Wednesday, June 11, 2008

Man Disease (পুরুষের রোগ)

মূত্রনালী পথে নিঃসরণ
ডা.মিজানুর রহমান কল্লোল চেম্বারঃ কমপ্যাথ লিমিটেড, ১৩৬ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা (সোম, মঙ্গল ও বুধবার)। যুবক মেডিক্যাল সার্ভিসেস, বাড়িঃ ১৬, রোডঃ ২৮ (পুরান), ১৫ (নতুন), ধানমন্ডি আবাসিক এলাকা, ঢাকা (শনি, রবি ও বৃহস্পতিবার)। মোবাইলঃ ০১৫৫২৩৪৫৭৫৪, ০১৭১৬২৮৮৮৫৫ যদি আপনার মূত্রনালী পথে রস নিঃসরণ হয়, তাহলে সম্ভবত আপনার যৌনবাহিত সংক্রমণ রয়েছে যা আপনি অন্যের মধ্যে ছড়াতে পারেন। এ ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনি ডাক্তার দেখাবেন, এমনকি আপনার উপসর্গ চলে গেলেও। মূত্রনালীর প্রদাহ কী এবং এর কারণ কী? মূত্রনালীর প্রদাহকে চিকিৎসা পরিভাষায় বলে ইউরেথ্রাইটিস। মূত্রনালী হচ্ছে একটি নল যা মূত্রথলি থেকে লিঙ্গের মাথা পর্যন্ত বিস্তৃত। মূত্রনালীর প্রদাহ সাধারণত যৌনবাহিত সংক্রমণ দ্বারা ঘটে। তবে সব সময় নয়। এটা সীমাবদ্ধ যৌন সম্পর্কের মধ্যেও ঘটতে পারে। গনোরিয়া এটা এক ধরনের যৌনবাহিত সংক্রমণ যা মূত্রনালীর প্রদাহ ঘটাতে পারে। নন-গনোকক্কাল ইউরেথ্রাইটিস গনোরিয়া ছাড়া অন্য যেকোনো কারণে মূত্রনালীর প্রদাহ হলে তাকে নন-গনোকক্কাল ইউরেথ্রাইটিস বলে। এটার সবচেয়ে সাধারণ কারণ হলো ক্লামাইডিয়া নামক ব্যাকটেরিয়া। এটা এক ধরনের যৌনবাহিত সংক্রমণ। এ ধরনের মূত্রনালীর প্রদাহ অন্য ধরনের ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাস দ্বারাও ঘটতে পারে। কখনো কখনো কোনো সংক্রমণ ছাড়াও ঘটতে পারে। উদাহরণস্বরূপ মূত্রনালীতে আঘাত পেলে বা কোনো অপারেশন হলে প্রদাহ হতে পারে। কোনো কোনো পুরুষের একই সময়ে গনোরিয়ার জীবাণু এবং অন্য জীবাণু দ্বারা মূত্রনালীর প্রদাহ হতে পারে। মূত্রনালীর প্রদাহের উপসর্গগুলো কী? সাধারণত লিঙ্গের মুখ দিয়ে নিঃসরণ বা তরল পদার্থ বের হয়, তবে সব সময় নয়। প্রস্রাব করার সময় ব্যথা বা জ্বালাপোড়া করে। এটা অনেকে প্রস্রাবে ইনফেকশন বলে ভুল করতে পারেন। লিঙ্গের মধ্যে জ্বালাপোড়া করতে পারে অথবা ঘন ঘন প্রস্রাব করার ইচ্ছা জাগতে পারে। মূত্রনালীর প্রদাহে কোনো কোনো পুরুষের কোনো উপসর্গ না-ও থাকতে পারে। উদাহরণস্বরূপ ক্লামাইডিয়া সংক্রমণের অর্ধেক সংখ্যক পুরুষের কোনো উপসর্গ থাকে না। কিভাবে রোগের উন্নতি ঘটে? উপসর্গগুলো অনেক সময় এমনিতেই চলে যায়। এ ক্ষেত্রে দুই সপ্তাহ থেকে ছয় মাস লাগতে পারে। যদি ব্যাকটেরিয়ার কারণে, যেমন­ ক্লামাইডিয়ার কারণে মূত্রনালীর প্রদাহ ঘটে তাই কিছু ব্যাকটেরিয়া মূত্রনালীতে থেকে যায়। তখন অবশ্যই চিকিৎসার প্রয়োজন হয়। এ ক্ষেত্রে উপসর্গ চলে গেলেও চিকিৎসা করাতে হবে। যে ব্যাকটেরিয়াটি (ক্লামাইডিয়া) সচরাচর পুরুষদের মূত্রনালীর প্রদাহ ঘটায় সেটি মহিলাদের মারাত্মক সমস্যা ঘটাতে পারে। মূত্রনালীর প্রদাহ হলে কী করা উচিত? এটা কখনোই অবহেলা করবেন না। অবশ্যই ডাক্তার দেখাবেন, এমনকি আপনার উপসর্গ চলে গেলেও ডাক্তার দেখাবেন। ডাক্তার আপনাকে কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে পারেন। এসব পরীক্ষার মধ্যে রয়েছে নিঃসরণ পরীক্ষা ও প্রস্রাব পরীক্ষা, যা আপনার সংক্রমণের কারণ নির্ণয়ে সাহায্য করবে। এন্টিবায়োটিক সাধারণত সংক্রমণ দূর করবে। তবে এটি নির্ভর করে রোগের কারণের ওপর। আপনার যৌন সঙ্গিনীকেও ডাক্তার দেখাতে হবে, এমনকি তার কোনো উপসর্গ না থাকলেও। যৌনবাহিত রোগে আক্রান্ত অনেক মহিলার কোনো উপসর্গ প্রকাশ পায় না। আপনার ও আপনার যৌন সঙ্গিনীর পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও চিকিৎসা শেষ না হওয়া পর্যন্ত যৌনসঙ্গম করবেন না।


প্রোস্টেট গ্রন্থির বৃদ্ধি
ডা. মিজানুর রহমান কল্লোল
চেম্বারঃ কমপ্যাথ লিমিটেড, ১৩৬ এলিফ্যান্ট রোড, (বাটা সিগন্যাল ও হাতিরপুল বাজারের সংযোগ রাস্তার মাঝামাঝি), ঢাকা।
মোবাইলঃ ০১৫৫২৩৪৫৭৫৪, ০১৭১৬২৮৮৮৫৫

প্রোস্টেট হচ্ছে একটা ছোট গ্রন্থি যা পুরুষদের থাকে। এটি অবস্থিত মূত্রথলির ঠিক নিচে। প্রোস্টেট ঘিরে রাখে প্রস্রাবের পথ বা মূত্রনালিকে। সাধারণত এটির আকৃতি প্রায় একটা আখরোটের মতো। যদিও সব পুরুষেরই প্রোস্টেট থাকে, তবে মধ্য বয়সে এটা সাধারণত বড় হতে শুরু করে। বয়স যত বাড়ে, প্রোস্টেট তত বড় হতে থাকে এবং এটা প্রস্রাবের পথকে ঠেলা দিতে থাকে। প্রোস্টেট গ্রন্থি স্বাভাবিকের চেয়ে বড় হওয়াকে বলে ‘হাইপারট্রফিক’ এবং এই অবস্থাকে বলে বিনাইল প্রোস্টেটিক হাইপারট্রফি সংক্ষেপে বিপিএইচ। প্রোস্টেট বড় হওয়া মানে প্রোস্টেট ক্যান্সার নয়।
উপসর্গঃ য় প্রস্রাবের ধারা দুর্বল হওয়া
প্রস্রাব করার সময় ইতস্তত করা
প্রস্রাবের ধারা বন্ধ হওয়া এবং আবার শুরু হওয়া
প্রস্রাব করার পর প্রস্রাবের থলিতে আরো প্রস্রাব থেকে গেছে এমন অনুভূতি হওয়া
দিনের বেলা বারবার প্রস্রাব হওয়া
ঘন ঘন প্রস্রাবের পথে ইনফেকশন হওয়া
প্রস্রাবের তাড়া অনুভব করা, অনেক সময় প্রস্রাব হয়ে যাওয়া
প্রস্রাব করার জন্য রাতে বার বার ওঠা
পরীক্ষা-নিরীক্ষাঃ প্রোস্টেট গ্রন্থি বড় হয়েছে কি না তা দেখার জন্য মলদ্বারে আঙুল ঢুকিয়ে পরীক্ষা করা হয়। এতে প্রোস্টে গ্রন্থির আকার ও কোনো অস্বাভাবিকতা আছে কি না তা বোঝা যায়। ল্যাবরেটরি পরীক্ষার মধ্যে রয়েছে প্রস্রাবের পরীক্ষা ও পিএসএ পরীক্ষা। পিএসএ হলো একটি উপাদান যা প্রোস্টেট কতৃêক উৎপাদিত হয়। প্রোস্টেটের সমস্যা হলে এটির পরিমাণ বেড়ে যায়। কিছু অন্য পরীক্ষা, যেমন­ ইউরোফ্লোমেট্রি এবং পিভিআর বেশ সহায়ক। ইউরোফ্লোমেট্রির মাধ্যমে প্রস্রাবের গতি ও প্রস্রাব প্রবাহের পরিমাণ পরিমাপ করা হয়। প্রস্রাব করার পর মূত্রথলিতে প্রস্রাব রয়েছে কি না তা নির্ণয় করতে পিভিআর করা হয়। এটি করা হয় সাধারণত আল্ট্রাসাউন্ডের মাধ্যমে। কখনো কখনো প্রস্রাবের সমস্যার কারণ খুঁজতে প্রেসার-ফ্লো দেখার প্রয়োজন হয়। প্রোস্টেট গ্রন্থির সঠিক মাপ জানতে এবং কোনো ক্যান্সার আছে কি না তা পরীক্ষা করতে প্রোস্টেটের আল্ট্রাসাউন্ড পরীক্ষা খুব সহায়ক।
চিকিৎসাঃ শল্য চিকিৎসা
টিইউআরপি
লেসার সার্জারি
ওপেন প্রোস্টেটেকটমি
টিইউএনএ
মেডিক্যাল চিকিৎসা
ফিনাস্টেরাইড
আলফা ব্লকার ওষুধ

শল্য চিকিৎসাঃ টিইউআরপিঃ প্রোস্টেট গ্রন্থি বৃদ্ধির জন্য ট্রান্সইউরেথ্রাল রিসেকশন অব দ্য প্রোস্টেট বা টিইউআরপি হলো সাধারণ শল্য চিকিৎসা। এটাকে সচরাচর ‘রোটো-রুটার’ সার্জারি নামে ডাকা হয়। এ ক্ষেত্রে মূত্রপথ দিয়ে একটা যন্ত্র ঢুকিয়ে প্রোস্টেটের সেই পয়েন্ট পর্যন্ত যাওয়া হয়, যেখানে প্রস্রাবের গতি বাধাপ্রাপ্ত হয়েছে। তারপর অতিরিক্ত টিসু কেটে ফেলা হয়। শরীরের বাইরে কোনো কাটাছেঁড়া করা হয় না। হাসপাতালে সাধারণত অল্প কয়েকদিন থাকার প্রয়োজন হয়।
লেসার সার্জারিঃ প্রোস্টেট গ্রন্থি বৃদ্ধির চিকিৎসায় লেসার সার্জারি অনেকটা টিইউআরপি’র মতোই। এ ক্ষেত্রেও প্রস্রাবের রাস্তা দিয়ে যন্ত্র ঢোকানো হয় এবং শরীরের বাইরে কোথাও কাটা হয় না। রক্তপাত খুব কম হয় এবং হাসপাতালে খুব কম সময় থাকতে হয়।

ওপেন প্রোস্টেটেকটমিঃ প্রোস্টেট গ্রন্থি খুব বেশি বড় হলে ওপেন প্রোস্টেটেকটমির মাধ্যমে চিকিৎসা করা হয়। এ ক্ষেত্রে তলপেট কেটে অপারেশন করা হয় এবং প্রোস্টেট গ্রন্থির অংশ বের করে আনা হয়। এই চিকিৎসায় সাধারণত প্রস্রাবের সমস্যা দ্রুত ও দীর্ঘস্থায়ী সুফল পাওয়া যায়।
মেডিক্যাল চিকিৎসাঃ ফিনাস্টেরাইডঃ এটি খাওয়ার একটি ওষুধ, যা প্রোস্টেট গ্রন্থিকে সঙ্কুচিত করে এবং এর ফলে প্রস্রাবের উপসর্গের উন্নতি ঘটে। কখনো কখনো এটি কয়েক মাস গ্রহণের প্রয়োজন হতে পারে। ওষুধ বন্ধ করলে আবার উপসর্গ দেখা দিতে পারে। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে লিঙ্গের উত্থানে সমস্যা দেখা দেয় এবং যৌনস্পৃহা কমে যায়।

অন্য ওষুধঃ আলফা ব্লকার ওষুধগুলো প্রোস্টেট গ্রন্থি বৃদ্ধির চিকিৎসায়ও ব্যবহার করা হয়। এসব ওষুধ প্রোস্টেটের পেশিগুলোকে শিথিল করে এবং এর ফলে প্রস্রাবের উপসর্গগুলো কমে যায়। অবস্থা ভালো হতে কয়েক সপ্তাহ সময় লাগতে পারে। ওষুধের মাত্রা পুনর্নির্ধারণের প্রয়োজন হতে পারে। আলফা ব্লকার ওষুধগুলোর উপসর্গের মধ্যে রয়েছে মাথাব্যথা, ক্লান্তি অথবা রক্তচাপ কমে যাওয়া। এসব ওষুধ যত দিন চালিয়ে যাবেন, তত দিন প্রস্রাবের উপসর্গগুলো কম থাকে। চিকিৎসা চলাকালে নিয়মিত চিকিৎসককে দিয়ে পরীক্ষা করাবেন।

জটিলতাঃ প্রোস্টেট গ্রন্থির বৃদ্ধি বা বিপিএইচ চিকিৎসা না করালে মারাত্মক জটিলতা দেখা দিতে পারে। প্রোস্টেট গ্রন্থি বড় থাকলে তা মূত্রথলি থেকে প্রস্রাব বের হতে বাধা দেয়। এর ফলে মূত্রথলিতে বাড়তি চাপ পড়ে। মূত্রথলিতে এ চাপ প্রস্রাবকে বৃক্কনালির মধ্য দিয়ে পেছন দিকে ও কিডনিতে ঠেলে দেয়। এর ফলে বৃক্কনালি ও কিডনি বড় হয়ে যায় এবং একসময় কিডনি তার কার্যকারিতা হারিয়ে ফেলে। মূত্রথলির দেয়াল দুর্বল হয়ে যায়। মূত্রথলি দুর্বল হয়ে গেলে প্রস্রাব করার পরও কিছু প্রস্রাব মূত্রথলিতে থেকে যায়। মূত্রথলিতে প্রস্রাব থেকে গেলে বারবার মূত্রপথে ইনফেকশন বা সংক্রমণ হয়। এই সংক্রমণ কিডনিতে ছড়িয়ে যেতে পারে।

খৎনা
ডা. মিজানুর রহমান কল্লোল
চেম্বারঃ কমপ্যাথ লিমিটেড, ১৩৬ এলিফ্যান্ট রোড, (বাটা সিগন্যাল ও হাতিরপুল বাজারের সংযোগ রাস্তার মাঝামাঝি), ঢাকা।
মোবাইলঃ ০১৫৫২৩৪৫৭৫৪, ০১৭১৬২৮৮৮৫৫

আপনার নবজাতক পুত্রের খৎনা করাবেন কি না সেই সিদ্ধান্ত আপনার জন্য কঠিন হতে পারে। আপনি খৎনার সুবিধা ও ঝুঁকি দুটোই ভেবে দেখবেন। তা ছাড়া অন্য কিছু বিষয় যেমন আপনার সংস্কৃতি, ধর্ম ও ব্যক্তিগত অগ্রাধিকার আপনার সিদ্ধান্তের ওপরও প্রভাব ফেলবে। তবে আপনি যে ধর্ম বা যে সংস্কৃতির লোক হোন না কেন, খৎনা সম্পর্কে আপনার পুরো তথ্য জানা থাকলে আপনার সিদ্ধান্ত নিতে সুবিধা হবে। আপনার যদি জানা থাকে খৎনা কতটা স্বাস্থ্য সুরক্ষাকর তাহলে আপনার পুত্রের খৎনা করানোর ব্যাপারে আপনার দ্বিধা থাকার কথা নয়। একথা সত্য যে, ইহুদি ও মুসলমানরা ধর্মীয় কারণে খৎনা করান, কিন্তু এর স্বাস্থ্য সুফলের কথা চিন্তা করলে কিংবা বাস্তবে দেখলে সব পুরুষেরই (যারা খৎনা করাননি) খৎনা করানো উচিত। খৎনাকে ইংরেজিতে বলে সারকামসিশন। খৎনা হচ্ছে লিঙ্গের অগ্রভাগের ত্বক (যে ত্বক লিঙ্গমুণ্ডুকে ঢেকে রাখে) কেটে বাদ দেয়া। খৎনা সাধারণত জন্মের প্রথম দিন বা দ্বিতীয় দিন সম্পন্ন করা হয়। বয়স দু’মাসের বেশি হলে বয়স্ক ছেলেদের এবং বয়স্ক লোকদের খৎনা করানো কিছুটা জটিল ও ঝুঁকিপূর্ণ। তবে প্রয়োজনে অবশ্যই খৎনা করাতে হবে। খৎনা করাতে সময় লাগে মাত্র পাঁচ থেকে দশ মিনিট। ব্যথা যাতে না পায় সে জন্য আপনার শিশুকে স্থানিক অবশকরণ ওষুধ প্রয়োগ করা হয়।

খৎনা করানোর ফলে কি কোনো লাভ হয়?
দ্য অ্যামেরিকান অ্যাকাডেমি অব পেডিয়াট্রিকসের সাম্প্রতিক রিপোর্ট মতে, খৎনা করালে শিশু ছেলেদের মূত্রপথের সংক্রমণ রোগ প্রতিহত হয়। অধিকাংশ ছোট ছেলে মূত্রপথের সংক্রমণ রোগে আক্রান্ত হয়। এর ফলে প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া, জ্বর, খাবারে অনীহা এবং স্বাস্থ্য ভালো না হওয়া ইত্যাদি সমস্যা লেগেই থাকে। খৎনা করালে এসব সমস্যা দূর হয়। প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষরাও খৎনা করালে অবশ্যই কিছু সুফল পান, যেমন খৎনা পুরুষদের লিঙ্গের ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। খৎনা যৌনবাহিত রোগের ঝুঁকি কমায়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, পুরুষের খৎনা এইচআইভি প্রতিরোধে একটি কার্যকর ব্যবস্থা। তবে এটা আংশিক সুরক্ষা দেয়। বহুগামিতার ফলে এইচআইভি’র বিস্তার প্রতিরোধ করতে পারে না।
লিঙ্গের মাথায় প্রদাহ হলে, লিঙ্গাগ্রের ত্বকে চুলকানি ও জ্বালাপোড়া করলে, খৎনা করালে তা সেরে যায়।
আগেই বলা হয়েছে, খৎনার ইংরেজি সারকামসিশন। ‘সারকামসিশন’ শব্দটি এসেছে ল্যাটিন ‘সারকাম’ ও ‘সিডারে’ থেকে। সারকাম শব্দের অর্থ চার পাশে এবং সিডারে শব্দের অর্থ কেটে ফেলা। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার মতে, সারাবিশ্বের ৩০ শতাংশ পুরুষ খৎনা করিয়ে থাকেন। অধিকাংশ করান ধর্মীয় বা সাংস্কৃতিক কারণে।
মানব ইতিহাসে খৎনার ইতিহাস অতি পুরান। পাথরযুগের গুহাগুলোতে খৎনার অনেক চিত্র পাওয়া গেছে। প্রাচীন মিসরের সমাধিগুলোতেও পাওয়া গেছে খৎনার অনেক চিত্র। বিভিন্ন মতবাদ অনুসারে খৎনা হচ্ছে ধর্মীয় বলিদান, স্বাস্থ্য সতর্কতা, দেবতার প্রতি আনুগত্যের চিহ্ন, বয়ঃসন্ধিকাল পেরনোর ধর্মীয় আচার, পরাজয় বা দাসত্বের চিহ্ন অথবা সবল পুরুষত্বের প্রতীক। পুরুষের খৎনা ইহুদি ও মুসলমানদের জন্য ধর্মীয় আদেশ। আফ্রিকায় প্রথাগতভাবে কিছু খ্রিষ্টানের মধ্যে এটা করা হয়। মধ্যপ্রাচ্য, আমেরিকা এবং আফ্রিকা ও এশিয়ার কিছু অংশে খৎনা খুব সাধারণ। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা যেকোনো পুরুষের স্বাস্থ্য সচেতনতার জন্য বিশেষ করে এইচআইভি নিয়ন্ত্রণের জন্য খৎনা করানোর পরামর্শ দেন। লিঙ্গমুণ্ডুতে প্রদাহ এবং লিঙ্গের ক্যান্সারের চিকিৎসায়ও খৎনা করানো হয়। ফাইমোসিসের চিকিৎসায় অহরহ খৎনা করানো হচ্ছে।
সংস্কৃতি ও ধর্মঃ যেসব সংস্কৃতিতে খৎনার চল রয়েছে, তারা তাদের পুরুষদের খৎনা করান জন্মের পর, শৈশবকালে অথবা বয়ঃসন্ধি কালে ধর্মীয় আচারের অংশ হিসেবে। মুসলিম দেশগুলো, ইসরাইল, আমেরিকা, ফিলিপাইন ও দক্ষিণ কোরিয়ায় খৎনা সবচেয়ে বেশি প্রচলিত এবং এটা সবচেয়ে বেশি করান ইহুদি ও মুসলমানরা। এটা খুব কম ইউরোপ, লাতিন আমেরিকা, চীন ও ভারতে।
যেখানে অধিকাংশ দেশে খ্রিষ্টানরা খৎনা করান না, সেখানে প্রথাগতভাবে কিছু অর্থোডক্স ও কিছু আফ্রিকার গির্জায় খৎনা করানো হয়। দক্ষিণ আফ্রিকার কিছু খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বী গির্জা খৎনার বিরুদ্ধাচরণ করে এটাকে অন্য ধর্মের আচার আখ্যা দিয়ে। তবে কেনিয়ার নোমিয়া চার্চ এবং বেশ কিছু স্থানে সদস্য হতে গেলে খৎনা করানোর প্রয়োজন হয়। ইসলাম ধর্মে কিছু হাদিসে খৎনা করানোর কথা বলা হয়েছে। কেউ কেউ এটা করানো ‘সুন্নত’ বলেন, আবার অনেকে বলেন ‘বাধ্যতামূলক’। পৃথিবীর সব মুসলমানই খৎনা করান।
বর্তমানে নাইজেরিয়ার কিছু অমুসলিম সম্প্রদায় চিকিৎসাগত কারণে খৎনা করিয়ে থাকেন।
একসময় খৎনা নিয়ে কেউ কেউ বিতর্কের সূচনা করলেও বর্তমানে আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞান স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য সব পুরুষকে খৎনা করানোর জন্য উৎসাহ দিয়ে থাকে। পলিনেশিয়া দীপপুঞ্জের সামোয়া, টঙ্গো, নিউই ও টিকোপিয়াতে যত্রতত্র খৎনা করা হচ্ছে। মুসলিম ও ইহুদি সম্প্রদায় ধর্মীয় কারণে খৎনা করিয়ে থাকে। কিন্তু এর সুফল অনেক। খৎনার সুফলতার জন্য বর্তমানে বিভিন্ন অমুসলিম সম্প্রদায়ও খৎনা করাচ্ছে। খৎনাকে শুধু ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক দৃষ্টিকোণ থেকে না দেখে এর স্বাস্থ্যগত গুরুত্বও দেখা উচিত। কারণ শুধু খৎনা করানোর কারণে একজন পুরুষ অনেক রোগের হাত থেকে রক্ষা পান।
ব্যথা মুক্ত খৎনাঃ আমেরিকান অ্যাকাডেমি অব পেডিয়াট্রিক্স এক বিবরণীতে বলেছে, যেসব নবজাতকের কোনো ব্যথানাশক ওষুধ ছাড়াই খৎনা করা হয়, তাদের ব্যথার অভিজ্ঞতা হয় ও তারা মানসিক চাপে ভোগে। তাই অ্যাকাডেমি খৎনা করানোর সময় ব্যথানাশক ওষুধ ব্যবহারের সুপারিশ করেছে। অন্য একটি মেডিক্যাল সংস্থা গবেষণা করে দেখেছে, অ্যানেস্থেশিয়া ছাড়া খৎনা করানো নবজাতকের জন্য যন্ত্রণাদায়ক ব্যাপার। শুধু নবজাতক নয়, যেকোনো পুরুষের খৎনা করার সময় ব্যথানাশক ওষুধ ও অ্যানেস্থেশিয়া ব্যবহার করা উচিত। সাধারণত লিঙ্গের পেছনে অ্যানেস্থেশিয়া দিয়ে অনুভূতি নাশ করা হয়। মনে রাখতে হবে, খৎনা করানোর সময় রোগীর যেন কোনো ভীতিকর অভিজ্ঞতা না হয়। একসময় মানুষ হাজামের কাছে খৎনা করাত। সেটা খুবই ব্যথাপূর্ণ পদ্ধতি। শুধু তাই নয়, এ পদ্ধতির খৎনায় লিঙ্গে মারাত্মক ইনফেকশন হতে পারে। কোনো কোনো শিশুর ক্ষেত্রে জীবননাশী জটিলতাও দেখা দেয়। বর্তমানে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে একজন অভিজ্ঞ চিকিৎসক দ্বারাই খৎনা করানো উচিত।
যৌন প্রভাবঃ খৎনা কি যৌনতার ওপর কোনো প্রভাব ফেলে? গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব পুরুষের খৎনা করা হয়েছে তাদের যৌন ক্রিয়ার স্থায়িত্ব, যাদের খৎনা করানো হয়নি তাদের চেয়ে অনেক বেশি। খৎনা করানো পুরুষদের যৌন অক্ষমতাও অনেক কম হয়।
খৎনার ঝুঁকিঃ অভিজ্ঞ চিকিৎসক দ্বারা খৎনা করালে তার ঝুঁকি খুবই কম। অন্যথায় রক্তক্ষরণ, ইনফেকশনসহ বিভিন্ন ঝুঁকির সম্ভাবনা থাকে। খৎনার বিভিন্ন জটিলতার মধ্যে রয়েছে প্রস্রাবের পথের ফিস্টুলা, করডি, সিস্ট, লিম্ফেডেমা, লিঙ্গমুণ্ডুতে ক্ষত, লিঙ্গের টিস্যু ধ্বংসপ্রাপ্ত হওয়া, হাইপোসপেডিয়াসিস (প্রস্রাবের রাস্তার দ্বার অন্যত্র হওয়া), পুরুষত্বহীনতা, বেশি টিস্যু অপসারণ এবং কখনো কখনো সেকেন্ডারি ফাইমোসিস। এসব জটিলতা প্রতিরোধ করা যায় একমাত্র যত্নের মাধ্যমে। এসব জটিলতার বেশিরভাগই ঘটে অনভিজ্ঞ হাতে খৎনা করালে। শিশুদের ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদি জটিলতা হিসেবে ত্বক উঁচু হতে পারে ও লিঙ্গমুণ্ডুর ছিদ্র সরু হয়ে যেতে পারে।
এইচআইভি এবং অন্যান্য যৌনবাহিত রোগ
গবেষণায় দেখা গেছে, প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষদের খৎনা করালে এইচআইভি সংক্রমণের ঝুঁকি ৫০-৬০ শতাংশ কমে যায়। খৎনার ফলে সিফিলিস, শ্যানক্রয়েড ও জেনিটাল হার্পিসের সংক্রমণের হারও অনেক কমে যায়।
পরিচ্ছন্নতা, সংক্রমণ ও দীর্ঘমেয়াদি অবস্থাসমূহঃ গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব পুরুষের খৎনা করা হয়নি তাদের লিঙ্গের সংক্রমণ ও প্রদাহের পরিমাণ খৎনা করানো পুরুষদের তুলনায় অনেক বেশি হয়। এদের জন্য কিছু তথ্যঃ
? যেহেতু লিঙ্গমুণ্ডুর ত্বক ব্যাকটেরিয়ার বাসস্থান হতে পারে, তাই ঠিকমতো পরিষ্কার না করলে সংক্রমণ হতে পারে।
? ঘন ঘন সাবান দিয়ে পরিষ্কার করলে লিঙ্গমুণ্ডুর ত্বকে প্রদাহ হতে পারে।
? জোর করে লিঙ্গমুণ্ডুর ত্বক পেছনে টেনে সরালে সংক্রমণ হতে পারে। এদের ক্ষেত্রে সাধারণ চিকিৎসা হচ্ছে স্থানিক অ্যান্টিবায়োটিক (মেট্রোনিডাজল ক্রিম) ও অ্যান্টিফ্যাঙ্গাল (ক্লোট্রিমাজল ক্রিম) অথবা স্বল্পক্ষমতাসম্পন্ন স্টেরয়েড ক্রিম ব্যবহার করা।
কিছু কিছু গবেষণায় আরো দেখা গেছে, খৎনা না করানো পুরুষদের হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস সংক্রমণের বিশাল ঝুঁকি থাকে।
বারোটি গবেষণায় দেখা গেছে, শিশুবেলায় খৎনা করালে ছেলেদের মূত্রপথের সংক্রমণের হার কমে যায়।
লিঙ্গের ক্যান্সারঃ গবেষণায় দেখা গেছে, খৎনা না করানো পুরুষদের লিঙ্গের ক্যান্সারের হার খৎনা করানো পুরুষদের তুলনায় ৩-২২ গুণ বেশি। গবেষকরা বলছেন, লিঙ্গের ক্যান্সার প্রতিহত করতে শিশুকালেই খৎনা করানো উচিত। তবে শেষ বয়সে খৎনা এ ধরনের কোনো সুরক্ষা দেয় না। (শেষ)
চেম্বারঃ কমপ্যাথ লিমিটেড, ১৩৬ এলিফ্যান্ট রোড, (বাটা সিগন্যাল ও হাতিরপুল বাজারের সংযোগ রাস্তার মাঝামাঝি), ঢাকা।
মোবাইলঃ ০১৫৫২৩৪৫৭৫৪, ০১৭১৬২৮৮৮৫৫


পি এস এ টেস্ট এবং এর মূল্যমান

প্রোস্টেট গস্ন্যান্ড পুরম্নষেরই একান্তô। বয়স হলে অনেক সময় এই গস্ন্যান্ড বেড়ে যায়, বেশিরভাগ ড়্গেত্রেই এই বৃদ্ধি নিরীহ। কিন্তু কিছু ড়্গেত্রে এই বৃদ্ধি হতে পারে অস্বাভাবিক, রূপ নিতে পারে ক্যান্সারে। একে আগাম নির্ণয়ের জন্য প্রচলিত রয়েছে রক্তের একটি পরীড়্গাঃ প্রোস্টেট স্পেসিফিক এন্টিজেন বা পি·এস·এ। রোগ নির্ণয় কৌশল হিসেবে এর প্রসিদ্ধি ছিলো। কিন্তু ইদানীং গবেষকরা বলছেন প্রোস্টেটের ক্যান্সার সোসাইটির পরামর্শঃ পঞ্চাশ উর্ধ্বê প্রতিটি পুরম্নষের বছরে একবার প্রোস্টেট ক্যান্সারের স্ত্র্নিনিং করানো উচিত। স্ত্র্নিনিং করানো উচিত দুটো ধাপেঃ(১) ডিজিটাল রেকটাল এক্সাম (ঊৗঋ) মলদ্বারে অঙ্গুলি প্রবেশ করিয়ে প্রোস্টেটের পৃষ্ঠদেশ অনুভব করে পরীড়্গা করা। (২) এরপর পিএসএ নামে একটি রক্ত পরীড়্গা । প্রেস্টেট গস্ন্যান্তô থেকে নিঃসৃত হয় এই প্রেটিন-প্রোস্টেট স্পেসিফিক এন্টিজেন (ওেই)।

নিউইয়র্ক সিটি ওয়েল কর্ণেল মেডিক্যাল সেন্টারে ইউরোলজিক্যাল অন্‌কোলজি বিভাগের ক্লিনিক্যাল ডিরেকটর এবং মুখ্য গবেষক ডাঃ ডগলাস· এস· শের বলেন, ‘যাদের ডিআরএ পরীড়্গা করে অস্বাভাবিক ফল পাওয়া যায়, তাদের জন্য পি·এস· এ· টেস্ট পূবর্ সংকেত দেওয়ার জন্য সফল টেস্ট হতে পারে।’ তবে ডি·আর·এ টেস্টে ফলাফল যাদের স্বাভাবিক, তাঁদের জন্য পিএস এর তেমন মূল্য নেই।’ এদের জন্য পিএসএ টেস্টের মূল্য কম· কারণ চিকিৎসকরা এখন অনেক বেশি বায়োপসি করছেন আর বয়োপসি কৌশলও এখন অনেক উন্নত।

১৬০৭ জন পুরম্নষের প্রোস্টেট বয়োপসির অতীত রেকর্ড পর্যালোচনা করে বেশকিছু তথ্য পেয়েছেন। ওয়েল কর্ণেল সেন্টারে ১৯৯৩-২০০৫ সালে এসব বায়োপ্‌সি হয়েছিলো।

১৯৯০ সালের দিকে যেসব পুরম্নষের রক্তে প্রতি মিলিলিটারে ৪ নেনোগ্রামের বেশি ছিলো পিএসএ, তাদের বায়োপসি করা হয়োছিলো। পরবর্তী সময়ে যাদের পিএসএ ২·৫-৪ নেনোগ্রামের মধ্যে ছিলো, তাদেরও বায়োপসি অনেক সময় করা হয়েছিলো।

আগ-নব্বই এবং মধ্য নব্বই এ বায়োপ্‌সির সময় ছয়টি সূঁচ ব্যবহার করা হয়েছিলো। এখন ব্যবহৃত হচ্ছে চৌদ্দটি। পিএসএ মান ৪ এর কম থাকলেও বয়োপ্‌সি করাতে ক্যান্সারের আগাম নির্ণয় সহজ হয়েছে বলে অনুমান।

পিএসএ মান ২·৫-এর বদলে ৪ করলে ক্যান্সার আগাম নির্ণয়ের হার, দ্রম্নত পতন ঘটতে পারে।” ডাঃ ডগলাস আরো বলেন, “প্রোস্টেট ক্যান্সারের সম্বন্ধে মানুষের সচেতনতা ক্রমেই বাড়ছে এবং স্কিনিং-এর ব্যাপারটাও বদলে যাচ্ছে। আজকাল ডিআরই করে আস্বাভাবিক ফল কদাচিৎই পাওয়া যায়।”

ডাঃ ডগলাসের বক্তব্যঃ “ পিএসএ ছাড়া প্রোস্টেট ক্যান্সারের আরো নতুন বায়োমার্কার বা জৈবসূচক আবিষ্কারের প্রয়োজন রয়েছে। পুরম্নষের বয়স পঞ্চাশ হলেই কি তার প্রোস্টেট বায়োপ্‌সি করতে হবে? এই গুরম্নত্বপূর্ণ প্রশ্নটি খতিয়ে দেখার দরকার রয়েছে।”

নিউইয়র্কের মেমোরিয়েল োয়ান ক্যাটারিং ইনস্টিটিউটের পরিসংখ্যানবিদ এন্ড্র ভিকার্স বলেন, যাদের নিয়মিত স্ত্র্নিনিং তাদের জন্য একে প্রয়োগ করা যেতে পারে। যাদের স্ত্র্নিনিং হয়নি এদের গবেষণাটি সম্পূর্ণ নয় কারণ যেসব লোকের বায়োপ্‌সি হয়েছে তাদের তথ্যই কেবল সংগ্রহ করা হয়েছে।

এই গবেষণায় প্রোস্টেট ক্যান্সারের ঝুঁকি উপাদান যেমন গোত্র, বয়স, পারিবারিক ইতিহাস এসব উলেস্নখ করা হয়নি। যাদের বয়োপ্‌সি করা হয়নি এদের তথ্যও পাওয়া যায়নি।

পিএসএ টেস্টের ভালো-মন্দও রয়েছে। লড়্গ্যণীয় হলো, যেসব প্রোস্টেট ক্যান্সার এত ধীরে বাড়ে যে জীবন বিপদসংকুল হয় না এবং যেসব প্রোস্টেট ক্যান্সার প্রাণঘাতী এ দু’ধরনের মধ্যে পার্থক্য চিহিৃত করতে পারে না পিএসএ টেস্ট। তবে এ পর্যন্তô যত রোগনির্ণয় কৌশল রয়েছে, এসব বিবেচনায় পিএসএ টেস্ট এখনও অনেক মূল্যবান।

০ অধ্যাপক ডাঃ শুভাগত চৌধুরী

পরিচালক, ল্যাবরেটরী সার্ভিসেস বারডেম, ঢাকা


ক্লামাইডিয়া সংক্রমণ
ডা. মিজানুর রহমান কল্লোল

ক্লামাইডিয়া পুরুষের অতি সাধারণ যৌনবাহিত সংক্রমণ। অনেক পুরুষ সচরাচর জানেন না তাদের ক্লামাইডিয়া সংক্রমণ রয়েছে, কারণ তাদের কোনো উপসর্গ নাও থাকতে পারে। যা হোক, ক্লামাইডিয়া মহিলা যৌন সঙ্গিনীকে সংক্রমিত করতে পারে এবং মারাত্মক সংক্রমণ ঘটায় ও জটিলতা সৃষ্টি করে। নবজাতক শিশুরাও এই জটিলতার শিকার হয়।
কিভাবে সংক্রমণ ঘটে?
যে জীবাণুটি এই সংক্রমণ ঘটায় তার নাম ক্লামাইডিয়া ট্রাকোমাটিস। এই জীবাণুগুলো ব্যাকটেরিয়ার মতো একই ধরনের। সংক্রমণ সাধারণত যৌন সঙ্গমের সময় একজনের কাছ থেকে আরেক জনের কাছে ছড়ায়। এগুলো অস্বাভাবিক যৌন সম্পর্ক স্থাপনের জন্য পায়ু এলাকায়ও হতে পারে।
পুরুষদের ক্ষেত্রে ক্লামাইডিয়া সাধারণত মূত্রনালীকে সংক্রমিত করে। মূত্রনালী হচ্ছে একটা নল যা পুরুষাঙ্গের মধ্য দিয়ে অতিক্রম করে। মূত্রনালীর মধ্য দিয়ে প্রস্রাব ও যৌন রস (বীর্য) বেরিয়ে যায়। মূত্রনালীর সংক্রমণকে বলে ইউরেথ্রাইটিস।
ক্লামাইডিয়া এপিডিডাইমিস কিংবা প্রোস্টেট গ্রন্থিকেও সংক্রমিত করতে পারে। এপিডিডাইমিস হলো একটি ছোট গ্রন্থি যা অণ্ডকোষের সাথে সংযুক্ত থাকে। এটা শুক্রাণু উৎপাদনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। প্রোস্টেট গ্রন্থি থাকে পুরুষাঙ্গের গোড়ায়। এটা শুক্রাণুর জন্য পুষ্টি উপাদান তৈরি করে। এপিডিডাইমিসের সংক্রমণকে বলে এপিডাইমাইটিস। প্রোস্টেটের সংক্রমণকে বলে প্রোস্টেটাইটিস।
পায়ুপথে সঙ্গম করলে মলদ্বার এবং মলনালীও সংক্রমিত হতে পারে।
উপসর্গগুলো কী কী?
সচরাচর কোনো উপসর্গ থাকে না। যদি মূত্রনালী সংক্রমিত হয় তাহলে আপনার এসব উপসর্গ থাকতে পারেঃ ষ পুরুষাঙ্গের মাথা থেকে রস নিসৃত হওয়া ষ প্রস্রাব করার সময় ব্যথা বা জ্বালাপোড়া করা ষ এপিডিডাইমিস সংক্রমিত হলে অণ্ডকোষে ব্যথা করে। ষ প্রোস্টেট গ্রন্থি সংক্রমিত হলে যেসব উপসর্গ দেখা দেয় সেসব হচ্ছেঃ ষ মূত্রনালী থেকে নিঃসরণ ষ প্রস্রাব করার সময় কিংবা প্রস্রাব করার পর ব্যথা বা জ্বালাপোড়া করা অথবা অস্বস্তি বোধ করা ষ যৌন সঙ্গমের সময় কিংবা যৌন সঙ্গমের পরে ব্যথা করা ষ পিঠের নিুভাগে বা কোমরে ব্যথা করা। কখনো কখনো প্রোস্টেট কিংবা এপিডিডাইমিসের সংক্রমণ হঠাৎ ও তীব্র হয়। এ ধরনের সংক্রমণের ফলে জ্বর হয় অথবা অসুস্থতার অন্য লক্ষণগুলো দেখা দেয়। এ ক্ষেত্রে দ্রুত চিকিৎসার প্রয়োজন হয়।
পায়ুপথ সংক্রমিত হলে যেসব উপসর্গ দেখা দেয়
ষ পায়ুপথের চার পাশে জ্বালাপোড়া করা ষ পায়খানা করার সময় ব্যথা করা।
কিভাবে রোগ নির্ণয় করবেন?
রোগ নির্ণয়ের জন্য প্রথমেই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত। কিছু পরীক্ষার মাধ্যমে রোগ শনাক্ত করা সম্ভব। মূত্রনালীর সংক্রমণ নির্ণয়ের জন্য মূত্রনালীর মুখের নিঃসরণ পরীক্ষা করা হয়। এ ক্ষেত্রে পুরুষাঙ্গের মাথায় মূত্রনালীর মুখে একটা সরু সোয়াব ঢোকানো হয়। ক্লামাইডিয়ার জন্য আপনাকে একটা প্রস্রাবের পরীক্ষাও করানো হতে পারে। যদি আপনার পায়ুপথে উপসর্গ থাকে তাহলে আপনার পায়ুপথের নিঃসরণ পরীক্ষা করাতে হবে। পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে বোঝা যাবে আপনার সংক্রমণের কারণ কী এবং কোন অ্যান্টিবায়োটিক সবচেয়ে ভালো কাজ করবে। তবে সচরাচর এপিডিডাইমিস ও প্রোস্টেট গ্রন্থির সংক্রমণের জন্য দায়ী জীবাণুকে শনাক্ত করা সম্ভব হয় না।
কী চিকিৎসা দেবেন?
সাধারণত সঠিক অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণে সংক্রমণ সেরে যায়। বেশিরভাগ মূত্রনালীর সংক্রমণে সাত দিন অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণের প্রয়োজন হয়। কখনো কখনো একক মাত্রার অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে সংক্রমণের চিকিৎসা করা যেতে পারে। প্রোস্টেট গ্রন্থির সংক্রমণের জন্য ২ থেকে ৪ সপ্তাহ চিকিৎসার প্রয়োজন হতে পারে।
অনেক চিকিৎসক পরীক্ষার ফলাফল হাতে পাওয়ার আগেই অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে চিকিৎসা শুরু করেন। এপিডিডাইমিস বা প্রোস্টেটের প্রদাহের ক্ষেত্রে এমন অ্যান্টিবায়োটিক বাছাই করতে হবে যা ক্লামাইডিয়া এবং সংক্রমণের অন্য কারণগুলোর বিরুদ্ধে কার্যকর। আপনাকে একটির অধিক অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণেরও প্রয়োজন হতে পারে। বিশেষ করে যদি আপনার অন্য সংক্রমণের আশঙ্কা, যেমন­ গনোরিয়া থাকে। আপনার যৌন সঙ্গিনীরও চিকিৎসা করাতে হবে, তার কোনো উপসর্গ না থাকলেও। এ ব্যাপারে চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন।
কার্যকারিতা কত দিন স্থায়ী হবে?
মূত্রনালীর প্রদাহের উপসর্গগুলো সাধারণত অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণের কয়েক দিনের মধ্যেই চলে যায়। যা হোক, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সবগুলো ক্লামাইডিয়াকে খতম করা। চিকিৎসক যত দিন ওষুধ খেতে বলবেন তত দিন ওষুধ খেতে হবে। এমনকি ওষুধ শেষ হওয়ার আগে উপসর্গগুলো যদি চলেও যায় তবু ওষুধ চালিয়ে যেতে হবে।
এপিডিডাইমিস এবং প্রোস্টেটের প্রদাহের ক্ষেত্রে উপসর্গ সম্পূর্ণ চলে যাওয়ার পরও আরো কিছু দিন ওষুধ খেতে হবে।
অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণ করার পরও উপসর্গ থাকলে চিকিৎসককে অবহিত করুন। অ্যান্টিবায়োটিকের কোর্স শেষ করার পর যদি উপসর্গগুলো আবার দেখা দেয় তাহলে তা চিকিৎসককে জানানো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ক্লামাইডিয়া বন্ধ্যত্ব ঘটাতে পারে। যদি আপনার ক্লামাইডিয়ার সংক্রমণ থাকে এবং কয়েক সপ্তাহ বা কয়েক মাস বিনা চিকিৎসায় থাকেন, তাহলে আপনার বন্ধ্যত্বের ঝুঁকি অনেক থাকে।
কিভাবে নিজের যত্ন নেবেন?
ষ চিকিৎসকের দেয়া ব্যবস্থাপত্র পুরোপুরি মেনে চলুন। যত দিন তিনি ওষুধ খেতে বলবেন, তত দিন ওষুধ খাবেন। ওষুধের কোর্স শেষ হওয়ার আগে উপসর্গগুলো চলে গেলেও ওষুধ চালিয়ে যাবেন। ষ ব্যথা কমানোর জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী অ্যাসপিরিন কিংবা প্যারাসিটামল গ্রহণ করুন। ষ যদি আপনি টেট্রাসাইক্লিন কিংবা ডক্সিসাইক্লিন গ্রহণ করতে থাকেন তাহলে এই ওষুধ গ্রহণের এক থেকে দু’ঘণ্টা আগে ও পরে দুধ জাতীয় খাবার পরিহার করুন। ষ চিকিৎসকের নির্দেশ অনুযায়ী আবার দেখাতে আসবেন এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাবেন। ষ আপনার যৌন সঙ্গিনীর অবশ্যই চিকিৎসা করাবেন। তার কোনো উপসর্গ না থাকলেও চিকিৎসা করাবেন। সব ওষুধ শেষ না হওয়া পর্যন্ত এবং চিকিৎসক নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত আপনি ও আপনার সঙ্গিনী যৌন মিলন করবেন না।
কিভাবে ক্লামাইডিয়া সংক্রমণ প্রতিরোধ করবেন?
ষ আপনি ক্লামাইডিয়ায় আক্রান্ত হলে তা আপনার যৌন সঙ্গিনীকে অবহিত করুন। ষ সংক্রমণের ঝুঁকি কমাতে যৌন মিলনের সময় সর্বদা কনডম ব্যবহার করুন। ষ স্বামী-স্ত্রী উভয়কে ক্লামাইডিয়া এবং অন্য যৌনবাহিত রোগগুলোর পরীক্ষা করানো উচিত। ষ যদি আপনি নিরাপদ যৌন সঙ্গম না করেন (কনডমবিহীন) তাহলে আপনার কোনো উপসর্গ না থাকলেও চিকিৎসক দ্বারা পরীক্ষা করান।
চেম্বারঃ কমপ্যাথ লিমিটেড, ১৩৬ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা। সোম, মঙ্গল, বুধবার)। যুবক মেডিকেল সার্ভিসেস , বাড়িঃ ১৬, রোডঃ পুরাতন ২৮, ধানমন্ডি আবাসিক এলাকা, ঢাকা। (শনি, রবি, বৃহস্পতি) মোবাইলঃ ০১৫৫২৩৪৫৭৫৪, ০১৭১৬২৮৮৮৫৫


প্রোস্টেট গ্রন্থির সমস্যা

প্রোস্টেট গ্রন্থির সমস্যা এড়াতে পুরম্নষরা সতর্ক হোন। কিছু খাবার কমিয়ে এবং কিছু খাবার বাড়িয়ে আপনি আপনার প্রোস্টেট গ্রন্থির বৃদ্ধির সমস্যা কমাতে পারেন। চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের গবেষণা থেকে এ পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।

প্রোস্টেট গ্রন্থির বৃদ্ধি হলে বেশ কিছু সমস্যা দেখা দেয়। এর মধ্যে রয়েছে ঘন ঘন প্রস্রাব করা কিংবা ঘন ঘন প্রস্রাব করার ইচ্ছা। হঠাৎ করে প্রস্রাব বন্ধ হয়ে মূত্রথলি পূর্ণ হয়ে যন্ত্রণা হতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব পুরম্নষ প্রচুর পরিমাণে মাখন, মারজারিন, মাংস এবং অন্যান্য জিংক সমৃদ্ধ খাবার খান তাদের প্রোস্টেট গ্রন্থি বড় হবার সম্ভাবনা থাকে। অন্যদিকে যেসব পুরম্নষ প্রচুর পরিমাণে ফল খান তাদের প্রোস্টেট গ্রন্থি বড় হবার সম্ভাবনা মোটামুটির চেয়েও কম থাকে। আপনার প্রোস্টেট গ্রন্থি যাতে বড় না হয় সেজন্য নিচের পরামর্শগুলো গ্রহণ করম্নন। এসব পরামর্শ মেনে চললে একই সাথে আপনি অন্যান্য স্বাস্থ্য ঝুঁকিও কমাতে পারবেন।

১। খুবই কম মাখন এবং মারজারিন গ্রহণ করম্ননঃ বেশি মাখন এবং মারজারিন খেলে আপনার বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যার ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে। এসব সমস্যার মধ্যে রয়েছে অতিশয় স্থূলতা ও হৃদরোগ। এসব সমস্যা এড়াতে আপনি চর্বি গ্রহণের মাত্রা সীমিত রাখুন। খেয়াল রাখবেন আপনার চর্বি গ্রহণের মাত্রা যেন আপনার দৈনিক ক্যালরির ২৫ শতাংশের বেশি না হয়। কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে, অন্য চর্বির বিকল্প হিসেবে অলিভ অয়েল বা জলপাই তেল আপনার হৃদরোগ এবং সম্ভাব্য ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে পারে। মাখন এবং মারজারিনের সাথে প্রোস্টেট গ্রন্থি বৃদ্ধির উচ্চ ঝুঁকি লড়্গ্য করা গেলেও অলিভ অয়েল গ্রহণে এ ধরনের ঝুঁকি লড়্গ্য করা যায়নি। সুতরাং যত কম পরিমাণ সম্ভব হয় মাখন এবং মারজারিন খাবেন। বিকল্প হিসেবে খাবেন অলিভ অয়েল বা জলপাই তেল।

২। জিংক এর দিকে লড়্গ্য রাখুনঃ বয়স ৫০-এর বেশি হলে বেশি মাংস এবং জিংক সমৃদ্ধ যে কোনো সাপিস্নমেন্ট পরিহার করম্নন। কেননা গবেষণায় দেখা গেছে, জিংক গ্রহণে প্রোস্টেট গ্রন্থি বড় হয়। যদি আপনার মাংস খেতেই হয় তাহলে দৈনিক সেটা ৩ আউন্সের মধ্যে সীমিত রাখুন।

৩। বেশি করে ফল খানঃ গবেষণায় দেখা গেছে, ফলে বিদ্যামান পুষ্টি উপাদান ক্যান্সার এবং অন্যান্য রোগের ঝুঁকি কমিয়ে দেয়। টমেটোতে বিদ্যমান লাইকোপেন প্রোস্টেট ক্যান্সারকে প্রতিহত করে। গবেষকদের পরামর্শ হলো আপনি দৈনিক কমপড়্গে চার ধরনের ফল এবং পাঁচ ধরনের সবজি খাবেন।

০ ডাজ্ঝ মিজানুর রহমান কলেস্নাল

চেম্বারঃ কমপ্যাথ লিমিটেড


অণ্ডথলি ফুলে যাওয়া
ডা. মিজানুর রহমান কল্লোল

অণ্ডথলি ফুলে যাওয়া হলো অণ্ডথলি অস্বাভাবিক বড় হওয়া। আর অণ্ডথলি হলো এমন একটা থলি যার মধ্যে অণ্ডকোষ থাকে।
যেকোনো বয়সী পুরুষের অণ্ডথলি ফুলে যেতে পারে। এর সাথে ব্যথা থাকতে পারে, আবার না-ও থাকতে পারে। এটা অণ্ডথলির এক পাশে অথবা দু’পাশেই হতে পারে। অণ্ডকোষ এবং পুরুষাঙ্গ জড়িত থাকতে পারে, অথবা না-ও থাকতে পারে।
অণ্ডথলি ফুলে যাওয়ার কারণ
আঘাত
হার্নিয়া
কনজেসটিভ হার্ট ফেইলিওর
হাইড্রোসিল
অণ্ডকোষের প্রদাহ
অণ্ডকোষে প্যাঁচ খাওয়া
ভ্যারিকোসিল বা অণ্ডথলির শিরার স্ফীতি
কিছু নির্দিষ্ট ওষুধ
যৌনাঙ্গ এলাকায় শল্য চিকিৎসা
অণ্ডকোষে প্যাঁচ খাওয়া একটি মারাত্মক জরুরি অবস্থা। এ ক্ষেত্রে অণ্ডথলির মধ্যে অণ্ডকোষ পেঁচিয়ে যায় এবং এর ফলে অণ্ডকোষে রক্ত সরবরাহ বৗঅ হয়ে যায়। যদি দ্রুত প্যাঁচ খোলা না যায় তাহলে অণ্ডকোষ স্থায়ীভাবে নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
ঘরোয়া চিকিৎসা
প্রথম ২৪ ঘণ্টা অণ্ডথলিতে বরফের সেক দিতে হবে। এরপর সিজবাথ (ঝময়্‌ দথয়ভ) নিলে ফোলা কমবে।
যদি ব্যথা তীব্র হয় তাহলে একটি তোয়ালে পাকিয়ে অণ্ডকোষের ঠিক নিচে দু’পায়ের মাঝে রাখতে হবে। এতে ব্যথা ও ফোলা দু’টোই কমবে।
দৈনন্দিন কাজ করার পর ঢিলেঢালা অ্যাথলেটিক সাপোর্টার পরা যেতে পারে। ফোলা কমে না যাওয়া পর্যন্ত অতিরিক্ত কাজকর্ম করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
কখন চিকিৎসকের শরণাপন্ন হবেন
যদি আপনার অণ্ডথলি ফুলে যায়, যদি ফোলাটা ব্যথাযুক্ত হয়, কিংবা যদি অণ্ডকোষে চাকা অনুভব করেন তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হবেন।
চিকিৎসক যা করবেন
চিকিৎসক আপনাকে শারীরিক পরীক্ষা করবেন ও রোগের ইতিহাস নেবেন। তিনি আপনাকে নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর জানতে চাইতে পারেন­
কখন ফোলা শুরু হয়?
এটা কি হঠাৎ করে হয়েছে?
অবস্থা আরো খারাপ হচ্ছে?
ফোলাটা কত বড়?
ফোলাটায় কি পানি জমেছে?
ফোলা এলাকায় আপনি কি টিস্যু অনুভব করতে পারেন?
ফোলা কি অণ্ডথলির এক দিকে, নাকি সমগ্র অণ্ডথলিতে?
দু’পাশের ফোলা কি একই ধরনের? (কখনো কখনো অণ্ডথলির ফোলা প্রকৃতপক্ষে বড় অণ্ডকোষ, অণ্ডকোষে চাকা অথবা শুক্রবাহী নালির ফুলে যাওয়ার কারণে হয়।)
আপনার যৌনাঙ্গ এলাকায় কোনো অপারেশন হয়েছে?
আপনার যৌনাঙ্গ এলাকায় কি কোনো আঘাত পেয়েছেন?
আপনার যৌনাঙ্গ এলাকায় কি সম্প্রতি কোনো সংক্রমণ হয়েছে?
আপনি বিছানায় বিশ্রাম নিলে কি ফোলা চলে যায়?
আপনার অণ্ডথলিতে কি কোনো ব্যথা আছে?
চিকিৎসক অণ্ডথলি, অণ্ডকোষ ও পুরুষাঙ্গ ভালো করে পরীক্ষা করে দেখবেন। বেশ কিছু ল্যাবরেটরি পরীক্ষার প্রয়োজন হতে পারে।
চিকিৎসক যথাযথ অ্যান্টিবায়োটিক ও ব্যথানাশক ওষুধ দিতে পারেন।
চেম্বারঃ কমপ্যাথ লিমিটেড, ১৩৬ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা। সোম, মঙ্গল, বুধবার)। যুবক মেডিকেল সার্ভিসেস , বাড়িঃ ১৬, রোডঃ পুরাতন ২৮, ধানমন্ডি আবাসিক এলাকা, ঢাকা। (শনি, রবি, বৃহস্পতি) মোবাইলঃ ০১৫৫২৩৪৫৭৫৪, ০১৭১৬২৮৮৮৫৫


পুরুষাঙ্গের দাগ চাকা ও ফুসকুড়ি
ডা. মিজানুর রহমান কল্লোল

পুরুষাঙ্গে কোনো দাগ, চাকা অথবা ফুসকুড়ি দেখা দিলে অনেক পুরুষ প্রথমেই ভেবে নেন যে এগুলো যৌনবাহিত রোগ। অধিকাংশ ক্ষেত্রে বেশিরভাগ দাগ খুব সাধারণ ও নির্দোষ। তবে দাগের আকার, আকৃতি ও রঙের ওপর নির্ভর করে সতর্কতা গ্রহণের ব্যাপারটি।
ত্বকের নিচে ছোট নডিউল
এগুলো অণ্ডথলির ওপরে এবং পুরুষাঙ্গের গোড়ায় হয়। এসব ছোট স্ফীতিতে স্বাভাবিক লোমকূপ থাকে।
লিঙ্গমুণ্ডুর চারপাশে ছোট শিশিরবিন্দুর মতো দাগ
২০ থেকে ৪০ বছর বয়সী প্রায় ১০ শতাংশ পুরুষের এটা হয়। যদি লিঙ্গমুণ্ডুর চারপাশে সত্যিই ছোট শিশিরবিন্দুর মতো কিংবা মুক্তোদানার মতো দাগ হয়ে থাকে তাহলে এগুলো সংক্রামক নয় এবং কোনো চিকিৎসারও প্রয়োজন নেই।
ছোট লাল অথবা রক্তবর্ণের মতো দাগ
এরকম দাগ পুরুষাঙ্গের মাথায়, মাঝখানে অথবা অণ্ডথলিতে দেখা দিতে পারে এবং এগুলো সাধারণত অল্পবয়স্ক পুরুষের হয়।
এসব দাগ রক্তনালির প্রসারণের ফলে হয়। এগুলো কিছুটা দৃষ্টির আড়ালে থাকতে পারে, তবে এগুলো পুরোপুরি নিরীহ ধরনের, অর্থাৎ কোনো ক্ষতি করে না। এধনের দাগ নির্মূল করার কোনো সহজ পথ নেই।
ছোট থেকে মাঝারি আকৃতির উঁচু দাগ
এসব দাগ হয় অণ্ডথলিতে। কখনো কখনো ভেতরে পুঁজ থাকে। এগুলো দেখতে স্রেফ একটা ফোঁটার মতো হয় অথবা একটা বয়েল হতে পারে।
স্পষ্ট কিনারাসহ পুরু লাল বড় দাগ
এটা চর্মরোগ সোরিয়াসিস কি না সে ব্যাপারে নিশ্চিত হতে হবে। সোরিয়াসিস বংশগত হতে পারে, তবে খুব কম ক্ষেত্রেই বিপজ্জনক। সাধারণভাবে পুরুষাঙ্গের সোরিয়াসিস স্টেরয়েড ক্রিম দিয়ে চিকিৎসা করা হয়।
গোলাপি-বাদামি অথবা ত্বকের রঙের চাকা
উপরিভাগ আর্দ্র হলে এগুলো জেনিটাল ওয়ার্টস বা যৌনাঙ্গের আঁচিল হতে পারে।
পুরুষাঙ্গ বা অণ্ডথলিতে একটিমাত্র গোল ও ব্যথাবিহীন ক্ষত
এটা প্রাথমিক সিফিলিস হতে পারে।
যৌনাঙ্গে ব্যথাবিহীন অমসৃণ ঘা
এটা পুরুষাঙ্গের ক্যান্সার হতে পারে।
একক, ব্যথাবিহীন কিন্তু দুর্গন্ধময় ঘা
এটা যৌনবাহিত রোগের উপসর্গ হতে পারে।
ছোট ছোট ফোস্কা ও যন্ত্রণাদায়ক ঘা
এগুলো হার্পিস সিমপ্লেক্সের মতোই। এটা যৌনাঙ্গে ক্ষতের সবচেয়ে সাধারণ ধরন। এটা মারাত্মক সংক্রামক এবং সাধারণত যৌনবাহিত। প্রথম দিকে জ্বর জ্বর ভাব থাকে।
লাল কিনারার ছোট ধূসর ঘা
এটা অ্যাপথাস আলসার হতে পারে। এগুলো সারিসারি হয় এবং আপনা আপনি ভালো হয়ে যায়। যা হোক, অনেকে এটাকে হার্পিস সিমপেক্সের সাথে গুলিয়ে ফেলেন। সঠিক রোগ নির্ণয়ের জন্য ল্যাবরেটরির পরীক্ষার প্রয়োজন হয়।
মাঝখানে ঢালু ছোট ফুসকুড়ি
এটা মোলস্কাম কনটাজিওসাম হতে পারে। শিশুদের ক্ষেত্রে এটা নির্দোষ এবং সাধারণ ভাইরাস-জনিত রোগ। কিন্তু বড়দের ক্ষেত্রে এটা যৌন সংসর্গের মাধ্যমে ছড়ায়।
যন্ত্রণাদায়ক লাল ফুসকুড়ি
এটা লিঙ্গমুণ্ডুর প্রদাহ বা ব্যালানাইটিস হতে পারে।
উপরের তালিকাটি সম্পূর্ণ নয়। দাগ, চাকা কিংবা ফুসকুড়ি দেখে নিজে নিজে রোগ নির্ণয় করা উচিত নয়, এতে মারাত্মক বিপদ হতে পারে। অভিজ্ঞ চিকিৎসক দ্বারা রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা করানো বুদ্ধিমানের কাজ। যৌনাঙ্গে কোনো ধরনের উপসর্গ দেখা দিলে সাথে সাথে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হবেন এবং নিরাপদ যৌনচর্চার অভ্যাস করবেন।
চেম্বারঃ কমপ্যাথ লিমিটেড, ১৩৬ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা। সোম, মঙ্গল, বুধবার)। যুবক মেডিকেল সার্ভিসেস , বাড়িঃ ১৬, রোডঃ পুরাতন ২৮, ধানমন্ডি আবাসিক এলাকা, ঢাকা। (শনি, রবি, বৃহস্পতি) মোবাইলঃ ০১৫৫২৩৪৫৭৫৪, ০১৭১৬২৮৮৮৫৫

কিছু বিশেষ যৌন রোগ

জেনিটাল ওয়ার্টস
বাংলায় এগুলোকে যৌনাঙ্গের আঁচিল বলে। আঁচিলগুলো যৌনাঙ্গের কিংবা মলদ্বারের চারপাশে হয়। দেখতে ছোট ‘ফুলকপি’র মতো। এগুলো একধরনের ভাইরাস দ্বারা ঘটে, যার নাম হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস।
যৌন সংসর্গের ১-৬ মাসে কিংবা আরো পরে শরীরে আঁচিলগুলো দেখা দেয়। চিকিৎসাক্ষেত্রে রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার করে তা পোড়ানো বা ধ্বংস করা হয়, কিংবা তরল নাইট্রোজেন ব্যবহার করে শৈল্য চিকিৎসা দেয়া, অথবা বৈদ্যুতিকভাবে পুড়িয়ে দেয়া হয়।
সাধারণভাবে এই আঁচিল এবং সিফিলিসজনিত আঁচিল যৌনাঙ্গে ঘটে।
জেনিটাল হারপিস
একই ধরনের ভাইরাস দ্বারা এটা হয়। ঠোঁট ও মুখের চারপাশে এটা ‘কোল্ডসোর’ নামে পরিচিত। যৌন সংসর্গের প্রায় ৪-৫ দিন পর যৌনাঙ্গে চুলকানিযুক্ত ফোস্কা দেখা দেয়। তারপর ফেটে গিয়ে দগদগে, অগভীর, যন্ত্রণাদায়ক ঘা তৈরি হয়। জ্বর এবং অন্যান্য উপসর্গ থাকতে পারে। দু সপ্তাহের মধ্যে কিংবা দু সপ্তাহে উপসর্গগুলো চলে যায়, তবে আবার হতে পারে।
প্রথমবার জেনিটাল হারপিসে আক্রান্ত হলে এসিক্লোভির ২০০ মিলিগ্রাম মুখে দৈনিক পাঁচ দিন খেতে হবে। এটা ভাইরাসের বৃদ্ধি হওয়াকে কমিয়ে দেয়। যাদের বারবার জেনিটাল হারপিস হয় তারা এসিক্লোভির ৪০০ মিলিগ্রাম দৈনিক দু’বার চালিয়ে যেতে পারেন।
মলুসকাম কন্টাজিওসাম
এই নিরীহ ভাইরাসটি সুইমিংপুল থেকে শরীরে প্রবেশ করে সংক্রমণ ঘটাতে পারে, তবে সাধারণত সংক্রমণ ঘটে যৌন সংসর্গের মাধ্যমে। ভাইরাসগুলো যৌনাঙ্গ এলাকায় ছোট, ব্যথাহীন গোলাপি ফুসকুড়ি তৈরি করে। এগুলো মসৃণ ও শক্ত। ফুসকুড়িগুলোর কেন্দ্র ঢালু এবং সেখানে সাদাটে পদার্থ দিয়ে পূর্ণ থাকে।
যৌন সংসর্গের তিন মাস পর ফুসকুড়িগুলো দেখা দেয় এবং মাসের পর মাস থাকে। রাসায়নিক উপাদান ব্যবহার করে চিকিৎসকরা সেগুলো অপসারণ করেন।
ক্যানডিডোসিস
ছত্রাকের সংক্রমণে ঘটে। একে মনিলিয়াসিস এবং থ্রাশও বলে। মহিলাদের ক্ষেত্রে যোনির ওষ্ঠ ফুলে যায় ও চুলকায়। যোনি পথে দইয়ের মতো নিঃসরণ বের হয়। পুরুষের লিঙ্গমুণ্ডুতে লাল ফুসকুড়ি হতে পারে। জ্বালাপোড়া অনুভূতি হয়। যোনিপথে ছত্রাকনাশক প্রেসারি কিংবা যোনির ওষ্ঠে ছত্রাকনাশক ক্রিম ব্যবহার করে চিকিৎসা করা হয়। পুরুষের লিঙ্গের সংক্রমণে ছত্রাকনাশক ক্রিম ব্যবহার করা হয়।
ট্রাইকোমোনিয়াসিস
মহিলাদের দুর্গন্ধময়, সবুজাভ, ফেনার মতো যোনির নিঃসরণ হয়, যোনি এবং যোনির ওষ্ঠে প্রদাহ হয়, যৌন মিলনকালে ব্যথা করে, প্রস্রাবের সময়ও ব্যথা হয়। অধিকাংশ সংক্রমিত পুরুষের উপসর্গ থাকে না কিন্তু রোগ ছড়াতে পারে। পরজীবীর সংক্রমণে এ রোগ হয়। চিকিৎসা ক্ষেত্রে পরজীবীনাশক ওষুধ যেমন টিনিডাজল, প্রথমে ২ গ্রাম পরে দৈনিক ১ গ্রাম ছয়দিন দিন খাওয়া যেতে পারে। যৌনসঙ্গীকেও একই সাথে খেতে হবে।
চেম্বারঃ কমপ্যাথ লিমিটেড, ১৩৬ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা। সোম, মঙ্গল, বুধবার)। যুবক মেডিকেল সার্ভিসেস , বাড়িঃ ১৬, রোডঃ পুরাতন ২৮, ধানমন্ডি আবাসিক এলাকা, ঢাকা। (শনি, রবি, বৃহস্পতি) মোবাইলঃ ০১৫৫২৩৪৫৭৫৪, ০১৭১৬২৮৮৮৫৫

ফাইমোসিস
ডা. মিজানুর রহমান কলে্নাল

ফাইমোসিস হচ্ছে এমন একটি অবস্থা যেখানে একজন খৎনাবিহীন পুরম্নষ তার পুরম্নষাঙ্গের মাথার চামড়া পেছনের দিকে সম্পূর্ণ গুটিয়ে আনতে পারে না। ফাইমোসিস শব্দটি এসেছে গ্রিক ‘ফাইমোস’ থেকে, যার অর্থ মুখবন্ধ নী। যেহেতু অধিকাংশ ছেলে শিশু অগোটানো পুরুষাঙ্গের মাথার চামড়া নিয়ে জন্মায়, তাই এ ধরনের নামকরণ কিছুটা বিভ্রান্তিôকর। কারণ এটা একই সাথে স্বাভাবিক বৃদ্ধি ও রোগাবস্থা নির্দেশ করে। এই বিভ্রান্তিô নবজাতকদের ড়্গেত্রে বেশি হয়।
এটাই স্বাভাবিক যে, শিশুর পুরম্নষাঙ্গের মাথার চামড়া পেছনের দিকে গোটানো যায় না। কিন্তু শিশু যখন বড় হতে থাকে অর্থাৎ কৈশোরে পুরম্নষাঙ্গের এই চামড়া পেছনের দিকে গোটানো যায়। তবে অনেকের যায় না। এটাকেই ফাইমোসিস বলে।
জন্মগত বা শৈশবের ফাইমোসিস
বিংশ শতাব্দীতে অধিকাংশ চিকিৎসক স্বীকার করেছেন যে, বেশিরভাগ ছেলে শিশুর পুরম্নষাঙ্গের মাথার চামড়া পুরম্নষাঙ্গের মাথার এপিথেলিয়ামের সাথে লাগানো থাকে এবং সহজে তা পেছনের দিকে গোটানো যায় না। এ ব্যাপারে চার ধরনের চিকিৎসা সম্পর্কিত তথ্য পাওয়া যায়ঃ
এক. বিশ শতকের প্রথমভাগে কিছু চিকিৎসক পুরম্নষাঙ্গের মাথা থেকে চামড়া ছাড়ানোর জন্য বারবার পুরম্নষাঙ্গের মাথার চামড়া পেছনের দিকে টানার পরামর্শ দিতেন। প্রয়োজনে জোরে টানার কথা বলতেন।
ধারণা করা হতো, এতে করে ছেলেরা তাদের পুরম্নষাঙ্গের মাথা ও চামড়া ধৌত করতে পারবে এবং এর ফলে পরবর্তীকালে ফাইমোসিস ও প্রস্রাবের সমস্যা প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে। এই চিকিৎসা পদ্ধতি পরবর্তীকালে অনেক চিকিৎসক অনুমোদন করেননি।
দু্‌ই. বিশ শতকের মধ্যভাগে কিছু চিকিৎসক ফাইমোসিস এড়াতে নবজাতক শিশুদের নিয়মিতভাবে খৎনা করানোর পরামর্শ দেন। যদিও খৎনা ফাইমোসিসকে প্রতিরোধ করে এবং গবেষণায়ও সেটা প্রমাণিত হয়েছে, তবু কিছু কিছু শিশু বিশেষজ্ঞ এত ছোট বেলায় খৎনা করানোর ব্যাপারে আপত্তি করেন।
তিন. গত তিন দশকে আমেরিকার কিছু চিকিৎসক ফাইমোসিস রোধ করতে সাবান-পানি দিয়ে পুরম্নষাঙ্গের চামড়া পেছন দিকে টানতে বলেন, প্রয়োজনে জোর খাটাতেও বলেন। কিন্তু বিশ্বব্যাপী চিকিৎসকরা এ প্রক্রিয়াকে উৎসাহিত করেন না, কারণ এতে পুরুষাঙ্গের মাথায় প্রদাহ হতে পারে, যার কারণে পরবর্তীকালে আবার ফাইমোসিস হতে পারে।
চার. ফাইমোসিসের ড়্গেত্রে একমাত্র খৎনাকেই যুক্তিগ্রাহ্য চিকিৎসা হিসেবে গণ্য করা হয়। বিশ্বব্যাপী ফাইমোসিসের চিকিৎসা হিসেবে খৎনা স্বীকৃত চিকিৎসা পদ্ধতি। একজন পেড্রিয়াট্রিক ইউরোলজিস্ট অথবা জেনারেল সার্জনকে দিয়ে আপনার ছেলে শিশুর খৎনা করাবেন। অধিকাংশ শৈশবের ফাইমোসিস একেবারে শরীরবৃত্তীয়। তবে ফাইমোসিসের কারণে প্রস্রাবে প্রতিবন্ধ কতা অথবা ব্যথা হতে পারে। আবার বিভিন্ন কারণে ফাইমোসিস হতে পারে। কিছু কিছু ড়্গেত্রে ক্যালানাইটিস বা পুরম্নষাঙ্গের মাথার প্রদাহ থেকে ফাইমোসিস হতে পারে। পুরম্নষাঙ্গের মাথার চামড়া সরম্ন হলে ফাইমোসিস হয়। এ ড়্গেত্রে চামড়া পেছনের দিকে গোটানো অসম্ভব হয়ে পড়ে। কিছু কিছু ড়্গেত্রে ফাইমোসিসের কারণ স্পষ্ট নয়। এটা কি কোনা রোগের কারণে হয়েছে, নাকি শরীরবৃত্তীয় কারণে হয়েছে তা পৃথক করা কঠিন হয়ে পড়ে। অনেক সময় শিশুদের প্রস্রাব করার সময় খুব কষ্ট হয়, আবার অনেক সময় চামড়া বেলুনের মতো ফুলে ওঠে। শৈশবের ফাইমোসিসের চিকিৎসা পদ্ধতি বিভিন্ন ধরনের। অধিকাংশ শরীরবৃত্তীয় ফাইমোসিসের চিকিৎসার প্রয়োজন হয় না। সময়ের সাথে এটা ঠিক হয়ে যায়, অথবা পুরম্নষাঙ্গের চামড়া পেছনে টান দিলে ঠিক হয়ে যায়। কিছু কিছু ড়্গেত্রে স্টেরয়েড মলম মাখালে ঠিক হয়। কিন্তু এর স্থায়ী সমাধান হলো খৎনা করানো। একমাত্র খৎনাই ফাইমোসিসের কার্যকর চিকিৎসা। এ ড়্গেত্রে পুরম্নষাঙ্গের মাথার চামড়া কেটে ফেলা হয়।
অর্জিত ফাইমোসিসঃ বয়স্ক ছেলে শিশুদের এবং প্রাপ্তবয়স্ক পুরম্নষদের ফাইমোসিস ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে। কিছু পুরম্নষ তাদের পুরম্নষাঙ্গের মাথার চামড়া কিছুটা পেছনে গুটিয়ে আনতে পারেন, একে আংশিক বা রিলেটিভ ফাইমোসিস বলে। যদি পুরম্নষাঙ্গের মাথার চামড়া পেছনে গুটিয়ে আনতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হতে হয়, এমনকি পুরম্নষাঙ্গের নরম অবস্থায়ও, তাকে বলে পরিপূর্ণ বা ফুল ফাইমোসিস। গবেষণায় দেখা গেছে যেসব পুরম্নষের খৎনা করানো হয়নি, তাদের এ ধরনের ফাইমোসিস হয়। যদি কোনো খৎনা না করানোর পুরম্নষের ফাইমোসিস হয়, তাহলে অন্য কোনো সমস্যা রয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখতে হবে। অধিকাংশ ড়্গেত্রে এটা পুরুষের বিভিন্ন সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। অর্জিত ফাইমোসিসের একটি গুরম্নত্বপূর্ণ কারণ হচ্ছে ‘ক্রনিক ব্যালানাইটিস জেরোটিকা অবলিটারেন্স (বিএক্সও)’। এটা হচ্ছে ত্বকের একটি অবস্থা, যেখানে পুরম্নষাঙ্গের মাথার চামড়ার কাছে পুরম্নষাঙ্গের মাথায় দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহ হয়। এর ফলে চামড়া পেছনে গুটিয়ে আনা যায় না। এ ড়্গেত্রে খৎনা করানোর উপদেশ দেয়া হয়। অন্য কারণেও ফাইমোসিস হতে পারে, যেমন­ ষ দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহ (যেমন­ ব্যালানোপসথাইটিস) ষ বারবার ক্যাথেটার পরানো ষ জোর করে পুরম্নষাঙ্গের মাথার চামড়া পেছনে গোটানো।
কখনো কখনো ডায়াবেটিসের কারণেও ফাইমোসিস হতে পারে? কিছু কিছু ডায়াবেটিসে প্রস্রাবে উচ্চমাত্রার চিনির উপস্থিতির কারণে পুরম্নষাঙ্গের মাথার চামড়ার নিচে ব্যাকটেরিয়ার বংশবৃদ্ধি ঘটে।
অর্জিত ফাইমোসিসের জটিলতাঃ ষ প্রস্রাব করার সময় অস্বস্তিô বা ব্যথা করা। ষ যৌন মিলনের সময় অস্বস্তিô বা ব্যথা করা। ষ প্রস্রাবের ধারা বাধাগ্রস্তô হওয়া। ষ ফোঁটায় ফোঁটায় প্রস্রাব হওয়া ও ভিজে যাওয়া। ষ কখনো কখনো প্রস্রাব আটকে যেতে পারে। ষ ফাইমোসিসের কারণে পুরম্নষাঙ্গে ক্যান্সার হতে পারে।
ফাইমোসিসের চিকিৎসাঃ নবজাতকের ফাইমোসিস সর্বদা শরীরবৃত্তীয় কারণে হয়। চিকিৎসা তখনই প্রয়োজন হয়, যখন এটা প্রস্রাবে অস্বস্তিô কিংবা প্রতিবন্ধ কতা সৃষ্টি করে। বয়স্ক শিশু ও প্রাপ্তবয়স্কদের ফাইমোসিস হলে সচরাচর অপারেশনের প্রয়োজন হয়। এ ড়্গেত্রে খৎনা হচ্ছে একটি কার্যকর চিকিৎসা পদ্ধতি।
চেম্বারঃ কমপ্যাথ লিমিটেড, ১৩৬ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা (সোম, মঙ্গল, বুধবার)। যুবক মেডিকেল সার্ভিসেস , বাড়িঃ ১৬, রোডঃ পুরাতন ২৮, ধানমন্ডি আবাসিক এলাকা, ঢাকা (শনি, রবি, বৃহস্পতি)। মোবাইলঃ ০১৫৫২৩৪৫৭৫৪, ০১৭১৬২৮৮৮৫৫


রেট্রোগ্রেড ইজাকুলেশন
ডা. মিজানুর রহমান কল্নোল

পুরুষের যখন বীর্যপাত ঘটে স্বাভাবিকভাবে সেটা মূত্রনালী দিয়ে বাইরে বেরিয়ে আসে; কিন্তু সেটা না হয়ে বীর্য যদি পেছনের দিক দিয়ে মূত্রথলিতে চলে যায় তাহলে তাকে রেট্রোগ্রেড ইজাকুলেশন বলে।
যেভাবে ঘটে
স্বাভাবিকভাবে মূত্রথলির স্ফিংটার সঙ্কুচিত হয় এবং শুক্রাণু মূত্রনালীতে ধাবিত হয়। রেট্রোগ্রেড ইজাকুলেশনের ড়্গেত্রে এই স্ফিংটার ঠিকমতো কাজ করে না।
কারণ
এ ধরনের বীর্যপাতের কারণ অটোনমিক স্নায়ুতন্ত্র কিংবা প্রোস্টেট অপারেশনের জন্য হতে পারে। টিইউআরপি (ট্রান্স ইউরেথ্রাল রিসেকশন অব প্রোস্টেট)-এর একটি সাধারণ জটিলতা হচ্ছে রেট্রোগ্রেড ইজাকুলেশন।
কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণেও রেট্রোগ্রেড ইজাকুলেশন হয়। এসব ওষুধের মধ্যে সবচেয়ে সাধারণ ওষুধটি হচ্ছে ট্যামসুলোসিন (ঞথশঢ়ৎলসঢ়মষ)। এই ওষুধটি বিভিন্ন কারণে মূত্রপথের মাংসপেশিগুলোকে শিথিল করতে ব্যবহার করা হয়। এসব ওষুধ মূত্রথলির স্ফিংটারকে শিথিল করতে পারে এবং এ কারণে স্ফিংটার পুরোপুরি সঙ্কুচিত হতে ব্যর্থ হয়।
অ্যান্টি ডিপ্রেস্ট্যান্ট এবং অ্যান্টিসাইকোটিক ওষুধগুলোও এ ধরনের সমস্যা তৈরি করে থাকে।
যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে তাদের জটিলতা হিসেবে রেট্রোগ্রেড ইজাকুলেশন হতে পারে। ডায়াবেটিসের রোগীরা যদি দীর্ঘ দিন ধরে রক্তের চিনি নিয়ন্ত্রণ না করেন তাহলে এ সমস্যাটি দেখা দেয়। মূত্রথলির স্ফিংটারের স্নায়ু সমস্যার কারণে এটা হয়।
রোগ নির্ণয়
সাধারণত বীর্যস্খলনের পরপরই প্রস্রাব পরীড়্গা করে রোগ নির্ণয় করা যেতে পারে। এ ড়্গেত্রে প্রস্রাবে বীর্য পাওয়া যাবে।
কার্যকর চিকিৎসা
রেট্রোগ্রেড ইজাকুলেশনের কারণে বন্ধ্যাত্ব ঘটতে পারে অর্থাৎ ওই পুরম্নষের স্ত্রী সন্তôান উৎপাদন থেকে বঞ্চিত হন। এ ড়্গেত্রে পুরম্নষের শুক্রাণু মহিলার যোনিতে পৌঁছতে পারে না। তাই গর্ভসঞ্চার করার জন্য পুরম্নষটির প্রস্রাব সেনট্রিফিউজড করা হয় এবং শুক্রাণু আলাদা করে তা মহিলার মধ্যে প্রবেশ করানো হয়।
রেট্রোগ্রেড ইজাকুলেশনের ৪০ শতাংশ পুরম্নষের ড়্গেত্রে দেখা গেছে, সিউডোইফিড্রিন ব্যবহারে বীর্যস্খলনের গুণগত উন্নতি হয়েছে। তবে মনে রাখতে হবে, এই ওষুধের সাথে পুরম্নষাঙ্গ শিথিল হওয়ার সম্পর্ক রয়েছে। যাদের সর্বড়্গণ পুরম্নষাঙ্গ শক্ত হয়ে থাকে তাদের চিকিৎসার জন্য সিউডোইফিড্রিন ব্যবহার করা হয়। যেসব পুরম্নষের পুরম্নষাঙ্গ ঠিকমতো উত্থিত হয় না এবং যেসব পুরম্নষের রেট্রোগ্রেড ইজাকুলেশন হয় তাদের অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। এ ড়্গেত্রে একসাথে দু’টো ওষুধ দেয়া হয়। যেমন­ সিউডোইফিড্রিন এবং সিলডানাফিল।
চেম্বারঃ কমপ্যাথ লিমিটেড, ১৩৬ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা (সোম, মঙ্গল, বুধবার)। যুবক মেডিকেল সার্ভিসেস , বাড়িঃ ১৬, রোডঃ পুরাতন ২৮, ধানমন্ডি আবাসিক এলাকা, ঢাকা (শনি, রবি, বৃহস্পতি)। মোবাইলঃ ০১৫৫২৩৪৫৭৫৪, ০১৭১৬২৮৮৮৫৫

প্রস্টেট গ্রন্থির সমস্যা
প্রস্টেট পুরম্নষদের ইন্টারনাল অর্গানের মধ্যে একটি গুরম্নত্বপূর্ণ অঙ্গ। এটা না থাকলে মানুষের জীবন শুধু ঝুঁকিপূর্ণ হয় তাই নয়, পুরম্নষের সুখময় দাম্পত্য জীবনে প্রোষ্টেট-এর রয়েছে এক অনবদ্য ভূমিকা। এই প্রস্টেট- এর নানা সমস্যা, নানা রোগ রয়েছে। বিশেষকরে চলিস্নশোর্ধ পুরম্নষের বছরে অন্তôতঃ একবার অন্যান্য স্বাস্থ্য পরীড়্গার পাশাপাশি প্রস্টেট-পরীড়্গা করানো উচিত। প্রস্টেট গ্রন্থি বেড়ে গিয়ে ক্যান্সার পর্যন্তô হতে পারে। প্রস্টেটের সমস্যাকে হালকা করে দেখা উচিৎ নয়। প্রস্টেট গ্রন্থির যত্ন নিন, সুস্থ থাকুন। প্রস্টেট নিয়ে আমাদের এই ধারাবাহিক রচনার প্রয়াস। প্রস্টেট গ্রন্থি নিয়ে আপনাদের সমস্যার কথা লিখুন।

প্রস্টেট গ্রন্থি পুরম্নষের মূত্রথলির সামান্য নীচে অবস্থিত এক টুকরো মাংশপিন্ড যার মধ্যে দিয়ে মূত্র নালী গিয়েছে। এই গ্রন্থিটি বয়স বাড়ার সাথে সাথে বেড়ে যায়। এই বৃদ্ধি কারও কারও ড়্গেত্রে অসুবিধা সৃস্টি করে এবং কারও কারও ড়্গেত্রে কোন অসুবিধা সৃস্টি করে না বা সামান্য অসুবিধা সৃস্টি করে।

প্রস্টেট জনিত সমস্যা গুলোর মধ্যে রয়েছে ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া বিশেষত রাত্রে। চিকন নালীতে প্রস্রাব হওয়া, বেগ পেলে প্রস্রাব ধরে রাখতে কষ্ট হওয়া, প্রস্রবের শেষে কিছু প্রস্রাব থলিতে রয়ে গেছে মনে হওয়া, প্রস্রাবের শেষে অনেকড়্গণ ধরে ফোঁটায় ফোঁটায় প্রস্রাব ঝরতে থাকা এবং এক পর্যায়ে প্রস্রাব আটকে যাওয়।

এই সব উপসর্গ থাকলে পরীড়্গা-নিরীড়্গার মাধ্যমে রোগ নিশ্চিত করতে হয়। সাধারণত যে সব পরীড়্গা করা হয় তা হলো প্রস্রাবের রম্নটিন, মাইক্রোসকপিক ও কালচার সেনটিভিটি পরীড়্গা, আল্ট্রাসোনোগ্রাম, কে, ইউ বি এরে-ইউরোফ্লোমেট্রি, সিরাম পিজ্ঝএসজ্ঝএ সিসটোমেট্রাগ্রাম বা ইরোডাইনামিক ষ্ট্যাডি ইত্যাদি।

প্রস্টেটের গ্রন্থির সমস্যার ড়্গেত্রে দুই ধরনের চিকিৎসা পদ্ধতি প্রয়োগ করা যায়। একটি হলো ঔষধ প্রয়োগের মাধ্যমে এবং অন্যটি হলো অপারেশন করে। অপারেশন আবার দুই প্রকার একটি প্রস্রাবের রাচ্চা দিয়ে যন্ত্রের সাহায্যে অন্যটি পেট কেটে। কোন রোগী কোন পদ্ধতির জন্য উপযুক্ত তা চিকিৎসক নির্ধারণ করবেন।

প্রস্টেটের ঔষধে চিকিৎসাঃ ড়্গেত্রে বিশেষে প্রস্টেট বৃদ্ধিজনিত উপসর্গসমূহ ঔষধ প্রয়োগের মাধ্যমে উপশম লাভ করা যায়। সাদারণত দুই গ্রম্নপের ঔষধ প্রয়োগ করা যায়। এর এক গ্রম্নপ ঔষধ প্রস্টেটের মাংশপেশীসমূহ শিথিল করে প্রস্রাবের বাধা দূর করে। এদেরকে বলা হয় আলফা বস্নকার। অন্য গ্রম্নপ হল প্রস্টেটের আকার ছোট করে। এই গ্রম্নপটি হরমোন মেনুপুলেশনের মাধ্যমে কাজ করে। এই গ্রম্নপের ঔষধ যদিও নিরাপদ তবুও কিছু ড়্গেত্রে পুরম্নষত্ব হানী করে। অন্য দিকে আলফা বস্নকারের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে বীর্য পাত পিছনের দিকে মূত্র থলিতে হতে পারে।

শল্য চিকিৎসাঃ আধুনিক পদ্ধতিতে পেট না কেটে প্রস্রাবের রাচ্চা দিয়ে যন্ত্রের সাহায্যে অপারেশন করা যায়, একে বলে ঞটজচ। এই পদ্ধতিটি বাংলাদেশের ইউরোলজিস্টরা সফলতার সাথে বিগত কয়েক দশক ধরে প্রয়োগ করে আসছেন। এই পদ্ধতিতে যন্ত্রের সাহায্যে সরাসরি প্রস্টেট এবং ইউরিনারি বস্নাডারের ভিতরের অংশ দেখা যায়। এর পর হাইফ্রিকোয়েন্সি কারেন্টের সাহায্যে প্রস্টেটকে চিপস আকারে কেটে বের কের আনা হয়। দীর্ঘদিন প্রস্টেট রোগে ভূগলে মূত্রথলির ভিতর পরিবর্তন আসে। মূত্র ত্যাগের পর অধিক পরিমাণ প্রস্রাব থলিতে জমা থাকলে মূত্র থলির সংকোচন ড়্গমতা কমে যেতে পারে বা কিডনীর কার্যড়্গমতা কমে যেতে পারে এমনকি কিডনী নষ্ট হয়ে যেতে পারে। সুতারাং এ ধরণের অসুখ নিয়ে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া প্রয়োজন। সফল অস্ত্রপচারের ১০দিনের মধ্যে রোগী স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে পারে। ২-৬ সপ্তাহ ভারী ওজন তোলা, স্ত্রীর সাথে মেলা মেশা করা এবং ড্রাইভিং থেকে বিরত থাকা প্রয়োজন। সচরাচর যে সকল প্রশ্ন রোগীরা করে থাকেনঃ ১) পঞ্চাশ উর্দ্ধে প্রায় সকল পুরম্নষের প্রস্টেট বড় হতে থাকে কিন্তু সকলের উপসর্গ দেখা দেয় না কেন?

বয়স বাড়ার সাথে সাথে প্রস্টেট বাড়তে থাকে। এই বৃদ্ধির হার ৫০ বসরের উপরে বেশি তবে কিছুড়্গেত্রে প্রস্টেট না বেড়ে ছোট হয়ে যেয়েও সমস্যা সৃস্টি করে যাকে বলা ফাইব্রাস প্রস্টেট। প্রস্টেট রোগের লড়্গণ নির্ভর করে প্রস্টেট গস্নান্ড মূত্র প্রবাহের উপর কতটুকু বাধা সৃষ্টি করেছে তার উপর বা এটা মূত্রথলির ভিতর কতটুকু বৃদ্ধি পেয়েছে তার উপর। উসর্গগুলো সরাসরি প্রষ্টেট গ্রন্থির আকারেরর উপর নির্ভর করে না। ২) কাদের ড়্গেত্রে ঔষধ প্রয়োগ করা এবং কাদের ড়্গেত্রে অপারেশন করা হয় যে সব পুরম্নষ মানুষের প্রস্টেট জনিত রয়েছে কিন্তু তা মারাত্মক নয় কিংবা অপারেশন করতে চান না অথবা অপারেশনের জন্য উপযুক্ত নন তাদের ড়্গেত্রে ঔষধ প্রয়োগ করা হয় যাদের প্রস্রাব বন্ধ হয়ে যায় বা উপযুক্ত চিকিৎসা পদ্ধতি প্রয়োগ করেও প্রস্রাব করতে পারছেন না, যাদের প্রস্রাবের থলিতে অধিক পরিমাণ প্রস্রাব মুত্র ত্যাগের পরও থেকে যায় বা প্রস্রাবের ধারা অত্যান্তô কম, যে সব ড়্গেত্রে ঔষধ প্রয়োগে সুফল পাওয়া যাচ্ছে না, যাদের প্রস্টেটের সাথে অন্য জটিলতা রয়েছে তাদের ড়্গেত্রে অপারেশন করা হয়। (৩) ঞজটচ অপারেশনে কি কি অসুবিধা দিতে পারে-

সফল অপারেশন হলে প্রথম দু’ সপ্তাহ প্রস্রাবে জ্বালা যন্ত্রণা করতে পারে’ বা ফোঁটায় ফোঁটায় প্রস্রাব ঝরতে পারে। কারও কারও ড়্গেত্রে প্রথম ২-৩ সপ্তাহ মাঝে মাঝে প্রস্রাবের সাথে দু’এক ফোটা রক্ত ঝরতে পারে। (৪) ঞজটচ অপারেশন কি খুবই বেদনা দায়ক। অপারেশনের পর সাধারণ ব্যাখ্যা অনুভূত হয় না তবে ক্যাথেটার থাকার জন্য অস্বস্থি হতে পারে। ৫) ঞজটচ অপারেশনের ক’দিনের মধ্যে স্বাভাববিক জীবনে ফিরে আসা যায়। ক্যাথেটার খুলে ফেলার পর স্বাভাবিক প্রস্রাব করা যায়। তবে কিছু ড়্গেত্রে সাধারণত বড় প্রস্টেট হলে কয়েক দিন প্রস্রাব ঝরতে পারে যা পরবর্তিতে ঠিক হয়ে যায়।

যদিও বাইরের দিকে কোন কাটা ছোটা হয় না তবুও মনে রাখতে হবে প্রস্রাবের রাচ্চার ভিতর দিয়ে প্রস্টেট কাটা হয় তাই ভিতরটা কিছু দিন কাঁচা থাকে এবং শুকাবার জন্য কয়েক সপ্তাহ প্রয়োজন। এ সময় ভারি জিনিস উঠানো পায়খানায কোথ দেয়া, স্ত্রীর সাথে মেলা মেশা না করা বাঞ্চনীয়।

ডাঃ মুহাম্মদ হোসেন

সহকারী অধ্যাপক, ইউরোলজিষ্ট

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়

চেম্বারঃ ঢাকা রেনাল হাসপাতাল,

৫ গ্রীন কর্ণার, গ্রীন রোড, ঢাকা, ০৪৪৭৪৬৫০২৯০।

প্রোস্টেটঃ সাম্প্রতিক তথ্য
ডা. মিজানুর রহমান কল্লোল

প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষদের প্রোস্টেট দেখতে বড় আখরোটের মতো। ওজন প্রায় ২০ গ্রাম। যদি ওটাকে অণুবীক্ষণ যন্ত্রের নিচে নিয়ে দেখা হয়, তাহলে দেখা যাবে ওটা একটা মাংসপেশি, গ্রন্থি ও কানেকটিভ টিস্যুর স্তূপ। প্রোস্টেটের বাইরের আবরণটি মূলত পুরু মাংসপেশি দিয়ে আবৃত­ ওটাকে বলে প্রোস্টেটিক ক্যাপসুল। এ ধরনের নামকরণের কারণ­ প্রোস্টেটকে চার পাশ থেকে ক্যাপসুলের মতো ঘিরে রাখে ওটা। যদিও প্রোস্টেটে সে রকম পৃথকীকরণ চিহ্ন নেই, তবু চিকিৎসকরা প্রোস্টেটকে বর্ণনা করার জন্য কয়েকটি লোব বা অঞ্চলে ভাগ করেছেন। এর কেন্দ্রীয় বা মধ্যাঞ্চলে বেষ্টিত থাকে মূত্রনালী। সাধারণত পাঁচটি লোবে বিভক্ত করা হয়েছে প্রোস্টেটকে। সামনে, পেছনে, মাঝখানে ও দুই পাশে দু’টি। চিকিৎসক যখন প্রোস্টেটের রোগ নির্ণয়ের জন্য পরীক্ষা করে থাকেন, তখন বস্তুত এই লোব বা অঞ্চলগুলোই দেখে থাকেন।
রসুন প্রোস্টেট ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে
রসুন, পেঁয়াজ এবং এজাতীয় সবজি প্রোস্টেট ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে। জার্নাল অব দ্য ন্যাশনাল ক্যান্সার ইনস্টিটিউটের সাম্প্রতিক এক সংখ্যায় এই তথ্য ছাপা হয়েছে। চীনে প্রোস্টেট ক্যান্সারে আক্রান্ত ২৩৮ এবং সুস্থ ৪৭১ জন পুরুষের ওপর পরিচালিত তুলনামূলক এই গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব পুরুষ পেঁয়াজ গোত্রীয় সবজি দৈনিক ১০ গ্রামেরও বেশি খেয়ে থাকেন তাদের প্রোস্টেট ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি, যারা দৈনিক ২.২ গ্রামের কম খেয়ে থাকেন তাদের তুলনায় প্রায় ৫০ ভাগ কম। তিন কোয়া বসুন অথবা এক টেবিল চামচ পরিমাণ কাঁচা পেঁয়াজ থেকেই এলিয়াম জাতীয় এই সবজির ১০ গ্রাম পাওয়া সম্ভব। তবে রান্না করা রসুন কিংবা পেঁয়াজে ক্যান্সার প্রতিরোধক এই গুণাগুণ পুরোপুরি বজায় থাকবে কি না সে বিষয়ে এই গবেষণায় কিছু বলা হয়নি। ইতঃপূর্বে রসুন সম্পর্কিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, রসুন ইনফেকশন প্রতিরোধ, কোলেস্টেরল হ্রাস এবং সম্ভবত ক্যান্সার কোষের বিস্তারের গতি ্লথ করে দেয়। শুধু প্রোস্টেট ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তাই নয়, সাম্প্রতিককালের আরেক গবেষণায় দেখা গেছে, হার্ট অ্যাটাক কিংবা হার্টের কোনো অপারেশনের পর রসুন হৃৎপিণ্ডের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করে। তবে রসুনের এই গুণাগুণ পেতে আপাতত গার্লিক ক্যাপসুলের চেয়ে তাজা রসুনকেই বেশি কার্যকর বলে মনে করছেন গবেষকরা।
প্রোস্টেট ব্যথা কমানোর খাদ্য
প্রোস্টেট গ্লান্ড শুধু পুরুষদের আছে। বৃদ্ধ বয়সে প্রোস্টেটের বৃদ্ধি হওয়া খুবই সাধারণ সমস্যা। বেশিরভাগ পুরুষেরই এ সমস্যা দেখা যায়। প্রোস্টেটের বৃদ্ধি ছাড়াও বিভিন্ন কারণে এতে ব্যথা হতে পারে। এই ব্যথা কমানোর জন্য তাই ওষুধ থেকে শুরু করে শল্যচিকিৎসারও দ্বারস্থ হতে হয়। ক্যালিফোর্নিয়ার হারবার ইউসিএলএ মেডিক্যাল সেন্টারের গবেষকরা এই ব্যথা কমানোর জন্য ‘কুরসেটিন’ নামক অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ব্যবহার করার জন্য উৎসাহিত করেন। গবেষকরা ১৫ জন পুরুষের একটি দলের দুই- তৃতীয়াংশকে দৈনিক দুইবার ৫০০ মিলিগ্রাম করে কুরসেটিন সেবন করান এবং বাকিদের প্লেসিবো দেন। ফলে এক মাস পর দেখা যায়, কুরসেটিন সেবনকারীরা ২৫ ভাগ এবং প্লেসিবো সেবনকারীরা ২০ ভাগ ব্যথা কমাতে সক্ষম হয়েছেন। গবেষকরা অবশ্য এখনো কুরসেটিনের সম্পূরক গ্রহণের ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করছেন। তবে প্রাকৃতিক উৎসগুলো হচ্ছে আপেল, পেঁয়াজ, রসুন, ক্রসিফেরি গোত্রের সবজি, কালো চা ও পার্পল রঙের আঙুরের রস।
প্রোস্টেটের ওষুধ সেবনকারীদের চোখের লেন্সে ছানি পড়া অপারেশনে সতর্কতা
প্রোস্টেট শুধু পুরুষদের একটি গ্রন্থি। বৃদ্ধ পুরুষদের একটি পরিচিত রোগ হচ্ছে প্রোস্টেট বড় হয়ে যাওয়া। বৃদ্ধদের আরেকটি পরিচিত রোগ হচ্ছে চোখের লেন্সে ছানি পড়া বা ক্যাটারেক্ট। সাম্প্রতিক গবেষণায় বেরিয়ে এসেছে যে, প্রোস্টেটের ওষুধ সেবনকারীদের ক্যাটারেক্ট সার্জারি করার ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই আগেই সার্জনকে জানাতে হবে রোগী প্রোস্টেটের ওষুধ খাচ্ছেন কি না। সাধারণত প্রোস্টেটের জন্য আলফা ব্লকার গ্রহণ করা হয়। এটি চোখের আইরিশের পেশিকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। ক্যাটারেক্ট সার্জারি করার সময় আইরিশকে উত্তেজিত করতে হয়, যাতে পিউপিলের আকার বড় হয়­ যা সার্জারির জন্য অত্যাবশ্যকীয়। তাই অনাকাঙ্ক্ষিত নড়াচড়া আইরিশ ও চোখের অন্যান্য অংশের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। সেজন্য সার্জনদের উচিত সরু হুক ব্যবহার করা অথবা শক্তিশালী ডাইলেটিং এজেন্ট ব্যবহার করা, যা ইন্ট্রা অপারেটিভ ফ্লপি আইরিশ সিন্ড্রোমকে প্রতিহত করবে। সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা যায়, উপরিউক্ত পরিবর্তিত পদ্ধতিতে অপারেশন করলে তেমন কোনো সমস্যা দেখা দেয় না। ফলে প্রোস্টেট ওষুধ সেবনকারীদের ওষুধ সেবন বন্ধ করার প্রয়োজন নেই।
ডালিম প্রোস্টেট ক্যান্সারের জন্য ভালো
ডালিমের অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ও ইনফ্লামেটরি বৈশিষ্ট্যের কারণে এটি প্রোস্টেট ক্যান্সারকে কমাতে পারে। উইসকনসিন ইউনিভার্সিটির গবেষকরা মানুষের প্রোস্টেট ক্যান্সারের কোষ ইঁদুরে স্থাপন করে এটিকে ডালিমের রস খাওয়ান। এতে দেখা যায়, এটি টিউমারের বৃদ্ধিকে যথেষ্ট পরিমাণ বাধা দেয় এবং ‘প্রোস্টেট স্পেসিফিক এন্টিজেন’ অনেকাংশে হ্রাস পেয়েছে। অর্থাৎ প্রোস্টেট ক্যান্সার অনেকাংশে বাধার সম্মুখীন হয়েছে।
অপর একটি গবেষণায় দেখা যায়, ডালিম হৃদরোগের জন্যও ভালো। সাউসালিটোয় অবস্থিত ননপ্রফিট প্রিভেনটিভ মেডিসিন রিসার্চ ইনস্টিটিউটের গবেষকরা ৪৫ জন হৃদরোগীর কাউকে ২৫০ মিলি ডালিমের রস অথবা প্লেসিবো দৈনিক সেবন করতে দেন। তিন মাস পর দেখা যায়, ডালিমের রস সেবনকারীদের হৃৎপিণ্ডের রক্ত প্রবাহ ১৭ ভাগ বেড়েছে। অপর দিকে প্লেসিবো সেবনকারীদের ১৮ ভাগ রক্তপ্রবাহ কমেছে। গবেষকদের মতে, ডালিমের রস ধমনীতে চর্বি জমা হতে বাধা দেয়।
চেম্বারঃ কমপ্যাথ লিমিটেড, ১৩৬ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা (সোম, মঙ্গল, বুধবার)। যুবক মেডিকেল সার্ভিসেস , বাড়িঃ ১৬, রোডঃ পুরাতন ২৮, ধানমন্ডি আবাসিক এলাকা, ঢাকা (শনি, রবি, বৃহস্পতি)। মোবাইলঃ ০১৫৫২৩৪৫৭৫৪, ০১৭১৬২৮৮৮৫৫

প্রোস্টেট রড়্গায় খাদ্য
ডা. মিজানুর রহমান কলে্নাল

প্রোস্টেট গ্রন্থির সমস্যা এড়াতে পুরম্নষরা সতর্ক হোন। কিছু খাবার কমিয়ে এবং কিছু খাবার বাড়িয়ে আপনি আপনার প্রোস্টেট গ্রন্থি বৃদ্ধির সমস্যা কমাতে পারেন। চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের গবেষণা থেকে এ পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
প্রোস্টেট গ্রন্থি বৃদ্ধি হলে বেশ কিছু সমস্যা দেখা দেয়। এর মধ্যে রয়েছে ঘন ঘন প্রস্রাব করা, কিংবা ঘন ঘন প্রস্রাব করার ইচ্ছা। হঠাৎ করে প্রস্রাব বন্ধ হয়ে মূত্রথলি পূর্ণ হয়ে যন্ত্রণা হতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব পুরম্নষ প্রচুর পরিমাণ মাখন, মারজারিন, গোশত এবং অন্যান্য জিঙ্কসমৃদ্ধ খাবার খান তাদের প্রোস্টেট গ্রন্থি বড় হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। অন্য দিকে যেসব পুরম্নষ প্রচুর পরিমাণে ফল খান তাদের প্রোস্টেট গ্রন্থি বড় হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে।
আপনার প্রোস্টেট গ্রন্থি যাতে বড় না হয় সেজন্য নিচের পরামর্শগুলো গ্রহণ করম্নন। এসব পরামর্শ মেনে চললে একই সাথে আপনি অন্যান্য স্বাস্থ্য ঝুঁকিও কমাতে পারবেন।
খুব কম মাখন ও মারজারিন গ্রহণ করম্নন বেশি মাখন ও মারজারিন খেলে আপনার বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যার ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে। এসব সমস্যার মধ্যে রয়েছে অতি স্থূলতা ও হৃদরোগ। এসব সমস্যা এড়াতে আপনি চর্বি গ্রহণের মাত্রা সীমিত রাখুন। খেয়াল রাখবেন, আপনার চর্বি গ্রহণের মাত্রা যেন আপনার দৈনিক ক্যালরির ২৫ শতাংশের বেশি না হয়। কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, অন্যান্য চর্বির বিকল্প হিসেবে অলিভ অয়েল বা জলপাই তেল আপনার হৃদরোগ এবং সম্ভাব্য ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে পারে। মাখন ও মারজারিনের সাথে প্রোস্টেট গ্রন্থি বৃদ্ধির উচ্চ ঝুঁকি লড়্গ্য করা গেলেও অলিভ অয়েল গ্রহণে এ ধরনের ঝুঁকি লড়্গ্য করা যায়নি। সুতরাং যত কম সম্ভব মাখন ও মারজারিন খাবেন। বিকল্প হিসেবে খাবেন অলিভ অয়েল বা জলপাই তেল।
জিঙ্কের দিকে লড়্গ রাখুনঃ বয়স ৫০-এর বেশি হলে বেশি গোশত এবং জিঙ্কসমৃদ্ধ যেকোনো সাপি্নমেন্ট পরিহার করম্নন। কেননা গবেষণায় দেখা গেছে, জিঙ্ক গ্রহণে প্রোস্টেট গ্রন্থি বড় হয়। যদি আপনার গোশত খেতেই হয় তাহলে দৈনিক তিন আউন্সের মধ্যে সীমিত রাখুন।
বেশি করে ফল খানঃ গবেষণায় দেখা গেছে, বিদ্যমান পুষ্টি উপাদান ক্যান্সার এবং অন্যান্য রোগের ঝুঁকি কমিয়ে দেয়। টমেটোতে বিদ্যমান লাইকোপেন প্রোস্টেট ক্যান্সারকে প্রতিহত করে। গবেষকদের পরামর্শ হলো, আপনি দৈনিক কমপড়্গে চার ধরনের ফল এবং পাঁচ ধরনের সবজি খাবেন।
চেম্বারঃ কমপ্যাথ লিমিটেড, ১৩৬ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা (সোম, মঙ্গল, বুধবার)। যুবক মেডিক্যাল সার্ভিসেস , বাড়িঃ ১৬, রোডঃ ২৮ (পুরান), ১৫ (নতুন), ধানমন্ডি আবাসিক এলাকা, ঢাকা (শনি, রবি, বৃহস্পতি)। মোবাইলঃ ০১৫৫২৩৪৫৭৫৪, ০১৭১৬২৮৮৮৫৫


এপিডিডাইমাইটিস
পুরুষের স্বাস্থ্য সমস্যা
ডা. মিজানুর রহমান কল্লোল
এপিডিডাইমাইটিস হলো এপিডিডাইমিসের প্রদাহ। এ অবস্থা সামান্য থেকে খুব বেশি যন্ত্রণাদায়ক হতে পারে। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের জন্য অ্যান্টিবায়োটিকের প্রয়োজন হতে পারে।
রোগ নির্ণয়
অণ্ডকোষের প্যাঁচ থেকে এপিডিডাইমাইটিস পৃথক করা কঠিন হতে পারে। অণ্ডকোষের প্যাঁচ ও এপিডিডাইমাইটিস একই সময়ে সংঘটিত হতে পারে। যেসব কারণে অণ্ডথলিতে ব্যথা হয়, সেসব কারণ প্রথমে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দূর করতে হবে। এসবের মধ্যে রয়েছেন্ধ অণ্ডকোষের ক্যান্সার, অণ্ডথলির শিরাগুলো বড় হওয়া (ভ্যারিকোসিল) কিংবা এপিডিডাইমিসের মধ্যে সিস্ট হওয়া। অনেক সময় অণ্ডথলি এলাকার যেসব স্নায়ু পেটের সাথে সংযুক্ত থাকে, কখনো কখনো তা হার্নিয়ার মতো ব্যথা সৃষ্টি করে। পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্যে রয়েছে শারীরিক পরীক্ষা ও আল্ট্রাসাউন্ড।
ক্রনিক বা দীর্ঘমেয়াদি এপিডিডাইমাইটিস হলো প্রথমবার চিকিৎসার পরও এপিডিডাইমিসের প্রদাহ থেকে যাওয়া। বিশেষভাবে এদের দীর্ঘদিন চিকিৎসার প্রয়োজন হয়। ক্রনিক এপিডিডাইমাইটিসে এমনকি সংক্রমণ না থাকলেও প্রদাহ থাকে। ওপরের কোনো কারণ ছাড়াও এ অবস্থা হতে পারে। ধারণা করা হয় যে, স্নায়ু ও মাংসপেশিসহ কিছু নির্দিষ্ট অঙ্গের অতি সংবেদনশীলতা ক্রনিক এপিডিডাইমাইটিস ঘটাতে পারে বা ঘটায়। শেষ পর্যন্ত অপারেশনের প্রয়োজন হতে পারে।
জটিলতা
এপিডিডাইমাইটিসের চিকিৎসা করা না হলে বিভিন্ন জটিলতা দেখা দিতে পারে। এসব জটিলতার মধ্যে রয়েছেন্ধ
ক্স দীর্ঘমেয়াদি এপিডিডাইমিসের প্রদাহ হওয়া
ক্স ফোড়া হওয়া
ক্স এপিডিডাইমিস ও অণ্ডকোষের স্থায়ী ক্ষতি, এমনকি নষ্ট হওয়া (ফলস্বরূপ বন্ধাত্ব ঘটা)
ক্স শরীরের অন্য যেকোনো অঙ্গে কিংবা তন্ত্রে সংক্রমণ ছড়িয়ে যাওয়া।
চিকিৎসা
চিকিৎসা ক্ষেত্রে সাধারণ অ্যান্টিবায়োটিক ডক্সিসাইক্লিন ব্যবহার করা হয়। অণ্ডথলি ওপরের দিকে তুলে রাখা হয়। অণ্ডথলিতে নিয়মিত ঠাণ্ডা সেঁক দেয়া হয়। মারাত্মক ক্ষেত্রে রোগীকে হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন হয়। ঘন ঘন ও তীব্র ব্যথার জন্য অপিয়েট অ্যানালজেসিক যেমন হাইড্রোকডোনের প্রয়োজন হতে পারে। এসব চিকিৎসায় কাজ না হলে ‘কর্ড ব্লক’ করা হয়। এ ক্ষেত্রে এপিডিডাইমিস বরাবর নার্ভে একটা ইনজেকশন দেয়া হয়। এই ইনজেকশনের মধ্যে থাকে একটা স্টেরয়েড, একটি ব্যথানাশক এবং একটি উচ্চমাত্রার প্রদাহবিরোধী ওষুধ। এই চিকিৎসা সাধারণত দুই-তিন মাস ব্যথাকে দমিয়ে রাখে। কোনো কোনো রোগীর আর কখনোই এ ধরনের ব্যথা হয় না। প্রয়োজনে আবার এ চিকিৎসা দেয়া হয়, যে পর্যন্ত না সমস্যা
পুরোপুরি চলে যায়। সমস্যা পুরোপুরি চলে না গেলে অপারেশন
করে এপিডিডাইমিস সম্পূর্ণ ফেলে দেয়া হয়। এতে ব্যথা পুরোপুরি সেরে যায়।
রোগের কারণঃ সাধারণত ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রমণের কারণে এ রোগ হয়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে সংক্রমণ না থাকলেও এপিডিডাইমিসে প্রদাহ হতে পারে। এ রোগের সবচেয়ে সাধারণ কারণ হলো মূত্রপথের সংক্রমণ (যেমন ই.কলাই)। বিভিন্ন যৌন সংক্রামক রোগ, ক্ল্যামাইডিয়া (প্রায় ৫০-৬০ শতাংশ ক্ষেত্রে দায়ী) এবং গনোরিয়ার কারণে এ রোগ হতে পারে। মূত্রনালী পথে ব্যাকটেরিয়া পেছনে প্রস্রাবের তন্ত্রে ও প্রজনন অঙ্গে চলে যায়, চলে যায় এপিডিডাইমাইটিস। এ রোগ যৌন-প্রস্রাবের অপারেশন যেমন প্রোস্টেট গ্রন্থির অপারেশন, প্রস্রাবের রাস্তায় ক্যাথেটার ঢোকানো অথবা জন্মগত কিডনি ও মূত্রথলির সমস্যার কারণে হয়।
ভাস ডিফারেন্সের মধ্য দিয়ে প্রস্রাব ঢুকেও এপিডিডাইমিসে প্রদাহ ঘটাতে পারে। একে বলে কেমিক্যাল এপিডিডাইমিটিস। শারীরিক চাপ, বিশেষ করে ভারোত্তোলনের জন্য এটি হতে পারে। কিছু ওষুধ যেমন অ্যামিওডারোনের জন্যও এটি হয়। সন্তোষজনক চিকিৎসার কয়েক মাস কিংবা কয়েক বছর পরে আপনা আপনি আবার এপিডিডাইমিসে প্রদাহ হতে পারে।
চেম্বারঃ কমপ্যাথ লিমিটেড, ১৩৬ এলিফ্যান্ট রোড, (বাটা সিগন্যাল ও হাতিরপুল বাজারের সংযোগ রাস্তার মাঝামাঝি), ঢাকা।
মোবাইলঃ ০১৫৫২৫৪১৭০৯ , ০১৭১৬২৮৮৮৫৫


সিফিলিস
ডা. মিজানুর রহমান কল্লোল
সিফিলিস একটি জটিল যৌন সংক্রামক রোগ। নামটি এসেছে ফ্রাক্যাসটেরো নামক একজন চিকিৎসক, জ্যোতির্বিদ ও কবি (১৪৮৩-১৫৫৩) এর লেখা একটি কবিতা থেকে। কবিতার নায়কের নাম ছিল সিফিলাস, সে একজন মেষ পালক ছিল। ঈশ্বর ও ধর্ম নিন্দা করার জন্য তাকে একটি নতুন রোগ দিয়ে শাস্তি দেয়া হয়।
বলা হয়ে থাকে, আমেরিকা আবিষ্কারের পর (১৪৯২) কলম্বাসের নাবিকদের মাধ্যমে সিফিলিস রোগটি ইউরোপে আসে। সংক্রমিত নাবিকরা নেপলস অবরোধে অংশ নেয়ার সময় (১৪৯৫) ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে আসা মার্সিনারিদের সাথে একত্রে থাকে। সৈনিকরা ছত্রভঙ্গ হয়ে ছড়িয়ে পড়ার ফলে সারা ইউরোপে রোগটি ছড়িয়ে পড়েন্ধ ষোল শতকের মাঝামাঝি রোগটা জাপানে পৌঁছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় সিফিলিসের প্রাদুর্ভাব নাটকীয়ভাবে বেড়ে যায়। বাংলাদেশে এ রোগের প্রভাব ব্যাপক, শহর এলাকায় রোগটা সচরাচর বেশি পরিলক্ষিত হয়। বন্দর নগরীতে এবং শিল্প এলাকায় এই রোগের সংক্রমণ বেশি।
ট্রেপোনেমা প্যালিডাম নামক জীবাণুর সংক্রমণে সিফিলিস রোগ ঘটে। জীবাণুটি ১৯০৫ সালে আবিষ্কার করেন প্রাণিবিজ্ঞানী এফ শাওডিন এবং চর্ম বিশেষজ্ঞ ই হফম্যান।
শরীরে মারাত্মক ক্ষতি হওয়ার আগে রোগটি ধরা পড়লে সহজে চিকিৎসা করা যায়।
সংক্রমণের উৎসঃ আক্রান্ত ব্যক্তির ত্বক ও শ্লেষ্মাঝিল্লির ক্ষত, লালা, বীর্য, যোনি থেকে নিঃসৃত রস ও রক্ত।
যেভাবে রোগটি ছড়ায়ঃ আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে সরাসরি যৌন সঙ্গম করলে।
-আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে পায়ুপথে সঙ্গম কিংবা মুখ মৈথুন করলে অথবা চুম্বন বিনিময় করলে।
-রক্তসঞ্চালন কিংবা ইনজেকশনের মাধ্যমে।
-গর্ভাবস্থায় আক্রান্ত মায়ের কাছ থেকে সন্তানের মধ্যে।
প্রাথমিক গোটাঃ অধিকাংশ ক্ষেত্রে সিফিলিস আক্রান্ত পুরুষের লিঙ্গমুণ্ডুতে কিংবা লিঙ্গমুণ্ডুুর ত্বকে গোটা ওঠে; নারীর ক্ষেত্রে গোটা ওঠে যোনির ঠোঁট কিংবা ক্লাইটরিসে। গোটাটি প্রথমে একটি ছোট লাল দানার মতো শুরু হয়, তার পর তা ভেজা ও ধীরে ধীরে ক্ষয় হতে থাকে। গোড়ার দিকে তা বোতামের মতো শক্ত অনুভূত হয়। এটা দেখতে খুব ছোট কিংবা আঙুলের নখের মতো হতে পারে। অয়েন্টমেন্ট লাগিয়ে চিকিৎসা অর্থহীন, কারণ জীবাণু শরীরের গভীরে প্রবেশ করে।
রোগের উপসর্গ সিফিলিসের প্রাথমিক স্তরঃ শরীরে জীবাণু প্রবেশের সাধারণত ১০ থেকে ৪০ দিন পর সরাসরি সংক্রমিত স্থানে ব্যথাহীন গোটা ওঠে। যৌনাঙ্গ ছাড়া এই গোটা মলদ্বার, ঠোঁট কিংবা স্তনের বোঁটাতে হতে পারে। কাছাকাছি গ্রন্থিগুলো ফুলে উঠতে পারে। চার থেকে ১০ সপ্তাহের মধ্যে গোটা চলে যায়। প্রথম স্তরে রোগ সারানো খুব সহজ হয়।
সিফিলিসের দ্বিতীয় স্তরঃ সংক্রমণের ৬ সপ্তাহ থেকে তিন মাস পর সব শরীরে ত্বকে ফুসকুড়ি দেখা দেয়। মাথার চুল পড়ে। মাথা ব্যথা, সামান্য জ্বর এবং গ্রন্থিগুলো ফোলা হতে পারে। আক্রান্ত ব্যক্তি তীব্রভাবে সংক্রমিত হয়, তার মুখের ত্বক যদি ছিঁড়ে যায় তাহলে চুমুর মাধ্যমে রোগ ছড়াতে পারে। প্রায় এক বছরের মধ্যে রোগের চিহ্নগুলো মিলিয়ে যায়।
সিফিলিসের শেষ স্তরঃ স্থিরতার কাল থেকে ৩০ বছর পর (সু্‌প্ত স্তর) রোগটি শরীরের যেকোনো অংশকে আক্রমণ করতে পারে। সাধারণত হৃৎপিণ্ড, রক্তনালী, মস্তিষ্ক এবং স্নায়ুরুজ্জু আক্রান্ত হয়। অন্যান্য প্রতিক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে মুখে ঘা, ত্বক, হাড় ও লিগামেন্টের ক্ষয়। বড় ধরনের প্রতিক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে অন্ধ হয়ে যাওয়া, অঙ্গ অসাড়, উন্মাদনা এবং মৃত্যু। শারীরিক ক্ষতি পূরণ করা যায় না।
জন্মগত সিফিলিসঃ গর্ভাবস্থায় আক্রান্ত মায়ের কাছ থেকে গর্ভফুলের মাধ্যমে গর্ভস্থ শিশু সিফিলিসে আক্রান্ত হতে পারে। এ ধরনের এক-তৃতীয়াংশেরই গর্ভপাত হয় কিংবা মৃত সন্তান প্রসব ঘটে। প্রাথমিক গর্ভাবস্থায় মায়ের চিকিৎসা করালে শিশু রক্ষা পায়।
পরীক্ষা-নিরীক্ষাঃ সেরোলজিক্যাল পরীক্ষার মাধ্যমে সিফিলিসের জীবাণু ধরা পড়ে। সিফিলিসে আক্রান্ত হওয়ার চার সপ্তাহ থেকে সেরোলজিক্যাল পরীক্ষাগুলো পজিটিভ হয়। মাঝে মধ্যে ভ্রান্তিমূলক পজিটিভ হতে পারে। ভিডিআরএল এবং আরপিআর পরীক্ষা অন্য সংক্রমণ কানেকটিভ ইস্যুর অসুখে পজিটিভ হয়। ফলাফল বিশেষ পরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত করা যায়। যদি সিফিলিস সন্দেহ করা হয় তাহলে লাইপয়ডাল এন্টিজেন এবং বিশেষ পরীক্ষাগুলো একত্রে করা হয়।
সুপ্তস্তরে স্নায়ুজনিত অসুস্থতা পৃথক কিংবা নিশ্চিত করার জন্য সিএসএফ পরীক্ষা করা হয়।
সিফিলিসের সেরোলজিক্যাল পরীক্ষাঃ ভিডিআরএল (ভেনেরাল ডিজিজ রিসার্স ল্যাবরেটরি) পরীক্ষা। -আরপিআর (র‌্যাপিড প্লাজমা রিয়াজিন) -টিপিএইচএ (ট্রেপোনেমা প্যালিডাম হেমাগ্লুটিনেশন অ্যাসেই)। -এফটিএ-এবিএস (ফ্লুরোসেন্ট ট্রেপোনেমাল এন্টিবডি এবসর্বড) -ট্রেপোনেমাল এনজাইম-লিংকড) ইম্যুনোসরবেন্ট (ঊখওঝঅ)।
চিকিৎসাঃ অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শক্রমে চিকিৎসা করাতে হবে, নইলে পরে দেখা দিতে পারে নানা জটিলতা।
চেম্বারঃ কমপ্যাথ লিমিটেড, ১৩৬ এলিফ্যান্ট রোড, (বাটা সিগন্যাল ও হাতিরপুল বাজারের সংযোগ রাস্তার মাঝামাঝি), ঢাকা। মোবাইলঃ ০১৫৫২৫৪১৭০৯ , ০১৭১৬২৮৮৮৫৫


গনোরিয়া
ডা. মিজানুর রহমান কল্লোল
গনোরিয়া এক সাধারণ যৌন সংক্রামক রোগ। সমগ্র বিশ্বে প্রতি বছর প্রায় ২০০ মিলিয়ন লোক এতে আক্রান্ত হচ্ছে। খুব কম ক্ষেত্রেই কেউ মারা যায়। তবে এ রোগ থেকে মারাত্মক জটিলতা দেখা দেয়ন্ধ বিশেষ করে মহিলাদের ক্ষেত্রে। যে ব্যাকটেরিয়া এ রোগের বিস্তার ঘটায় তার নাম ‘নাইসেরিয়া গনোরিয়া’।
মহিলাদের চেয়ে পুরুষরা এ যৌনরোগে আক্রান্ত হন বেশি এবং তাদের বয়স ১৫ থেকে ৩০-এর মধ্যে।
গনোরিয়ার জীবাণু ‘নাইসেরিয়া গনোরিয়া’ দীর্ঘদিন শরীরের বাইরে টিকে থাকতে পারে না। এরা বেঁচে থাকে কেবল নিবিড় যৌন সংসর্গের মাধ্যমে এক দেহ থেকে অন্য দেহে স্থানান্তরিত হয়ে। গনোরিয়া সংক্রমণ অর্জিত হয় সংক্রমিত লোকের সাথে যৌন সংসর্গের দ্বারা।
অল্পবয়স্ক মেয়ে এবং শিশুরা এ রোগ অর্জন করতে পারে সংক্রমিত বিছানার চাদর অথবা তোয়ালে থেকে। ঘনবসতি এবং অপরিচ্ছন্নতা থেকে শিশুদের গনোরিয়া হতে পারে। একজন ব্যক্তি গনোরিয়া থেকে মুক্তি পেলেও আবার গনোরিয়ায় আক্রান্ত হতে পারে যদি সেখানে অল্প সংক্রমণ থেকে যায় কিংবা গনোরিয়ায় আক্রান্ত কারো সাথে যৌন মিলন ঘটে অথবা কোনো প্রতিরোধ ক্ষমতা না থাকে। তবে গনোরিয়ার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা কেউ লাভ করতে পারে না।
কেউ যদি গনোরিয়ায় আক্রান্ত কারো যৌনাঙ্গ লেহন করে তাহলে তার গনোরিয়া হবে এবং সে অবস্থার নাম গনোরিয়াজনিত ফ্যারিংসয়ের প্রদাহ।
যৌন মিলনের ২ থেকে ১০ দিন পর রোগের উপসর্গ দেখা দেয়। কখনো কখনো লক্ষণ নাও থাকতে পারে। গনোরিয়ায় আক্রান্ত মহিলাদের মধ্যে শতকরা ৫০ জন কোনো লক্ষণ বহন করেন না। পুরুষদের মূত্রনালীর সম্মুখভাগে সাধারণত সংক্রমণ ঘটে। প্রস্রাবে যন্ত্রণা, প্রস্রাবের তীব্র আকাঙ্ক্ষা, ঘন ঘন প্রস্রাব করা গনোরিয়ার লক্ষণ। প্রাথমিকভাবে মূত্রনালী দিয়ে শ্লেষ্মার মতো নিঃসরণ আসে। দ্রুত তা পুঁজে পরিণত হয়। প্রোস্টেটের প্রদাহ, সেমিনাল ভেসিকেলের প্রদাহ এবং এপিডিডাইমিস প্রদাহের সাথে জ্বর হয়। এপিডিডাইমিস অসম্ভব ব্যথা করে। যদি চিকিৎসা করা না হয় তাহলে এ অবস্থা কয়েক সপ্তাহে মিলিয়ে যায়। কিন্তু হলদে শ্লেষ্মা নিঃসরণ কয়েক মাস অবিরত থাকতে পারে। অতঃপর মূত্রনালীর অস্বাভাবিক সঙ্কীর্ণতা ঘটতে পারে।
মহিলাদের ক্ষেত্রে সচরাচর জরায়ুপথের নিুাংশে সংক্রমণ ঘটে এবং প্রদাহের সাথে জ্বর হয়। শতকরা ৫০ জন মহিলার মূত্রনালী এবং মলাশয়ে গনোরিয়া সংক্রমণ ঘটে। তাদের যোনি দিয়ে রস নির্গত হয়, প্রস্রাবে যন্ত্রণা এবং ঘন ঘন প্রস্রাবের লক্ষণ দেখা দেয়। তাদের বার্থোলিন গ্রন্থিতে ফোঁড়ার বিকাশ ঘটতে পারে। জ্বরের সাথে সালফিংসয়ের প্রদাহ এবং তলপেটে ব্যথা অনুভূত হতে পারে। গর্ভবতী মায়ের গনোরিয়া হলে জরায়ুপথের সংক্রমণের জন্য প্রস্রাবের সময় শিশুর চোখ গনোরিয়ায় আক্রান্ত হতে পারে। সমকামী পুরুষদের ক্ষেত্রে কিংবা মহিলাদের পায়ুপথে পুরুষাঙ্গ চালনা করলে মলাশয় সংক্রমিত হবে। গনোরিয়া রোগীদের কব্জি, আঙুল, হাঁটু ও গোড়ালির অস্থিসন্ধিতে প্রদাহ হতে পারে।
গনোরিয়ার উপসর্গ
পুরুষের ক্ষেত্রে
লিঙ্গপথে রস নিঃসৃত হয়।
(যৌনাঙ্গের সংক্রমণের ফলে এ রস তৈরি হয়। প্রথমে পানির মতো থাকে। পরে ঘন, সবুজাভ-হলুদ হয়)।
বারবার প্রস্রাবের ইচ্ছা করে। মূত্রনালীতে প্রদাহের কারণে জ্বালাপোড়া ও ব্যথা করে।
মূত্রনালীপথে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়ে প্রস্রাব ঠিকমতো বেরিয়ে আসতে পারে না। ফলে কিডনিতে মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে।
এপিডিডাইমিসে প্রদাহের কারণে তীব্র ব্যথা হয়।
অণ্ডকোষ ফুলে একটা আপেলের মতো বড় হতে পারে।
সমকামীরা পায়ুপথে যৌনসঙ্গম করলে পায়ুপথে সংক্রমণ হতে পারে। মলনালীতে তীব্র ব্যথা হয় এবং রসে ভিজে যায়।
মুখ মৈথুনে অভ্যস্তদের মুখে সংক্রমণ তথা ঘা সৃষ্টি হয় এবং গলাব্যথা হয়।
দীর্ঘদিনের সংক্রমণের কারণে অস্থিসন্ধিতে প্রদাহ, ত্বকে ক্ষত, সেপটিসেমিয়া, মস্তিষ্কের প্রদাহ এবং হৃৎপিণ্ডের ক্ষতি হতে পারে।
নারীর ক্ষেত্রে
যৌনাঙ্গ সংক্রমণের কারণে যোনির ওষ্ঠে লাল, দগদগে ঘা হয়।
যোনিপথে অস্বাভাবিক নিঃসরণ (সচরাচর, সাদা, সবুজ কিংবা হলুদ) হয়।
প্রস্রাবের তীব্র ইচ্ছা থাকতে পারে। প্রস্রাবে যন্ত্রণা হয়।
বার্থোলিন গ্রন্থির প্রদাহ হয়।
ডিম্ববাহী নালীতে প্রদাহ হয়।
তলপেটে ব্যথা হয়।
ডিম্ববাহী নালী, ডিম্বাশ্বয় কিংবা তলপেটের মধ্যে ফোঁড়া হতে পারে।
মাসিক অনিয়মিত হয় এবং তীব্র ব্যথা হয়।
পায়ুপথে সঙ্গম থেকে কিংবা নিজের সংক্রমিত যোনি থেকে মলদ্বারে সংক্রমণ হতে পারে। মলনালী পথে নিঃসরণ এবং রক্তক্ষরণ হতে পারে।
মুখ মৈথুনের কারণে মুখে সংক্রমণ হতে পারে।
দীর্ঘদিনের সংক্রমণের কারণে অস্থিসন্ধিতে প্রদাহ, ত্বকে ক্ষত, সেপটিসেমিয়া, মস্তিষ্কের প্রদাহ এবং হৃৎপিণ্ডের ক্ষতি হতে পারে।
গনোরিয়া এবং গর্ভাবস্থাঃ গনোরিয়ার জীবাণু মহিলার জননতন্ত্রের মধ্যে বিচরণ করে ডিম্ববাহী নালীতে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করতে পারে এবং এ কারণে মহিলার সারা জীবনের জন্য বন্ধ্যাত্ব ঘটতে পারে কিংবা জরায়ুর বাইরে গর্ভধারণ হতে পারে। গর্ভাবস্থায় মহিলা গনোরিয়াতে আক্রান্ত হলে শিশু জন্মের সময়ে মায়ের যোনি থেকে তার চোখে সংক্রমণ হতে পারে। শিশুকে চিকিৎসা না করলে তার চোখে প্রদাহ হবে এবং সে অন্ধ হয়ে যেতে পারে।
চিকিৎসাঃ জটিলতাহীন গনোরিয়ার ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত একক মাত্রায় উপযুক্ত জীবাণুবিরোধী বা অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল ওষুধ বেশ ভালো কাজ দেয়।
চেম্বারঃ কমপ্যাথ লিমিটেড, ১৩৬ এলিফ্যান্ট রোড, (বাটা সিগন্যাল ও হাতিরপুল বাজারের সংযোগ রাস্তার মাঝামাঝি), ঢাকা।
মোবাইলঃ ০১৫৫২৫৪১৭০৯ , ০১৭১৬২৮৮৮৫৫

মূত্রনালীর প্রদাহ বা ইউরেথ্রাইটিস
ডা. মিজানুর রহমান কল্লোল

মূত্রনালীতে সংক্রমণ হলে ও জ্বালা করলে তাকে মূত্রনালীর প্রদাহ বা ইউরেথ্রাইটিস বলে। মূত্রনালী হচ্ছে একটি নল যা মূত্রথলি থেকে প্রস্রাব বহন করে। পুরুষের মূত্রনালী থাকে পুরুষাঙ্গের মধ্যে। এটা বীর্য ও শুক্রাণুকেও পুরুষাঙ্গের বাইরে বের করে দেয়। মহিলাদের ক্ষেত্রে মূত্রনালী শুধু মূত্রথলি থেকে প্রস্রাব বহন করে বের করে দেয়।
অসংখ্য পুরুষ মূত্রনালীর প্রদাহ বা ইউরেথ্রাইটিসে ভোগেন। এদের অনেকের কোনো উপসর্গ থাকে না। যদি আপনার নিচের কোনো উপসর্গ দেখা দেয় তাহলে দেরি না করে যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের শরণাপন্ন হবেন। যদি ইউরেথ্রাইটিসের চিকিৎসা না করান তাহলে বিভিন্ন জটিলতা দেখা দিতে পারে। চিকিৎসা শেষ না হওয়া পর্যন্ত যৌন মিলন থেকে বিরত থাকতে হবে।
ইউরেথ্রাইটিসের উপসর্গ
প্রস্রাবে ব্যথা বা জ্বালাপোড়া করা।
চুলকানি।
লিঙ্গ দিয়ে পুঁজ বা মিউকাস বেরিয়ে আসা (আপনার আন্ডার ওয়ারে দাগ দেখা দিতে পারে)
লিঙ্গের মাথার ছিদ্র লাল হতে পারে।
আগেই বলা হয়েছে ইউরেথ্রাইটিস হলো মূত্রনালীর প্রদাহ এবং এটা সংক্রমণ বা অসংক্রমণজনিত কারণে হতে পারে। তবে প্রাথমিকভাবে এটা একটা যৌনঘটিত অর্জিত রোগ।
যদি আপনার নিচের যে কোনো একটি বিষয় উপস্থিত থাকে তাহলে ইউরেথ্রাইটিস নির্ণয় করা যেতে পারে।
মূত্রনালীর মাথায় অর্থাৎ লিঙ্গমুণ্ডুর ছিদ্রে পুঁজ বা পুঁজজাতীয় নিঃসরণ।
মূত্রনালীর নিঃসরণ পরীক্ষা করলে যদি উচ্চমাত্রার পলিমরফো নিউক্লিয়ার কোষ পাওয়া যায়। (৬৫ পিএমএন/হাই পাওয়ার ফিল্ড)।
প্রস্রাবের ক্ষেত্রে > ১০ পিএমএল/হাই পাওয়ার ফিল্ড।
পুরুষের ইউরেথ্রাইটিসের শ্রেণী বিভাগ
গনোকক্কাল ইউরেথ্রাইটিস­ এটার কারণ হলো নাইসেরিয়া গনোরিয়া নামক জীবাণু।
নন-গনোকক্কাল ইউরেথ্রাইটিস­ এটার কারণ নাইসেরিয়া গনোরিয়া ব্যতীত অন্য জীবাণু।
রিকারেন্ট ইউরেথ্রাইটিস­ এটা হলো বারবার মূত্রনালীর প্রদাহে আক্রান্ত হওয়া। যদিও বিভিন্ন কারণে এটা হতে পারে। তবে টেট্রাসাইক্লিন প্রতিরোধক ইউ. ইউরিয়ালাইটিকাম একটি কারণ।
নন-গনোকক্কাল ইউরেথ্রাইটিসের কারণ
ক্লামাইডিয়া ট্রাকোমাটিস ৪০%
? ইউরিয়াপ্লাজমা ইউরিয়ালাইটিকাম ১০-২০%
মাইকোপ্লাজমা জেনিটালিয়াম ১০-২০%
ট্রাইকোমানাস ভ্যাসাইনালিস ১-১৭%
বিরল ক্ষেত্রে­ নাইসেরিয়া মেনিন জাইটিস, এইচএসভি, ই কলাই সংক্রমণ, আঘাত, বাইরের কোনো বস্তু, প্রস্রাবের পথের সংক্রমণ, কিডনির প্রদাহ, জীবাণু সংক্রমণ, বাতরোগ, রেইটারস সিনড্রোম।
কারণ পাওয়া যায় না ২০-৩০%
রোগের ব্যাপকতা
গনোকক্কাল ইউরোথ্রাইটিসের চেয়ে নন-গনোকক্কাল ইউরেথ্রাইটিস বেশি পরিলক্ষিত হয়। ১৬-২৪ বছর বয়সী পুরুষদের ক্ষেত্রে ২-৬% রোগের কারণ ক্লামাইডিয়া। ২০-২৪ বছর বয়সী পুরুষদের ক্ষেত্রে এ রোগের সবচেয়ে সাধারণ কারণ হলো গনোরিয়া।
যেসব লক্ষণ বা উপসর্গ প্রকাশ পায়
উপসর্গবিহীন থাকতে পারে (১০% রোগীর গনোরিয়া এবং ৫০% রোগীর ক্লামাইডিয়া সংক্রমণ থাকে)।
মূত্রপথে নিঃসরণ-পুঁজ অথবা পুঁজজাতীয় নিঃসরণ; রক্ত যেতে পারে।
প্রস্রাব করতে কষ্ট হয়­ প্রস্রাবের সময় জ্বালাপোড়া করে।
মূত্রনালীতে চুলকানি হয়।
অন্যান্য উপসর্গ যেমন ত্বকের ক্ষত
কনজাংটিভাইটিস অথবা বাতের ব্যথা থাকতে পারে।
উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ রোগী
যারা যৌনভাবে সক্রিয়
পুরুষ
যে সব পুরুষ অরক্ষিত যৌন সঙ্গম করে
সমকামী বা বহুগামী পুরুষ
৩৫-৪০ বছরের কম বয়সী পুরুষ
সম্প্রতি যৌনসঙ্গিনী বদল করা।
পরীক্ষা-নিরীক্ষা
ইউরেথ্রাল স্নেয়ার
এফপিইউ
ফ্যারিংস ও মলদ্বারের রস
প্রস্রাব পরীক্ষা
ব্যবস্থাপনা
নন-গনোকক্কাল ইউরেথ্রাইটিস
ডক্সিসাইক্লিন ১০০ মি. গ্রা. দৈনিক ২ বার-৭ দিন অথবা এজিথ্রোমাইসিন ১ গ্রাম মুখে একক মাত্রা হিসেবে অথবা ওফ্লোক্সাসিন ২০০ মি. গ্রা. দৈনিক ২ বার- ৭ দিন।
গনোকক্কাল ইউরেথ্রাইটিস-
সেফিক্সিম ৪০০ মি. গ্রা. মুখে একক মাত্রা হিসেবে অথবা সেফট্রায়াক্সন ২৫০ মি. গ্রা. মাংসপেশি পথে একক মাত্রা হিসেবে।
বিকল্প হিসেবে কুইনোলোন জাতীয় ওষুধ ব্যবহার করা যেতে পারে।
অভিজ্ঞতাপূর্ণ চিকিৎসা
এ ক্ষেত্রে ক্লামাইডিয়া ট্রাকোমোটিসের চিকিৎসা করা যেতে পারে, যেমন-
ডক্সিসাইক্লিন ১০০ মি.গ্রাম দৈনিক ২ বার-
৭ দিন অথবা এজিথ্রোমাইসিন ১ গ্রাম মুখে একক মাত্রা হিসেবে।
রোগীর জন্য উপদেশ ও পরবর্তী চিকিৎসা
যত্রতত্র অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। অ্যান্টিবায়োটিক অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ মতো খেতে হবে।
নিরাপদ যৌনসঙ্গম করতে হবে অর্থাৎ কনডম ব্যবহার করতে হবে।
ইনফেকশন সেরে না ওঠা পর্যন্ত যৌন মিলন থেকে বিরত থাকতে হবে এবং যৌন সঙ্গিনীকেও পরীক্ষা করাতে হবে।
চিকিৎসা গ্রহণের দু’সপ্তাহ পর আবার চিকিৎসকের কাছে আসতে হবে রোগের পর্যায় দেখার জন্য।
যদি প্রথমেই ডক্সিসাইক্লিন ব্যবহার করা হয় তাহলে টেট্রাসাইক্লিন প্রতিরোধক ইউ. ইউরিয়ালাইটিকাম-এর ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে এবং বিকল্প চিকিৎসা হিসেবে মেট্রোনিডাজল অথবা ইরাইথ্রোমাইসিন ব্যবহার করা যেতে পারে।
যদি ল্যাবরেটরি পরীক্ষায় কোনো ইনফেকশনের প্রমাণ পাওয়া না যায় তাহলে চিকিৎসা হিসেবে ৭ দিন যৌন মিলন থেকে বিরত থাকতে হবে এবং যৌনসঙ্গিনীর চিকিৎসা করতে হবে।
যদি উপসর্গগুলো ৩ মাসের বেশি স্থায়ী থাকে তাহলে সম্ভাব্য জটিলতা যেমন প্রোস্টেটাইটিস এপিডিডাইমাইটিস হতে পারে। এসবের চিকিৎসা করতে হবে।
যদি বারবার নন-গনোকক্কাল ইউরোথ্রাইটিস হয় তাহলে ইরাইথ্রোমাইসিন অথবা মেট্রোনিডাজল সহকারে চিকিৎসা করতে হবে।
রোগের জটিলতা
এপিডিডাইমিসের প্রদাহ অথবা অণ্ডকোষের প্রদাহ
প্রোস্টেট গ্রন্থির প্রদাহ
গনোরিয়ার ক্ষেত্রে কনজাংটিভাইটিস, ত্বকের ক্ষত
বাত ব্যথা
তলপেটে ব্যথা
রেইটার’স সিনড্রোম
এইচআইভি সংক্রমণের ঝুঁকি
চেম্বারঃ কমপ্যাথ লিমিটেড, ১৩৬ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা (সোম, মঙ্গল ও বুধবার)। যুবক মেডিক্যাল সার্ভিসেস, বাড়িঃ ১৬, রোডঃ ২৮ (পুরান), ১৫ (নতুন), ধানমন্ডি আবাসিক এলাকা, ঢাকা (শনি, রবি ও বৃহস্পতিবার)। মোবাইলঃ ০১৫৫২৩৪৫৭৫৪, ০১৭১৬২৮৮৮৫৫


অনির্দিষ্ট মূত্রনালীর প্রদাহ
ডা. মিজানুর রহমান কল্লোল

অনির্দিষ্ট মূত্রনালীর প্রদাহকে চিকিৎসা পরিভাষায় বলে নন-স্পেসিফিক ইউরেথ্রাইটিস। এটি এমন একটি অবস্থা যেখানে মূত্রনালীতে প্রদাহ হয় অথবা মূত্রনালী ফুলে যায়। যেসব পুরুষ যত্রতত্র যৌন ক্রিয়া করে এবং যে পুরুষের একাধিক যৌন সঙ্গিনী রয়েছে তাদের এ রোগ হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে।
অনির্দিষ্ট মূত্রনালীর প্রদাহের কারণ কী?
কিছু জীবাণু যেমন ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস অথবা ছত্রাক দ্বারা অনির্দিষ্ট মূত্রনালীর প্রদাহ হতে পারে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে ক্লামাইডিয়া মাইকোপ্লাজমা এবং হার্পিস সিমপ্লেক্স ভাইরাস। একই সময়ে একাধিক জীবাণু আপনার মূত্রনালীর প্রদাহ ঘটাতে পারে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে সংক্রমণের জন্য দায়ী জীবাণুটিকে খুঁজে পাওয়া যায় না। অরক্ষিত যৌন সঙ্গমের মাধ্যমে আপনি এ সংক্রমণে সংক্রমিত হতে পারেন। যৌন সঙ্গমকে তখনই অরক্ষিত বলা হয় যখন কনডম ব্যবহার করা হয় না। আপনার যৌন সঙ্গিনীর গোসলের সাবান, শুক্রনাশক পদার্থ এবং যোনির রাসায়নিক উপাদানের দ্বারাও আপনার মূত্রনালীর প্রদাহ হতে পারে। এসব দ্রব্য আপনার মূত্রনালীতে ঢুকে জ্বালাপোড়া সৃষ্টি করতে পারে এবং মূত্রনালী ফুলে যায়। কোনো বস্তু দ্বারা আঘাত অথবা দুর্ঘটনাজনিত কারণে অথবা চিকিৎসাজনিত অবস্থা যেমন স্টিভেনস-জনসন সিনড্রোম মূত্রনালীর প্রদাহ ঘটাতে পারে।
অনির্দিষ্ট মূত্রনালীর প্রদাহের উপসর্গগুলো কী?
অনির্দিষ্ট মূত্রনালীর প্রদাহে অনেক সময় আপনার কোনো উপসর্গ না-ও থাকতে পারে, অথবা আপনার নিচের যেকোনো উপসর্গ থাকতে পারেঃ
সাধারণের চেয়ে ঘন ঘন প্রস্রাবের অনুভূতি হওয়া। ষ জ্বর ষ পেটে ব্যথা ষ প্রস্রাব করার সময় ব্যথা অথবা জ্বালাপোড়া করা ষ লিঙ্গে ব্যথা অথবা চুলকানি ষ যৌন সঙ্গমের সময় ব্যথা করা ষ লিঙ্গ দিয়ে পাতলা ও সামান্য ঘোলা অথবা হলুদ-সবুজ রস নিঃসৃত হওয়া।
কিভাবে অনির্দিষ্ট মূত্রনালীর প্রদাহ নির্ণয় করা হয়?
এ ক্ষেত্রে চিকিৎসক আপনাকে বেশ কিছু প্রশ্ন জিজ্ঞেস করবেন। আপনার যৌন সঙ্গিনীর ব্যাপারেও জানতে চাইতে পারেন। আপনার যৌন ইতিহাস জানার পর আপনার সংক্রমণ ক্লামাইডিয়াজনিত কি না তা পরীক্ষা করার প্রয়োজন হতে পারে। আপনার নিচের যেকোনো পরীক্ষা করার প্রয়োজন হতে পারেঃ
রক্ত পরীক্ষাঃ আপনার শরীর কেমন আছে তা জানার জন্য আপনার রক্ত পরীক্ষার প্রয়োজন হতে পারে। আপনার হাত, বাহু, অথবা কনুইয়ের ভাঁজের রক্তনালী থেকে রক্ত নেয়া যেতে পারে। রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে আপনার স্বাস্থ্যের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে অনেক তথ্য জানা যাবে। একবারের বেশি রক্ত নেয়ার প্রয়োজন হতে পারে।
মূত্রনালীর রস পরীক্ষাঃ একে ইউরেথ্রাল ফ্লুইড টেস্ট বলে। এ ক্ষেত্রে মূত্রনালীর মধ্যে একটা কটন সোয়াব দিয়ে রস সংগ্রহ করা হয়। তারপর এই রস মাইক্রোস্কপের নিচে রেখে দেখা হয় কোনো রক্তের শ্বেত কণিকা অথবা জীবাণু রয়েছে কি না। যদি জীবাণু থাকে তাহলে বলা সম্ভব হয় সেটা কোন ধরনের জীবাণু।
প্রস্রাব পরীক্ষাঃ অন্তত এক ঘণ্টা প্রস্রাব ধরে রাখার পর প্রস্রাব সংগ্রহ করা হয়। এরপর বিশেষ পরীক্ষার জন্য প্রস্রাব পাঠানো হয়। দেখা হয় রক্তের শ্বেত কণিকা অথবা জীবাণু রয়েছে কি না।
কিভাবে অনির্দিষ্ট মূত্রনালীর প্রদাহের চিকিৎসা করা হয়?
চিকিৎসার মাধ্যমে আপনার উপসর্গ কমে যেতে পারে। যদি জীবাণুর কারণে সংক্রমণ ঘটে তাহলে অ্যান্টিবায়েটিক দিলে উপকার পাওয়া যায়। কিছু পুরুষের চিকিৎসা ছাড়াই অনির্দিষ্ট মূত্রনালীর প্রদাহের উপসর্গ চলে যায়। যদি এমনটি ঘটে তাহলেও চিকিৎসা করতে হবে। কারণ, তখনও আপনার মধ্যে জীবাণু অবস্থান করে যা আপনার মাধ্যমে অন্যের মধ্যে ছড়াতে পারে। মূত্রনালীর প্রদাহ প্রতিরোধ করার জন্য অবশ্যই আপনার এবং আপনার যৌন সঙ্গিনীর দু’জনেরই চিকিৎসা করাতে হবে। যদি আঘাতজনিত কারণে মূত্রনালীর প্রদাহ হয় তাহলে দৈনিক কমপক্ষে দু’বার ১৫ মিনিট করে হট বাথ নেবেন।
কিভাবে অনির্দিষ্ট মূত্রনালীর প্রদাহ প্রতিরোধ করা যেতে পারে?
যৌন মিলনের সময় সর্বদা কনডম ব্যবহার করবেন। সঠিকভাবে কনডম পরবেন।
মূত্রনালীর প্রদাহ রয়েছে এমন কারো সঙ্গে যৌন মিলন করবেন না।
যদি আপনি মূত্রনালীর প্রদাহের জন্য চিকিৎসা নিতে থাকেন, তাহলে চিকিৎসা শেষ না হওয়া পর্যন্ত যৌন মিলন করবেন না। এমনকি কনডম পরেও না। আপনার যৌন সঙ্গিনীকেও একই সাথে চিকিৎসা করাবেন। তার কোনো উপসর্গ না থাকলেও।
আপনার স্ত্রী গর্ভবতী হলে চিকিৎসকের কাছ থেকে জেনে নিন আপনি তার সাথেও যৌন মিলন করতে পারবেন কি না। কারণ আপনি তার মধ্যে জীবাণু ছড়াতে পারেন। কিছু জীবাণু জন্মের সময় শিশুর মধ্যে যেতে পারে।
চেম্বারঃ কমপ্যাথ লিমিটেড, ১৩৬ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা (সোম, মঙ্গল ও বুধবার)। যুবক মেডিক্যাল সার্ভিসেস, বাড়িঃ ১৬, রোডঃ ২৮ (পুরান), ১৫ (নতুন), ধানমন্ডি আবাসিক এলাকা, ঢাকা (শনি, রবি ও বৃহস্পতিবার)। মোবাইলঃ ০১৫৫২৩৪৫৭৫৪, ০১৭১৬২৮৮৮৫৫


ডিসইউরিয়া বা প্রস্রাবে কষ্ট
ডা. মিজানুর রহমান কল্লোল

প্রস্রাব করার সময় কষ্ট বা ব্যথা অনুভূত হওয়াকে চিকিৎসা পরিভাষায় ডিসইউরিয়া বলে। পুরুষ ও মহিলা উভয়েই এ সমস্যায় ভুগতে পারেন। অল্পবয়স্ক পুরুষদের তুলনায় অধিকবয়সী পুরুষরা এ সমস্যায় বেশি ভোগেন। দেখা গেছে, একবার কেউ আক্রান্ত হলে আবার আক্রান্ত হতে পারেন।
সারাজীবনে যে কেউ বারবার আক্রান্ত হতে পারেন। এটা মূত্রপথে ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রমণের কারণে, অথবা যৌনবাহিত রোগের কারণে হতে পারে।
চিকিৎসা বিজ্ঞানে এটাকে রোগ হিসেবে চিকিৎসা করা হয় না। প্রকৃতপক্ষে এটা অন্য কিছু রোগের উপসর্গ। বেশিরভাগ ক্ষেত্রের উৎপত্তি যৌনগত। এ কারণে ডিসইউরিয়ার রোগীর একক কোনো নির্দিষ্ট চিকিৎসা পদ্ধতি নেই। উপসর্গ ও কারণের ওপর ভিত্তি করে এর চিকিৎসা করা হয়।
ডিসইউরিয়ার ধরন
ডিসইউরিয়া কোনো রোগ নয়, তবে এটা কিছু রোগের একটি উপসর্গ। নিুলিখিত কারণে পুরুষের ডিসইউরিয়া বা প্রস্রাব করার সময় ব্যথা হতে পারেঃ
প্রোস্টেটাইটিস
এটা হচ্ছে প্রোস্টেট গ্রন্থির প্রদাহ। এ অবস্থায় প্রোস্টেট গ্রন্থি ফুলে গিয়ে মূত্রথলিতে চাপ দেয়। প্রোস্টেটাইটিসের ক্ষেত্রে প্রস্রাব করার সময় পুরুষাঙ্গের গোড়ায় ব্যথা অনুভূত হয়। প্রস্রাব করার পরে ব্যথা ক্রমে বাড়তে থাকে।
ইউরেথ্রাইটিস
ইউরেথ্রাইটিস হলো মূত্রনালীর প্রদাহ। এ ক্ষেত্রে মূত্রনালীর মুখে অর্থাৎ লিঙ্গমণ্ডুর ছিদ্রে ব্যথা অনুভূত হয়।
এই ব্যথা প্রস্রাব করার সাথে সাথেই অনুভূত হয়। সাধারণত প্রস্রাব করা শেষ হয়ে গেলে ব্যথা চলে যায়।
এপিডিডাইমাইটিস
এটা হলো এপিডিডাইমিসের প্রদাহ। এপিডিডাইমিস একটি নালী যেখানে অণ্ডকোষের শুক্রাণু জমা থাকে।
ক্লামাইডিয়া
ক্লামাইডিয়া হলো ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রমণ যার কারণে মূত্রনালীতে প্রদাহ হয় এবং এর ফলে ব্যথাযুক্ত প্রস্রাব হয়।
গনোরিয়া
ক্লামাইডিয়ার মতো গনোরিয়াও ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রমণ এবং এ ক্ষেত্রেও একই রকমের উপসর্গ দেখা দেয়। মূত্রনালীতে প্রদাহের কারণে ব্যথা হয়।
সিস্টাইটিস
সিস্টাইটিস হলো মূত্রথলির প্রদাহ। মূত্রনালীর ছিদ্রের মাধ্যমে ব্যাকটেরিয়া মূত্রথলিতে ঢুকলে সিস্টাইটিস হয়। এ ক্ষেত্রে ঘন ঘন প্রস্রাব হয়, প্রস্রাব করার সময় ব্যথা করে।
পাইলো নেফ্রাইটিস
পাইলো নেফ্রাইটিস হলো কিডনির প্রদাহ। এ ক্ষেত্রে বারবার প্রস্রাব করার ইচ্ছে জাগে। প্রস্রাব দুর্গন্ধযুক্ত হয় এবং মূত্রনালীতে জ্বালাপোড়া করে।
ডিসইউরিয়ার কারণ
ডিসইউরিয়ার কারণ অনেক। প্রদাহের কারণে অথবা যৌন বাহিত রোগের কারণে ডিসইউরিয়া হতে পারে। উপরের কারণগুলো ছাড়াও আরো কিছু কারণে ডিসইউরিয়া বা প্রস্রাব করার সময় ব্যথা হতে পারে, যেমন-
মূত্রথলিতে অথবা মূত্রনালীতে ক্যান্সার
মূত্রপথে প্রতিবন্ধকতা
কিডনিতে অথবা মূত্রথলিতে পাথর
শারীরিক পরিশ্রম যার কারণে মূত্রথলি বা মূত্রনালীতে চাপ পড়ে, উদাহরণ স্বরূপ সাইকেল চালানো কিংবা ঘোড়ায় চড়া
সজোরে যৌনমিলন, যার কারণে মূত্রনালীতে আঘাত লাগতে পারে।
ডিসইউরিয়ার উপসর্গ
প্রস্রাব করার শুরুতে কষ্ট হয়। দু’নালে হয় অথবা প্রথমে ফোঁটা ফোঁটা প্রস্রাব পড়ে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে ধীরগতিতে প্রস্রাব হয়।
প্রস্রাব করার সময় ব্যথা শুরু হয়। ডিসইউরিয়ার কারণের ওপর নির্ভর করে ব্যথা মূত্রনালীর মাথায়, অথবা প্রোস্টেটে অথবা মূত্রনালীতে অনুভূত হতে পারে।
প্রস্রাব করার সময় সর্বদা জ্বালাপোড়া করে।
ঘন ঘন প্রস্রাব হয়, তবে প্রতিবারের প্রস্রাবের পরিমাণ স্বাভাবিক ব্যক্তির প্রস্রাবের চেয়ে কম হয়।
প্রস্রাবের রঙ গাঢ় হয় এবং প্রস্রাবে দুর্গন্ধ থাকে।
প্রস্রাবের সাথে রক্ত যেতে পারে।
যৌন মিলনের সময় ব্যথা করে।
কারা ডিসইউরিয়ার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ
যে কারো যেকোনো সময় ডিসইউরিয়া হতে পারে। তবে অন্যদের চেয়ে যেসব লোকের বেশি ঝুঁকি রয়েছেঃ
পুরুষদের তুলনায় মহিলারা বেশি ঝুঁকিপূর্ণ।
বয়সী পুরুষরা (৬০ বছরের বেশি) বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। বয়স্ক পুরুষদের ডিসইউরিয়া হয় মূত্রপথে প্রদাহের কারণে, এর মধ্যে মুত্রথলি এবং কিডনিও রয়েছে।
যৌনভাবে সক্রিয় অল্পবয়স্কদের ডিসইউরিয়া খুব সাধারণ। যারা অরক্ষিত যৌন চর্চা করেন তাদের ডিসইউরিয়া বেশি হয়।
অধূমপায়ীদের তুলনায় ধূমপায়ীদের ডিসইউরিয়া বেশি হয়।
ডিসইউরিয়া প্রতিরোধ
সবসময় ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা মেনে চলতে হবে।
যেসব পুরুষের খৎনা করানো হয়নি, তাদের খৎনা করতে হবে। প্রস্রাব করার পর লিঙ্গমণ্ডু ভালো করে ধৌত করতে হবে।
গোসল করার সময় মৃদু সাবান (যে সাবান ত্বকে অ্যালার্জির সৃষ্টি করে না) দিয়ে যৌনাঙ্গ পরিষ্কার করতে হবে।
নিরাপদ যৌন মিলনের অভ্যাস করতে হবে।
যৌন মিলনের সময় সতর্ক থাকতে হবে যাতে যৌনাঙ্গে আঘাত না লাগে। যদি যৌন সঙ্গিনীর পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে সন্দেহ থাকে তাহলে অবশ্যই কনডম ব্যবহার করতে হবে।
ধূমপান পরিহার করতে হবে।
ডিসইউরিয়ার লোকদের জন্য খাবার
ডিসইউরিয়ার ক্ষেত্রে খাবার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। নিচের পরামর্শগুলো অবশ্যই মেনে চলবেন-
দৈনন্দিন খাবারের তালিকায় পানিকে অবশ্যই প্রাথমিক প্রাধান্য দিতে হবে। দিনে কমপক্ষে আট থেকে দশ গ্লাস পানি পান করবেন। তবে ঘুমোতে যাওয়ার সময় পানি পান করবেন না।
তেল ও মসলাযুক্ত খাবার পরিহার করবেন। এসব খাবার একটুও তালিকায় রাখবেন না।
কিছু খাবার ডিসইউরিয়া কমাতে পারে
গম ও বার্লি
এলাচি
মাংসের স্যুপ
ডিসইউরিয়ায় যেসব খাবার নিষেধ
হিং
অতিরিক্ত আদা ও লবণ
অতিরিক্ত গরম, মসলা ও তেলযুক্ত খাবার
মরিচ
অ্যালকোহল
মনে রাখবেন ডিসইউরিয়ার ঠিকমতো চিকিৎসা না করালে বিভিন্ন জটিলতা দেখা দিতে পারে। প্রস্রাবে ব্যথা অনুভূত হওয়া মাত্রই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হবেন। যত দ্রুত চিকিৎসা নেবেন ততই মঙ্গল।
চেম্বারঃ কমপ্যাথ লিমিটেড, ১৩৬ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা (সোম, মঙ্গল ও বুধবার)। যুবক মেডিক্যাল সার্ভিসেস, বাড়িঃ ১৬, রোডঃ ২৮ (পুরান), ১৫ (নতুন), ধানমন্ডি আবাসিক এলাকা, ঢাকা (শনি, রবি ও বৃহস্পতিবার)। মোবাইলঃ ০১৫৫২৩৪৫৭৫৪, ০১৭১৬২৮৮৮৫৫