Wednesday, June 11, 2008

Nutrition (পুষ্টি)

পেঁপের পুষ্টি
পেঁপে একটি খাদ্যমানসমৃদ্ধ ফল। এটি একটি সবজিও। পেঁপেকে রোগ প্রতিরোধক খাদ্যও বলা চলে। সহজপাচ্য, সুস্বাদু, পুষ্টিকর ও সারা বছর সব জায়গায় পাওয়া যায় বলে সবজি ও ফল হিসেবে পেঁপের গুরুত্ব সবচেয়ে বেশি।
প্রায় সব ধরনের পুষ্টি-উপাদানই পেঁপেতে আছে। প্রতি ১০০ গ্রাম পাকা পেঁপেতে ৮১০০ মাইক্রোগ্রাম ক্যারোটিন থাকে। এ ক্যারোটিনের প্রায় ছয় ভাগের এক ভাগ, অর্থাৎ ১৩৫০ মাইক্রোগ্রাম রেটিনল সমতুল্য বা ভিটামিন ‘এ’-তে রূপান্তরিত হয়ে আমাদের শরীরে কাজে লাগে।
পাকা পেঁপেতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে ভিটামিন ‘সি’ থাকে। প্রতি ১০০ গ্রাম পাকা পেঁপেতে ৫৭ মিলিগ্রাম ভিটামিন ‘সি’ থাকে। একজন পূর্ণবয়স্ক লোকের দৈনিক ৩০ মিলিগ্রাম ও বাচ্চাদের ৩৫ গ্রাম পেঁপে খেলেই ভিটামিন ‘এ’র সঙ্গে ভিটামিন ‘সি’র চাহিদাও পূরণ হয়। পাকা পেঁপে রান্না করে খেতে হয় না বলে এর ভিটামিন ‘সি’র সবটুকু আমাদের দেহে কাজে লাগে। কাঁচা পেঁপেতেও রয়েছে যথেষ্ট খাদ্যগুণ। এতে পাকা পেঁপের চেয়ে লৌহ, চর্বি, ভিটামিন ‘বি’সহ আঁশ বেশি থাকে। কাঁচা পেঁপেতে পেপসিন নামের জারক রস থাকে, যা আমিষ হজমের জন্য প্রয়োজন। কাঁচা পেঁপে থেকে হালুয়া, পায়েস, স্যুপ, সালাদ, চাটনি, আচার ইত্যাদি লোভনীয় সুস্বাদু, মুখরোচক ও পুষ্টিকর খাবার তৈরি করা যায়। আমাদের পুষ্টির চাহিদা পূরণে পেঁপের ভূমিকা অনেক।

লেবুর পুষ্টিগুণ


লেবুর পুষ্টিমান সম্পর্কে অনেকেরই জানা আছে। তবে পুরোপুরি গুণের কথা হয়ত সবারই জানা নেই। এসময়হরেক রকম লেবু পাওয়া যায় বাজারে পাতি লেবু, কমলালেবু, মোসাম্বিলেবু, গন্ধরাজ ও বাতাবিলেবু। ১০০ গ্রাম কাগজি বা পাতিলেবু থেকে যে সমস্তô পুষ্টি উপাদান পাওয়া যায় ভিটামিন সি ৬৩ মিঃ গ্রাম যা আপেলের ৩২ গুনও আঙ্গুরের দ্বিগুণ, ক্যালসিয়াম ৯০ মিঃ গ্রাম, ভিটামিন এ ১৫ মাইক্রোগ্রাম, ভিটামিন বি ০·১৫ মিঃ গ্রাম, ফসফরাস ২০ মিঃ গ্রাম, লৌহ ০·৩ মিঃ গ্রাম। টাটকা লেবুর খোসাতেও পুষ্টি রয়েছে। প্রচন্ড গরমে ১ গস্নাস ঠান্ডা লেবুর শরবত দেহের জন্য অত্যন্তô উপকারী এবং স্বস্তিô ফিরে আনে। লেবু ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল। এই ভিটামিন দেহে সঞ্চিত অবস্থায় থাকে না, সেজন্য শিশু-বৃদ্ধ সকলকে প্রতিদিনই ভিটামিন সি জাতীয় খাবার খাওয়া দরকার। জ্বর, সর্দি, কাশি ও ঠান্ডাজনিত সমস্যায় লেবু অত্যন্তô কার্যকর। লেবুতে থাকা প্রচুর ভিটামিন সি রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। স্কার্ভি রোগ থেকে রড়্গা করে। ভিটামিন সি দেহের ড়্গত নিরাময়ে সহায়তা করে এবং রক্তের জমাট বাঁধার ড়্গমতা বাড়ায়। লেবুতে পর্যাপ্ত ভিটামিন সি অ্যান্টি অক্সিডেন্টস হিসাবে কাজ করে দেহে ক্যান্সারসহ নানা ঘাত প্রতিঘাতের হাত থেকে রড়্গা করে। শিশুদের দৈনিক ২০ মিঃ গ্রাম ভিটামিন সি আবশ্যক। এ সময় ভিটামিন সি এর অভাব হলে তা শিশুর উপর প্রভাব পড়ে ফলে শিশুর দাঁত, মাঁড়ি ও পেশী মজবুত হয় না। মাথায় খুশকি নিবারণে লেবুর রয়েছে অসাধারণ ড়্গমতা। লেবুর রস চুলের গোড়ায় ঘসে ঘসে লাগায়ে ১৫/২০ মিনিট পর পানিতে ধুয়ে নিতে হবে। এভাবে সপ্তাহে দুদিন করে লাগালে মাথার খুশকি হবে সাফ এবং চুুলের আঠালো ভাব দূর হয়ে চুল হবে উজ্জ্বল, মসৃণ। যাদের অরম্নচি ভাব আছে তারা খাবারে লেবু খেলে রম্নচি ফিরে পাবে খুব দ্রম্নত। সুতরাং আমাদের নিত্যদিনই ভিটামিন সি জাতীয় ফল লেবু অন্যান্য সস্তôা দেশীয় ফল আমলকি, পেয়ারা, কামরাঙ্গা, আমড়া, কুল, খাওয়া উচিত।

গাজর, টমেটো ও ক্ষীরা
সালাদ তৈরির জন্য আমরা যে কয়টি সবজি ব্যবহার করি, তার মধ্যে গাজর, টমেটো আর ক্ষীরার কথা না বললেই নয়। এই তিনটি সবজিই পুষ্টি উপাদানে ভরপুর। রান্না করে খাওয়ার চেয়ে কাঁচা খাওয়া বরং বেশি ভালো। কারণ এতে পুষ্টির অপচয় কমে।
প্রতি ১০০ গ্রাম গাজরে রয়েছে আঁশ ১জ্ঝ২ গ্রাম, প্রোটিন ১জ্ঝ৫ গ্রাম, খাদ্যশক্তি ৫৭ কিলোক্যালোরি, ক্যালসিয়াম ২৭ মিলিগ্রাম, আয়রন ২জ্ঝ২ মিলিগ্রাম। গাজর ক্যারোটিনের অনেক ভালো উৎস। অর্থাৎ ১০৫২০ মাইক্রোগ্রাম। ভিটামিন ‘বি১’ রয়েছে ০জ্ঝ০৪ মিলিগ্রাম, ‘বি২’ রয়েছে ০জ্ঝ০৫ মিলিগ্রাম ও ভিটামিন ‘সি’ রয়েছে ১৫ মিলিগ্রাম।
প্রতি ১০০ গ্রাম টমেটোতে রয়েছে প্রোটিন ১জ্ঝ৯ গ্রাম, খাদ্যশক্তি ২৩ কিলোক্যালোরি, ক্যালসিয়াম ২০ মিলিগ্রাম, আয়রন ১জ্ঝ৮ মিলিগ্রাম, ক্যারোটিন ১৯২ মাইক্রোগ্রাম। ভিটামিন ‘বি১’ রয়েছে ০জ্ঝ১১ মিলিগ্রাম ও ‘বি২’ রয়েছে ০জ্ঝ০৩ মিলিগ্রাম। আর ভিটামিন ‘সি’ রয়েছে ৩১ মিলিগ্রাম।
প্রতি ১০০ গ্রাম ক্ষীরায় প্রোটিন রয়েছে ০জ্ঝ৯ গ্রাম, খাদ্যশক্তি ১১ কিলোক্যালোরি, ক্যালসিয়াম ৫৮ মিলিগ্রাম। ভিটামিন ও আয়রন ক্ষীরায় নেই। এর প্রায় ৮০ ভাগই জলীয় অংশ।


সুস্বাস্থ্যের জন্য গুঁড়ামাছ খান

ডা. মোঃ আজিজুর রহমান সিদ্দীকি

আমরা অনেকেই মাছ খেতে উৎসাহী নই। আর মাছ খেলেও ছোট ছোট মাছ খেতে শিশুদের একেবারেই অনীহা। অথচ শিশুদের গুঁড়ামাছ খাওয়া খুব দরকার। গুঁড়ামাছের জন্য পুরুষের বাজারে কেনার আগ্রহ থাকলেও ঘরে গিন্নিদের গুঁড়ামাছ কাটার ঝামেলা চিন্তা করে তা অনেকেই কেনেন না। কিন্তু গুঁড়ামাছ স্বাস্থ্যের জন্য যেমনি উপকারী, তেমনি আর্থিকভাবেও তুলনামূলক সাশ্রয়ী।
গুঁড়ামাছ কেন খাবেনঃ (১) বয়স ৪০-এর উপরে আমাদের শরীরে ফ্যাট এবং কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করতে হয়। গুড়ামাছে তা অত্যন্ত কম। তাই বয়স্করা গুড়ামাছ খাবেন।
(২) গুড়ামাছে আছে প্রচুর আমিষ, ভিটামিন, খনিজদ্রব্য, আয়রন, ভিটামিন-সি, নিয়াসিন, ভিটামিন-ডি, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস এবং ভিটামিন-এ।
(৩) শিশুদের রাতকানা রোগ ঠেকাতে ভিটামিন-এ সমৃদ্ধ মলা, ঢেলা ও গুঁড়ামাছ খাওয়ান। শিশুদের ভবিষ্যৎ ভালো দৃষ্টিশক্তির জন্য গুঁড়ামাছ খুবই দরকার।
(৪) বাড়তি বয়সী শিশুদের প্রোটিন, আয়রন, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, এসকরবিক এসিড, ভিটামিন বি-৩, ভিটামিন-ডি-এর জন্য গুঁড়ামাছ উপকারী।
(৫) গুঁড়ামাছে প্রচুর প্রোটিন আছে। দরিদ্র দেশে অল্প টাকায় আমিষের অভাব পূরণ করে তা পুষ্টিহীনতা দূর করতে সাহায্য করে।
(৬) যাদের উচ্চ রক্তচাপ আছে তাদের জন্য ক্যালসিয়ামসমৃদ্ধ গুঁড়ামাছ ব্ল্যাডপ্রেসার কমায়। কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখে।
(৭) ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য খনিজ লবণ সমৃদ্ধ গুঁড়ামাছ উপকারী।
(৮) হৃদরোগী ও স্ট্রোকের রোগীর জন্যও তা উপকারী। বৃদ্ধাদের জন্যও বেশ উপকারী।
(৯) গর্ভবতী মা ও দুগ্ধদানকারী মায়ের জন্য গুড়ামাছ উপকারী।
(১০) খাদ্যে অরুচি এবং ক্ষুধামন্দা দূর করতে গুড়ামাছ বেশ সুস্বাদু উপাদেয় খাদ্য।
মাছের ইতিহাসঃ মৎস্য বিজ্ঞানীদের মতে খ্রিষ্টপূর্ব ২০০০ বছর আগে চীনে প্রথম মাছ চাষ হয়। পরে তা রোম থেকেও চাষ শুরু হয়। যিশু খ্রিষ্টের জন্মের ১ হাজার ৯০০ বছর পর মাছ চাষ শুরু হয় ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, ফিনল্যান্ড, হাঙ্গেরি, রাশিয়া প্রভৃতি দেশে। ভরতবর্ষে মাছ চাষ শুরু হয় খ্রিষ্টপূর্ব ৩৫০ সালে। বাঙালির প্রিয় খাদ্য মাছ সেই প্রাগৈতিহাসিক কাল থেকেই। মাছ স্বাস্থ্যের জন্য ভালো যদি তা তৈলাক্তও হয়। কারণ ইলিশ, রুই, পাঙ্গাশ ইত্যাদি বড় মাছের তেলে আছে ওমেগা-৩ ফ্রাটি এসিড যা হৃদরোগসহ স্বাস্থ্যবান্ধব ও ক্ষতিকর কোলেস্টেরলকে নষ্ট করে। বাঙালির প্রিয় খাদ্য এখনো মাছ।
গুড়ামাছ কোনগুলোঃ গুঁড়ামাছ দুই রকমের (১) খুব গুঁড়ামাছ কাচকি, মলা, ঢেলা, দাড়কিলা, আউন্যা, চান্দা, বজুরী, ছোট ইছা (চিংড়ির বাচ্চা)। (২) একটু বড় প্রকৃতির পুঁটি, টেংরা, গনিয়া, কাটা মেনী, চাপিলা, টাকি, চেলা, বাইন, বেতরাঙ্গি, পাবদা, শিং, মাগুর, কৈ, হইল্যা, খইয়া। তবে বাংলাদেশের এলাকাভিত্তিক নানা স্থানে নানা নামে গুঁড়ামাছ পাওয়া যায় নানা রকম।
গুড়ামাছ গরিবের প্রোটিনঃ বাংলাদেশের মতো দরিদ্র পুষ্টিহীন মানুষের জন্য গুঁড়ামাছ বিশাল ভূমিকা রাখে। ১০০ গ্রাম পুঁটি মাছে আছে ১৮ গ্রাম প্রোটিন, আর ১০০ গ্রাম বড় রুই মাছে আছে ১৬ গ্রাম প্রোটিন। তাই গুঁড়ামাছ দামেও কম, প্রোটিনও বেশি। শক্তি উৎপাদনেও গুড়ামাছ বিরাট ভূমিকা রাখে। ১০০ গ্রাম পুঁটি মাছ শক্তি উৎপাদন করে ১০৬ কিলোক্যালরি। তাই বড়লোকের রুই মাছের চেয়ে গরিবের পুঁটি মাছই বেশি প্রোটিন দেয়, বেশি শক্তি দেয়। সব গুঁড়ামাছেই গরিবের বিশাল প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব।
গুড়ামাছের তরকারিঃ গুড়ামাছ বাঙালির বেশ উপাদেয় খাদ্য; (১) এই শীতের সকালে আগের রাতে রান্না করা আউন্যা, বজুরী মাছের সরপড়া তরকারি কী যে মজার।
(২) টমেটো দিয়ে, জলপাই দিয়ে বা টক শাক (চুয়াই পাতা), মেট্রস দিয়ে গুঁড়ামাছের টক ঝোল কী যে সুস্বাদু দুপুরের গরম ভাতে।
(৩) টাকি মাছের ভর্তা আজো বাঙালির ভর্তার রাজা।
(৪) মলা, ঢেলা, কাচকি মাছ ধনিয়াপাতা, পেঁয়াজ, কাঁচামরিচ দিয়ে রান্না বড়ই মুখরোচক খাবার।
(৫) গুঁড়ামাছের আদি রান্না পাতোরা (কলাপাতা বা কুমড়া পাতায়) বড়ই মজাদার খাবার।
(৬) পুঁটি মাছ ভাজা-গরমভাতে ধনিয়াপাতা ও কাঁচামরিচ দিয়ে অতুলনীয়।
(৭) মাগুর মাছ বা শিং মাছের আনাজী কলার তরকারি আর ঝোল জিব্বায় জল আসার মতো।
(৮) গরম ভাতে কৈ মাছ ভাজা তৈলাক্ত ঘ্রাণ। আহ কী যে মুখরোচক!
(৯) চান্দা মাছের বাটা দিয়ে বড়া ভাজা কতই না মজার।
(১০) হইল্যা মাছের বাটা দিয়ে কোপ্তা হলে আর যেন ভাত খেতে কিছুই লাগে না।
(১১) চাপিলা বা পাবদা মাছের দো-পেয়াজা কতই না মজার।
আসুন গুঁড়ামাছ খাইঃ (ক) দেশে গুঁড়ামাছ দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে। স্বাস্থ্য বান্ধব এসব গুড়ামাছ আমাদের চাষ করে টিকিয়ে রাখতে হবে (খ) শিশুদের গুঁড়ামাছ খেতে উৎসাহী করতে হবে। (গ) গুঁড়ামাছ আর্থিকভাবে লাভ-জনক, সহজলভ্য ও পুষ্টিকর।
গ্রন্থনাঃ সাজেদুর রহমান

কাঁচা পেঁপে উপকারী

সালাদ হিসেবে কাঁচা পেপের নানা গুণ

সালাদ খান না এমন পরিবার খুব কমই পাওয়া যাবে। সালাদ এখন খাবার টেবিলের অন্যতম সহ আইটেমেব বেশীর ভাগ ড়্গেত্রে টমেটো, শসা, গাজর, কাঁচামরিচ, পিঁয়াজ, লেটুসপাতা সালাদে স্থান পায়।

এসব সবজির মিশ্রনে তৈরী সালাদ ভিটামিন সি, ভিটামিন এ, ভিটামিন ইর পরিমাণ থাকায় এধরনের সালাদ এন্টিঅিডেন্ট হিসাবে কাজ করে। তবে সালাদে যদি কাচা পেপে মেশানো হয় তাহলে এটা আরও উপকারী। কারণ পেঁপেতে থাকে প্রচুর পরিমাণ পেপসিন। এই পেপসিন হজমে সাহায্য করে।

০ ডাঃ নাসরিন জাহান

শীতের সবজির পুষ্টিগুণ
শীত ভালোভাবে আসতে না আসতেই বাজারে চলে এসেছে শীতকালীন শাকসবজি। সবখানেই পাওয়া যাচ্ছে এই সবজিগুলো। শীতে সবজি সংরক্ষণ করা যায় খুব সহজে। দেরিতে পচন ধরে বলে এগুলোর ভিটামিন ও অন্যান্য পুষ্টিগুণ অক্ষুণ্ন থাকে বেশিক্ষণ।
শীতে আমরা যেসব সবজি সবচেয়ে বেশি খেয়ে থাকি, এর মধ্যে কয়েকটির পুষ্টিগুণ নিচে উল্লেখ করা হলোঃ
প্রতি ১০০ গ্রাম ফুলকপিতে রয়েছে ১৯৯ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি, ০জ্ঝ২৭ মিলিগ্রাম ভিটামিন বি১ এবং ০জ্ঝ০৩ মিলিগ্রাম রয়েছে ভিটামিন বি২। ক্যালসিয়াম আছে ৪১ মিলিগ্রাম এবং আয়রন ১জ্ঝ৫ মিলিগ্রাম, প্রোটিন ২জ্ঝ৬ গ্রাম ও খাদ্য আঁশ ১জ্ঝ২ গ্রাম। জলীয় অংশ ৮৯জ্ঝ০ গ্রাম ও খাদ্যশক্তি ৪১ কিলোক্যালরি।
শিমে রয়েছে ৯ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি, ০জ্ঝ০৬ মিলিগ্রাম বি১ ও ০জ্ঝ১০ মিলিগ্রাম ভিটামিন বি২। ক্যারোটিন রয়েছে ১৮৭ মাইক্রোগ্রাম এবং ক্যালসিয়াম ২১০ মিলিগ্রাম, আয়রন ১জ্ঝ৭ মিলিগ্রাম, আঁশ ১জ্ঝ৮ গ্রাম, প্রোটিন ৩জ্ঝ৮ গ্রাম ও খাদ্যশক্তি ৪৮ কিলোক্যালরি।
টমেটোতে আছে ২৮ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি, ০জ্ঝ০৬ মিলিগ্রাম ভিটামিন বি২, ০জ্ঝ১২ ভিটামিন বি১। ক্যারোটিন রয়েছে ৩৫৮ মাইক্রোগ্রাম, আয়রন ০জ্ঝ৪ মিলিগ্রাম, ক্যালসিয়াম ৪৮ মিলিগ্রাম, প্রোটিন ০জ্ঝ৯ গ্রাম ও খাদ্যশক্তি ২০ কিলোক্যালরি।
পেঁয়াজকলিতে রয়েতে ভিটামিন সি ১৭ মিলিগ্রাম, ভিটামিন বি১ ০জ্ঝ০৩ মিলিগ্রাম। ক্যারোটিন রয়েছে ৫৯৫ মাইক্রোগ্রাম, আয়রন ৭জ্ঝ৫ মিলিগ্রাম, ক্যালসিয়াম ৫০ মিলিগ্রাম। প্রোটিন খুব অল্প, মাত্র ০জ্ঝ৯ গ্রাম এবং খাদ্যশক্তি ৪১ কিলোক্যালরি।


ক্যান্সার রোধে টমেটো

সবজি এবং সালাদ হিসেবে ভিটামিন এবং খনিজ সমৃদ্ধ টমেটোর বেশ চাহিদা। রান্নার উপকরণ হিসেবে এবং খাবারের সাথে টমেটো সসও বেশ গুরম্নত্বপূর্ণ। টমেটোতে লাইকোপেন নামে বিশেষ উপাদান রয়েছে, যা ফুসফুস, পাকস্থলী, অগ্ন্যাশয় কোলন, স্তôন, মূত্রাশয়, প্রোস্টেট ইত্যাদি অঙ্গের ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করতে পারে। তুলনামূলকভাবে টাটকা টমেটোর চাইতে টমেটো সস বা প্রক্রিয়াজাত টমেটোতে লাইকোপেনের মাত্রা বেশী থাকায় গবেষকরা টমেটোর লাল সসের প্রতি গুরম্নত্ব আরোপ করেছেন। বিজ্ঞানীরা মনে করেন, সস থেকে লাইকোপেন দেহে দ্রম্নত শোষিত হয়। ফলে লাইকোপেনের কার্যকারিতা বৃদ্ধি পায়।

কায়েদ-উয-জামান

সহকারী অধ্যাপক, জীববিজ্ঞান বিভাগ

শহীদ জিয়াউর রহমান কলেজ, জামালপুর।

কচুশাকের পুষ্টিগুণ

কচু একটি গুরম্নত্বপূর্ণ পুষ্টিকর সবজি। এদেশে কচু তেমন সমাদৃত নয় এবং অনেকটা অবহেলার দৃষ্টিতে দেখা হয়। অথচ কচুশাক। ভিটামিন ‘এ’ এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদানে ভরপুর। তাই দেহের পুষ্টি চাহিদ পূরণে কচুশাকের ভূমিকা অত্যন্তô গুরম্নত্বপূর্ণ।

এ শাক দু’প্রকার। যথাঃ (১) সবুজ কচুশাক ও (২) কালো কচুশাক। খাদ্য উপযোগী প্রতি ১০০ গ্রাম সবুজ ও কালো কচুশাকে যথাক্রমে ১০২৭৮ ও ১২০০০ মাইক্রোগ্রাম ক্যারোটিন রয়েছে। এ ক্যারোটিন থেকেই আমরা ভিটামিন ‘এ’ পেয়ে থাকি। এছাড়া প্রতি ১০০ গ্রাম সবুজ কচুশাক থেকে ৩জ্ঝ৯ গ্রাম প্রোটিন, ৬জ্ঝ৮ গ্রাম শর্করা, ১জ্ঝ৫ গ্রাম স্নেহ বা চর্বি, ২২৭ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ১০ মিলিগ্রাম লৌহ, ০জ্ঝ২২ মিলিগ্রাম, ভিটামিন বি-১ (থায়ামিন), ০জ্ঝ২৬ মিলিগ্রাম ভিটামিন বি-২ (রাইবোফ্লেবিন), ১২ মিলিগ্রাম ভিটামিন ‘সি ও ৫৬ কিলোক্যালোরী খাদ্যশক্তি পাওয়া যায়। সবুজ কচুশাকের চেয়ে কালো কচুশাক অনেক বেশি পুষ্টিকর। প্রতি ১০০ গাম কালো কচুশাকে ৬জ্ঝ৮ গ্রাম প্রোটিন, ৮জ্ঝ১ গ্রাম শর্করা, ২জ্ঝ০ গ্রাম চর্বি, ৪৬০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ৩৮জ্ঝ৭ মিলিগ্রাম লৌহ, ০,০৬ মিলিগ্রাম ভিটামিন ‘বি-১ (থায়ামিন), ০জ্ঝ৪৫ মিলিগ্রাম ভিটামিন ‘বি-২ (রাইবোফ্লোবিন), ৬৩ মিলিগ্রাম ভিটামিন ‘সি’ ও ৭৭ কিলোক্যালোরী খাদ্যশক্তি রয়েছে।

স্বাস্থ্য রক্ষায় রসুন

ডা. মোঃ রফিকুল বারী

চিকিৎসা বিজ্ঞানের জনক বলে পরিচিত হিম্পোক্রিটস মানবদেহের ক্যান্সার, ঘা, কুষ্ঠ সারাতে, রোগ সংক্রমণ প্রতিরোধ ও পরিপাকতন্ত্রের হজমজনিত সমস্যা দূর করতে রোগীদের রসুন খাওয়ার পরামর্শ দিতেন। শুধু তাই নয়, আধুনিক ভেষজ চিকিৎসকরাও সর্দি, কাশি, জ্বর, ফ্লু, ব্রঙ্কাইটিস, কৃমি, রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ, খাদ্য পরিপাকের সমস্যাসহ লিভার ও পিত্তথলির নানা উপসর্গ দূর করতে রসুন খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। এক গবেষণায় দেখা গেছে, একটি মাঝারি সাইজের রসুনে ১ লাখ ইউনিট পেনিসিলিনের সমান অ্যান্টিবায়োটিকের কার্যক্ষমতা রয়েছে। শুধু তাই নয়, ব্যাকটেরিয়া ও প্রোটোজোয়ার মাধ্যমে সৃষ্টি অ্যামিবিক ডিসেনট্রি নির্মূলের ক্ষেত্রে রসুন বেশ কার্যকরী। আর তাই শরীরের রোগ সংক্রমণ দূর করার জন্য একসাথে তিন কোয়া রসুন দিনে তিন থেকে চারবার চিবিয়ে খান। রক্তের চাপ ও রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা কমানোর জন্য প্রতিদিন তিন থেকে ১০ কোয়া রসুন খেতে পারেন। তা ছাড়া রসুনের জল সেবন করতে হলে ছয়কোয়া রসুন পিষে এককাপ ঠাণ্ডা পানিতে ৬ ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখুন। তারপর ভালোভাবে ছেঁকে রসুন জল সেবন করুন।
উচ্চরক্তচাপ ও রক্তের কোলেস্টরলের মাত্রা কমিয়ে হৃদরোগ প্রতিরোধে রসুনের ভূমিকা অপরিসীম। এটি প্রমাণের জন্য বিজ্ঞানীরা একদল লোকের প্রত্যেককে দৈনিক চার আউন্স পরিমাণ মাখন খেতে দিয়েছিলেন। মাখন খাওয়ার ফলে রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যাওয়াটা স্বাভাবিক। তারপর এ দলের অর্ধেককে একটি নির্দিষ্ট মাত্রায় রসুন খাওয়ান হলো। রসুন খাওয়ার পর মাখন গ্রহণকারীদের রক্তের কোলেস্টেরল পরীক্ষা করা হলো। ফলে দেখা গেল রসুন সেবনকারীদের রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা অন্যদের চেয়ে শতকরা সাত ভাগ কম। পাশাপাশি হৃদরোগ কমানোর জন্য রসুন রক্তনালীতে রক্ত জমাটবাঁধা প্রতিরোধে সাহায্য করে। আর তাই তো গবেষকদের অভিমত, রসুন রক্ত জমাট নিরোধী অ্যাসপিরিনের মতোই শক্তিশালী।
রসুন কিভাবে খাবেন?
রসুন খেতে হলে কাঁচা রসুন চিবিয়ে খেতে হবে। কারণ চিবিয়ে না খেলে রসুনের রাসায়নিক উপাদান এলিসিন নির্গত হবে না। কারণ এই এলিসিনই হচ্ছে শক্তিশালী অ্যান্টিবায়োটিক। রসুনের এই অ্যান্টিবায়োটিক ক্ষমতা কাজে লাগানোর জন্য কাঁচা রসুন চিবিয়ে খাওয়াই উত্তম।
সাবধানতা
যাদের শরীর থেকে রক্তপাত সহজে বন্ধ হয় না, অতিরিক্ত রসুন খাওয়া তাদের জন্য বিপজ্জনক। কারণ, রসুন রক্তের জমাট বাঁধার ক্রিয়াকে বাধা প্রদান করে। ফলে রক্তপাত বন্ধ হতে অসুবিধা হতে পারে। তা ছাড়া অতিরিক্ত রসুন শরীরে এলার্জি ঘটাতে পারে। এসব ক্ষেত্রে অতিরিক্ত রসুন না খাওয়াই উত্তম। রসুন খাওয়ার ফলে পাকস্থলীতে অস্বস্তি বোধ করলে রসুন খাওয়া বন্ধ রাখুন। শিশুকে দুগ্ধদানকারী মায়েদের রসুন না খাওয়াই ভালো। কারণ রসুন খাওয়ার ফলে তা মায়ের দুধের মাধ্যমে শিশুর পাকস্থলীতে ঢুকে শিশুর যন্ত্রণার কারণ ঘটাতে পারে।


তরমুজের গুণ

তরমুজ শুধু তৃষ্ণা মেটায় তাই নয় তরমুজে স্বাস্থ্যপ্রদ মূল্যবান উপাদান রয়েছে। তরমুজে লাইকোপিন নামীয় উপাদান প্রোস্টেট এবং সার্ভিকাল ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়। এছাড়া তরমুজে পর্যাপ্ত ভিটামিন ‘এ’ রয়েছে যা চোখের স্বাস্থ্য রড়্গায় গুরম্নত্বপূর্ণ। তরমুজে ভিটামিন ‘সি’ ও যথেষ্ট পরিমাণে বিদ্যমান এবং তা রোগ সংক্রমণে বাধা দেয় এবং দেহের রোগ প্রতিরোধ ড়্গমতা বৃদ্ধি করে।


দইয়ের যত গুণ
জীবনের প্রতিটি ধাপে পুষ্টির জোগান দিতে ঘরে পাতা দইয়ের জুড়ি কমই আছে। বাহারি সব রকম ও গন্ধ এই দইয়ের। পরিবারের প্রতি সদস্যের কাছে এর আবেদন এখনো আছে। সেই পুরোনো দিনে ‘শেষ পাতে দই’ যে আবেদন নিয়ে আসত, তা কি এখনো ক্ষুণ্ন হয়েছে? তাই পুষ্টিকর নাশতা হিসেবে রেফ্রিজারেটরে দধি সাজিয়ে রাখেন ঘরের কর্ত্রীরা।
দই একটি পুষ্টিঘন খাবার। যেকোনো বয়সেই খাদ্য হিসেবে এর চাহিদা কম নয়। দুগ্ধজাত অন্যান্য খাদ্যের মতোই দধি হলো প্রোটিনসৃমদ্ধ-৮ আউন্স পরিমাণ দইয়ে আছে ৮ থেকে ১০ গ্রাম প্রোটিন; দৈনিক চাহিদার ১৬-২০ শতাংশ বটে। আসলে বিশুদ্ধ ছাঁচ ফেলে দই তৈরি করার পর এতে তরল দুধের তুলনায় প্রোটিনের পরিমাণ বেড়ে যায়। দই ক্যালসিয়ামের একটি বড় উৎস। দইয়ে চর্বি কম। এতে রয়েছে প্রয়োজনীয় খনিজ ও ভিটামিন। যেমন- রাইবোক্লেভিন, বি২, ভিটামিন বি১২, ফসফরাস ও পটাশিয়াম। নন-ফ্যাট ও লো-ফ্যাট দইও পাওয়া যায়।
পুষ্টি নিয়ে গবেষকেরা আরও বলেছেনঃ দইয়ে যে সজীব ও সক্রিয় কালচার রয়েছে, এরও রয়েছে স্বাস্থ্যহিতকরী অনেক গুণ।
‘সজীব ও সক্রিয় কালচার’ বলতে বোঝাতে চাচ্ছি জীবন্ত জীবাণুদের কথা, ল্যাকটোব্যাসিলাস বুলগেরিকাস এবং স্ট্রেপটোকক্কাস থার্মোফিলাস-যেসব জীবাণু পাস্তুরিত দুধের ফার্মেন্টেশন ঘটিয়ে দই তৈরি করে। ইদানীং গবেষকেরা আরও দেখছেন, কীভাবে এসব সজীব জীবাণু দেহ প্রতিরোধব্যবস্থার ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। কীভাবে এরা কমাতে পারে রক্তের কোলস্টেরল, ঠেকায় কিছু ধরনের ক্যান্সার, বিশেষ করে পাচকনলের ক্যান্সার।
এই স্বাস্থ্যকর খাবারটির স্বাস্থ্যকরী গুণ ও বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে এর প্রভাব কেমন, তা-ই দেখা যাক-
অস্টিওপরোসিস
দুজন নারীর মধ্যে একজন এবং আটজন পুরুষের মধ্যে একজন অস্টিওপরোসিসে আক্রান্ত হতে পারেন। গবেষকেরা বলেন, ক্যালসিয়ামসমৃদ্ধ খাদ্য খেলে হাড় ক্ষয় কমে। এতে হাড়ের সুরক্ষা হয় ও রোগীর ঝুঁকি কমে।
ক্যালসিয়ামসমৃদ্ধ দই বয়স্কদের মধ্যে অস্টিওপরোসিসের প্রভাব কমিয়ে আনে, ঋতুবন্ধ-উত্তর নারীদের মধ্যে কমিয়ে আনে হাড়ের ক্ষয়।
উচ্চ রক্তচাপ
সারা বিশ্বেই অসংখ্য লোকের রয়েছে উচ্চ রক্তচাপ। এতে বাড়ে হৃদরোগ, মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ ও কিডনি রোগের ঝুঁকি। পরিবারের সবাই যদি কম ফ্যাটযুক্ত দই খায়, তাহলে তারা পাবে ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম ও ম্যাগনেশিয়াম। এই তিনটি খনিজ উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সহায়ক। আরও দেখা গেছে, ক্যালসিয়ামসমৃদ্ধ খাবার গর্ভকালে ও এরপর রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে।
ল্যাকটোজ ইনটলারেন্স
দইয়ের শর্করার নাম হলো ল্যাকটোজ। একে হজম করার ক্ষমতা অনেকের থাকে না। অন্ত্রে পাচক এনজাইম ল্যাকটেজের ঘাটতি হলে এমন হয়। ল্যাকটোজকে পরিপাক করার জন্য প্রয়োজন পর্যাপ্ত ল্যাকটোজ। গবেষকেরা দেখেছেন, দইয়ে যে জীবন্ত ও সক্রিয় জীবাণু রয়েছে, এগুলো সহজে পরিপাকে সহায়তা করে।
কোলোন ক্যান্সার
গবেষকেরা বলেন, কোলোন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে পারে ক্যালসিয়াম। প্রচুর দই খেলে কিছু ক্যান্সার বিশেষ করে কোলোন ক্যান্সার ঝুঁকি অনেক কমে যায়।
ছত্রাক সংক্রমণ
যোনিদেশে ছত্রাক সংক্রমণ হয় অনেক নারীর। গবেষকেরা বলেন, দই নিয়মিত খেলে, দইয়ের মধ্যে ল্যাকটোএসিডোফিলাস নামে যে জীবাণু আছে, সেগুলো অনেকের ছত্রাক সংক্রমণ ও বাড়ন বেশ কমায়।
রোগ প্রতিরোধব্যবস্থা
গবেষকেরা দেখেছেন দইয়ের জীবন্ত ও সক্রিয় জীবাণুগুলো উজ্জীবিত করে শরীরের রোগ প্রতিরোধব্যবস্থা।
গবেষণা তথ্য
দইয়ের গুণ ও গবেষণাপ্রতিষ্ঠান এ দুটোর মধ্যে একটি চিরায়ত সম্পর্ক থাকায় দইয়ের সক্রিয় ও সজীব কালচার বিশ্বজুড়ে গবেষকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেই চলেছে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার ওপর এর প্রভাব কী রকম, কোলস্টেরল কমাতে এর প্রভাব কতটুকু, রোগ প্রতিরোধেই বা কী এর ভূমিকা-এসব নিয়ে গবেষণা কম হয়নি।
রোগ প্রতিরোধব্যবস্থা
টাফট্‌ বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণা থেকে দেখা গেছে, দই খেলে শুধু যে প্রোটিন ও ক্যালসিয়াম পাওয়া যায় তা-ই নয়, এর গুণ আরও বেশি। আমেরিকান জার্নাল অব ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশনে (অশ, ঔ. ধলমষ ষৎয়ড়, ২০০০[&ৗ৬৫৫৩৩;]া[&ৗ৬৫৫৩৩;]ষপ্রকাশিত নিবন্ধে ড· সিমিন নিকবিন মেজদানি দেখিয়েছেন, দই রোগ প্রতিরোধ শক্তি ও ব্যবস্থাকেও করে প্রখর ও উজ্জীবিত। দই খেলে পাচকনলের সুরক্ষা হয়। বিশেষ করে পাচকনলের ক্যান্সার ও সংক্রমণেরও হয় প্রতিরোধ। জীবন্ত সব জীবাণুর জন্যই এমন গুণ দইয়ের।
যাদের পেটে দুধ হজম হয় না
সি এম কজ ও তাঁর সহকর্মীরা লক্ষ করেছেন, দধিতে বিটা-ম্যালাক্‌টোসাইডেজ নামে যে এনজাইম আছে, এর প্রভাবে যেসব রোগীর পেটে দুধ সহ্য হয় না তাদের পেটে দুধ শর্করা ল্যাকটোজ হজম হতে পারে (সূত্রঃ সি এম কজঃ জে· ডেয়ারি, সায়েন্স-১৯৯৪, ডিসেম্বর। তাই যাদের দুধ হজম হয় না তাদের জন্য দই ভালো।
যোনিতে ছত্রাক (ক্যানডিডা) সংক্রমণ
ই· হিলটন এবং তাঁর সহকর্মীরা লক্ষ করেছেন, যেসব দইয়ে ল্যাকটোব্যাসিলাস এসিডোকিলাস জীবাণু আছে সেই দই খেলে যোনিদেশে ছত্রাক সংক্রমণের ওপর কেমন প্রভাব পড়ে। তারা দেখেছেন, এতে সংক্রমণ কমে তিন গুণ। রোগীরা দিনে ৮ আউন্স দধি খেয়ে সুফল পাচ্ছে।
(সূত্রঃ অষষ.ওষয়.গপন.১৯৯২ গথড়ধভ )
ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের খাদ্যাভ্যাস, দই ও অন্যান্য
গবেষণায় দেখা গেছে, ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চল বিশেষ করে গ্রিস ও ইতালির জনগোষ্ঠীর ১৯৬০ সালের গোড়ার দিকে প্রত্যাশিত গড় আয়ু ছিল বেশি তাদের জীবন যাপনের ধারার জন্য। তাদের মধ্যে করোনারি হৃদরোগ, কয়েক ধরনের ক্যান্সার ও খাদ্যজনিত কিছু রোগের হারও ছিল কম। বিউ দোয়েন ও অন্য সহকর্মীরা দেখেছেন, ভূমধ্যসাগরীয় জীবন যাপনের মধ্যে আছে যে কম চর্বিযুক্ত খাবার খাওয়া, দই ও শরীরচর্চা-এগুলোই এই সুপ্রভাব ত্বরান্বিত করেছে। (সূত্রঃ অশ ঔ. ঈলমষ ঘৎয়ড়, ১৯৯৫ ঔৎষ)
শিশুদের ডায়রিয়া ও দুধজাত খাদ্য
শিশুদের ডায়রিয়া অনেক কম হয় দই খেলে। তাই দেখা যাচ্ছে দইয়ের গুণ অনেক।