠোঁটের ড়্গতি হতে পারে, তাই আপনার ঠোঁটে যে কোম্পানির লিপস্টিক কোনো প্রতিক্রিয়া করবে না, সেটাই ব্যবহার করম্নন। প্রয়োজনে নামী কোম্পানির লিপস্টিক ব্যবহার করা ভালো।
লিপ বাম ও চ্যাপস্টিক
ফাটা ঠোঁটের জন্য লিপব্যাম ও চ্যাপস্টিক প্রয়োজন। ঠোঁট কোমল ও মসৃণ করে। তবে অতি সুগন্ধিযুক্ত ও রসযুক্ত চ্যাপস্টিক ব্যবহার না করাই ভালো।
সাবান
ঠোঁটের ত্বক সংবেদনশীল বলেই সাবান দেবেন না ঠোঁটে। চোখের চার পাশ এবং ঠোঁটে সাবান ব্যবহার করলে ড়্গতি হয়।
ধূমপান
ধূপপান ঠোঁটের ত্বকের ড়্গতি করে ও কালচে ভাব আনে।
ভিটামিন বি ও ভিটামিনের অভাব
ভিটামিন বি-এর অভাবে ঠোঁট ফেটে যেতে পারে ও ঠোঁটের কোণে ঘা হতে পারে। পুষ্টিকর খাবার খাওয়া প্রয়োজন।
ত্বকের অসুখ
ত্বকের অসুখ যেমন একজিমা, অ্যালার্জি ইত্যাদির কারণেও ঠোঁটের ড়্গতি হতে পারে। এতে চিকিৎসার প্রয়োজন।
শুষ্ক ঠোঁটের যত্ন
ঠোঁট শুষ্ক হওয়ার আগেই তা প্রতিরোধের ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন। ইমোলিয়েন্ট, পেট্রোলিয়াম জেলি, কোল্ডক্রিম ইত্যাদি ঠোঁটে ব্যবহার করা প্রয়োজন।
যথাযথ লিপস্টিকও কিন্তু ঠোঁটের শুষ্কতা প্রতিরোধ করে। তবে এ ড়্গেত্রে লিপস্টিকের উপাদান সম্পর্কে নিশ্চিত হতে হবে। ভিটামিন সমৃদ্ধ ও অয়েলবেসড লিপস্টিক ঠোঁটের জন্য ভালো। তবে লিপস্টিক ব্যবহারে ঠোঁটের ড়্গতি হলে সাথে সাথে তা ব্যবহার বন্ধ রাখুন।
- প্রয়োজনে টুথপেস্ট ব্যবহার করছেন তা বদলে ফেলুন। লড়্গ্য রাখবেন সাদা রঙয়ের টুথপেস্ট সাধারণত ভালো হয় ঠোঁটের জন্য।
- সাবান ও ফেসওয়াশ ঠোঁটে লাগাবেন না।
- সিগারেট খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
- পেট্রোলিয়াম জেলি বা ভেসলিন ব্যবহার করম্নন, যতড়্গণ বাড়িতে থাকবেন ঠোঁটে ভেসলিন লাগাবেন। এ ছাড়া সূর্যমুখী তেল ঠোঁটের জন্য খুব ভালো। এটা দিনে কয়েক বার ব্যবহার করতে পারেন। রাতে ভেসলিন লাগাতে ভুলবেন না।
- ঠোঁট বারবার জিভ দিয়ে ভেজাবেন না, বা ঠোঁট কামড়াবেন না।
- ঠোঁটের মেকআপ উঠানোর জন্য তুলায় ভেসলিন লাগিয়ে আলতো ঘসে তুলবেন। কখনো লিপস্টিক লাগানো অবস্থায় ঘুমাতে যাবেন না।
- ভিটামিন, প্রচুর সবুজ শাকসবজি ও ফল খাবেন।
- বিশেষ সমস্যা হলে অবশ্যই ত্বক বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেবেন।
চেম্বারঃ যুবক মেডিক্যাল সার্ভিসেস , বাড়িঃ ১৬, রোডঃ পুরাতন ২৮, ধানমন্ডি আবাসিক এলাকা, ঢাকা। ফোনঃ ৯১১৮৯০৭, ০১৯১১৫৬৬৮৪২

হিতকরী ব্যাকটেরিয়া
সম্ভবত পরিপাককর্মকে তুঙ্গে রাখার জন্য সবচেয়ে গুরম্নত্বপূর্ণ পুষ্টি পদার্থ হলো প্রোবিয়াটিক্স। যিনি ওষুধ ব্যবহার করবেন, খুব বেশি চিনি, মদ ও শোধিত চাল বা ময়দা গ্রহণ করেন, এদের প্রোবিয়াটিক্স প্রয়োজন। প্রোবিয়াটিক্স হলো বন্ধুভাবাপন্ন ফ্লোরা, যা অন্ত্রে স্বভাবত থাকে। তবে এই বন্ধুভাবাপন্ন ফ্লোরা এভাবে বিনষ্ট হয়। বন্ধুভাবাপন্ন ফ্লোরা হলো হিতকরী জীবাণু যেমন এসিডোফিলাস ও বাইফিডাস­ যা নিয়মিত গ্রহণে গ্যাস দূর হয়, পেট ফাঁপা কমে, পেটের সমস্যা করে।
হজম উপশমক লতাগুল্ম
অনেকে খাবার পর গ্যাসের সমস্যায় ভোগেন। পেট ফাঁপার নানা কারণ আছে, যেমন কুপথ্য, এ্যালার্জি ও ছত্রাক সংক্রমণ। অনেকের দুধ খেলে পেট ফাঁপে। অনেক হার্ব বা লতাগুল্ম আছে যা কার্মিনেটিভ বা পাকস্থলীর বায়ুনাশক ওষুধ। এসব ওষুধ খেলে ভালো হজম হয়, গ্যাস উপশম হয়, কলিক ব্যথা হয় না এবং পেট ফাঁপা উপশম হয়। আদা, শা-জিরা, শুলফাসবজি, পুদিনাপাতা খুব ভালো। অন্ত্র দিয়ে মল ও বিষাক্ত দ্রব্য দ্রম্নত চলনের জন্য আদা সহায়ক। পুদিনার চাটনি খুব ভালো।
তেতো জিনিসের হিতকরী গুণ
আমরা অনেকে তেতো খেতে চাই না। আমার কিন্তু তেতো খুব পছন্দ। উচ্ছে, করলা, নিমপাতা ভাজি আমার খুব পছন্দের। হজমের জন্য তেতো খুব উপকারী। তেতো জিনিস এতো গুরম্নত্বপূর্ণ কেন? তেতো খাদ্য ক্ষুধার উদ্রেক করে, যকৃতের বিষড়্গয় করতে সহায়তা করে, পিত্তরস ড়্গরণ উদ্দীপ্ত করে, পাচকনলের দেয়াল মেরামতে সাহায্য করে, বমির উপশম করে, পুরো পাচকনলের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। উচ্ছে, করলা, চিরতাপাতা, নিমপাতা, সাতকরা­ তেতো খেলে হজম হয় ভালো। প্রতিদিনের সরস সালাদেও তেতো থাকুক। তেতো খাবারের একটি গুণ হলো এটি পিত্তরস কম হলে বমিভাব, কোষ্ঠবদ্ধতা, পেটে শূল, ফুড এ্যালার্জি, মাথাধরা, কলিকপেইন হতে পারে।


চুইংগাম বুক জ্বালাপোড়া প্রতিরোধ করে
খাওয়ার পর চুইংগাম খেলে তা মুখগহ্বর পরিষ্কারের পাশাপাশি বুকজ্বালা বা হার্টবার্ন কমাতে সাহায্য করে। নতুন এক গবেষণায় দেখা গেছে অতিমাত্রায় খাবার গ্রহণের পর খাদ্যনালীতে অতিরিক্ত এসিডের উপস্থিতিজনিত বুকজ্বালা বা হার্টবার্নের সমস্যা উপশমে চুইংগাম সহায়তা করছে। সাধারণভাবে বুকজ্বালা বা হার্টবার্নের এই সমস্যাকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয় গ্যাস্ট্রোইসেফেজিয়াল রিপ্নাক্স ডিজিজ বা সংড়্গেপে জিইআরডি। এই সমস্যার ড়্গেত্রে পাকস্থলী থেকে এসিড খাদ্যনালীতে উঠে আসে এবং বুকজ্বালার সৃষ্টি করে। কিভাবে চুইংগাম এই কাজটি করে থাকে? এ প্রসঙ্গে গবেষকরা বলছেন, চুইংগাম মুখে লালার নিঃস্বরণ বাড়িয়ে দিয়ে মুখকে পরিষ্কার রাখে। ইতঃপূর্বে এক গবেষণায় এটা প্রমাণিত যে চিনি ছাড়া চুইংগাম মুখগহ্বরের চিনির পরিমাণ কমিয়ে দাঁতের ক্যারিজ বা ড়্গয়রোগ প্রতিরোধ করে। একইভাবে চুইংগাম খাদ্যনালীর এসিডের মাত্রা কমানোর ড়্গেত্রেও কাজ করছে। খাবার গ্রহণের পর টানা ৩০ মিনিট ধরে চুইংগাম চিবানোর পর গবেষকরা এই সুফল পেয়েছেন।
যৌনরোগ প্রতিরোধে বিশেষ চর্বি উপাদান
গরম্নর দুধ, নারিকেলের নির্যাস এবং মায়ের দুধে বিশেষ এক ধরনের চর্বি পাওয়া যায়, যা এইডসের জীবাণু (এইচআইভি-ভাইরাস) এবং কিছু কিছু ব্যাকটেরিয়াকে ধ্বংস করতে পারে, যাদের দ্বারা গনোরিয়া এবং ক্ল্যামাইডিয়া নামক যৌনরোগ হয়। মনোক্যাপ্রিণ নামে এই ব্যাকটেরিয়াবিরোধী প্রাকৃতিক চর্বিটির কথা অনেক দিন ধরেই জ্ঞাত; কিন্তু ইউনিভার্সিটি অব আইসল্যান্ডস রিকজাভিক ইনস্টিটিউট অব বায়োলজি এই প্রথমবারের মতো মনোক্যাপ্রিনকে বিশেষভাবে ব্যবহার উপযোগী করে তোলার উদ্যোগ গ্রহণ করে। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় জানা যায়, বাণিজ্যিকভাবে এটিকে জেল হিসেবে পাওয়া যাবে এবং বর্তমানে তার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কথা বিবেচনা করার জন্য প্রথমে তা পশুর দেহে প্রয়োগ করা হচ্ছে। আশা করা যাচ্ছে, খুব শিগগিরই এটি মানবদেহে ব্যবহারের যোগ্যতা অর্জন করবে।

মাইগ্রেন থেকে মুক্তি
বটুলিনাম নামে একপ্রকার জীবাণু বদহজমজনিত পেটের পীড়ার জন্য দায়ী। কিন্তু এই বিটুলিজম টক্সিনই মাইগ্রেনজনিত মাথাব্যথার তীব্রতা ও যন্ত্রণা কমাতে সড়্গম। হিউস্টনের কিছুসংখ্যক উদ্যমী গবেষক ১১টি মাইগ্রেন হেডেক ক্লিনিকের প্রায় ১২৩ জন ক্রনিক মাইগ্রেনে আক্রান্তô ব্যক্তির দেহে বটক্স ইনজেকশন প্রয়োগ করেন। তিন মাস পর দেখা যায় ৫৫ জনের মাইগ্রেনের আক্রান্তô হওয়ার ঘটনা অর্ধেকে নেমে এসেছে এবং মাইগ্রেনের তীব্রতা ৬০ শতাংশ কমে এসেছে। বটক্স মস্তিôষ্ক থেকে যে নিউরোট্রান্সমিটার নির্গত হয় তা প্রতিহত করা এবং পেশি সঙ্কোচনে বাধা দেয়। অন্যান্য ওষুধও প্রায় একইভাবে কাজ করে, তবে তীব্রতা কমাতে বটক্সের জুড়ি নেই।

লাল গোস্তô বেশি খেলে বাড়ে ক্যান্সারের ঝুঁকি
উপায় কি? খাসির গোস্তেôর রেজালা, মেজবানে গরম্নর গোস্তô, বিয়েতে উৎসবে লাল এসব গোস্তেôর সমাহার না ঘটলে লোকে গালমন্দই করে। আর ফাস্ট ফুড রেস্তেôারাঁয়, চটজলদি খাওয়া মানে হ্যাম বার্গার আর এর উপর উপুড় করে ঢালা সস।

অথচ ২০০৭ সালের ডিসেম্বর মাসেই এক সোমবারে আমেরিকার গবেষকরা প্রকাশ করেছেন যে যারা বেশি লাল গোস্তô ও প্রক্রিয়াজাত গোস্তô খেয়ে থাকেন, ওদের নানরকমের ক্যান্সারের ঝুঁকি থাকে বিশেষ করে ফুসফুসের ক্যান্সার ও মলাশয়ের ক্যান্সার।

বেশ বড় আকারের গবেষণা ছিলো সেটি, যা এই প্রথম গোস্তô ও ফুসফুসের ক্যান্সারের সম্পর্ক এত জোরালো করে তুলে ধরলো। এতে আরো দেখানো হয়েছে, যাঁরা বেশি বেশি গোস্তô খান, এদের খাদ্যনালী ও যকৃতের ক্যান্সারের ঝুঁকিও বাড়ে। আর লাল গোস্তô বেশি খেলে অগ্নাশয়ের ক্যান্সারের ঝুকি খুব বেড়ে যায়।

আমেরিকার ন্যাশনাল ক্যান্সার ইনস্টিটিউট এর ডাঃ আমনদাক্রস ও সহকর্মীরা দেখালেন যে, লাল গোস্তô ও প্রক্রিয়াজাত গোস্তô খাওয়া যদি কমানো যায় তাহলে বিভিন্ন রকমের ক্যান্সার ঘটার হার বেশ কমে।

গবেষকরা, অঅজচ সংস্থা মানে আমেরিকার অবসরপ্রাপ্ত লোকদের সঙ্গে মিলে ৫০-৭১ বছর বয়সী ৫ লড়্গ লোকের মধ্যে সমীড়্গা চালিয়েছেন। ডায়েট এন্ড হেলথ ষ্টাডিতে অংশগ্রহণকারী লোকদের মধ্যে আট বছর পর ৫৩,৩৯৬ জন লোকের মধ্যে ক্যান্সার সনাক্ত করা গেলো। এসব ছিলো খাদ্যনালীর ক্যান্সার, মলাশয়-মলান্দ্র ক্যান্সার, যকৃতের ক্যান্সার, ফুসফুসের ক্যান্সার। এদের মধ্যে লাল গোস্তô ও প্রক্রিয়াজাত গোস্তô খাবার অভ্যাস ছিলো বেশ। যারা প্রক্রিয়াজাত গোস্তô খেয়ে ছলেন, এদের মধ্যে মলাশয়ের ক্যান্সারের ঝুঁকি ছিলো ২০% বেশি এবং ফুসফুসের ক্যান্সারের ১৬% বেশি ঝুকি।

আবার লাল গোস্তô যারা বেশী খেয়েছিলেন এদের মধ্যে খাদ্যনালী ও যকৃতের ক্যান্সারের ঝুঁকি ছিলো বেশি।

তবে লাল গোস্তô আহারের সঙ্গে পাকস্থলী, মূত্রাশয় ক্যান্সার, লিউকেমিয়া এসব ক্যান্সারের সঙ্গে সম্পর্কিত ছিলোনা।

লাল গোস্তô বোঝাতে তারা যা বলতে চেয়েছেন তাহলো গরম্নর গোস্তô, শূকরএর গোস্তô এবং ভেড়ার গোস্তô। প্রক্রিয়াজাত গোস্তô বলতে তারা বুঝিয়েছেন, ব্যাকন, রেডমিট সসেজ, পোলট্রি সসেজ, মধ্যহ্ন ভোজের মিটস ঠাণ্ডাগোস্তô, হ্যাম, হটডগস টার্কি ডগস।

গবেষকরা বললেন, নানা পথেই গোস্তô ক্যান্সার ঘটাতে পারে, যেমন গোস্তেô যমন আছে সম্পৃক্ত চর্বি তেমনি রয়েছে লৌহ, এগুলো আলাদাভাবে ক্যান্সার ঘটানোর সঙ্গে জড়িত।

গোস্তেô রয়েছে আরো সব রাসায়নিক পদার্থ যেগুলো ডিএনএ মিউটেশন ঘটাতে পারে যেমন এন- নাইট্রোসো কমপাউন্ড (ঘঙঈঝ), হেটাবোসাইক্লিক এমাইনস (ঐঈঅঝ) এবং পলি সাইক্লিক এরোমেটিক হাইড্রোকার্বনস (চঅঐঝ)।

ওয়াশিংটন ডিসির জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনিন গেনকিংগার এবং মন্ট্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ের অনিতা কৌশিক বলেন, এসব ফলাফলের অন্যান্য গবেষণার ফলাফলের সঙ্গে মিল রয়েছে।

তারা বলেস্ন, “বিভিন্ন রকমের খাদ্যে বৈচিত্র্য ময় নানান দেশের প্রায় শতাধিক এপিডেমিওলিজিক্যাল গবেষণা থেকে দেখা যায় গোস্তô খাওয়ার সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ার।”

তাই একটু রয়ে সয়ে গোস্তô খেলে হয়, তাই নয় কি? খাবেন গোস্তô, তবে কম খাবেন, মাঝে-মধ্যে খাবেন।


চিনা বাদাম হার্টকে সুস্থ রাখে

পেনসিলভেনিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটির গবেষকদের মতে চিনাবাদাম সমৃদ্ধ ডায়েট রক্তের ড়্গতিকারক এলডিএল কোলেস্টোরেল কমাতে সাহায্য করে। ফলে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি হ্রাস পায়। শুধু তাই নয় চিনাবাদামের ফ্যাট ড়্গতিকারক ট্রাইগিস্নসারাইডের মাত্রাও হ্রাস করে কিন্তু রক্তের উপকারী এইচডিএল কোলেস্টোরেলের মাত্রা বৃদ্ধি করে না। পর্যবেড়্গক দলের প্রধান পেনি ক্রিস-ইথারটনের মতে চিনাবাদামের চর্বির পরিমাণ বেশি হলেও তা মনোআনসেচুরেটেড ধরনের চর্বি যা হার্টের জন্য ভালো। তবে যেহেতু বাদামের চর্বি অত্যধিক খাদ্য ক্যালরিসম্পন্ন তাই মেদবাহুল্য রোধে এর ব্যবহার সীমিত রাখা বাঞ্ছনীয়।

[তথ্য সূত্রঃ রিডার্স ডাইজেস্ট]


সেলুনে চুল কাটার সময় সতর্ক থাকুন
ডাজ্ঝ সেলিনা ডেইজী
সহযোগী অধ্যাপক, শিশু নিউরোলজি ও ক্লিনিক্যাল নিউরোফিজিওলজি
ঢাকা মেডিকেল কলেজ

১৬ বছর বয়স ছেলেটির। নরসুন্দরের কাছে চুল কাটার পর একটু ঘাড়-পিঠ মালিশ করে নেয় ৫-১০ মিনিট। বিনিময়ে তাকে কিছু বকশিশ দেয়। একদিন ঘাড় মালিশ করার সময় কট করে একটা আওয়াজ হয়, একটু সামান্য ব্যথাও করে উঠেছিল। কিন্তু ছেলেটি অতটা গ্রাহ্য করেনি। দু-এক দিন পর সে ঘাড়ে ব্যথা অনুভব করতে লাগল। ক্রমে ব্যথা বাড়ছে। মা ভাবলেন, হয়তো উল্টাপাল্টাভাবে শোয়ার জন্য ঘাড়ে ব্যথা হয়েছে। মা প্রতিদিন বালিশ রোদে দিতে লাগলেন, ঘাড়ে গরম কাপড় দিয়ে সেঁক দিতে শুরু করলেন। কিন্তু কিছুতেই ব্যথা কম হচ্ছে না; বরং দিন দিন বাড়ছেই। একপর্যায়ে ব্যথা হাতের মধ্য আঙ্গুল পর্যন্ত আসতে শুরু করল। ব্যথার জন্য ঘাড় নাড়ানোও তার জন্য কষ্টকর হয়ে উঠল। চিকিৎসক পরীক্ষা করে বললেন, ‘স্পনডাইলোসিস’ হয়েছে। ঘাড়ের এমআরআই ও নার্ভ কনডাকশন স্টাডি (স্মায়ুর আচরণ পরীক্ষা) করে সেটি প্রমাণিত হলো।
মেরুদণ্ডের হাড়ের ভেতর থাকে স্পাইনাল কর্ড। সেখান থেকে স্মায়ুর উৎপত্তি। সেই স্মায়ু মেরুদণ্ডের ফাঁক দিয়ে বের হয়ে এসে আমাদের হাত-পায়ে ছড়িয়ে পড়ে। কোনো কারণে ওই স্মায়ু যদি চাপা খায়, তাকে বলা হয় স্পনডাইলোসিস। এটা সাধারণত মধ্য বয়সে হয়, অর্থাৎ চল্লিশের পর, যখন হাড় ক্ষয় হয়ে স্মায়ুর ওপর চাপ খাওয়ার আশঙ্কা থাকে। এটার চিকিৎসা হচ্ছে প্রথম অবস্থায় সারভাইক্যাল কলার। এটাতে অবস্থার উন্নতি না হলে অপারেশনও লাগতে পারে। আলোচ্য কিশোরটির এত অল্প বয়সে কেন হলো? খোঁজ নিয়ে জানা গেল, নরসুন্দর ঘাড়-পিঠ মালিশ করে বিভিন্ন ভঙ্গিমায়। কোনো সময় মাথার ওপর চাপ দেয়, কখনো ঘাড় বাঁ দিকে ও ডান দিকে কাত করে। এসব মালিশ ঘাড়ের জন্য খুবই ক্ষতিকর। এতে ঘাড়ের স্মায়ুতে চাপ পড়ার আশঙ্কা থাকে।
পরামর্শ
* সেলুনে গিয়ে কখনো ঘাড় বা মাথা মালিশ করাবেন না।
* ঘাড় কখনো খুব বেশি পেছনে বা পাশে কাত করতে দেবেন না।
* গাড়িতে সিটবেল্ট ব্যবহার করুন। এতে হঠাৎ করে গাড়ি থামলে করলে ঘাড় অতিরিক্ত ঘুরে যাবে না।

ড়্গুধাকে নিয়ন্ত্রণের নানা কৌশল

শ্যালিকাকে লোকে বলে মধুর শ্যালিকা।

আর শ্যালিকা যদি নিমন্ত্রণ করে মধ্যাহ্ন ভোজনের তাহলে তো কথাই নেই। সে যদি রন্ধন-পটিয়সী হয়, তাহলে সে তৈরি করবে জামাইবাবুর প্রিয় প্রিয় খাবার। চিংড়ির মালাইকারি, সর্ষে ইলিশ অথবা তেল-কই, চিতল মাছের কোপ্তা, খাসির রেজালা, সরম্ন চালের ভাত, চকোলেট পাই, পুডিং, নলেন গুড়ের পায়েসঃ এরকম সব আইটেমঃ

অন্যসব লোকের মত হলে সবগুলোর পদের কিছু কিছু চেষ্টা করবেন জামাইবাবু। কিন্তু কথা আছে। হেলথ ও বিহেভিয়ার বিশেষজ্ঞ থমাস ওয়াডেন বলেন, ‘ যে কোনো আহার পর্বে বিচিত্র সব খাবার থাকলে খাওয়া হয়ে যায় বেশি।’ এর কারণ হলো বিভিন্ন খাদ্যের রয়েছে নিজস্ব আকর্ষণ ও তৃপ্তির সীমারেখা। ড়্গুধার সুইচকে অফ করে দেয়ার কৌশলও আছে, শেখা যায় ইচ্ছে থাকলে। বিজ্ঞানীরা দেখেছেন ড়্গুধাকে নিয়ন্ত্রণ করে প্রাণরাসায়নিক সংকেত। কিছু কিছু খাবার বেশি বেশি খাওয়ার ইচ্ছা জাগ্রত করে, আবার অন্য কিছু খাবার বক্‌ ড়্গুধাকে দমিয়ে দেয়।

কি করা উচিত তাহলে?

কোনো বেলার খাবার বাদ দেবেন না

মেদস্থূলতা বিশেষজ্ঞ ডাঃ সি ওয়েন ক্যালাওয়ে বলেন, ‘যেসব লোক প্রাতঃরাশ বা মধ্যাহ্ন আহার খান না এরা সন্ধ্যে রাতে খাবার সময় অতিভোজন করেন। ক্রনিক ডায়েটারদের মধ্যে এটি প্রায়ই দেখা যায়।’ সমস্যা যা হয় তাহলো, কোনো বেলা খাবার বাদ দিলে, শরীরের যে গস্নাইকোজেন ভান্ডার, যা জ্বালানি হিসাবে ব্যবহৃত হয়, এটি হ্রাস পায়। তখন শরীরে খাদ্যের চাহিদা হয় এবং ড়্গুধা লাগে।

ড়্গুধা মরে জলপানেঃ

পুষ্টি বিশেষজ্ঞ ডাঃ জর্জ বস্ন্যাকবার্ন বলেন, ‘ড়্গুধাকে কৃত্রিমভাবে হ্রাস করার একনম্বর রাস্তôা হল জল পান করা।’ কারণ হলোঃ তরল জিনিস মুখগহ্বরকে সজীব করে, এর পেটের বেশি কিছু স্থান জুড়ে ফেলে, আর পাকস্থলী ভরাট হলে খাওয়ার ইচ্ছা কমে যায়।

প্রতিদিন ৬৪ আউন্স তরল গ্রহণ করতে হবে। পানি ছাড়াও অন্য তরল পানীয় হলো সর তোলা দুধ, হার্বাল চা, লো ক্যালোরি ফলের রস। এক গস্নাস ফলের রস বা মাঠা বা ঘোল ঢক ঢক করে পান করা উচিত নয়, ওষুধ নয়তো এটি। দিনে সারাদিনে অল্প করে করে একসঙ্গে তিন/চার আউন্স করে পান করলে ভালো।

স্যুপ খাওয়া ভালো

১৯৮৯ সালে আমেরিকার জন হপকিনস্‌ বিশ্ববিদ্যালয়ের বারবারা রোলস ও সহকর্মীরা দু’হপ্তা ধরে ১২ জন পুরম্নষকে মধ্যাহ্নভোজনে আমন্ত্রণ করলেন। বিভিন্ন দিনে তারা পেলেন তিনটি এপিটাইজারে যে কোনো একটি। টমেটো স্যুপ, পনির ও ক্র্যাকারস অথবা তাজা ফল। প্রতিটি এপিটাইজোরে ক্যালোরি ছিলো সমান। এরপর এরা পুরো কোর্স খাবার খেলেন। টমেটো স্যুপ খেয়ে পুরোকোর্সে ক্যালোরি কম খাওয়া হলোঃ পনির বা ক্র্যাকারস এর তুলনায় ২৫% কম ক্যালোরি খেলেন পুরো কোর্সে আর স্যুপ পাকস্থলীর বেশ জায়গাও দখল করলো। ব্যাপার হলোঃ স্যুপ খাওয়াতে পেটের বেশ বড় জায়গা দখল হওয়াতে পুরো কোর্সের খাবার গ্রহণ কম হলো। ফলে মোট ক্যালোরি গ্রহণ করলেন কম।

সুমিত পরিমাণে নাস্তôা খাবেনঃ

খাবারের বেলা যখন হবে এর আগে কিছু খেতে বারণ করতেন মা দিদারা। ভোজন করলে বিশেষ করে মিষ্টি মন্ডা, চিনি যদি এতে থাকে, তাহলে শরীর থেকে দীর্ঘড়্গণ ইনসুলিন ড়্গরণ হয়, এতে পালাক্রমে রক্তস্রোত থেকে বাড়তি চিনি সরে যায়, এতে মেদ সঞ্চয় এবং উৎপাদন উৎসাহিত হয়। বার বার কম কম করে খাবার খেলে হ্রস্ব সময় ধরে কম ইনসুলিন ড়্গরণ হয়। অনেকে মনে করেন, এতে মেদ উৎপাদন ও সঞ্চয় কমে, ফলে ঝরে শরীরের বাড়তি মেদ।

পুষ্টিবিদরা এই কম কম করে বার বার খাওয়াকে বলেন ’ এৎধুরহম’ চারণভূমিতে গবাদিপশু যেমন তৃণ, ঘাস খেয়ে বেড়ায়, সেরকম খাওয়ার ধরন। তবে এরকম তৃণভোজী প্রাণীর মত চরে বেড়িয়ে খেতে হলে বাছাই করতে হবে সঠিক খাবার। পুষ্টিবিদ জেমস, কেনে বলেন, ক্যান্ডি ও আইসক্রিম খাওয়া যায় না এভাবে, কারণ ইনসুলিন মান ও ড়্গুধা দুটোই বেড়ে যাবে। তবে কম চর্বি, আঁশবহুল খাবার যেমন গাজর, নাসপতি, আপেল, কমলা, মরিচ, গমের রম্নটি, আলু, ওটমিল এসব এৎধুরহম করে খাওয়া যায়, ড়্গুধা কমে যায়। এভাবে কম কম করে খাওয়াকে বাধাহীন খাওয়া মনে হতে পারে, তাই আগাম খাওয়ার সিডিউল তৈরি করম্নন। দুই ঘন্টা পর পর স্বাস্থ্যকর ভালো খাবার অল্প করে খেতে পারেন।

জটিল শর্করা বেশি খাবেনঃ কয়েকবছর আগেও ডায়েটিং যারা করতে চাইতেন তাদেরকে বলা হত বেশি প্রোটিন কম শর্করা খাবার খেতে।

এসব খাবারকে পরে বলা হলো অস্বাস্থ্যকর এবং বিপজ্জনকও বটে। জটিল শর্করা সমৃদ্ধ ও কম চর্বি খাবার যেমনচৈাল, গম, শস্য, প্যাস্টা, আলু এগুলো ফিরে এসেছে আবার। আর শ্বেতসার হজম হয় এবং জমা হয় মেদের তুলনায় কম কার্যকরভাবে। কেনে বলেন, ‘এর মানে হলো শরীর মেদ বিপাক যখন করে তখন বিপাকহার যত হয় এর চেয়ে বেশি বিপাকহার হয় শ্বেতসার বিপাকের সময়। বিপাকহার উঁচু হলে তাপ উৎপন্ন হয় বেশি। এজন্য হয়ত ড়্গুধা হ্রাস পায়। পুষ্টিবিদরা বলেন দিনে ৬-১১ সার্ভিং শস্য, রম্নটি, গম, চাল খেলে ভালো।

প্রচুর আঁশ খাওয়া ভালো এতে মুখভর্তি খাবার চিবিয়ে খাওয়া হয়। ফলে খাওয়ার গতি ধীর হয়ে যায়, আর ধীরে আহার মানে হলো কম খাওয়া। এই বাড়তি সময় লাগাতে শরীর জেনে যায় জ্বালানি শরীরে এসেছে, আর দরকার নেই আহার করার। খাবারে দ্রবণীয় আঁশ যেমন বার্লি, বীনস, আপেল, কমলাজাতীয় ফল, বীট, গাজর ও আলু ইনসুলিনের সাড়া দমিয়ে দেয়। স্বাভাবিকভাবে আহারের পর ইনসুলিন মান বাড়ে, চিনি ও চর্বির বিপাক সহজ হয়। তবে দ্রবণীয় আঁশ আহারের পর ইনসুলিন মান কমিয়ে রাখে। এছাড়া আশসমৃদ্ধ খাবারে ক্যালোরি থাকে কম প্রতিটি গ্রাসেই, তাই মোট ক্যালোরিও কম খাওয়া হয়।

জানতে হবে কিসে ড়্গুধা উস্‌কে যায়ঃ

হতে পারে সিজলিং চিকেন বা কুড়মুড় পপকর্ন, পাপড় বা আলু ভাজা ৈগন্ধ, দর্শন, শব্দ এমনকি খাবারের সংযুতি অবিভোজনে উৎসাহিত করতে পারে। প্রথম, জিজ্ঞাসা করম্নন নিজেকে, কেন খেতে চান? হয়ত এর সঙ্গে ড়্গুধার কোনো সম্পর্ক নেই। দর্শন, গন্ধ, মনোলোভা খাবারঃদেখে খেতে মন বড় চায় ৈআবেগেও আহার করে মানুষ। অতিভোজনের পেছনে থাকে মনস্তôাত্ত্বিক কারণ ৈমনের চাপে পড়ে অনেকে বেশি খান। মন খারাপ হলে অনেকের অতি ভোজন হয়।

সকালের নাস্তা চিন্তাশক্তি বৃদ্ধি করে

ডা. নায়লা শারমিন

সকালের নাস্তা যেন বাদ না যায়। একাধারে ১২ ঘণ্টা কিছুই খাননি এমনটি যেন কখনো না হয়, বিশেষ করে সকালের নাস্তা যেন কিছুতেই বাদ না পড়ে। সকালবেলা নাস্তার মাধ্যমে শরীরে কিছু গ্লুকোজ সঞ্চিত হয় এবং কিছুটা রক্তে বিচরণ করে যা সারারাত ধরে ব্যবহৃত হতে থাকে শরীরের জ্বালানি হিসেবে। সকালের নাস্তার পর অবশ্যই শরীরটা ভালো বোধ হবে, চিন্তাশক্তি সুন্দরভাবে পরিবাহিত হতে থাকবে। কিন্তু সকালের নাস্তা না খেলে মস্তিষ্ককে ধোঁয়াটে ভাব নিয়ে চলতে হবে। আর ধোঁয়াটে মস্তিষ্ক নিয়েই যদি দিনটা শুরু হয় তাহলে কাজকর্মে অমনোযোগিতার জন্য অবশেষে পস্তাতেই হয়। একই অবস্থা হতে পারে যদি লাঞ্চ কিংবা ডিনার কোনো কারণে বাদ পড়ে যায়। ব্রিটিশ জার্নাল অব ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিতে প্রকাশিত এক গবেষণায় বলা হয়েছে, যেসব লোক কম ক্যালরিযুক্ত (১ হাজার ক্যালরির নিচে) খাবার গ্রহণ করে তারা মোটামুটি পরিমাণ ক্যালরিযুক্ত খাবার গ্রহণকারীদের তুলনায় কম স্মৃতিশক্তি সম্পন্ন, কম মনোযোগী ও কম সজাগ মস্তিষ্কের হয়ে থাকে। এই বিষয়ে গবেষকদের অনুমোদন হলো ক্ষুধা না থাকলেও আপনাকে সকালে কম করে হলেও কিছু খেতে হবে। এতে করে দিনের শুরুতেই মস্তিষ্ক থাকবে সজাগ ও সতর্ক।


পেটের সমস্যায় কলা উপকারী
ডা. সজল আশফাক

আমাদের অনেকেরই হয়তো জানা নেই, কলা পেট ফাঁপা বা স্টমাক আপসেট থেকে রক্ষা করতে পারে। যদিও কথাটি অনেকেই বিশ্বাস করতে চাইবেন না; কিন্তু সাম্প্রতিক গবেষণায় এমনটিই দেখা গেছে। গবেষকরা বলছেন, কলা পাকস্থলী থেকে মিউকাস এবং এক ধরনের কোষের উৎপাদনকে উদ্দীপিত করে। যা পাকস্থলীর ঝিল্লি এবং অ্যাসিডের মাঝে পর্দার মতো বাধার কাজ করে। উল্লেখ্য, এই অ্যাসিডই বুক জ্বলা (হার্ট বার্ন) ও পেট ফাঁপার (স্টমাক আপসেট) জন্য দায়ী। তবে সব ক্ষেত্রেই পেট ফাঁপা এবং বুক জ্বলা দূর করতে কলা কার্যকর হবে না। বিশেষ করে পেট ফাঁপাজনিত কারণে কেউ বমি করতে থাকলে কলা এবং কলার মতো অন্য কোনো শক্ত খাবারই তখন দেয়া উচিত হবে না। এসব অবস্থায় তরল খাবারই রোগীকে দেয়া উচিত। তরল খাবারের পর শক্ত খাবার শুরু করতে চাইলে তা কিছুটা মৃদু জাতের হওয়াই বাঞ্ছনীয়। কলাকে সেই মৃদু খাবার হিসেবেই গণ্য করা হয়। বদহজমসহ পেটের গোলমালের ক্ষেত্রে শিশুদের জন্য উপযোগী ব্রাট (বিআরএটি) খাবারেরও অন্যতম একটি উপাদান হচ্ছে কলা। ‘ব্রাট’ হচ্ছে বানানা, রাইটস সিরিয়াল, আপেল সস ও টোস্টের সংক্ষিপ্ত রূপ। অনেক চিকিৎসকই শিশুদের পেটের গোলমালের পর; বিশেষ করে ডায়রিয়ার পর এই ‘ব্‌্রাট’ খাবার শিশুকে খাওয়াতে পছন্দ করেন।


মুখে দুর্গন্ধ ও মাঢ়ির রক্তপড়া
ডা. এ এস এম আবদুল্লাহ

আমাদের মাঝে অনেকেই আছেন যারা মুখের দুর্গন্ধের জন্য প্রায়ই বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েন। অফিস, বাসা, স্বামী, স্ত্রী, বন্ধু-বান্ধবের আড্ডা কোথাও মনখুলে কথা বলতে সমস্যা হয়ে দাঁড়ায় শুধু মুখের দুর্গন্ধের জন্য। আবার অনেকেই আছেন যাদের মুখ থেকে থুথু ফেললে বা ব্রাশ করলে বা যে কোনো জিনিস দিয়ে অল্প খোচা লাগলেও রক্ত পড়ে সাধারণত ডেন্টাল প্লাক, কেলকুলাস (পাথর) ও জিনজিভাইটিস, এই তিনটি কারণে মুখে দুর্গন্ধ এবং রক্তপড়ার সমস্যা হয়। এই সমস্যা দূর করার জন্য ডেন্টাল স্কেলিং করতে হবে এবং সাথে সাথে ওষুধ এবং ভিটামিন-সি খেতে হবে। ঠিকমতো চিকিৎসা হলে তা থেকে ১৪ দিনের মধ্যে খুব সহজেই এই সমস্যা দূর হয়ে যায়।


ধূমপানে অস্থি ড়্গয়

সানদিয়াগোর ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল বিশেষজ্ঞরা পর্যবেড়্গণ করেছেন যে, ধূমপান হিপ বা কোমরের অস্থি-ঘনত্ব (ঈমভণ ঢণভ্রর্ধহ) কমিয়ে দিতে পারে। এই অস্থি ড়্গয় কড়া ধূমপায়ীদের মধ্যে সবচাইতে বেশি। গবেষকরা আরো উলেস্নখ করেন যে, অস্থি ঘনত্বের এই ক্রমহ্রাস ষাটোর্ধ্ব লোকদের হিপ ফ্রাকচার বা কোমরের হাড়ভাঙ্গার ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। এই অস্থি ড়্গয় বা হিপ ফ্রাকচারের ঝুঁকি ধূমপায়ী মহিলাদের ড়্গেত্রেই প্রযোজ্য। উলেস্নখ্য, ধূমপান ছেড়ে দিলে অস্থিড়্গয় বা হিপ ফ্রাকচারের ঝুঁকিও কমতে থাকে।

গরুর দুধের বিকল্প
রাইস মিল্ক
আজকাল অনেকেই এক বাটি সিরিয়াল ও গরম্নর দুধ দিয়ে সকালের নাশতা সারেন। নাশতায় সিরিয়াল বা খাদ্যশস্য আমাদের দৈনিক প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও লৌহের অভাব পূরণে গুরম্নত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কিন্তু যারা নিরামিষভোজী বা গরম্নর দুধে যাদের অ্যালার্জি আছে তাদের জন্য রয়েছে নতুন খবর। এই নতুন খবর দিচ্ছেন টেক্সাস উইমেন্স ইউনিভার্সিটি ইনস্টিটিউট অব হেলথ সায়েন্সের হাইস্টোন সেন্টারের ডা. জন র‌্যাডেলিফ। তারা গরম্নর দুধের বদলে সয় মিল্ক বা রাইস মিল্ক খেতে পারেন। এর স্বাদও ভালো। হাড় তৈরি ও রড়্গণাবেড়্গণের জন্য অত্যন্তô গুরম্নত্বপূর্ণ উপাদান ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি গরম্নর দুধ ছাড়াও ফর্টিফাইড রাইস মিল্ক পাওয়া যায়। এ কারণেই এটি গরম্নর দুধের স্থান দখল করতে সড়্গম। ফর্টিফাইড রাইস মিল্ক পাওয়া যাবে হেলথ ফুড স্টোরগুলোতে।

ইনসুলিন ইনহেলার

ডা. আফরিন এলিজা

ইনসুলিন নিয়ে ডায়াবেটিসের চিকিৎসা যারা করছেন তাদের জন্য সুখবর। ইনজেকশনের ব্যথা আর সইতে হবে না। সাথে সিরিঞ্জ বা ইনসুলিন এ্যাম্পুলও নিতে হবে না। হাঁপানিতে ব্যবহৃত ইনহেলারের মতো ইনসুলিন ভর্তি একটি ইনহেলার সাথে নিলেই হলো। এক পাফ মুখের ভেতরে শ্বাসের সাথে ছেড়ে দেবেন। অতি দ্রুত এই ‘গ্যাস ইনসুলিন’ রক্তে ছড়িয়ে যাবে। পেয়ে যাবেন আকাঙ্ক্ষিত গ্লুকোজ মাত্রা। এই ইনহেলারের কথা বলছেন মার্কিন গবেষকরা। আশা করা হচ্ছে শিগগিরই এটা বাজারে চলে আসবে।

ভিটামিন-সি মাংসপেশি বৃদ্ধি করে

আমাদের দেহের যাবতীয় কার্যাবলি সুষ্ঠু সম্পাদনের জন্য দরকার খাদ্যের ছয়টি উপাদান। তাদের মধ্যে একটি হলো ভিটামিন। ভিটামিন পরিবারের মধ্যে ভিটামিন-সি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় দেখা গেছে, ভিটামিন-সি মানুষের দেহের মাংসপেশির শক্তি বৃদ্ধিতে বিশাল ভূমিকা পালন করে। সেখানে সাঁইত্রিশ জন ছাত্রের ওপর একটি গবেষণা হয়। প্রত্যেক ছাত্রকে নিয়মিত শরীর চর্চার পাশাপাশি প্রতিদিন ১০০০ মি.গ্রা. করে ভিটামিন-সি (১টা বড় কাগুজি লেবু বা কমলা লেবু বা মাল্টা) খেতে দেয়া হয়েছিল। আট সপ্তাহ পর মাংশপেশির শক্তি পরীক্ষা করে দেখা গেল, তাদের পায়ের মাংসপেশির শক্তি শতকরা ১৫ ভাগ বৃদ্ধি পেয়েছে। অতএব, প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় চাই পর্যাপ্ত ভিটামিন-সি। কারণ, দেহের ক্ষয়পূরণ ও বৃদ্ধি সাধনেও এর ভূমিকা অপরিসীম।

জিংক দেহের ওজন কমায়

ডা. মনিরুল ইসলাম
জিংক একটি ধাতু যার এক বিশেষ ভূমিকা রয়েছে আমাদের দেহের ওজন কমাতে। যাদের ওজন বেশি সহজ কথায় মোটাসোটা, নিয়মিত ও পরিমাণমতো জিংক সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণের মাধ্যমে তাদের ওজন কমিয়ে আনা সম্ভব। আমেরিকান কলেজ অব নিউট্রিশনের এক গবেষণার ফলাফলে বলা হয়, শরীরে জিংকের অভাব, শরীরকে মোটাসোটা করে তুলতে পারে। সেখানে নয়জন মোটাসোটা লোককে প্রত্যেকদিন জিংক সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ানো হয় বারো সপ্তাহ। তারপর ওজন কমতে শুরু করলে জিংক বর্জিত
খাবার খাওয়ানো হয়, ওজন স্বাভাবিকে না আসা পর্যন্ত। গবেষণায় দেখা যায়, লেপটিন এক প্রকার হরমোন, যা ক্ষুধা কমায় ও বেশি শক্তি ক্ষয় করে। রক্তে জিংকের মাত্রা বেশি থাকলে লেপটিনের মাত্রা বাড়ে আবার কম থাকলে কমে। তাই গবেষকদের বক্তব্য প্রত্যেককে প্রতিদিন অন্তত
১৫ গ্রাম জিংক খাবারের সাথে গ্রহণ করা উচিত। বাজরা, জোয়ার, কাঠবাদাম, নারকেল, কাজুবাদাম জাতীয় খাবারে প্রচুর জিংক থাকে।

এারসাইজ রোগ প্রতিরোধ ড়্গমতা বাড়ায়

যারা নিয়মিত ব্যায়াম করেন তাদের আপার রেসপাইরেটরী ট্রাক্টের ইনফেকশন বা সর্দি-কাশি, গলায় ব্যথা কম হয়। যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাচাসুয়েটস বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকগণ এ তথ্য প্রকাশ করেছেন। গবেষণায় দেখা যায়, যারা সারা বছর ব্যায়াম করেন তাদের গলার ইনফেকশন অন্যদের থেকে অন্তôত ২৫ ভাগ কম হয়। এারসাইজ শরীরের ইম্যিউন সিস্টেমকে সবল করে এবং শ্বেতকণিকা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। রক্তের শ্বেতকণিকা রোগ প্রতিরোধ করে। প্রতিদিন ৬০ থেকে ৯০ মিনিট মধ্যম পর্যায়ের পরিশ্রম করলে অথবা ২০ থেকে ৩০ মিনিট ব্যায়াম করলে এই সুফল পাওয়া যায়। সাঁতার, সাইক্লিং, ট্রেডমিল, স্কেটিং করলেও সমান উপকার পাওয়া যায়।

কম ঘুমে রোগ প্রতিরোধ ড়্গমতা হ্রাস

একজন নারী-পুরম্নষের প্রতিদিন অন্তôত ৭ থেকে ৮ ঘন্টা ঘুমের প্রয়োজন। যদি কেউ কম ঘুমাতে অভ্যস্তô হয় বা প্রতিদিন সর্বোচ্চ ৪ ঘন্টার বেশি ঘুমাতে না পারে, আর এ অবস্থা যদি দীর্ঘমেয়াদী চলতে থাকে তবে শরীরের রোগ-প্রতিরোধ ব্যবস্থা (ইম্যিউন সিস্টেম) ৫০ ভাগ ড়্গমতা হারিয়ে ফেলে। ফলে শরীরে ছোটখাটো নানা রোগ লেগেই থাকে। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা অটুট রাখতে হলে প্রতিদিন কমপড়্গে ৭/৮ ঘন্টা ঘুমাতে হবে। বিজ্ঞানীরা গবেষণায় দেখেছেন প্রতিদিন পর্যাপ্ত ঘুমানো গেলে শরীরে, সর্বোচ্চ ‘ন্যাচারাল কিলার সেল’ তৈরি হয়, যা কিনা ভাইরাস-এর বিরম্নদ্ধে প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে সাহায্য করে। কিন্তু সবচেয়ে আশার কথা হচ্ছে এই ন্যাচারাল কিলার সেল কখনো নিজ শরীরকে আক্রমণ করে না।

গ্রীন টি কেন উপকারী

গ্রীন টি বা সবুজ চা উপকারী এ নিয়ে কোন বিতর্ক নেই। তবে সবুজ চা পানের একটা নিয়ম অনুসরণ করতে হবে। সম্প্রতি গবেষণায় দেখা গেছে সবুজ চা ‘কমন কোল্ড’ বা শীতকালীন ঠান্ডাজনিত সমস্যা রোধ করতে সহায়ক। কানাডিয়ান গবেষকগণ গবেষণায় দেখেছেন ঠান্ডাজনিত সমস্যার জন্য দায়ী এডিনো ভাইরাস-এর বিস্তôার রোধে সবুজ চায়ের ইজিসিজি নামক এক ধরনের রাসায়নিক যৌগ সাহায্য করে। গ্রীন টি যত বেশি গাঢ় হবে (আমরা যাকে বলি কড়া চা) তত রোগ প্রতিরোধ ড়্গমতা বেশি হবে। বিশেষজ্ঞগণ আরো দেখেছেন গ্রীন টি গরম পানিতে অন্তôত ১০ মিনিট রেখে দিলে প্রয়োজনীয় রোগ প্রতিরোধক রাসায়নিক যৌগ বেশি নিঃসৃত হয়।

ডায়েটিং ছেড়ে দিলে ওজন বাড়ে

ব্যায়াম বা শরীর চর্চা বা নিয়মিত অন্তôতঃ ৩০ মিনিট হাঁটাচলা করলে শরীরের ওজন হ্রাস, হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিসের ঝুঁকি হ্রাস পায়। কিন্তু ব্যায়াম করার পর যদি কেউ আকস্মিক ব্যায়াম ছেড়ে দেন তবে শরীরের ওজন বেড়ে যায়। আমেরিকান জার্নাল অব ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশনে প্রকাশিত এক নিবন্ধে এ তথ্য দেয়া হয়। তবে গবেষণায় দেখা গেছে কোন কারণে শরীর চর্চা ছেড়ে দিলে খাদ্যশক্তি বার্ন করতে খাবারের মেন্যু থেকে অন্তôতঃ ৭০০ থেকে ১০০০ ক্যালরি বাদ দেবার পস্ন্যান করতে হবে। বিশেষজ্ঞদের অভিমতঃ যখন ব্যায়াম করা বন্ধ রাখা হয় তখন বাসায় হোম ম্যাসাজ নেয়া ভালো। এতে শরীরে বাড়তি মেদ জমতে পারে না।

এছাড়া এ সময় কম আহার করা উচিত। এতে কয়েকদিন ব্যায়াম না করলেও ওজন বাড়বে না। পাশাপাশি মনে রাখতে হবে ওজন কমানোর জন্য ডায়েট কন্ট্রোল করা ভালো। তবে ডায়েট কন্ট্রোল ছেড়ে দিলে আবার শরীরের ওজন বেড়ে যেতে পারে।

পরিমিত খাবার গ্রহণের সুফল

চমন আরা

সুন্দর সুস্থ দীর্ঘ জীবনের জন্য খাদ্যের ভূমিকা মুখ্য। সুতরাং খাদ্য গ্রহণের ব্যাপারে সচেতন থাকা প্রয়োজন, খাবার গ্রহণের ক্ষেত্রে পরিমিতি জ্ঞান থাকতে হবে।
ক্ষুধা নিবৃত্তিসহ দেহের কাজকর্ম সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত করে দেহকে সুস্থ, সবল ও কর্মক্ষম রাখার জন্য যেসব উপাদান প্রয়োজন, সেসব উপাদানসমৃদ্ধ দ্রব্যকেই ‘খাদ্য’ বলা হয়। খাদ্যের উপাদানগুলো হলোঃ
১) আমিষ, ২) শ্বেতসার/শর্করা, ৩) চর্বি/স্নেহ, ৪) ধাতব/খনিজ লবণ, ৫) খাদ্যপ্রাণ, ৬) পানি।
খাদ্যমূল্য নির্ভর করে তার উপাদানের প্রকার ও প্রাচুর্যের ওপর। আহার গ্রহণের সময় যথেষ্ট সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত। কারণ, কোনো খাদ্যের অভাব যেমন শরীরের জন্য ক্ষতিকর, তেমনি আধিক্যও সুখকর নয়।
‘পরিমিত খাবার’ মানে হচ্ছে কোন বয়সে, কেমন দৈহিক গড়নে, কোন সময়ে, কী ধরনের পেশায়, কোন জাতীয় খাবার, কত পরিমাণে খেতে হবে। সব খাদ্যে সব উপাদান সমানভাবে বিদ্যমান থাকে না, সেহেতু সুষম খাদ্য গ্রহণ অতি জরুরি।
পরিমিত ও সুষম খাবার গ্রহণের যে ‘সুফল’ রয়েছে, পরিমিত ও সুষম খাবারের পাশাপাশি পরিমিত হাল্কা ব্যায়াম দেহকে নীরোগ রাখে।
অথচ যারা অতিমাত্রায় কম খেয়ে রোগা-দুর্বল, আর যারা অতিভোজনে স্থূলকায়, উভয়ের ক্ষেত্রেই ব্যায়াম করাটা কষ্টদায়ক এবং বলতে গেলে তাদের কারো পক্ষেই ব্যায়াম করা হয়ে ওঠে না। ফলে তাদের স্বাস্থ্যের ক্ষতি হয়। শরীর ভালো না থাকলে কিন্তু মানুষের মনও ভালো থাকে না। আর দৈহিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের সমন্বয় না থাকলে মানুষ কোনো কাজ সুষ্ঠুভাবে করতে পারে না।
সময়মতো এবং পরিমাণমতো খাওয়া দাওয়া না করলে নানা অসুখ দেখা দেয় যা জীবনের স্বাভাবিক ছন্দকে ব্যাহত করে এবং এতে সৌন্দর্যেরও হানি হয়। অসুখগুলোর মধ্যে হতে পারে­ অপুষ্টিজনিত রোগ, গ্যাস্ট্রিক আলসার, হার্ট ডিজিজ, ডায়াবেটিস, হাইপারটেনশান, হাইপোটেনশান, বিবিধ দুরারোগ্য ব্যাধি ইত্যাদি যেগুলো মানুষের শরীর-মন উভয়কেই কুরে কুরে খায়।
প্রতিদিন খাদ্য তালিকায় থাকা উচিত পর্যাপ্ত আঁশযুক্ত খাবার। আঁশজাতীয় খাবার কোষ্ঠ পরিষ্কার করে পেট ভালো রাখে। ব্রণ হতে দেয় না। রক্তে খারাপ কোলেস্টরোলের মাত্রা কমায় এবং ভালো কোলেস্টরোলের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। আর আঁশযুক্ত খাবার যেহেতু পেট ভরা থাকার একটা অনুভূতি দেয়, সুতরাং ভাত-রুটি জাতীয় খাবারের চাপ কমে এবং দেহের ওজন বৃদ্ধির সম্ভাবনা থাকে না। প্রচুর শাকসবজি, ফলমূল খাওয়া উচিত। এগুলোর ক্যালরি মূল্য কম হলেও পুষ্টি মূল্য অনেক বেশি।
স্বাস্থ্যকর চুল, ত্বক ও দাঁত মানুষের সৌন্দর্য বাড়িয়ে দেয়। নিয়মিত সঠিক পরিমাণে সুষম খাবার গ্রহণ করলে ত্বক, চুল ও দাঁত ভালো থাকে। চোখ ভালো থাকে।
ভিটামিন- ‘এ’ সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। ভিটামিন ‘এ’ দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
খাদ্যের একটি প্রয়োজনীয় উপাদান হলো পানি। দিনে অন্তত ১৬-২০ গ্লাস পানি পান করা প্রয়োজন। দেহের অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন ক্রিয়া সম্পাদন করা এবং বিভিন্ন বিষাক্ত বর্জø নিষ্কাশনের জন্য পানি প্রয়োজন। বয়স, সময়, পরিবেশ ইত্যাদি অনুপাতে সবসময় পরিমিত খাবার গ্রহণের অভ্যাস করতে পারলে মৃত্যু পর্যন্ত কোনো খাদ্যই অতিরিক্ত নিয়ন্ত্রণ করার দরকার হয় না।
নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম করা, ব্যায়াম ও মেডিটেশন করলে বাড়তি ক্যালরি দেহের ওজন বৃদ্ধি করতে পারে না। এ প্রসঙ্গে প্রবাদ আছে যে, সকালে রাজার মতো, দুপুরে প্রজার মতো, রাতে ভিখিরির মতো খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। সকালে ভরপেট, দুপুরে তৃপ্তির সাথে এবং রাতে হাল্কা খাবার গ্রহণ করা উচিত। সুস্থ থাকার এগুলোই মূলমন্ত্র।
গ্রন্থণাঃ সাদেকুর রহমান


বেশি করে প্রোটিন খান

একটা ধারণা সবার মনে বদ্ধমূল হয়ে আছে যে, বেশি ক্যালসিয়াম গ্রহণের মাধ্যমে অস্টিওপোরোসিস ঠেকানো যায়। কিন্তু হার্ভার্ড গবেষকদের গবেষণা থেকে জানা যায় যে, দৈনিক প্রয়োজনীয় পরিমাণ প্রোটিন গ্রহণ করার মাধ্যমেও অস্টিওপোরোসিস থেকে বাঁচা যায়। গবেষকরা ৩৯ জন রজঃনিবৃত্ত হয়নি এমন মহিলাদের নিয়ে একটি গবেষণা চালান। তাদের আরডিএর সমপরিমাণ (সাধারণত প্রতি কেজি ওজনের জন্য ০·০৮ থেকে ১·০ গ্রাম) প্রোটিন গ্রহণ করতে দেয়া হয়। এক সপ্তাহ পর দেখা যায় যে, তাদের প্রস্রাবের সাথে কম এ্যাসিড, ক্যালসিয়াম এবং হাড় সম্বন্ধীয় প্রোটিন বের হয়, যা থেকে ধারণা করা হয় যে, হাড়ের ড়্গয় হ্রাস পেয়েছে। ধারণা করা যায় যে, যখন প্রোটিন বেশি ভাঙ্গে তখন এ্যাসিড বাড়ে। এই এ্যাসিডকে নিষ্ত্র্নিয় করার জন্য হাড় থেকে ক্যালসিয়ামমুক্ত হয় তাই গবেষকদের ধারণা উচ্চমাত্রার প্রোটিন অস্টিওপোরোসিস ঠেকাতে পারে। যদি প্রোটিন বেশি গ্রহণ করতে ব্যর্থ হন, তবে অতিরিক্ত পরিমাণ শাকসবজি, জাম এবং বাদাম গ্রহণ করা বাড়ান। কারণ এরা এ্যাসিড হতে দেয় না। ফলে হাড়ের সুরড়্গা নিশ্চিত হয়।

খাদ্য সংরড়্গক থেকে সাইনুসাইটিস

সাইনোসাইটিস কিংবা ন্যাজাল কনজেসশন-এর জন্য ঠাণ্ডা ও ফুলের রেণুকে সবাই দায়ী করে থাকেন। কিন্তু একথা সবসময় সত্য নয়। ইতালিয়ান গবেষকদের মতে, সাধারণত ব্যবহৃত হয় এমন খাদ্য সংরড়্গক-এর কারণেও দীর্ঘস্থায়ী ন্যাজাল কনজেসশন হতে পারে। লাগাতার কনজেসশন-এ ভুগছেন এমন ২২৩ জনেকে নিয়ে শুরম্ন হয় গবেষণা। তাদের ব্যবহৃত সকল ধরনের খাদ্য সংরড়্গক সরিয়ে নেয়া হয় এবং পরবর্তীতে এক এক করে পুনরায় ব্যবহার করতে দেয়া হয়। দেখা যায় যে, কারও কারও ড়্গেত্রে পুনরায় ব্যবহারের ঘন্টাখানেকের মধ্যেই ন্যাজাল কনজেসশন দেখা দেয়। এরকম একটি খাদ্য সংরড়্গক হচ্ছে মনোসোডিয়াম বেনজোয়েট। এটি কোলা, জেলী এবং সালাদ তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। তাই যাদের এরকম সমস্যা আছে, তাদের উচিত পরীড়্গার মাধ্যমে এ সকল খাদ্য সংরড়্গক ব্যবহার করা।

ত্বকের যত্নে পানি পান

পানির অপর নাম জীবন। বিশ্বব্যাপী ত্বকের যত্নে যখন নামী-দামী প্রশাধন সামগ্রীর ব্যবহার নজীরবিহীনভাবে বাড়ছে তখন বৃটিশ বিজ্ঞানীরা ত্বক সুন্দর রাখতে পানি নিয়ে একটি ভিন্নধর্মী তথ্য দিয়েছে। তারা গবেষণায় দেখেছেন শুধুমাত্র পর্যাপ্ত পানি পানের ফলে ত্বকে পানির পরিমাণ স্বাভাবিক থাকলে ত্বকের সৌন্দর্য বেড়ে যায় এবং ত্বকের ভাঁজ কমতে সাহায্য করে। পানি পান শুধু সুস্থ কিডনীর জন্য প্রয়োজন তাই নয়, পানি ত্বকের সৌন্দর্য রড়্গা এবং খাদ্য পরিপাকে ও এসিডিটি লাঘবে সহায়ক। যারা ত্বক সুন্দর রাখতে চান তারা প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ গস্নাস পানি পান করম্নন।


কফের চিকিৎসায় পুদিনা পাতা

ডা. সুমাইয়া নাসরীন

কফ-কাশিতে আমরা সাধারণত এক্সপেক্টোরেন্ট জাতীয় ওষুধ খেয়ে থাকি। এক্সপেক্টোরেন্টের কাজ হলো গলা থেকে কফ বের করে দেয়া। কিন্তু এর একটা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও রয়েছে। এসব ওষুধ খেলে ঘুম ঘুম ভাব হয়। তাই এর বিকল্প হিসেবে আপনি পুদিনা পাতার সাহায্য নিতে পারেন। গরম পানিতে সামান্য পরিমাণ পুদিনা পাতা সেদ্ধ করে পান করুন। পুদিনা পাতা এক্সপেক্টোরেন্টের কাজ করবে। বোনাস হিসেবে আপনি পেতে পারেন আরো একটি বড় ধরনের উপকার। আর তা হলো পুদিনা পাতা আপনার উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করবে।


কেন ব্যায়াম করবেন?

প্রতিদিন অন্তôত আধাঘণ্টা হলেও ব্যায়ামের অভ্যাস করম্নন। ব্যায়াম করা খুব কষ্টকর হলে এক ঘণ্টা হাঁটার চেষ্টা করম্নন। হাঁটাও একটা ব্যায়াম। ব্যায়ামের কোন বয়সভেদ নেই সব বয়সের মানুষই ব্যায়াম করতে পারেন। সবরকম ব্যায়ামই পূর্ণ মনযোগ এবং ধৈর্যসহকারে করলে ভাল ফল পাওয়াই যাবে। ব্যায়ামের ফলটা খুব ধীরগতিসম্পন্ন যে জন্য মানুষ এটার প্রতি আকৃষ্ট কম হয়। ভরাপেটে এবং কিছু কিছু শারীরিক অসুস্থতায় ব্যায়াম করা উচিত নয় তাতে ড়্গতি হতে পারে।

ব্যায়ামের উপকারিতাঃ মানবদেহে নানা প্রকার বহিরাঙ্গগ্রন্থি রয়েছে। এসব গ্রন্থি হতে নিঃসৃত রস পরিপাক ক্রিয়ায় সহায়তা করে। এগুলো বহিরাঙ্গগ্রন্থির কার্যড়্গমতা বৃদ্ধি এবং এগুলোকে সচল রাখতে ব্যায়াম অত্যন্তô গুরম্নত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

মানুষের স্নায়ুগুলোর স্থল মেরম্নদন্ডে অবস্থিত বলে মানুষের যৌবন ও জীবনীশক্তি মেরম্নদন্ডের সচল ও এর কর্মড়্গতার উপর নির্ভরশীল। মেরম্নদন্ডে রক্ত চলাচল ঠিকমত হলে স্নায়ুগুলো সচল থাকে। মেরম্নদন্ডে রক্ত চলাচল ব্যাহত হলে স্নায়ুতন্ত্রগুলো দুর্বল হয়ে যায়। শরীর জরাগ্রস্তô হয়। মেরম্নদন্ডে রক্ত চলাচল ঠিক রাখতে সচল ও অধিক কর্মড়্গম রাখতে এদের জরা ও বাধ্যর্কøকে দূরে রেখে অনেকদিন সুস্থ থাকতে প্রয়োজন হয় ব্যায়াম-এর। মেরম্নদন্ডের স্বাভাবিক গতি ছয় প্রকার। সামনে, পিছনে, ডান ও বাঁদিকে এজন্য চতুর্দিকে বেঁকিয়ে ব্যায়াম করা ফলপ্রসূ ব্যায়ামের মাধ্যমে মেরম্নদন্ডস্থ স্নায়ুমন্ডলীকে অধিক রক্তস্নাত করে এদের সজীবতা ও নবীনতা বৃদ্ধি করা যায়। সাধারণত সিসটল ১২০-এর উপর এবং ডায়াস্টোল ৯০-এর বেশী হলে উচ্চরক্তচাপ ধরা হয়। উচ্চরক্তচাপ হলে শরীরিক দুর্বলতা, মাথাধরা, মাঝে মাঝে বুক ধড়ফড় করা, কখনও কখনও বুক ধড়ফড় করা, কানে এক প্রকার শব্দ শোনা প্রভৃতি উপসর্গ দেখা যায়। রক্তের উচ্চচাপ কমাতে হলে ওষুধ না খেয়ে শ্বাসন করম্নন। উচ্চরক্তচাপে যোগ ব্যায়াম অত্যন্তô গুরম্নত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।


জীবন বাঁচাতে সিপিআর

হঠাৎই হৃদযন্ত্র অচল হওয়ার পথে অগ্রসর হতে পারে। রাস্তôা ঘাটে, জনারণ্যে·· তেমন একজন ব্যক্তির হৃদযন্ত্রকে সচল করার চেষ্টা করতে পারেন যে কেউ, যাদের জীবনরড়্গাকারী সিপিআর কৌশল জানা নেই তারাও এ চেষ্টা করতে দোষ কি?

আমেরিকান হার্ট এসোসিয়েশন এমন জরম্নরী ব্যবস্থায় জীবন বাঁচানোর তাগিদে সবাইকে সাড়া দেবার আহবান জানিয়েছেন।

সহজ ব্যাপারঃ কোনও লোককে দেখলেন পথে হঠাৎ বসে পড়েছেন, হয়তবা হার্টএটাকঃ তখন ইমার্জেন্সিতে ফোন করে দিয়ে অসুস্থ সে মানুষের বুকের মধ্যিখানে জোরে, দ্রম্নত চাপ দিতে থাকুন যতড়্গণ না জরম্নরী এম্বুলেন্স না পৌঁছায় অথবা ডিফিব্রিলেটর ব্যবহার শুরম্ন হয়।

আমেরিকান হার্ট এসোসিয়েশনের মুখপাত্র এবং এই পরামর্শ যিনি দিয়েছেন, ডাঃ মাইকেল আর, সেয়রি বললেন, বুকের মধ্যখানে প্রতি মিনিটে ১০০ বার জোরে চাপ দিতে হবে, এতটুকু জোরে যে বুক দু’ইঞ্চি দেবে যায়।

সি·পি·আর কে পুরো বললেন, হয় ‘কার্ডিও পালমোনারি রিসামিটেলন’ হৃদযন্ত্র ও ফুসফুসের কার্যকলাপের পুনরম্নজ্জীবন।

হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া রোধ হলে যদি সিপিআর প্রয়োগ করা হয় তাহলে বেঁচে থাকার সম্ভাবনা দ্বিগুণের বেশি বেড়ে যায়। অথচ চলতি পথে হার্টএটাক হয়েছে এমন কাউকে পথচারীরা সহজে সিপিআর দেন না।

তবে শিশুদের কার্ডিয়াক এরেস্ট হলে, জলে ডুবেও বেশিমাত্রায় ওষুধ খেয়ে হার্ট রোধ হলে অন্যব্যবস্থা, সেখানে প্রয়োজন কৃত্রিমভাবে শ্বাসক্রিয়া চালু করা।

অনেক পথচারী, পথিকের কার্ডিয়াক এরেস্ট হলে সিপিআর ট্রেনিং নেই সেজন্য জীবন রড়্গা করার কাজে এগিয়ে যেতে ভয় পান।

ওহাইও স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমার্জেন্সি মিডিসিনের সহযোগী অধ্যাপক ডাঃ মাইকেল, আর সেয়বি আরো বলেন, এমন পরিস্থিতিতে সিপিআর জানা না থাকলেও অসুস্থ ব্যক্তির বুকে চাপ দিলেও অনেক লাভ, কিছু না করে বসে থাকার চেয়েও তো ভালো। শিশুদের জন্যও একই নিয়ম।

বিখ্যাত মেডিক্যাল জর্নাল সাকুêলেশনের এপ্রিল সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছে এ পরামর্শঃ

সিপিআর কৌশলের উপর গবেষণার ভিত্তিতে রচিত এ প্রবন্ধ।

ইতর প্রাণীতে অনেকগুলো এবং মানুষের উপর পাঁচটি গবেষণা পর্যালোচনা করে দেখা গেছে অসুস্থ ব্যক্তির পাশ দিয়ে যাওয়া পথচারী, যিনি অনভিজ্ঞ তিনি যদি বুকের মাঝখানে জোরে বারবার চাপ দিতে থাকেন এতে যে ফল হয়, একজন সিপিআর কৌশল জানা লোক অসুস্থ ব্যক্তির মুখে মুখ লাগিয়ে শ্বাসক্রিয়া চালু করার চেষ্টা করলেও একই ফল হয়।

এর নানা ব্যাখ্যা আছে। সিপিআর জানা উচিত সবার এবং এর সঠিক প্রয়োগ মানুষের জীবন রড়্গায় অনেকটাই ফলপ্রসূ এতে সন্দেহ নেই। কিন্তু কৌশলটি জানা না থাকলে জীবনরড়্গার চেষ্টা কি করবেন না? এ হচ্ছে কথা।

যারা সিপিআর জানেন এরা এটি প্রয়োগ করতে যেটুকু সময নেন, এর চেয়ে দ্রম্নত হাত দিয়ে বুক চাপ দেয়া শুরম্ন করতে পারেন অনেকে। কিছুটা জটিল ও নিবিড় সিপিআর পদ্ধতি প্রয়োগের জন্য মানসিক ও শারীরিকভাবে প্রস্তুতি নিতে সময় লাগে একটু বেশি হয়তবা। মুখে মুখ লাগিয়ে শ্বাসক্রিয়া চালু করতে গিয়ে বুকে চাপ দেয়া হয় কম।

আবার এও হয় অনেকে মুখে মুখ লাগিয়ে অসুস্থ লোকের পুনরম্নজ্জীবনে উৎসাহী হন না। সংক্রমণের ভয়ে তবে এ যুক্তি সামান্য। ডাঃ সেয়রি বলেন, মৃত্যুপথযাত্রী ব্যক্তির জন্য যদি কিছুই না করেন, তাহলে তো মৃত্যুও হতে পারে সহযাত্রীর। তা কি কারো কাম্যে হতে পারে।

দেশে সিপিআর প্রশিড়্গণের একজন উদ্যোক্তা অধ্যাপক ওমর ফারম্নক বারডেম আইসিইউ প্রধান। অনেক ডাক্তারকে তিনি প্রশিড়্গণ দিয়েছেন। এবার সাধারণ মানুষের প্রশিড়্গণ প্রয়োজন। যেসব ডাক্তার প্রশিড়্গণ নিয়েছেন তাদের উপর সে দায়িত্ব কিছুটা বর্তায়।


ভূরিভোজ

ভূরিভোজের তুলনায় কম কম করে বার বার খাওয়া পাকস্থলী ও লিভারের জন্য ভালো। কারণ এতে পাকস্থলী ও লিভারের ওপর চাপ কম পড়ে। আর একবার বেশি করে আহার করলে হজম ও বিপাকীয় প্রক্রিয়া খানিকটা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। বার বার কম করে আহারে শুধু লিভার ও পাকস্থলীসহ ডাইজেস্টিভ সিস্টেম ভালো থাকে তাই নয়, যাদের রক্তের গ্লুকোজ উঠানামা করে তাদের জন্য কম আহার ভালো। এ ছাড়া বার বার কম আহার করলে সারাদিনই শরীরে শক্তি প্রবাহ থাকে। এতে কাজকর্মে উদ্যম তৈরি হয়। দিনে তিনবারের স্থলে পাঁচবার আহার করা যেতে পারে। অবশ্য এ ক্ষেত্রে তাদের সময় নির্ধারণ করে নেয়া উচিত।

ইন্টারনেট ।

রোগ প্রতিরোধে কালিজিরা

ডা. বিমল আগরওয়ালা

‘প্রতিদিন কালিজিরা খাও, মৃত্যু ছাড়া সব ব্যাধির আরোগ্য সাধনে এটি কার্যকর’ বাণীটি মহানবী হজরত মোহাম্মদ সঃ-এর। ঐশ্বরিক বিজ্ঞতার আলোকে ১৪০০ বছর পূর্বে মানবজাতির উদ্দেশে তিনি এই মহামূল্যবান তথ্যটি ব্যক্ত করেছিলেন। একটি প্রধান আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়েও ১৯৫৯ সাল থেকে কালিজিরার প্রভাব নিয়ে গবেষণা হচ্ছে প্রতিনিয়ত। বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক পত্র পত্রিকায় কালিজিরা সম্পর্কে অত্যন্ত বিস্ময়কর তথ্য পাওয়া যায়। মিসরের গবেষকরা ১৯৬০ সালে নিশ্চিত হন যে এতে বিদ্যমান নাইজেলোনের কারণে ব্রুকোডাইলেটেশন বা হাঁপানি উপশম হয়। জার্মানির বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত করেন যে, কালিজিরার এন্টি-ব্যাকটেরিয়াল এবং এন্টি-মাইকোটিক প্রভাব বিদ্যমান। বিজ্ঞানীরা লক্ষ্য করেন, এটি বোনম্যারো (অস্তিমজ্জা), প্রতিরক্ষা কোষগুলোকে উত্তেজিত করে এবং ইন্টারফেরন তৈরি বাড়িয়ে দেয় ফলে ভাইরাসের ক্ষতিকারক প্রভাব হতে স্বাভাবিক কোষগুলো রক্ষা পায়। কালিজিরা টিউমার কোষগুলোকেও ধ্বংস করে এবং এন্টিবডি প্রস্তুতকারী ‘বি লিমফোসাইট’ কোষগুলোর সংখ্যা বাড়িয়ে দেয়। আমেরিকার গবেষকরা সর্বপ্রথম কালিজিরার টিউমারবিরোধী প্রভাব সম্পর্কে রিপোর্ট করেন। শরীরের ক্যান্সার উৎপাদনকারী ‘ফ্রি রেডিকেল’-এর সাথে কালিজিরার এ্যাসেনশিয়াল ফ্যাটি অ্যাসিডের বন্ধন হয়। ফলে এই ক্ষতিকারক ফ্রি রেডিকেলগুলো অপসারিত হয়। বেটা কেরোটিনও ক্যান্সার উৎপন্নকারী দ্রব্যগুলো ধ্বংস করে। অতএব স্বাস্থ্য রক্ষায় কালিজিরার সুফল যেন প্রশ্নাতীত। সত্যি, বিস্মিত হতে হয় এর গুণাগুণ দেখে। কী অন্তর্নিহিত শক্তিই না রয়েছে কালিজিরায়! তাহলে চলুন কালিজিরার বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোকপাত করা যাক।
কালিজিরায় কী কী থাকে
এতে প্রায় ১০০-এর অধিক বিভিন্ন মূল্যবান পুষ্টিকর উপাদান রয়েছে। যেমন, শতকরা ২১ ভাগ প্রোটিন, ৩৮ ভাগ কার্বোহাইড্রেট, ৩৫ ভাগ উদ্ভিজ ফ্যাট। অন্যান্য সক্রিয় উপাদানের মধ্যে আছে থাইমোকুইনোন, নাইজেলোন, এ্যাসেনশিয়াল ফ্যাটি এ্যাসিড, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, আয়রন, জিংক, ম্যাগনেসিয়াম, সিলেনিয়াম, ভিটামিন এ, বি১, বি২, নাইয়াসিন, ভিটামিন সি ইত্যাদি।
এটি কিভাবে কাজ করে
মানবদেহে ত্রুটিপূর্ণ ইমিউন সিস্টেম অর্থাৎ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস অধিকাংশ রোগের জন্য দায়ী। কারণ প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে ইমিউন সিস্টেম বা প্রতিরোধ তন্ত্র শরীরের অন্য সব তন্ত্রের ওপর প্রভাব ফেলে। কালিজিরা এই ইমিউন সিস্টেমের ওপর যথার্থ এবং স্থায়ী ক্ষমতা রাখে। ফলে অত্যন্ত বেশি দুর্বল কিংবা অতি শক্তিশালী ইমিউন সিস্টেমের প্রতিক্রিয়া নিয়ন্ত্রিত হয়।
কালিজিরা কী কী রোগে উপকারী
-শারীরিক বিপাকীয় কার্যাবলি সম্পাদনে। হজম বা পরিপাকের উন্নতি সাধনে। ডায়াবেটিসে রক্তে গ্লুকোজ কমাতে সাহায্যকারী হিসেবে। অন্ত্রের কৃমি ও প্যারাসাইট দূর করতে। ব্রোংকাইটিস ও কাশি উপশমে। মাংসপেশির স্থিতিস্থাপকতা বৃদ্ধিতে। রজঃস্রাব সংক্রান্ত পর্যায়ক্রমে উদ্দীপিতকরণে। ত্বরিত শক্তির যোগান দিতে। শুক্রাণুর সংখ্যা বৃদ্ধি করতে। স্নায়ুতন্ত্র প্রশান্ত করতে। ত্বকের ভাঁজ বা বলিরেখা পড়া প্রতিরোধ করতে। আর্থাইটিস এবং শুষ্ক ত্বকে আরাম দিতে ইত্যাদি।
এতে কী পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া আছে
সঠিক মাত্রায় কালিজিরা একটি নিরাপদ ও ফলোৎপাদক ঔষধি, যা প্রায় সবাই ব্যবহার করতে পারে। তবে গর্ভবর্তী মায়েদের এটি খাওয়া নিষেধ।
এটি কিভাবে ব্যবহৃত হয়
­খাদ্যের সম্পূরক হিসেবে দৈনিক ২-১ চামচ কালিজিরার তেল খাওয়া যায়। রোগের ক্ষেত্রে এর মাত্রা ভিন্ন। এক জরিপে ৬০০ এলার্জি রোগীকে প্রতিদিন দু’বার ৫০০ মিলিগ্রাম করে কালিজিরা তেল তিন মাস দিয়ে দেখা যায়, শতকরা ৮৫ ভাগ রোগী ভালো ফল পেয়েছে, ঠাণ্ডা পানীয় কিংবা দই বা ঘোল জাতীয় পানীয়ের সাথে এই তেল মিশানো যায়।
­স্থানীয়ভাবে আর্থাইটিস, একজিমা, সোরিয়াসিস ও শুষ্ক ত্বকে এটি লাগানো যায়।
­এর শক্ত ডাটাহীন লতা কোন গরম বা ঠাণ্ডা বেভারেজ অর্থাৎ পানি ছাড়া যে কোনো পানীয় কিংবা খাদ্যের সাথে মিশানো যায়।
­শাক সবজি কিংবা মাংসের রেসিপিতে গরম মসলা হিসেবে ব্যবহার করা যায়।